লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
তাসনীম মাহ্মুদ
মোট লেখা:১২৭
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
ব্যবহারকারীর পাতা
উইন্ডোজ ব্যাকআপ টুল যেভাবে ব্যবহার করবেন
বেশিরভাগ কমপিউটার ব্যবহারকারী সাধারণত তাদের তৈরি করা ডকুমেন্টের ব্যাকআপ তৈরি করে না বা গুরুত্ব দেন না। শুধু তাই নয়, অনেকেই নিয়মিতভাবে ব্যাকআপ নেয়াকে বাড়াবাড়ি মনে করেন। নিয়মিতভাবে তৈরি করা ফাইল এবং ফোল্ডারের ব্যাকআপ কপি তৈরি করা বাড়াবাড়ি তো নয়ই বরং খুব ভালো এক অভ্যাস। যেমন বলা যায়, তেমনই বলা যায় গুরুত্বপূর্ণ এক কাজও। যদি কমপিউটার কোনো ত্রুটি ডেভেলপ করে এবং এই অবস্থায় সাম্প্রতিক কোনো ব্যাকআপ কপি না থাকলে আপনার দীর্ঘদিনে তৈরি করা ডকুমেন্ট, ছবিসহ যাবতীয় সব তথ্যই চিরদিনের জন্য হারিয়ে যেতে পারে।
সুতরাং অস্বীকার করার, উপায় নেই, কমপিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য ব্যাকআপ তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক কাজ। তবে প্রাথমিক এ কাজে সেটআপ ছাড়া ব্যবহারকারীকে এ প্রসেসের জন্য তেমন কোনো সময় ব্যয় করতে হয় না। লক্ষণীয়, ব্যাকআপের জন্য উইন্ডোজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে এক কার্যকর টুল, যা দিয়ে ব্যবহারকারী প্রয়োজনীয় ব্যাকআপের কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।
এ লেখায় ব্যবহারকারীর উদ্দেশে উপস্থাপন করা হয়েছে উইন্ডোজ ৭, ভিস্তা এবং এক্সপির উইন্ডোজ ব্যাকআপ টুল কিভাবে ব্যবহার করা যায় এবং এই টুলের সহায়তায় ফাইলগুলো কিভাবে সেভ করা যায় ইত্যাদি।
সময়মতো ফিরে যাওয়া
দীর্ঘদিন ধরে ব্যাকআপ টুল উইন্ডোজের অংশ হিসেবে সম্পৃক্ত রয়েছে এবং উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের প্রতিটি ভার্সন সফলভাবে অবমুক্ত হওয়ার সময় ব্যাকআপ টুলের সংশ্লিষ্ট নতুন ভার্সনও প্রকাশ পায়। লক্ষণীয়, সব ক্ষেত্রেই ফাইল রিস্টোরিংয়ের জন্য দরকার একই ব্যাকআপ টুলের ব্যবহার। এজন্য খেয়াল করে দেখুন ‘restore’ নামের কোনো বাটন বা লিঙ্ক আছে কি না।
এক্সপি
প্রথমেই আলোচনা করা যাক উইন্ডোজ এক্সপির সাথে সম্পৃক্ত হওয়া ব্যাকআপ টুল সম্পর্কে। এই টুলটি উইন্ডোজ ব্যাকআপ টুল হিসেবে বিবেচিত। বিস্ময়কর হলো, এই টুলটি উইন্ডোজ ভিস্তা ও উইন্ডোজ ৭-এর সাথে সম্পৃক্ত হওয়া সমতুল্য ব্যাকআপ টুলের চেয়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর বা সহায়ক। তবে যাই হোক, উইন্ডোজ ব্যাকআপ টুলকে ব্যবহার করতে চাইলে আপনার দরকার হবে উইন্ডোজ এক্সপির আসল ইনস্টলেশন সিডি কিংবা ব্যবহার করতে হবে উইন্ডোজ এক্সপির প্রফেশনাল এডিশন। উইন্ডোজ এক্সপি হোম ইউজারদের ক্ষেত্রে দরকার হবে ম্যানুয়ালি উইন্ডোজ সিডি থেকে সেট করা।
এজন্য ড্রাইভে উইন্ডোজ এক্সপি সিডি ঢুকিয়ে My Computer-এ সিডি আইকনে ডাবল ক্লিক করুন। এরপর যখন ‘ওয়েলকাম টু মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এক্সপি’ আবির্ভূত হবে, তখন ‘পারফরম অ্যাডিশনাল টাস্কস’ লিঙ্কে ক্লিক করুন। এবার ‘ব্রাউজ দি সিডি’তে ক্লিক করুন এবং উইন্ডোজ এক্সপেলারার ব্যবহার করুন Value Add, Msft এবং Ntbackup ফোল্ডার নেভিগেট করার জন্য। সবশেষে ‘Ntback up.msi’ ফাইলে ডাবল ক্লিক করুন এবং উইন্ডোজ ব্যাকআপ ইনস্টল করার জন্য প্রম্পট অনুসরণ করুন। এই কাজ শেষে Start-এ ক্লিক করে উইন্ডোজ ব্যাকআপ শুরু করুন। এজন্য All Programs >Accessories>System Tools-এ ক্লিক করে Backup-এ ক্লিক করুন।
উইন্ডোজ ব্যাকআপকে পরিচালনা করা যায় উইজার্ড বা অ্যাডভান্সড মোডের মাধ্যমে। উইজার্ড প্রক্রিয়াটি হলো ডিফল্ট এবং শিক্ষানবিশদের জন্য প্রথম পছন্দ। এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে শুধু Next-এ ক্লিক করে প্রম্পট অনুসরণ করে ব্যাকআপ অপশনকে কাস্টমাইজ করতে হবে।
অল্প কথায় বলা যায়, আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন কোন ফাইল এবং ফোল্ডারকে ব্যাকআপ করতে হবে এবং এরপর বেছে নিতে হবে সেগুলোর জন্য ডেসটিনেশন বা গন্তব্য। হতে পারে এটি একই ড্রাইভের অন্য কোনো পার্টিশন বা একটি কমপিউটার নেটওয়ার্কের শেয়ার করা ড্রাইভ বা একটি এক্সটারনাল হার্ডডিস্ক ড্রাইভ।
‘উইন্ডোজ ব্যাকআপ’ ফিচার অনুমোদন করে আপনার সেট করা সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকআপ এক্সিকিউট করা। এটি করার জন্য উইজার্ডে Advanced বাটনে ক্লিক করুন এবং সেকেন্ডারি উইজার্ড ‘when to Backup’ জুড়ে কাজ করুন। এবার Later সিলেক্ট করে Set Schedule বাটনে ক্লিক করুন। এবার Schedule Job ডায়ালগ বক্স ব্যবহার করুন কখন এবং কিভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকআপ কার্যকর হবে, তা নির্দিষ্ট করার জন্য।
উইন্ডোজ ভিস্তা
ভিস্তার সাথে উইন্ডোজ ব্যাকআপের যে ভার্সন সমন্বিত করা হয়েছে, সেটি উইন্ডোজ এক্সপির ব্যাকআপ ভার্সনের চেয়ে অধিকতর সীমাবদ্ধ। কেননা, এই ভার্সনে ব্যবহারকারীদের অনুমোদন করে না নির্দিষ্ট ফাইল এবং ফোল্ডার ছাড়া ব্যাকআপ। ভিস্তার ‘ব্যাকআপ অ্যান্ড রিস্টোর সেন্টার’ ফিচারের পরিবর্তে ব্যাকআপ ফাইল নির্ভর করে ফাইলের টাইপ ও ড্রাইভের ওপর (ভিস্তার ব্যাকআপ অ্যান্ড রিস্টোর সেন্টার খুঁজে পাবেন স্টার্ট মেনুর কন্ট্রোল প্যানেলের সিস্টেম অ্যান্ড মেইনটেনেন্স সেকশনে)। এবার Backup ফাইল সেকশনে ‘Change setting’ লিঙ্কে ক্লিক করুন Backup Status and Configuration ডায়ালগ বক্সে অ্যাক্সেস করার জন্য। এবার ‘Change backup settings’ লিঙ্কে ক্লিক করে উইজার্ড প্রম্পট অনুসরণ করুন।
ব্যাকআপ প্রসেস থেকে সম্পূর্ণ ড্রাইভ বাদ দেয়া যায়। এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হলো ব্যাকআপ শিডিউল থেকে নির্দিষ্ট কোনো ফাইল বাদ দেয়া। সুতরাং আপনি ব্যাকআপ অ্যান্ড রিস্টোর সেন্টারকে নির্দেশ দিতে পারেন, যাতে music এবং video ফাইলকে এড়িয়ে যায়।
উইন্ডোজ ৭
উইন্ডোজ ৭-এর ব্যবহারকারীরা চালু করতে পারেন Backup and Restores টুল। এজন্য Start-এ ক্লিক করে Control Panel সিলেক্ট করার পর System and Security হেডিংয়ের অন্তর্গত ‘Backup your computer’ লিঙ্কে ক্লিক করুন। এবার ‘set up backup’-এ ক্লিক করে ব্যাকআপ অপশন এবং শিডিউল সেটআপ করার জন্য উইজার্ড অনুসরণ করে চলুন। লক্ষণীয়, উইন্ডোজ ৭-এর ব্যাকআপ টুল রিস্টোর করে স্বতন্ত্র ফাইল বাদ দিয়ে। তবে নেটওয়ার্ক কমপিউটারে ব্যাকআপে সক্ষম অথবা ড্রাইভ বিদ্যমান থাকে শুধু উইন্ডোজ ৭ প্রফেশনাল এবং আল্টিমেট এডিশনে।
উইন্ডোজ ৭-এর ব্যাকআপ অ্যান্ড রিস্টোর টুল ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ডিস্ক ইমেজ ব্যাকআপ তৈরি করা সম্ভব। এজন্য ব্যবহারকারীকে ‘create a system image’ লিঙ্কে ক্লিক করে প্রম্পট অনুসরণ করে যেতে হবে।
উইন্ডোজ ৭-এর সুবিধা
উইন্ডোজ ৭ এবং উইন্ডোজ এক্সপি উভয় অপারেটিং সিস্টেমের ব্যাকআপ টুল পিসির সবকিছুই ব্যাকআপ করার জন্য অফার করে অপশন, যার অর্থ হলো সব ডকুমেন্ট এবং ফাইল ব্যাকআপ হওয়া।
যদি অবশ্যম্ভাবীরূপে সবকিছু ব্যাকআপ করতে চান যেমন ফাইল, ইনস্টল করা প্রোগ্রামসহ আপনার উইন্ডোজ কপি, তাহলে আপনাকে তৈরি করতে হবে ‘হার্ডডিস্কের ইমেজ’। এটি একটি সিঙ্গেল ফাইল যা ধারণ করে আপনার হার্ডডিস্কের হুবহু প্রতিরূপ।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com