• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: জাকারিয়া চৌধুরী
মোট লেখা:৩৫
লেখকের নাম: মো: জাবেদ মোর্শেদ চৌধুরী
মোট লেখা:২৫
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - এপ্রিল
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ফ্রিল্যান্স
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস


ইন্টারনেটে জনপ্রিয় অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে। এগুলো আউটসোর্সিংয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। এসব সাইটকে বলা হয় ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস।

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস সাইটে দুই ধরনের ব্যবহারকারী থাকেন। এসব ওয়েবসাইটে যারা কাজ জমা দেন তাদেরকে বলা হয় Buyer বা Client এবং যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করেন তাদেরকে বলা হয় Freelancer, Provider, Seller অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে Coder। একটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য একাধিক ফ্রিল্যান্সার আবেদন করেন, যাকে বলা হয় Bid করা। বিড করার সময় ফ্রিল্যান্সারেরা কাজটি কত টাকায় সম্পন্ন করতে পারবেন, তা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী উল্লেখ করেন। এদের মধ্য থেকে ক্লায়েন্ট যাকে ইচ্ছে তাকে নির্বাচন করতে পারেন। সাধারণত কাজের পূর্ব-অভিজ্ঞতা, টাকার পরিমাণ এবং বিড করার সময় ফ্রিল্যান্সারের মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে ক্লায়েন্ট একজন ফ্রিল্যান্সারকে নির্বাচন করে থাকেন। ফ্রিল্যান্সার নির্বাচন করার পর প্রজেক্টভিত্তিক কাজের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট প্রজেক্টের সম্পূর্ণ টাকা ওই সাইটগুলোতে Escrow নামের একটি অ্যাকাউন্টে জমা করে দেয়, যা কাজ শেষ হওয়ার পর সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সারের পাওনা পরিশোধের নিশ্চয়তা দেয়। কাজ শেষ হওয়ার পর ফ্রিল্যান্সারকে সম্পূর্ণ প্রজেক্টটি ওই সাইটে জমা দিতে হয়। এরপর ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারের কাজটি যাচাই করে দেখে। সবকিছু ঠিক থাকলে ক্লায়েন্ট তখন সাইটে একটি বাটনে ক্লিক করে কাজটি গ্রহণ করেন। সাথে সাথে এস্ক্রো থেকে অর্থ ওই সাইটে ফ্রিল্যান্সারের অ্যাকাউন্টে এসে জমা হয়। অন্যদিকে ঘণ্টা হিসেবে কাজের ক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টা কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সারকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কমপিউটারে একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়, যা দিয়ে কত সময় ধরে কাজ করা হচ্ছে তার হিসাব রাখা হয়। সম্পূর্ণ সার্ভিসের জন্য ফ্রিল্যান্সারকে কাজের একটা নির্দিষ্ট অংশ (১০ বা ১৫ শতাংশ) ওই সাইটকে ফি বা কমিশন হিসেবে দিতে হয়। এরপর মাস শেষে সাইটটি ফ্রিল্যান্সারের আয় করা অর্থ বিভিন্ন পদ্ধতিতে তার কাছে পাঠায়।

নিচে কয়েকটি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস সাইটের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হলো :

ফ্রিল্যান্সার : www.freelancer.com

এই সাইটে রেজিস্ট্রেশন করা মোট প্রোভাইডার বা ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ৩৩ লাখের ওপর। এ পর্যন্ত সাইটটিতে দেড় লাখের ওপর প্রজেক্ট পোস্ট করা হয়েছে। বিভিন্ন সুবিধার ওপর ভিত্তি করে এই সাইটে চার ধরনের মেম্বারশিপ ব্যবস্থা রয়েছে : ফ্রি, বেসিক, স্ট্যান্ডার্ড এবং প্রিমিয়াম। ফ্রি এবং বেসিক মেম্বারদের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সারদেরকে প্রতিটি কাজের মোট আয়ের ১০ শতাংশ এবং স্ট্যান্ডার্ড ও প্রিমিয়াম মেম্বারদের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৫ ও ৩ শতাংশ ফি দিতে হয়। এ সাইটের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে বিভিন্ন ফাইল ও সার্ভিস কেনা-বেচার করার জন্য একটি মার্কেটপ্লেস রয়েছে। এই সাইটে প্রায় সময়ই বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যা ফ্রিল্যান্সারদেরকে বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।

ওডেস্ক : www.oDesk.com



এক সাইটের প্রোভাইডারকে একটি প্রজেক্টে প্রতিঘণ্টা কাজের জন্য অর্থ দেয়া হয়। ক্লায়েন্ট সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অর্থাৎ কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসের জন্য এক বা একাধিক প্রোভাইডারকে নিয়োগ দেন। অনেক ক্ষেত্রে প্রজেক্ট শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন কাজ করতে হয়। কাজ করার মুহূর্তে প্রোভাইডারের ব্যয় করা সময় নির্ধারণ করার জন্য প্রোভাইডারের কমপিউটারে একটি সফটওয়্যার চালু রাখতে হয়, যা একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর তার ডেস্কটপের স্ক্রিনশট এবং অন্যান্য তথ্য ক্লায়েন্টের কাছে পাঠায়। ফলে ওই সময় তিনি কাজ করছেন কি না ক্লায়েন্ট সহজেই যাচাই করতে পারেন। এই সাইটে প্রতি কাজের জন্য ১০ শতাংশ অর্থ কমিশন হিসেবে দিতে হয়। যেহেতু প্রতিঘণ্টা কাজের জন্য মূল্য পরিশোধ করা হয়, তাই অন্য সাইটগুলোর তুলনায় এই সাইট থেকে অনেক বেশি পরিমাণে আয় করা সম্ভব। এখানে অনেক প্রজেক্ট পাওয়া যায়, যাতে সম্পূর্ণ প্রজেক্টের জন্য মূল্য পরিশোধ করা হয়। ফলে যারা ঘণ্টা ধরে কাজ করতে পছন্দ করেন না, তারাও এই সাইট থেকে কাজ করতে পারবেন।

ইল্যান্স : www.elance.com

এই সাইটটি আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এখানে ১৩ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন।



* গত ত্রিশ দিনে সাইটটিতে ৬৮ হাজার প্রজেক্ট এসেছে। এখানে ওডেস্কের মতো Hourly এবং Fixed price এই দুই ধরনের প্রজেক্টই পাওয়া যায়। এ সাইটেও চার ধরনের মেম্বারশিপ রয়েছে। সার্ভিস ফি হচ্ছে ৬.৭৫ থেকে ৮.৭৫ শতাংশ।

ভিওয়ার্কার : www.vworker.com
যদিও এই সাইটিতে নতুনদের প্রথম কাজ পাওয়া কিছুটা কষ্টসাধ্য, কিন্তু এর কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের জন্য অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের কাছে খুব জনপ্রিয়। এই সাইটে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফ্রিল্যান্সার রেজিস্ট্রেশন করেছেন। সাইটটির সার্ভিস চার্জ অন্যান্য সাইট থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রজেক্টের ধরনের ওপর ভিত্তি করে এখানে ৭.৫ থেকে ১৫ শতাংশ ফি দিতে হয়। এস্ক্রোতে অর্থ জমা রাখা এই সাইটে বাধ্যতামূলক। কাজ শুরুর আগে বায়ার প্রজেক্টের সম্পূর্ণ অর্থ এস্ক্রোতে জমা রাখেন, যা কাজ শেষে অর্থ পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা দেয়। নতুনদের জন্য এই সাইটে আলাদা কোনো সুবিধা নেই, ফলে প্রথম কাজ পাওয়াটা এই সাইটে তুলনামূলকভাবে সময়সাপেক্ষ।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস সাইটে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। এগুলো ভালোভাবে না জানার কারণে অনেকে সফলভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন না। নিচে এ ধরনের কয়েকটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হলো :

রেটিং : একটি কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ক্লায়েন্ট কাজের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে প্রোভাইডারকে ১ থেকে ১০-এর মধ্যে রেটিং (Ranking) দেন। এখানে সর্বোৎকৃষ্ট রেটিং হচ্ছে ১০ এবং সর্বনিম্ন ১। নতুন কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে এই রেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সবসময় ১০ রেটিং পাওয়ার জন্য প্রজেক্টের চাহিদা বা রিকোয়ারমেন্ট পরিপূর্ণভাবে দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করা উচিত।

র‌্যাঙ্কিং : একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইটে রেজিস্ট্রেশন করা সব প্রোভাইডারের মধ্যে একজন নির্দিষ্ট প্রোভাইডারের অবস্থান কত তা জানা যায় র‌্যাঙ্কিংয়ের (Ranking) মাধ্যমে। সাধারণত একজন প্রোভাইডারের গড় রেটিং এবং তিনি কত বেশি ডলারের কাজ করেছেন, তার ওপর ভিত্তি করে র‌্যাঙ্কিং নির্ধারণ করা হয়। রেটিংয়ের মতো র‌্যাঙ্কিংও নতুন কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যার র‌্যাঙ্কিং যত সামনের দিকে তার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে বেশি।

ডেডলাইন : প্রত্যেক প্রজেক্ট শেষ করার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বা ডেডলাইন (Deadline) থাকে। এই সময়ের আগে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হয়। কোনো প্রোভাইডার যদি ডেডলাইনের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারেন, তাহলে বায়ার ইচ্ছে করলে তাকে কোনো মূল্য পরিশোধ না করে সম্পন্ন কাজটি নিয়ে যেতে পারেন। উপরন্তু ক্লায়েন্ট সেই প্রোভাইডারকে একটি নিম্নমানের রেটিং দিয়ে দিতে পারেন। তাই কোনো প্রজেক্টের ডেডলাইন সময় প্রয়োজনের তুলনায় কম হলে কাজ শুরুর আগেই বায়ারকে অনুরোধ করে বাড়িয়ে নেয়া উচিত।

মেডিয়েশন/আর্বিট্রেশন : একটি প্রজেক্ট চলার সময় বায়ার ও প্রোভাইডারের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে তা সমাধানের জন্য আর্বিট্রেশন মেডিয়েশনের (mediation / tion) ব্যবস্থা রয়েছে। এই পদ্ধতিতে সাইটের যথাযথ কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।



এসক্রো : কাজ শুরু করার পর ক্লায়েন্ট কাজের সম্পূর্ণ অর্থ ওই ফ্রিল্যান্সিং সাইটে জমা রাখেন। এই জমা রাখাকে বলা হয় এসক্রো (Escrow), যা কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর কোডারের টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত করে। ক্লায়েন্ট টাকা এসক্রোতে জমা রাখা আগে কাজ শুরু করা উচিত নয়।

অর্থ উত্তোলনের উপায়

কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রোভাইডারের পাওনা অর্থ ফ্রিল্যান্সিং সাইটের অ্যাকাউন্টে জমা থাকে। মাসের শেষে বা মাসের মাঝামাঝি সময় সর্বমোট অর্থ বিভিন্ন উপায়ে দেশে নিয়ে আসা যায়। এখানে টাকা উত্তোলনের কয়েকটি কার্যকর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো :

ব্যাংক টু ব্যাংক ওয়্যার ট্র্যান্সফার : টাকা উত্তোলনের একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ উপায় হচ্ছে ওয়্যার ট্রান্সফার। এই পদ্ধতিতে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা সরাসরি প্রোভাইডারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এসে জমা হয়ে যায়। তবে এই পদ্ধতিতে চার্জ একটু বেশি, প্রতিবার টাকা উত্তোলনে ৩০ থেকে ৪৫ ডলার খরচ পড়বে। এই পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলন করতে হলে উল্লিখিত তথ্যগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইটে দিতে হবে : ০১. প্রোভাইডারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ব্যাংকের ঠিকানা এবং ব্যাংকের সুইফট কোড (Swift Code); ০২. ফ্রিল্যান্সিং সাইটটি যে দেশে সে দেশের একটি ব্যাংকের নাম, যা অর্থ পাঠানোর জন্য মধ্যবর্তী মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। এ জন্য আপনি ব্যাংকে গিয়ে জেনে নিতে পারেন, এরা ওই দেশের কোন কোন ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ দেয়া-নেয়া করে থাকে; ০৩. এরপর মধ্যবর্তী ওই ব্যাংকের রাউটিং (Routing) নম্বর সংগ্রহ করতে হবে, যা ব্যাংকটির ওয়েবসাইটে পাওয়া যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এই নম্বরকে বলা হয় ABA Routing Number।

পেওনার ডেবিট মাস্টারকার্ড : ওপরের দু’টি পদ্ধতি থেকে আরো দ্রুত পদ্ধতি হচ্ছে payoneer Devit Mastercard। সম্প্রতি প্রায় সব ফ্রিল্যান্সিং সাইট এই মাস্টারকার্ড সার্ভিসটি চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে আপনি টাকা খুবই দ্রুত পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে এটিএমের মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারেন। এ জন্য এককালীন খরচ পড়বে ২০ ডলার। আর সাইটটির মাসিক ব্যবস্থাপনা ফি ৩ ডলার। এটিএম থেকে প্রতিবার টাকা উত্তোলনের জন্য খরচ পড়বে ২.১৫ ডলার, সাথে উত্তোলন করা অর্থের ৩ শতাংশ। এই কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি অনলাইনে কেনাকাটাও করতে পারবেন। এমনকি ক্লায়েন্টরা তাদের মাস্টারকার্ড বা ভিসাকার্ড থেকে সরাসরি আপনাকে টাকা পাঠাতে পারবেন। পেওনার সাইট থেকে সরাসরি এই কার্ডের জন্য আবেদন করা যায় না। এটি পেতে হলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের যেকোনো একটি সাইট (ফ্রিল্যান্সার, ইল্যান্স, ওডেস্ক) থেকে আবেদন করলে ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এই কার্ড হাতে পাওয়া যায়।

আউটসোর্সিং সম্পর্কিত পরিসংখ্যান

ফ্রিল্যান্সারেরা প্রতিমাসে কত টাকা বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে আয় করে থাকেন, তা সঠিকভাবে বলা কঠিন। বিভিন্ন সাইটে নিজেদের পলিসির কারণে এরা এই তথ্য গোপন রাখেন। কিন্তু মাঝে মাঝে বিভিন্ন সাইট তার তথ্য প্রকাশ করে থাকে। সম্প্রতি ইল্যান্স তাদের দেশভিত্তিক কিছু ডাটা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, এই সাইটে বাংলাদেশের ১৫ হাজারেরও বেশি কোডার/প্রোভাইডার রেজিস্টার্ড আছেন, যারা ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বমোট ২২ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেছেন। মোট আয়ের হিসাবে তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম। অন্যদিকে তালিকার শীর্ষে থাকা ভারতের ফ্রিল্যান্সারেরা ইল্যান্স থেকে মোট আয় করেছেন ১০ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের একজন কোডার গড়ে ঘণ্টায় প্রায় ১০ ডলার করে আয় করছেন।

ইল্যান্সে বাংলাদেশের অবস্থান

মোট বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার : ১৫,৫৪২ জন; ২০০৬ থেকে এ পর্যন্ত আয় : ২,২৪৯,৫৯৩ ডলার; আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান : ১৪তম; ফ্রিল্যান্সার সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান : ৮ম; বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের কাজের গড় রেট : প্রতিঘণ্টায় ১০ ডলার।

অন্যদিকে ওডেক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাট কুপার জানান, বাংলাদেশের কোডারেরা সাধারণত প্রতিমাসে প্রায় ৫০ লাখ ডলার আয় করে থাকেন তার মার্কেটপ্লেস থেকে। যদিও তিনি মোট কোডারের সংখ্যা উল্লেখ করেননি, কিন্তু তিনি জানান বাংলাদেশের কোডারেরা তার সাইটে তৃতীয় বৃহত্তম। ওডেস্কে বাংলাদেশ লিখে সার্চ দিয়ে নিচে উল্লিখিত তথ্যগুলো পাওয়া গেছে : মোট বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার : ৫৭,৯৭৬ জন; ন্যূনতম ১ ডলার বা ১ ঘণ্টা কাজ করেছেন : ৬,০৬৯ জন (১০.৫%); কোনো কাজ পাননি : ৫১,৯০৭ জন (৮৯.৫%)।



অন্যদিকে ভিওয়ার্কার মার্কেটপ্লেসে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারেরা খুব একটা কাজ করেন না। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন বাংলাদেশের সায়ন, যিনি এই সাইটে সাড়ে তিন লাখ ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে ২৭৭তম অবস্থানে আছেন। তিনি মোট ৫২৪টি প্রজেক্টে কাজ করে প্রায় ৪ লাখ ডলার আয় করেছেন।

বিভিন্ন ওয়েবসাইট রিসার্চ করে আমরা মোটামুটি বলতে পারি, কোনো একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার মাসিক নিয়মিত কাজ করে গড়ে ১০০০ ডলার আয় করে থাকেন। তবে এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ ফ্রিল্যান্সারেরা এখনও যে কোনো কাজ পাচ্ছেন না। এটা হতে পারে তাদের মধ্যে রয়েছে দক্ষতার অভাব অথবা কিভাবে শুরু করতে হবে সে বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা।

ফ্রিল্যান্সিং এবং কর্মসংস্থান

ফ্রিল্যান্সিং বেকারত্ব নিরসনে ব্যাপকভাবে কাজ করতে পারে। আমাদের যে জনসংখ্যা এবং বেকারত্বের হার, তাতে করে আমাদের পক্ষে সবাইকে চাকরি দেয়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং ব্যাপক সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই নিজের কর্মসংস্থান করা সম্ভব। ফলে এর জন্য কোনো অফিস স্পেসের দরকার হয় না। শুধু দক্ষতা অর্জন করে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব এই খাত থেকে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ে আকৃষ্ট করে অনেকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব। আবার যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে কিছুটা সফল হয়েছেন, তারা টিম গঠনের মাধ্যমে অন্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে পারেন।

বেসিস ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড

২০১১ থেকে বেসিস ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বার্ষিক একটি পুরস্কারের আয়োজন করে থাকে। এতে বাংলাদেশ থেকে যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো করছেন বা সফল হয়েছেন, তাদেরকে সম্মাননা জানানো হয়। ২০১১ সালে সারা দেশ থেকে ১২ জনকে এ সম্মাননা জানানো হয়। ২০১২ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৫ জনকে এ সম্মাননা জানানো হয়। ক্যাটাগরিগুলো হলো : শিক্ষার্থী, ব্যক্তিগত ও কোম্পানি।

যেসব দক্ষতা প্রয়োজন

কারিগরি : কারিগরি (technical) দক্ষতা অর্জন হলো ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। আপনাকে অবশ্যই কোনো না কোনো বিষয়ে দক্ষতা আর্জন করতে হবে। যদি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে গিয়ে দেখেন, সেখানকার কাজ করার মতো কারিগরি দক্ষতা আপনার নেই তাহলে প্রথমেই আপনাকে সেই দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দক্ষতা অর্জন না করে আপনি এই সেক্টরে তেমন কিছুই করতে পারবেন না। দক্ষতা অর্জন না করে বিকল্প রাস্তা খুঁজতে গেলে বরং আপনার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

যোগাযোগ : আপনাকে অবশ্যই যোগাযোগের (Communication) দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আপনি যদি কোনো বায়ারের কাছ থেকে কোনো কাজ পেতে চান, তাহলে তার সাথে কার্যকর উপায়ে যোগাযোগ করতে হবে। যেমন : কাজের ডেমো দেখানো, কোনো কনফিউশন থাকলে জিজ্ঞাসা করা। আপনাকে নিজেকে মার্কেটিং করার দক্ষতাও আর্জন করতে হবে যদি আপনি সফল হতে চান।

ব্যবস্থাপনা : আপনাকে বিভিন্ন কাজ সঠিকভাবে করার জন্য নিজের মধ্যে ব্যবস্থাপনার (Management) বিষয়টি আয়ত্ত করতে হবে। তা না হলে কিছুদিন পর যখন আপনি কাজ পেতে থাকবেন, তখন বিভিন্ন প্রজেক্টের বিভিন্ন কাজ এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। ফলে বায়ার অসন্তুষ্ট হতে পারেন।

সময়ানুবর্তিতা : আপনাকে অবশ্যই সময়ানুবর্তী (Time management) হতে হবে। সময়ের কাজ সময়ে সাবমিট করতে হবে। তা না হলে আপনি বায়ার ধরে রাখতে পারবেন না বা বাজে রেটিং পাবেন।

নৈতিক : সবসময় সততার পরিচয় দিতে হবে। নৈতিক (Ethical) বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। আপনি যদি কোনো কাজ না পারেন তাহলে সে কাজ নিতে যাবেন না। এতে আপনি কাজটি করতেও পারবেন না, আবার বাজে রেটিংও পাবেন।

ধৈর্য ও লেগে থাকার গুণ : প্রথমদিকে আপনাকে ধৈর্যের (Patience) পরিচয় দিতে হবে। প্রথম কাজটি পেতে অনেকের বেশ কয়েক মাস সময় লেগে যায়, আবার অনেকেই কয়েকটি বিডের পরই কাজ পেয়ে যান। তাই প্রথমদিকে লেগে থাকতে হবে ও ধীরে ধীরে নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে।

দক্ষতা অর্জনের জন্য কী কী রিসোর্স ইন্টারনেট থেকে পাবেন :

০১. ব্লগ http://freelancerstory.blogspot.com
০২. গ্রুপ : http://groups.google.com/group/bdosn_outsourcing
০৩. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বেসিক : http://www.w3schools.com
০৪. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভান্সড : http://net.tutsplus.com
০৫. গ্রাফিক্স ডিজাইন : http://psd.tutsplus.com

ফ্রিল্যান্সিং স্পাম/স্ক্যাম

ইদানীং ফ্রিল্যান্সিংয়ের নামে বিভিন্ন সাইট মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মূল ধারণা হলো প্রথমে কোনো দক্ষতা অর্জন এবং সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে উপার্জন করা। কিন্তু ইদানীং কিছু সাইট যেমন : Dolancer.com, skylancer.com ফ্রিল্যান্সিংয়ের নাম করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এ বিষয়ে কমপিউটার জগৎ-এর ফেব্রুয়ারি ২০১২ সংখ্যায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

মহিলা ফ্রিল্যান্সার

ফ্রিল্যান্সিং জগতে মেয়েদের উপস্থিতি যদিও এখনো তেমন একটা সরব নয়, তবু অনেকেই কিন্তু এই পেশায় ভালো করছেন। অনেক মেয়ে আছেন যারা দিনের বড় একটা সময় ঘরে কাটান। ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে তাদের জন্য একটা ভালো আয়ের মাধ্যম। তাছাড়া গৃহিণীরা বাড়তি কিছু আয়ের মাধ্যমে সংসারে সাহায্যও করতে পারেন।



জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস ভিওয়ার্কারে Girl.Team2009 নামে ৪ জন মেয়ের একটি গ্রুপ প্রায় ৪৫০টি কাজ করে। এখন এই সাইটে সারা পৃথিবীতে তাদের অবস্থান ৬৩৭। এরা মূলত ডাটা এন্ট্রি, ওয়েব রিসোর্স, ট্রান্সলেশন ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ করে থাকেন।

প্রতিবদ্ধীদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং

বাংলাদেশি সিস্টেমস চেঞ্জ অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদেরকে নিয়ে কাজ করছে। শারীরিকভাবে বা কোনোভাবে অক্ষম হলেও বাকি সব বিষয়ে তারা সক্ষম। তাদের পক্ষে ঘরে বসে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করা খুবই স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে অ্যাকাডেমি ফর ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সায়েন্স তথা এএমএস ও বাংলাদেশি সিস্টেমস চেঞ্জ অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) প্রশিক্ষণ পার্টনার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সেই অনুযায়ী দু’জন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে তা আরো বেগবান হবে।

শর্মী জন্মগতভাবে শারীরিক সমস্যার শিকার। ক্র্যাচ দিয়ে হাঁটতে পারলেও বেশ কষ্টই হয় তার। মাকে নিয়ে ছোট্ট সংসার বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রামে একাই লড়াই করে যাচ্ছেন তিনি। বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর হলো। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগে, নেই কোনো ভাই। একজন পরিচিত ব্যক্তির অফিসে গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের কাজ করছেন, ইচ্ছে ঘরে বসে আরো কিছু আয় করে সংসারে সচ্ছলতা আনা।

লোকাল হিরো

জনপ্রিয় আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস www.freelancer.com ১৫ নভেম্বর ২০১১ থেকে ৩১ জানুয়ারি ২০১২ পর্যন্ত ÔExpose the Freelancer.comÕ শীর্ষক একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন দেশের ৪৪০ ফ্রিল্যান্সার অংশ নেন। প্রতিযোগিতার লক্ষ্য Freelancer.com সাইটের লোগোকে সৃজনশীল উপায়ে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। প্রতিযোগিতার ফলাফল গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয়। এতে ১০ হাজার ডলারের প্রথম পুরস্কার পান বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার, যিনি সাইটিতে Dataexpert01 নামে পরিচিত। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার পান পাকিস্তান এবং নেপালের দু’জন ফ্রিল্যন্সার।

Dataexpert01 টিম প্রতিযোগিতার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে Freelancer.com -এর লোগো সংবলিত ২০০০ স্কয়ার ফুটের ব্যানার তৈরিসহ একটি বিশাল র‌্যালির আয়োজন করে, যাতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সের ও বিভিন্ন পেশার ৩০০০ জন অংশ নেন। র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালির পাশাপাশি উপস্থিত জনগণকে Freelancer.com সাইটের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় এবং সাইট থেকে কিভাবে আয় করতে হয় সে সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়।

বিভিন্ন অর্জন

গার্টনার রিপোর্ট আনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩০টি আউটসোর্সিং জায়গার মধ্যে অন্যতম। তা ছাড়া বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বাংলাদেশীরা খুবই ভালো করছেন। ওডেক্সে আমাদের অবস্থান এখন বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ। ওডেক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাট কুপার ডিসেম্বরে ঢাকায় ই-এশিয়া প্রোগ্রামে এসে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সম্প্রতি ওডেক্সের ‘কন্ট্রাক্টর অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে’-এর ভেন্যু হিসেবে ঢাকাকে নির্বাচন করা হয়েছে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে বিভিন্ন বাধা

ইন্টারনেটের ধীর গতি : ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু ইন্টারনেটের মাধ্যমে করতে হয়, তাই ভালো ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট খুব জরুরি। নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়া কোনোভাবেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে ভালো করা সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে বায়ারেরা ঠিকমতো যোগযোগ রাখতে না পারলে বিরক্ত হন।

উচ্চমূল্যের ইন্টারনেট : নতুন একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রথম কাজটি পেতে অনেক সময় কিছুদিন সময় লাগে। কাজ ও পেমেন্ট পাওয়া পর্যন্ত কিন্তু তাকে ধৈর্য ধরে কাজটি করে যেতে হয়। এসব ক্ষেত্রে উচ্চমূল্যের ইন্টারনেট একটি বড় বাধা।

কী করা যেতে পারে

সহজলভ্য ইন্টারনেট : ইন্টারনেটকে অবশ্যই সহজলভ্য, নিরবচ্ছিন্ন করতে হবে। শক্তিশালী ইন্টারনেট অবকাঠামো ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং খাতকে কোনোভাবেই জনপ্রিয় ও কার্যকর করা সম্ভব নয়। তাই সুলভে ইন্টারনেটকে গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে দিতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাথে জড়িত ব্যক্তি বা গ্রুপকে বিশেষ সুবিধা : সবার মেধা বা কর্মোদ্দীপনা সমান নয়। বিপুলসংখ্যক মানুষকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাথে জড়িত করতে চাইলে তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সাথে সাথে প্রথমদিকে তাদেরকে বিদেশ থেকে আনা টাকার ওপর ট্যাক্স মওকুফ করে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে।

ঢাকার বাইরে আউটসোর্সিং হাব : ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে যেহেতু কাজের স্থান নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, সেহেতু ঢাকার বাইরে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং হাব গড়ে তোলা যেতে পারে। এতে ঢাকার ওপর চাপ অনেকটাই কমানো সম্ভব এবং ঢাকার বাইরে বিপুলসংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব।

কয়েকজন মিলে একটি জায়গায় যদি কাজ করতে পারে : একার পক্ষে অনেক সময় ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো করা যায় না বা বিজনেসকে বড় করা যায় না। সে ক্ষেত্রে কয়েকজন ফ্রিল্যান্সার মিলে একটি গ্রুপ করে নেয়া যেতে পারে। অনেক সময় তা কোম্পানির আকারেও হতে পারে।

ল্যাপটপ সংগ্রহের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা : বাংলাদেশ সরকারের যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে ল্যাপটপ কেনার জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা আছে। ল্যাপটপ ঋণটিকে আরো জনপ্রিয় করে তুলতে হবে।

উপসংহার

বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং হতে পারে অর্থনৈতিক মুক্তির উপায়। দেশের দক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে জনশক্তিতে পরিণত করতে এটি হতে পারে একটি নিয়ামক। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সার্ভিস চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার, ইন্টারনেটের গতি বড়ানোসহ আরো সহজলভ্য করতে হবে। যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী তাদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া করা যেতে পারে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, প্রথম অবস্থায় অনলাইনে কাজ পাওয়াটা সহজ নয়। ধৈর্য ও পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে। কারণ এখানে আপনাকে বিভিন্ন দেশের দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের সাথে প্রতিযোগিতা/বিড করে কাজ আনতে হবে। আত্মবিশ্বাসী, প্রত্যয়ী ও সমসাময়িক তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা থাকলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা সম্ভব।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : zakaria.cse@gmail.com, jabedmorshed@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা