• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > প্রযুক্তি খাতের ঐন্দ্রজালিক বাজেট
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: ইমদাদুল হক
মোট লেখা:৬২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
বাজেট
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
প্রযুক্তি খাতের ঐন্দ্রজালিক বাজেট
গত ৪ জুন সংসদে পেশ করা হয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। মাসজুড়ে আলোচনার পর চূড়ান্ত হবে স্বল্প সম্পদের দেশে উন্নত ও টেকসই অর্থনীতি গড়ে তোলার অতি জটিল এ সমীকরণটি। বদলে যাওয়া সমাজ, পারস্পরিক সংঘাত, অবিশ্বাস, মানুষের অধিকার পূরণ, অর্থনৈতিক অপরাধ জগতের সাথে লড়া-পেটা, সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলিয়েই ‘রূপকল্প-২১’ বাস্তবায়ন করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। মেধাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের মধ্য দিয়েই মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠায় বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতটি এবার ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে হতাশা, সরকারি খাতের দুর্বল চাহিদা, প্রকট অবকাঠামো ঘাটতির কারণে যখন রাজস্ব আহরণ লক্ষ্য থেকে বেশ খানিকটা নিচে, ঠিক সেই সময়ে সংসদে বৃত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জ নিয়ে সপ্তমবারের মতো এ বাজেট পেশ করা হলো। আগের পাঁচ বছরে লক্ষ্য অর্জন না হওয়ার কথা স্বীকার করেই প্রযুক্তির দ্যুতিতে নৈরাশ্য প্রতিকার ও প্রতিরোধহীন দুর্নীতি এবং তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব সমস্যা জয় করে অনেকটা ম্যাজিক দিয়েই সব প্রতিবন্ধকতাকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেটে প্রযুক্তি খাত
স্বতন্ত্রভাবে না হলেও বাজেটে দুটি ধারায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উন্নয়ন ও মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বরাদ্দ অনুযায়ী এই খাতের উন্নয়নে সামগ্রিকভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের জন্য বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ২ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জন্য নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের অধীনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা।
দেশে প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইনে বেচাকেনার ওপর ৪ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া প্রযুক্তির কাজে ব্যবহৃত ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন চার্জে ব্যবহৃত পাওয়ার ব্যাংকের ওপর শুল্ক ২৫ থেকে ১০ শতাংশে নামানো হয়েছে। ফটোকপিয়ার ও ফ্যাক্স সুবিধা সমন্বিত প্রিন্টার (মাল্টিপ্রিন্টার) আমদানি কর ১০ থেকে ৫ শতাংশে কমানের প্রস্তাব করা হয়েছে। মোবাইল সিম কর ৩০০ থেকে ১০০ টাকা করা হয়েছে। বছরজুড়ে আলোচনায় থাকা ইন্টারনেটের ওপর থেকে ব্যবহারকারী পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়নি। অপরদিকে মোবাইল সিম বা রিমের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবায় ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে মোবাইলে কথা বলা ও ডাটা স্থানান্তরের ব্যয় বাড়তে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল সিম বা রিমের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবায় ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ ৪৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রস্তাবিত বাজেটে খাতটিতে ৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। আসন্ন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ১ হাজার ৭৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর এ খাতে সংশোধিত উন্নয়ন ব্যয় ৮০৪ কোটি টাকা। আর ডাক ও টেলিযোগাযোগ খাতে আসন্ন অর্থবছরে মোট ২ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে খাতটির উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ রাখা হয় ৯৮৫ কোটি টাকা। এছাড়া সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৮ হাজার ডাকঘর ও ৫০০ উপজেলা ডাকঘরকে ই-সেন্টারে রূপান্তরের কাজ চলছে। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে এ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বরাদ্দ কমে অর্ধেক
২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছরের সংশোধিত বাজেটে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। সেই হিসেবে বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ অর্ধেকেরও বেশি কমানো হয়েছে। এবারের বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। আর ডাক ও টেলিযোগাযোগ খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে ২ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। বাজেট প্রস্তাব ঘোষণায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ২০১৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত দেশে সর্বমোট ১২ কোটি ৪৭ লাখ মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৪ কোটি ৫৭ লাখে উন্নীত হয়েছে। এই সময়ে দেশে টেলিডেনসিটি ৮০.১ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ডেনসিটি ২৯.৩ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের সহায়তায় বিভিন্ন পৌরসভায় পৌর ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সব ইউনিয়ন পরিষদে অনলাইন জন্মনিবন্ধন চালু হয়েছে। দেশের ৪ হাজার ৫৪৭টি ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। দেশজুড়ে স্থাপিত প্রায় ২৪৫টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কৃষি তথ্য ও সেবা দেয়া হচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ এবং উচ্চশিক্ষার প্রসারের জন্য ১২৮টি উপজেলায় রিসোর্স সেন্টার স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়া ৬৪টি সিভিল সার্জন অফিস ও উপজেলা স্বাস্থ্য অফিস ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার প্রসারে ২০ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নির্মাণ ও ল্যাপটপসহ ইন্টারনেট সংযোগ দোয়া হয়েছে। ডিজিটাল কনটেন্ট শেয়ারের জন্য ‘শিক্ষক বাতায়ন’ নামে একটি ওয়েব পোর্টালও চালু করা হয়েছে।
ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন
দেশে প্রযুক্তি শিল্পের বিকাশ ও সুবিধা বাড়াতে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নের অভাস রয়েছে এবারের বাজেটে। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বর্তমানে ৮০০ সরকারি অফিসে ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক এবং যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। এলাকাভিত্তিক ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে মহাখালী আইটি ভিলেজ, বরিশালের চন্দ্রদ্বীপ ক্লাউডচর, সিলেট ইলেকট্রনিক সিটি ও রাজশাহীর বরেন্দ্র সিলিকন সিটি স্থাপনের লক্ষ্যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি খুলনা, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে হাইটেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ১২টি জেলায় আইটি ভিলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, দেশে ৮ হাজার ৫০০টি পোস্ট-ই-সেন্টার চালুর কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, হাইটেক পার্ক বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করবে। এ কারণে হাইটেক পার্কের ডেভেলপারদের বিদ্যুৎ বিল এবং ডেভেলপার ও বিনিয়োগকারীদের জোগানদার সেবার ক্ষেত্রে বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সাথে বক্তৃতায় ২০১৬ সালের মধ্যে মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১) উৎক্ষেপণের স্লট নির্ধারণ ও চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিপরীতে প্রস্তাবিত বরাদ্দের মোট অঙ্ক ৩ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে কমপিউটার সমিতির সভাপতি এএইচএম মাহফুজুল আরিফ বলেন, ‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ : উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথ রচনা’র প্রত্যয় ব্যক্ত করে ৬ শতাংশের চক্র ভেঙে বাজেটে অর্থমন্ত্রী প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশে উন্নীত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। গত বাজেটে তিনি ‘সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ’ গড়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, এবারে তা আরও একটু পরিমার্জিত করেছেন। ২০০৯ সালে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ৭৬ কোটি টাকার বাজেটকে এখন শুধু আইসিটি ডিভিশনের বরাদ্দকে ১৩০০ কোটি টাকায় উন্নীত করাকে আমাদের পক্ষে কোনোভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। গতবারের তুলনায়ই এই বৃদ্ধি ৩৫৮ কোটি টাকা। ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সরকারের ইতিবাচক ও সাহসী মনোভাবেরই প্রতিফলন ঘটেছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাজেটে সফটওয়্যার ও সেবা খাতের কর অবকাশ ২০২৪ সাল অবধি বাড়ানো, কমপিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ব্যবহৃত ক্যামেরার শুল্ক ২৫ থেকে ১০ শতাংশ করা, সিম কর ৩০০ থেকে ১০০ টাকা করা, অপারেটিং সিস্টেম, ডাটাবেজ ইত্যাদি সফটওয়্যার ছাড়া অন্য সফটওয়্যারের ওপর ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা এবং হাইটেক পার্কে যারা ব্যবসায় করবেন তাদের জন্য বিদ্যুৎ ও ভ্যাট মওকুফ করার মতো ইতিবাচক প্রস্তাব থাকলেও হার্ডওয়্যার খাত ও আইটি অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। অথচ হার্ডওয়্যার ও আইটি আবকাঠামো ছাড়া এর কোনোটি থেকেই সুফল পাওয়া সুদূরপরাহত বিষয়। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে আইসিটি ভৌত অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করতে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও ইনফরমেশন টেকনোলজি পার্কের আগে হার্ডওয়্যার খাতে বিশেষ গুরুত্ব দাবি রাখে। একইভাবে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ করেছি, হার্ডওয়্যার শিল্পকে বাইরে রেখেই আইসিটি সেবা খাতে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, চূড়ান্ত বাজেটে আইটি ও আইটিইএসের মধ্যে হার্ডওয়্যার খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এটা না হলে নতুন উদ্যোক্তারা যেমন প্রযুক্তি ব্যবসায় আগ্রহ দেখাবে না, তখন আমরা শুধু আইটি ভোক্তার আবর্তেই ঘুরপাক খাব। প্রযুক্তি খাত শিল্পায়নের শুরুতেই হোঁচট খাবে। এর ফলে মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করাও দুরূহ হয়ে পড়বে। তাই ডিজিটাল ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে শুধু আইসিটি ডিভিশনই নয়, সরকারের অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর ক্ষেত্রেও তথ্যপ্রযুক্তি সুবিধা নিশ্চিত করতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। হার্ডওয়্যার খাতকে কোনোভাবেই পেছনে ফেললে চলবে না।
তিনি বলেন, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও নেটওয়ার্ক খাতের সুসমন্বিত উন্নয়ন ছাড়া প্রযুক্তি খাত কখনই উৎপাদনশীল হতে পারবে না। তাই বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে হার্ডওয়্যার শিল্প বিকাশের অন্তরায় দূর করে সমান সুযোগ প্রত্যাশা করছি।
একই সাথে প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন করে অনলাইন কেনাকাটার ওপর ৪ শতাংশ কর ধার্য করা এবং ব্যবহারকারী পর্যায়ে ইন্টারনেটে ১৫ শতাংশ কর অব্যাহত রাখার বিষয়টিও দেশের তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে অন্তরায় হয়ে থাকবে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সিম বা রিমের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবায় ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে মোবাইলে কথা বলা ও ডাটা (ইন্টারনেট) ব্যবহারের ব্যয় বাড়বে। এর ওপর প্রস্তাবিত ১ শতাংশ সারচার্জ সেবার খরচ আরও বেড়ে যাবে। এমনিতে মোবাইল ফোনে কথা বললে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করলে গ্রাহককে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর বা মূসক দিতে হয়। প্রস্তাবিত ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলে মোবাইল ব্যবহার খরচ বেড়ে যাবে। ফলে মোবাইল নির্ভরপ্রযুক্তি সেবার ব্যয় ভোক্তা পর্যায়ে বেড়ে যাবে।
সার্বিকভাবে এই ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নিরুৎসাহিত করবে। এর মাধ্যমে যে আয় হচ্ছে তাতেও ভাটা পড়বে। বাড়তি চাপে পড়বেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা মুক্তপেশাজীবীরা। দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তি খাতের সবার সমোচ্চারিত দাবিÑ সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট তুলে নেয়া দরকার। যখন সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রচেষ্টায় প্রযুক্তি খাত থেকে জিডিপিতে ২ শতাংশ অবদান রাখার মাধ্যমে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চলছে, তখন আয়ের দিক দিয়ে খুবই সামান্য কিছু অমীমাংসিত বিষয় বারবারই উপেক্ষিত থাকছে! আমরা আশা করব, প্রস্তাবিত বাজেটে এই বিষয়গুলো বিবেচনায় করে অর্থমন্ত্রী ‘ডিজিটাল বাংলদেশ’ বাস্তবায়নে আমাদের প্রচেষ্টাকে আরও গতিময় করার সুযোগ তৈরি করবেন। সাময়িক কিছু নগদ আয়ের কথা বিবেচনায় না এনে দীর্ঘমেয়াদি সফলতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবেন।
দেশজুড়ে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড বাড়বে ইন্টারনেট সেবা
ইন্টারনেট সেবা ছড়িয়ে দিতে সারাদেশে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ তথ্য জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী জানান, জনগণকে ইন্টারনেটের সেবা দেয়ার লক্ষ্যে সব জেলার এক হাজার ছয়টি ইউনিয়নে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হয়ে শিগগিরই আমরা ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি ২০০ প্রতি সেকেন্ডে গিগাবাইট (জিবিপিএস) থেকে ১ হাজার ৩০০ জিবিপিএসে উন্নীত করব।’ অপরদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ইন্টারনেট ও ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছেন। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, জনগণকে ইন্টারনেটের সেবা দেয়ার লক্ষ্যে প্রতিটি জেলার ১০০৬টি ইউনিয়নে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হয়ে শিগগির ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি ২০০ জিবিপিএস হতে ১ হাজার ৩০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে। এছাড়া ৮ হাজার ৫০০টি পোস্ট-ই সন্টার চালুর কার্যক্রম ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, অর্থমন্ত্রী নিজেই জানেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্রসার জিডিপির প্রবৃদ্ধি আনে। আমরা ২০০৯ সাল থেকেই ইন্টারনেটের ভ্যাট প্রত্যাহার করার কথা বলে আসছি। সরকার সেটি না করে নতুন করে সম্পূরক কর আরোপ করায় পুরো বিষয়টিকেই দুঃখজনক বলে মনে করতে হবে।
ডিজিটাল ডাক্তার
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মিনি ল্যাপটপ হবে ডিজিটাল ডাক্তার’। এই স্লোগানকে সামনে রেখে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে মোট ১৩ হাজার ৮৬১টি মিনি ল্যাপটপ দেয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণ টেলিমেডিসিন সেবা, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য ও স্বাস্থ্য শিক্ষার সুযোগ পাবেন। এছাড়া দেশের ৬৪টি হাসপাতাল ও ৪১৮টি উপজেলা হাসপাতালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার।
প্রযুক্তির কর রেয়াত ১০ বছর, মূসক সুবিধা
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কমপিউটারসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যে প্রদত্ত শুল্ক ও করের রেয়াতি সুবিধা আগামী অর্থবছরেও অব্যাহত রাখা হয়েছে। এই সুযোগ পূর্বনির্ধারিত ২০১৯ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আরও দশ বছর পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যে বিদ্যমান কর সুবিধা বলবৎ থাকছে।
তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তিতে ব্যবহার্য ক্যামেরার শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। একই সাথে মোবাইল ফোন চার্জে ব্যবহৃত পোর্টেবল পাওয়ার চার্জার আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া প্রিন্টারের শুল্ক ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রযুক্তিপণ্য সরবরাহে ব্যাকং টু ব্যাংক এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৩ শতাংশ অগ্রিম আয় কর (এআইটি) থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাজেটের কিছু কর কাঠামো নিয়ে এরই মাঝে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। আমাদের সেই প্রসঙ্গগুলোই আলোচনায় আনা দরকার। অর্থমন্ত্রী সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাজেটে কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও যোগাযোগ খাতে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূরীকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ, আইসিটি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সংক্রান্ত সেবা রফতানিতে সুনির্দিষ্টি কৌশল প্রণয়ন, সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগে গতিশীলতা আনয়ন ও রফতানির গতিশীলতা ও একই সাথে পণ্যের বৈচিত্র্যায়ন। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী চলতি বছরে জুলাই থেকে এসব লক্ষ্য পূরণের কাজ চলবে বলে বাজেট বক্তব্যে উল্লেখ করেন। আমরা লক্ষ করেছি, এখানে শুধু আইসিটি সেবা রফতানির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই অভিপ্রায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকারের পুরোটা হতে পারে না। যাই হোক, বাজেটটি ডিজিটাল বাংলাদেশের না হলেও আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সরকারের আন্তরিকতা ও উৎসাহকে অভিনন্দিত করছি। পাশাপাশি সরকার এই বাজেটে যেসব ক্ষেত্রে কর ও মূসক প্রয়োগ করেছে সেগুলো নিয়ে একটু কথা বলা দরকার। ই-কমার্সের ওপর ভ্যাট আরোপ, ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার না করা ও মোবাইল সেবার ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক কর আরোপ সরকারের পক্ষ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে একটি ভুল সঙ্কেত দেয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখছে, তার মাঝে একটি বড় বিষয় হলো ইন্টারনেটের প্রসার।
প্রযুক্তিপণ্য সেবায় দামের প্রভাব
বাজেটে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কহার, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন করে (মূসক) ছাড় বা অব্যাহতি কিংবা শুল্ক রেয়াতি সুবিধা দেয়া হলে পণ্যের দাম কমে থাকে। আবার এসব সুবিধার উল্টোটা হলে অর্থাৎ শুল্ক ও করসমূহ বাড়ানো হলে পণ্যের দাম বাড়ে। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী সিমকার্ড আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্কহার ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করায় মোবাইল সিমের দাম আরও বাড়বে। বাজেটে এলসিডি ও এলইডি টেলিভিশন তৈরির পূর্ণাঙ্গ প্যানেল এবং অপটিক্যাল ফাইবারের ওপর শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করায় এর দাম বাড়তে পারে। একই সাথে এলইডি ল্যাম্প ও বাল্বের ওপর ৫ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করায় দাম বাড়তে পারে এলইডি ও এলসিডি টিভির। এর বাইরে বিভিন্ন ধরনের সাউন্ড রেকর্ডিং বা রিপ্রডিউসিং অ্যাপারেটাস (ম্যাগনেটিক, অপটিক্যাল বা সেমিকন্ডাক্টর মিডিয়া ব্যবহারকারী); সম্পূর্ণ তৈরি সাউন্ড রেকর্ডিং বা রিপ্রডিউসিং এপারেটাস; সম্পূর্ণ তৈরি ভিডিও রেকর্ডিং বা রিপ্রডিউসিংয়ের যন্ত্রপাতি; লোডেড প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডের দাম বাড়তে পারে। একই সাথে প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবায় বর্তমানে গ্রাহকদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেয়ার পরও ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১ শতাংশ সারচার্জ যোগ হলে ১০০ টাকার ব্যবহারে গ্রাহকদের মোট ২১ টাকা বেশি খরচ করতে হবে।
অপরদিকে বাজেটে সৌরবিদ্যুৎ ও এ কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ওপর শুল্কহার কমানোর কারণে দাম কমতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষাকারী সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের মহৎ উদ্যোগকে নীতিগত সহযোগিতা দেয়ার লক্ষ্যে ইডকল নিবন্ধিত সোলার প্যানেল নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কাছে ৬০ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যাটারি উৎপাদনকারীদের মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব রাখা হয়েছে বাজেটে। এতে করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর প্রযুক্তি ডিভাইসের দাম কমতে পারে। বাজারে বিক্রি হওয়া ক্লোজ সার্কিট, আইপি, ওয়েব ক্যামেরাসহ অন্যান্য ক্যামেরার দাম অনেকাংশে কমে যাবে। আর আলোচিত ১৯ ইঞ্চির চেয়ে বড় পর্দার মনিটর কিনতে গিয়েও কোনো সুবিধা পাওয়া যাবে না। অপরিবর্তিত থাকবে ল্যাপটপ, পিসির দাম।
মূলধনী যন্ত্রপাতিতে আমদানি শুল্ক কমল
প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের মূলধনী যন্ত্রপাতির ওপর আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আমদানি করা সব যন্ত্রাংশের মূল্য সংযোজন কর (মূসক) মওকুফের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোর উন্নয়নে ব্যবহার্য পণ্য যেমন গ্র্যান্ড মাস্টার ক্লক, মডিউলেটর, মাল্টিপ্লেক্সার, অপটিক্যাল ফাইবার প্লাটফর্ম, নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (এনএমএস) ১৫ শতাংশ মূসক দিতে হতো। আইসিটি বিভাগের আবেদন ও সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এই মূসক প্রত্যাহারে প্রস্তাব করা হয়েছে। আমদানি শুল্ক ২ শতাংশের পরিবর্তে মূল যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। তবে এ শুল্ক স্তরের কমপিউটার পণ্যে আগের মতো ২ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হবে। এর ফলে আমদানি শুল্ক হারের স্তর হলো ০, ১, ২, ৫, ১০ ও ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে ২৫ ও ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক স্তরে যেসব পণ্যে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক রয়েছে, তা পরিবর্তন করে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট বক্তৃতায় হাইটেক পার্ক বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। এ কারণে হাইটেক পার্কের ডেভেলপারদের বিদ্যুৎ বিল এবং ডেভেলপার ও বিনিয়োগকারীদের জোগানদার সেবার ক্ষেত্রে বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) মওকুফের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - জুন সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস