• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > শিক্ষা-প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে, কমেছে বরাদ্দের হার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
শিক্ষা-প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে, কমেছে বরাদ্দের হার
শিক্ষা ও প্রযুক্তির উন্নয়নের অপর অর্থ একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। এটি এখন বিতর্কাতীত এক সত্য। সেজন্য অন্যান্য আরও অনেক দেশের মতো আমাদের দেশেও শিক্ষা ও প্রযুক্তি দুটিই আলাদাভাবে অগ্রাধিকার দুই খাত। এসব খাতে বাজেট বরাদ্দ সময়ের সাথে বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, এসব খাতে প্রতিবছর বাড়ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। একই সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানও। কিন্তু সে তুলনায় বরাদ্দের হার বাড়ছে না। এতদিন শিক্ষা খাত বলতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেই বোঝাত। কিন্তু ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে শিক্ষার সাথে প্রযুক্তি যোগ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বাজেট যুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষা ও প্রযুক্তি একসাথে যুক্ত করা হলেও কমেছে বরাদ্দের হার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শুধু শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ১০.৭১ শতাংশ। অথচ চলতি অর্থবছরে এই হার ছিল ১১.৬৬ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনদের তাগিদ- শিক্ষা খাত অন্যতম বৃহত্তম খাত। আর প্রযুক্তি এখন উন্নয়নের সর্বাধিক উত্তম হাতিয়ার। তাই আমরা মনে করি, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেট বরাদ্দের হার বাড়ানো দরকার। কারণ, প্রযুক্তি এগিয়ে না গেলে দেশ এগোবে না। কিন্তু দুই খাতেই বরাদ্দের হার কমিয়ে দেখা হয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেট বরাদ্দ ১১.৬ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেট বরাদ্দ কমেছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। এদিকে এই প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইন শপিংয়ের ওপর ৪ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে। বিষয়টি ই-কমার্স খাত ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কর্মকা--র ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রস্তাবিত বাজেটে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বরাদ্দ ১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। চলতি বছরে এ বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল ফোনে কথা বলা ও সেলফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ আরও ব্যয়বহুল করে তোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ, এ বাজেটে ভোক্তা ও শিল্পের ওপর বেশ কয়েকটি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব রয়েছে। মুঠোফোনের সিমকার্ডের মাধ্যমে ফোন করা, ইন্টারনেট ক্ষুদেবার্তা, ভাইবারসহ সব সেবার ওপর এখন আমাদেরকে ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে। এর ফলে মুঠোফোন ব্যবহারে ১০০ টাকায় প্রথমে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক যোগ হবে। ওই টাকার ওপর আগের ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে একজন গ্রাহককে মোট ২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকার মুঠোফোন সেবা ব্যবহারের জন্য গুনতে হবে ১২০ টাকা ৭৫ পয়সা। আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য মুঠোফোনের সিম বা রিমকার্ডের ওপর বাড়তি কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে মুঠোফোনের সিমকার্ডের ওপর কর ৩০০ থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। আর প্রস্তাবিত রিমকার্ডের কর আগের মতোই ১০০ টাকা রাখা হয়েছে। দেশের মোবাইল অপারেটরদের দাবি ছিল এ দুই ধরনের করই পুরোপুরি তুলে দেয়ার। মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসিয়োসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস, বাংলাদেশ (অ্যামটব) প্রাক-বাজেট প্রস্তাবনায় বলেছিল- সিম কর ও সিম প্রতিস্থাপন কর তুলে দেয়া হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে দ্রুততম সময়ে মুঠোফোন সেবা পৌঁছানো যেত। এর ফলে দেশের বর্তমান টেলিঘনত্ব ৭২ শতাংশ থেকে আগামী এক বছরে ৮৫ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব হবে। অর্থমন্ত্রী তাদের দাবি আমলে নিলে মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি প্রসারের কাজটি গতি পেত নিশ্চিতভাবেই। সম্প্রতি মিয়ানমার সরকার মোবাইল সেবার ওপর ৫ শতাংশ হারে কর আরোপের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। মিয়ানমারের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারতেন আমাদের অর্থমন্ত্রী। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাবে মোবাইল সেবার প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন- কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক ও যশোরে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণাধীন। আইটি ভিলেজের জন্য ঢাকার মহাখালীতে ও আঞ্চলিক ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য বরিশালে ক্লাউডচরে, সিলেটে ইলেকট্রিনিক সিটি, রাজশাহীতে বরন্দ্রে সিলিকন সিটির জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সাথে খুলনা, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে হাইটেক ও সফটওয়্যার পার্ক গড়ে তোলার জায়গা চিহ্নিত করার কাজ চলছে এবং সব জেলায় আইটি শিল্প গড়ে তোলা হবে। প্রথম পর্যায়ে ১২টি জেলায় আইটি শিল্প গড়ে তোলা হবে। সেই সাথে ৮০০ সরকারি অফিসে গড়ে তোলা হচ্ছে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা। ১১ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার লাইন বসানো হচ্ছে সব জেলার ১০১৬টি ইউনিয়নে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানোর জন্য। সম্প্রসারিত হচ্ছে ব্রডব্যান্ড সুবিধাও। প্রশ্ন হচ্ছে- এসবের জন্য যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন, সে অর্থ আসবে কোথা থেকে, এ প্রশ্নের সুস্পষ্ট উত্তর বাজেটে নেই।


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - জুন সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস