• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ২৫ বছর
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মইন উদ্দীন মাহমুদ স্বপন
মোট লেখা:১৪১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - নভেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
অপারেটিং সিস্টেম
তথ্যসূত্র:
ক্রিস্টাল রিপোর্ট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ২৫ বছর

পঁচিশ বছর আগে ১৯৮৫ সালে মাইক্রোসফট বিশ্বদরবারে উইন্ডোজের প্রথম সংস্করণ অবমুক্ত করে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এ অনুষ্ঠানে কারিগরিবিষয় সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের বাইরে খুব বেশি লোক উপস্থিত ছিল না। অথচ সে সময় এ পণ্যটি চালু করা হয় এর পেছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছিল।

গত পঁচিশ বছরে উইন্ডোজের পরিবর্তন বা উন্নয়ন সম্পর্কিত একটি ইমেজ গ্যালারি নবীন ও প্রবীণ ব্যবহারকারীর উদ্দেশে তুলে ধরা হয়েছে। গত দুই যুগে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম উন্নয়নের প্রতিটি ধাপের গোপন রহস্য এতে তুলে ধরা হয়েছে।

১৯৮৫ : উইন্ডোজ ১.০

উইন্ডোজের যাত্রা শুরু ১৯৮১ সালে ইন্টারফেস ম্যানেজার নামের এক প্রজেক্ট হিসেবে এবং চূড়ান্তভাবে ১৯৮৫ সালে অবমুক্ত হয় উইন্ডোজ ১.০ হিসেবে, যা অপারেটিং সিস্টেমের জগতে এক মৃদু আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে ইতস্ততভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে হারিয়ে যায়নি। এটি সবার আগে ডস (DOS) তথা ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেমে রান করত। ডস অপারেটিং সিস্টেমের জন্য খুব অল্প অ্যাপ্লিকেশন ছিল। অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডো ওভারল্যাপ করা যেত না অর্থাৎ এগুলো টিল্ড অবস্থায় থাকত।

উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশনে এখনো এই ওএস-কে বিবেচনায় আনা হয়। শুধু তাই নয়, আমাদের অনেকেরই হয়তো জানা নেই, মাইক্রোসফটের সাম্রাজের ভিত্তিই হলো এই অপারেটিং সিস্টেম।

উইন্ডোজ ১.০-এ সম্পৃক্ত করা হয় টেক্সট এডিটর, নোটবুক, মৌলিক ক্যালেন্ডার, দীর্ঘস্থায়ী গ্রাফিক্স পেইন্টিং প্রোগ্রাম পেইন্টসহ বেশ কিছু সহায়ক প্রোগ্রাম। এই অপারেটিং সিস্টেমের জন্য দরকার এমএসডস ভার্সন ২.০, ২৫৬ কি.বা. মেমরি এবং গ্রাফিক্স অ্যাডাপ্টার। এই অপারেটিং সিস্টেম হার্ডডিস্ক বা দুটি ফ্লপি ডিস্ক থেকেও রান করানো যেত।

১৯৮৭ : উইন্ডোজ ২.০

১৯৮৭ সালের শেষের দিকে উইন্ডোজের ভার্সন ২.০ অবমুক্ত হয়। উইন্ডোজ ভার্সন ১.০ অবমুক্ত হওয়ার দুই বছর পর উইন্ডোজের ভার্সন ২.০ অবমুক্ত হয়। এই নতুন ভার্সনে সম্পৃক্ত করা হয় অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডোর ওভারল্যাপিং সক্ষমতা। এ সংস্করণে মেমরির ব্যবহার উন্নত করা হয়। উন্নত করা হয় নতুন ডায়নামিক ডাটা এক্সচেঞ্জ (DDE), যা উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশনকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাটা শেয়ার ও আপডেটের সুবিধা দেয়। এক্সেল স্প্রেডশিটে ডিডিআই অনুমোদিত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয়, যখন অন্য এক্সেল স্প্রেডশিটের ডাটা পরিবর্তন করা হয়।

উইন্ডোজ ২.০-এ সম্পৃক্ত করা হয়েছে এক্সপান্ডেড সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট। ফলে এই সিস্টেমের জন্য দরকার ৫১২ কি.বা. বা তার চেয়ে বেশি মেমরি এবং ডস ভার্সন ৩.০। পরবর্তী ভার্সন উইন্ডোজ ২.১১-এর জন্য দরকার হয় প্রথমবারের মতো হার্ডডিস্কের ব্যবহার।

উইন্ডোজ ভার্সন ২.০-এর জন্য মাইক্রোসফট এক্সেল ও ওয়ার্ডসহ আরো কিছু অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হয়। এ সময় ম্যাকের জন্য তৈরি করা প্রোগ্রাম এলডাস পেজমেকারকে উইন্ডোজে সম্পৃক্ত করা হয়। উইন্ডোজ ২.০ আরেকটি বিশেষ কারণে স্মরণীয়, কেননা ১৯৮৮ সালের ১৭ মার্চ অ্যাপল কমপিউটার মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করে যে মাইক্রোসফট কপিরাইট আইন ভঙ্গ করে ম্যাকিনটোশ অপারেটিং সিস্টেমের লুক ও ফিল নকল করে। অবশ্য কয়েক বছর আইনি লড়াই করে মাইক্রোসফট বিজয়ী হয়। মাইক্রোসফট অভিযোগমুক্ত হয়।

১৯৯০ : উইন্ডোজ ৩.০

১৯৯০ সালে উইন্ডোজ ৩.০ অবমুক্ত হয় এবং এর উত্তরাধিকারী উইন্ডোজ ৩.১ অবমুক্ত হয় ১৯৯২ সালে। এ সময় ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোসফট যে বিশে^ নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে, তার আলামত স্পষ্টত বুঝা যাচ্ছিল। ইন্টারফেসে আসে নতুন আচ্ছাদন। এটি সবার মন জয় করে। যদিও তা আজকের মতো তেমন আকর্ষণীয় ছিল না। সে সময় এই ইন্টারফেস সবার কাছে ছিল গ্রহণীয় এবং পরিপাটি হিসেবে বিবেচিত।

আইকনগুলোকে নতুন করে ডিজাইন করা হয়েছিল যাতে ১৬ কালারের ভিজিএ গ্রাফিক্স স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করা যায়। মেমরি হ্যান্ডেলিংকে উন্নত করা হয় এবং সমন্বিত করা হয় এনহ্যান্সড মোড, যা মেমরি অ্যাক্সেসের গতি বাড়ায় এবং ডস প্রোগ্রামকে অনুমোদন করে যাতে স্বতন্ত্র ভার্চুয়াল মেশিনে রান হয়। উইন্ডোজ ৩.০ ভার্সন উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশনকে র্যাোমের মধ্যে বিদ্যমান মেমরির চেয়ে বেশি মেমরি ব্যবহারের সুযোগ দেয় অস্থায়ীভাবে হার্ডডিস্কে র্যা ম সোয়াপ করার মাধ্যমে।

এই এনহ্যান্সড মোড বেশ প্রশংসিত হয়। কেননা, এ সময় ডস প্রোগ্রাম মাল্টিটাস্কে সক্ষম হয় এবং প্রথমবারের মতো তাদের নিজেদের রিসাইজেবল উইন্ডোতে সক্ষম হয়, যা আগে স্ক্রিনজুড়ে রান করত। উইন্ডোজ ৩.০-এর জন্য দরকার ৬৪০ কি.বা., যাকে বলা হয় নর্মাল মেমরি এবং ২৫৬ কি.বা. হলো এক্সটেনডেট মেমরি। উইন্ডোজের ৩.০-এ ভার্সন তৈরি করা হয়েছিল মাল্টিমিডিয়া সাপোর্ট করার জন্য এবং এটি প্রথমবারের মতো সিডি রম সাপোর্ট করে।

উইন্ডোজ ৩.০-এ সম্পৃক্ত করা হয় কমপিউটারের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো Solitair গেম। উইন্ডোজ ৩.১ চালু করে TrueType ফন্ট। এর ফলে স্ক্রিনে টেক্সট পড়া আরো মসৃণ হয় এবং উন্নতমানের প্রিন্ট পাওয়া যায়। উইন্ডোজ ভার্সন ৩.১১-এ যুক্ত করা হয় নেটওয়ার্ক সাপোর্ট, যেখানে ব্যবহার হয় সে সময়ের প্রধান নেটওয়ার্ক স্ট্যান্ডার্ড Netware।

১৯৯৩ : উইন্ডোজ এনটি ৩.১

১৯৯৩ সালের জুলাইয়ে উইন্ডোজ এনটি ৩.১ অবমুক্ত হয়। এটি সাধারণ ভোক্তাদের প্রতি লক্ষ না রেখে বরং ব্যবসায়কে লক্ষ্য করে ডিজাইন করা হয়, যা ছিল অধিকতর নিরাপদ ও স্ট্যাবল। এতে ১৬ বিট আর্কিটেকচারের পরিবর্তে ৩২ বিট আর্কিটেকচার ব্যবহার করা হয়। ভার্সন ৩.১ প্রথম অবমুক্ত হয় এনটি অপারেটিং সিস্টেমে। উইন্ডোজ ৩.১ এনটির জন্য দরকার ৮০৩৮৬ প্রসেসর, ১২ মে.বা র্যাকম এবং হার্ডডিস্ক ফ্রি স্পেস ৯০ মে.বা।

এন্টারপ্রাইজকেন্দ্রিক এই অপারেটিং সিস্টেমে পরে আরো তিনটি উন্নত ভার্সন অবমুক্ত হয়। উইন্ডোজ এনটি ৩.৫ অবমুক্ত হয় ১৯৯৪ সালে। ১৯৯৫ সালে উইন্ডোজ এনটি ৩.৫১ এবং ১৯৯৬ সালে উইন্ডোজ এনটি ৪.০ অবমুক্ত হয়।

১৯৯৫ : উইন্ডোজ ৯৫

১৯৯৫ সালের আগস্টে উইন্ডোজ ৯৫ অবমুক্ত হয়। সেবারই প্রথম উইন্ডোজের সাথে ডস-কে যুক্ত করা হয়। এটি উইন্ডোজের প্রথম কনজ্যুমার ভার্সন, যা ১৬ বিট আর্কিটেকচার থেকে সরে এসে ৩২ বিট আর্কিটেকচারের দিকে যাত্রা শুরু করে। অন্যভাবে বলা যায়, এটি হলো ৩২ বিট কোড এবং ১৬ বিট কোডের মিশ্রণ। এই অপারেটিং সিস্টেম প্রবর্তন করে অনেকগুলো ইন্টারফেস ইমপ্রুভমেন্ট, যার মধ্যে কয়েকটি এখনো চল রয়েছে। যেমন- টাস্কবার এবং স্টার্ট মেনু। আগে যেখানে ফাইল নেমের জন্য মাত্র ৮ ক্যারেক্টারের সাপোর্ট ছিল, তা পরিবর্তন করে দীর্ঘ ফাইল নেমের সাপোর্ট সম্পৃক্ত করা হয় এতে। এটি উইন্ডোজের আগের সব ভার্সনের চেয়ে অনেক বেশি স্ট্যাবল এবং প্রথমবারের মতো এতে ইন্টেলের প্ল্যাগ অ্যান্ড প্লে স্ট্যান্ডার্ড ফিচার যুক্ত করা হয়, যা ডিজাইন করা হয়েছে পিসিতে সহজে হার্ডওয়্যার ও পেরিফেরাল যুক্ত করার জন্য। এর উদ্দেশ্য ছিল উইন্ডোজ পিসির সাথে যুক্ত হার্ডওয়্যার ও পেরিফেরালকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত ও কনফিগার করবে।

উইন্ডোজ ৯৫-এর জন্য কমপক্ষে দরকার ৮০৩৮৬ডিএক্স সিপিইউ, ৪ মে.বা. সিস্টেম র্যা ম এবং ১২০ মে. বা. হার্ডডিস্ক স্পেস। এই ফিচারের কমপিউটারের গতি যথেষ্ট কম হলেও কমপক্ষে প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম ছিল। তবে ৮০৪৮৬ ভিত্তিক পিসি এবং ৮ মে.বা. র্যাকমে ভালো পারফরমেন্স পাওয়া যেত।

উইন্ডোজ ৯৫ আরেকটি বিশেষ কারণে উল্লেখযোগ্য। কেননা, উইন্ডোজ ৯৫-এর বিপণনের প্রচারের জন্য প্রচুর অর্থ খরচ করা হয়। আনুমানিক মোট ৩০ কোটি ডলার খরচ করা হয়। এতে সম্পৃক্ত ছিল উইন্ডোজের থিম সং রোলিং স্টোনের গাওয়া গান ‘Start Me Up’-এর কেনা, টরন্টোর সিএন টাওয়ারে ৩০০ ফুটের ব্যানার ঝুলানো হয়, এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংকে মাইক্রোসফটের করপোরেট কালার হলুদ, লাল এবং গ্রিন দিয়ে লাইটেনিং করাসহ কিছু প্রমোশনাল কাজ সম্পৃক্ত ছিল এ সময়।

১৯৯৮ : উইন্ডোজ ৯৮

উইন্ডোজ ৯৮ চালু হয় ১৯৯৮ সালে জুন মাসে। উইন্ডোজ ৩.১ থেকে উইন্ডোজ ৯৫-এ যে ব্যাপক পরিবর্তন হয়, তেমন ব্যাপক পরিবর্তন হয়নি উইন্ডোজ ৯৮-এ। এটিকে উইন্ডোজের ইনক্রিমেন্টাল পরিবর্তন বলা যায়, যদিও এখানে কিছু উল্লেখযোগ্য সংযোজন ছিল।

উইন্ডোজ ৯৮-এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল ইন্টারনেটের সাপোর্ট। প্রথমবারের মতো উইন্ডোজে সম্পৃক্ত করা হয় Winsock স্পেসিফিকেশন, যা উইন্ডোজের জন্য TCP/IP সাপোর্ট করে। অ্যাড-অনস হিসেবে ইনস্টল না করে এই ফিচার সরাসরি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে তৈরি করা হয়। উইন্ডোজ ৯৮-এ প্রথমবারের মতো অপারেটিং সিস্টেমের অংশ হিসেবে সম্পৃক্ত করা হয় ইন্টারনেট এক্সপ্লোর। আর এ কারণে ইউএস জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট অ্যান্টিট্রাস্ট আইন লঙ্ঘনের জন্য মাইক্রোসফটকে ফৌজদারিতে সোপর্দ করা হয়।

উইন্ডোজ ৯৮-এ উইন্ডোজ ৯৫-এর তুলনায় ভালো ইউএসবি সাপোর্ট অফার করা হয়। এতে যুক্ত করা হয় অ্যাকটিভ ডেস্কটপ নামের এক ফিচার, যা ডেস্কটপে ডেলিভার করতে পারে লাইভ ইন্টারনেট কনটেন্ট। উইন্ডোজ ৯৮-এর জন্য দরকার ৬৬ মে.হা. ৪৮৬ডিএক্স২ প্রসেসর ও ১৬ মে.বা. র্যাযম। তবে ২৪ মে.বা. রিকমান্ড করা হয় এবং হার্ডডিস্ক স্পেস ৫০০ মে.বা.।

২০০০ : উইন্ডোজ ২০০০

উইন্ডোজ ২০০০ হলো উইন্ডোজ এনটি ৪.০-এর উত্তরসূরি, যা চালু হয় ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এটি মূলত হোম ইউজারদের উদ্দেশে তৈরি করা হয়নি। এর মাল্টিপল সার্ভার ভার্সনসহ কয়েকটি সংযোজন রয়েছে। উইন্ডোজ ৯৮-এর অনেক ফিচারই আনা হয় এনটি লাইনে। এতে সম্পৃক্ত করা হয় ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার এবং প্ল্যাগ অ্যান্ড প্লে। এই ভার্সনে প্রবর্তন করা হয় উইন্ডোজ ফাইল প্রোটেকশন, যা গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম ফাইলকে রক্ষা করে। এর সাথে আরো চালু করা হয় এনক্রিপটিং ফাইল সিস্টেম, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফাইল এনক্রিপ্ট করার মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে উন্নত করে। এর অ্যাকটিভ ডিরেক্টর হলো এন্টারপ্রাইজ টেকনোলজি, যা ব্যবহার হয় নেটওয়ার্ক ও ডোমেইন সার্ভিস দেয়ার জন্য।

উইন্ডোজ ২০০০-এর জন্য সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট নির্ভর করে সার্ভার বা ডেস্কটপ ভার্সনের ওপর। উইন্ডোজ ২০০০ প্রফেশনাল ভার্সনের জন্য দরকার ন্যূনতম ১৩৩ মে.হা. পেন্টিয়াম মাইক্রোপ্রসেসর, ন্যূনতম ৩২ মে.বা. র্যাতম (রিকোয়ারমেন্ট ৬৪ মে.বা.), ২ গি.বা. হার্ডডিস্ক এবং ৬৫০ মে.বা. ফ্রি স্পেস।

২০০০ : উইন্ডোজ মি

উইন্ডোজ মি উইন্ডোজ মিলিনিয়াম এডিশন হিসেবে পরিচিত। এটি চালু হয় ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে। ইনস্টলেশনের ঝামেলার কারণে খুব তাড়াতাড়ি উইন্ডোজের এই অপারেটিং সিস্টেম সমালোচিত হয়। এই ভার্সন আরো সমালোচিত হয় বাগ এবং সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের ইনকম্প্যাটিবিলিটির কারণে। এটি উইন্ডোজ মুভি মেকারকে উপস্থাপন করে। উইন্ডোজ মি হলো সর্বশেষ সংস্করণ, যেখানে ডস আর্কিটেকচার সম্পৃক্ত। এই সংস্করণের স্থায়িত্ব এক বছরের কম। উইন্ডোজ মি’র জন্য দরকার ১৫০ মে. হা. পেন্টিয়াম প্রসেসর বা সমতুল্য (অনুমোদন করা হয় ৩০০ মে.হা.), ৩২ মে. বা. র্যা ম (অনুমোদন করা হয় ৬৪ মে. বা.) ও ৩২০ মে. বা. হার্ডডিস্কের ফ্রি স্পেস (২ গি.বা. অনুমোদন করা হয়)।

২০০১ : উইন্ডোজ এক্সপি

২০০১ সালের আগস্ট মাসে উইন্ডোজ এক্সপি অবমুক্ত করা হয়। কিছু বিষয় বিবেচনায় এটি উইন্ডোজের জন্য একটি ব্রেক থ্রু হিসেবে পরিচিত। এটি উইন্ডোজের প্রথম সংস্করণ যেখানে ডস ব্যবহার হয়নি। উইন্ডোজ এক্সপিতে প্রথম অফার করা হয় ৬৪ বিট এবং ৩২ বিট এডিশন।

উইন্ডোজের আগের যেকোনো ভার্সনের চেয়ে এক্সপি অধিকতর স্ট্যাবল। এর ইন্টারফেসকে নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়। ফলে তা হয় অধিকতর উজ্জ্বল, অধিকতর রঙিন এবং অধিকতর সমসাময়িক লুক সম্বলিত। আইকন লেবেলে যুক্ত করা হয় ড্রপ শ্যাডো। উইন্ডোজে অধিকতর রাউন্ডেড লুক এবং ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট যেমন- ফেডিং এবং স্লাইডিং মেনু যুক্ত করা হয়।

উইন্ডোজ এক্সপিতে ব্যাকগ্রাউন্ড থিম এবং রিমোট ডেস্কটপসহ বেশ কিছু নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়। রিমোট ডেস্কটপের মাধ্যমে পিসিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।

উইন্ডোজ এক্সপিকে মাল্টিপল ভার্সন সহযোগে বাজারজাত করা হয়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো উইন্ডোজ এক্সপি হোম এডিশন এবং উইন্ডোজ এক্সপি প্রফেশনাল ভার্সন। উইন্ডোজ এক্সপি এখন পর্যন্ত উইন্ডোজের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া ভার্সন এবং এটি এখনো ডাউনগ্রেড অপশনে নতুন পিসিতে পাওয়া যাবে, যা উইন্ডোজ ৭ প্রফেশনাল আল্টিমেট এডিশনে রান করবে।

উইন্ডোজ এক্সপির জন্য দরকার পেন্টিয়াম ২৩৩ মে.হা. প্রসেসর বা সমতুল্য (৩০০ মে.হা.), ন্যূনতম ৬৪ মে.বা. র্যাঅম (১২৮ মে.) এবং ন্যূনতম ১.৫ গি.বা. হার্ডডিস্কের খালি স্পেস)।

২০০৬ : উইন্ডোজ ভিস্তা

২০০৬ সালের শেষের দিকে উইন্ডোজ ভিস্তা চালু হয়। সম্ভবত এটি উইন্ডোজের সবচেয়ে সমালোচিত ও অপছন্দের ভার্সন। উইন্ডোজ এক্সপি অবমুক্ত হওয়ার পাঁচ বছর পর উইন্ডোজ ভিস্তা চালু হয়। ভিস্তা চালু হওয়ার পর থেকে ব্যাপকভাবে মুখোমুখি হয় হার্ডওয়্যার ইনকম্প্যাটিবিলিটি সমস্যার কারণে। শুধু তাই নয়, ভিস্তা পুরনো হার্ডওয়্যারে রান করে না।

ভিস্তার ইন্টারফেস এক্সপির ইন্টারফেস থেকে বেশ ভিন্ন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ভিস্তায় উইন্ডোজ অ্যারো (Windows Aero) নামের এক নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এটি ভিজ্যুয়াল এনহ্যান্সডমেন্টের একটি সেট, যেখানে সম্পৃক্ত রয়েছে ট্রান্সপারেন্ট উইন্ডো ও এনিমেশন। এখানে আরো বিভিন্ন ধরনের নতুন ফিচার রয়েছে: উইন্ডোজ স্লাইডবার, ডেস্কটপ গ্যাজেট, উইন্ডোজ ফটোগ্যালারি এবং উন্নত সার্চ। অনেক ব্যবহারকারীই ভিস্তার রিসোর্স হাংরি ইন্টারফেসকে প্রচন্ডভাবে অপছন্দ করেন।

উইন্ডোজ ভিস্তা ৬টি ভিন্ন ভার্সনে পাওয়া যায়। ভিস্তার জন্য দরকার ন্যূনতম ১ গি.হা. প্রসেসর (৩২ বিট বা ৬৪ বিট), ১ গি.বা. সিস্টেম মেমরি, ১৫ গি.বা. হার্ডডিস্ক ফ্রি স্পেস এবং একটি গ্রাফিক্স কার্ড যা উইন্ডোজ অ্যারো সাপোর্ট করে।

২০০৯ : উইন্ডোজ ৭

উইন্ডোজ ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেমের বর্তমান ভার্সন উইন্ডোজ ৭ অবমুক্ত হয় ২০০৯ সালের অক্টোবরে। অনেকেই মনে করেন, এই অপারেটিং সিস্টেমটি সেই অপারেটিং সিস্টেম, যা উইন্ডোজ ভিস্তার ক্ষেত্রে হওয়া উচিত ছিল। এটি অ্যারো ইন্টারফেস এবং ভিস্তার অন্যান্য এনহ্যান্সডমেন্টকে যথাস্থানে রাখে।

উইন্ডোজ ৭ ভিস্তার চেয়ে অনেক বেশি স্থিতিশীল এবং অধিক থেকে অধিকতর ব্যবহারকারী ভিস্তা থেকে উইন্ডোজ ৭-এ আপগ্রেড করছেন। এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা এক্সপি থেকে উইন্ডোজ ভিস্তায় আপগ্রেড করার ফলে যে ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন, এক্ষেত্রে ভিস্তা থেকে উইন্ডোজ ৭-এ আপগ্রেড করার ফলে ব্যবহারকারীরা হার্ডওয়্যার সংশ্লিষ্ট তেমন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন না।

উইন্ডোজ ৭-এ সামান্য কিছু নতুন ফিচার সূচনা করে। উল্লেখযোগ্য হলো এনহ্যান্সড টাস্কবার, সামান্য রিডিজাইন করা স্টার্ট মেনু, আকর্ষণীয় তিনটি শর্টকাট যা Aero Peek, Aero Snap এবং Aero Shake হিসেবে পরিচিত। উইন্ডোজ ভিস্তা থেকে নেয়া কিছু ফিচার হলো যেমন- উইন্ডোজ ফটো গ্যালারি এবং উইন্ডোজ মেইল। উইন্ডোজ ৭-এর রয়েছে মাল্টিপল ভার্সন যেমন- উইন্ডোজ ৭ হোম প্রিমিয়াম, উইন্ডোজ ৭ প্রফেশনাল এবং উইন্ডোজ ৭ ইউটিলিটি। এই ভার্সনের জন্য দরকার ১ গি.হা. প্রসেসর (৩২ বা ৬৪ বিট), ১ গি.বা. সিস্টেম মেমরি, ১৬ গি.বা. ফ্রি হার্ডডিস্ক স্পেস (২০ গি.বা. দরকার ৬৪ বিট ভার্সনের জন্য) এবং একটি গ্রাফিক্স কার্ড, যা উইন্ডোজ অ্যারো সাপোর্ট করতে সক্ষম।

শেষ কথা

মাইক্রোসফটসহ অন্য কেউই জানে না, আগামী ২৫ বছরে উইন্ডোজের সেপ কেমন হবে। কেননা ভবিষ্যৎ টেকনোলজি কেমন হবে, তা আগে থেকে ধারণা করা এখন এক দুঃসাধ্য কাজ। তবে উইন্ডোজের বর্তমান অবস্থান থেকে আগামী ২৫ বছরে যে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে তা একবাক্যে বলা যায়। শুধু তাই নয়, সময় ও যুগের চাহিদা মেটাতে গত ২৫ বছরে উইন্ডোজের যে ব্যাপক পরিবর্তন তথা উন্নতি সাধিত হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি পরিবর্তন ও উন্নতি সাধিত হবে আগামী ২৫ বছরে। কেননা গত দুই দশকে টেকনোলজির ক্ষেত্রে সব পরিবর্তন বিশেষ করে পার্সোনাল কমপিউটার বা ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের যে পরিবর্তন ঘটেছে, তা মূলত সাধারণ জনগণের কমপিউটিং ডিভাইসে ঘটেছে। এ প্রবণতা যে আগামী ২৫ বছরে একই থাকবে তা জোর দিয়ে বলা কঠিন। কেননা সম্প্রতি স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট পিসির জনপ্রিয়তা যে হারে বাড়ছে, তাতে গত ২৫ বছরের কমপিউটিং ডিভাইসের ওপর এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

এছাড়া উইন্ডোজের বর্তমান আধিপত্য আগামী ২৫ বছর অব্যাহত রাখা নির্ভর করছে কমপিউটিংয়ে ক্লাউডভিত্তিক সফটওয়্যার ও সার্ভিসের সম্প্রসারণের সাথে সঙ্গতি রেখে উইন্ডোজ কিভাবে এগিয়ে যাবে তার ওপর।



কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : mohmood_sw@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস