• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > অদম্য অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় ও ব্যান্ডউইডথের দাম কমানো
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
অদম্য অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় ও ব্যান্ডউইডথের দাম কমানো
শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) বন্ধ করার ব্যাপারে সরকারি পর্যায়ে বারবার নানা প্রতিশ্রম্নতি ও দৃঢ়সঙ্কল্প ঘোষণার পরও থামছে না অবৈধ ভিওআইপির অদম্য বেড়ে চলা। অপরদিকে কমছে বৈধ আন্তর্জাতিক কলের সংখ্যা, যার ফলে জাতি বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও মোবাইল অপারেটরদের দেয়া তথ্যমতে, ২৪ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন বৈধ ৯ কোটি মিনিট আন্তর্জাতিক কল এসেছে। অথচ গত জুন পর্যন্ত দেশে গড়ে প্রতিদিন এই বৈধ কলের পরিমাণ ছিল ১২ কোটি মিনিট। এই সময়ের মধ্যে এক পর্যায়ে একদিনে সর্বোচ্চ ১২ কোটি মিনিট কল আসার রেকর্ডও রয়েছে। এই হিসেবে প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে বৈধ আন্তর্জাতিক কল আসা ২৮ শতাংশ বা তিন কোটি মিনিট কল কমে গেছে। সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ মহলের মতে, বৈধ পথে আসা কল কমে সেটি এখন অবৈধ ভিওআইপি হয়ে দেশে ঢুকছে। অর্থাৎ বৈধ কলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখন ভিওআইপি কলে পরিণত হচ্ছে। এর ফলে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে আইজিডব্লিউ অপারেটরসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর আয় কমেছে। হঠাৎ করে বৈধ পথে কল আসা কমে যাওয়ার ব্যাপারে টেলিযোগাযোগ খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন- সম্প্রতি আন্তর্জাতিক কলরেট দেড় সেন্ট থেকে বাড়িয়ে দুই সেন্ট করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশী কল আসার নতুন পদ্ধতি চালু করা হয়। এ কারণেই মূলত বৈধ আন্তর্জাতিক কল কমে গেছে।
অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ের অবসান ঘটানোর বদলে স্বার্থান্বেষী মহল টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে বলেছে প্রাইস ম্যানিপুলেশন পলিসি অবলম্বন করতে, যা সরকারের রাজস্ব আয় বছরে ১০০ কোটি ডলারের মতো কমাবে। জানা গেছে, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা স্বার্থান্বেষী একটি মহলের সাথে মিলে পরিকল্পনা করছে আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরামের ওপর চাপ সৃষ্টি করে মিনিটপ্রতি বর্তমান কলরেট কমাতে, যা এ অঞ্চলের সবচেয়ে কম রেটগুলোর একটি। কিন্তু এ শিল্প খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, অবৈধ কলরেটের বিপরীতে কলরেট কমানো নৈতিক ও আর্থিক দিক থেকে হবে আত্মঘাতী। আমরা মনে করি, স্বার্থান্বেষী মহলের মূলোৎপাটন করতে সরকারকে নির্মোহভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে অদম্য অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় থামানো যাবে না।
এরপর উল্লেখ করতে চাই ইন্টারনেট অর্থাৎ ব্যান্ডউইডথের দাম কমানোর বিষয়টি। কমপিউটার জগৎ বরাবর জোর দাবি জানিয়ে আসছে- কমপিউটারকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হবে, সাথে সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের মধ্যে আনতে হবে। ব্যান্ডউইডথের খরচ যথাসম্ভব কমাতে হবে। সরকারও এ ব্যাপারে ইতিবাচক নীতি অবলম্বন করে ধাপে ধাপে ব্যান্ডউইডথের দাম কমিয়েছে। তবে বা্যান্ডউইডথের এই দাম কমানোর সুফল যতটা না পেয়েছে সাধারণ মানুষ, তার চেয়ে বেশি পেয়েছে স্বার্থান্বেষী মহল, যা কখনই কাম্য ছিল না। গ্রাহকসাধারণের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, তাদেরকে এখনও ধীরগতির ও চড়া দামের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হচ্ছে।
সরকার সম্প্রতি আবারও ব্যান্ডউইডথের দাম কমিয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বর থেকে ব্যান্ডউইডথের এই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। তবে ব্যান্ডউইডথের এই দাম কমানোর খবরে খুশি হতে পারেননি সাধারণ ব্যবহারকারীরা। কারণ, ব্যান্ডউইডথের এই দাম কমানোর সুবিধা পাবেন শুধু ১০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ ক্রেতারা। দেশে এই পরিমাণ ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করে থাকে মাত্র দুই-তিনটি মোবাইল অপারেটর এবং হাতেগোনা কয়েকটি আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে)। চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে ভারতে ব্যান্ডউইডথ রফতানি হচ্ছে এবং এর আগে দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথে এই দাম কমানো হলো। ভারতে ব্যান্ডউইডথ রফতানি হচ্ছে ১০ ডলার দরে। এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশে ব্যান্ডউইডথের দাম কমানো হলো। এই দাম কমানোকে আমরা স্বাগত জানাই, তবে এর সাথে এ দাবিও রাখছি, এই দাম কমানোর সুফল সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী পর্যন্ত পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে। ভুললে চলবে না, বিটিআরসি সূত্রমতে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা গত জুলাইয়ে ৫ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস