• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সুপারবুক : স্মার্টফোনকে করে তোলে পুরো এক ল্যাপটপ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মুনীর তৌসিফ
মোট লেখা:৩৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
দশ দিগন্ত
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সুপারবুক : স্মার্টফোনকে করে তোলে পুরো এক ল্যাপটপ
আপনার স্মার্টফোন অবিশ্বাস্যভাবে একটি শক্তিশালী কমপিউটার। স্মার্টফোন দিয়ে আপনি সারছেন প্রচুর কাজ। এর ব্যবহার সহজ এবং যেখানে-সেখানে সহজেই নেয়া যায়। আজকের দিনে স্মার্টফোনকে আমরা প্রতিদিনের জীবনযাপনের সাথী করে নিয়েছি্। অফিসের অনেক কাজও সেরে ফেলছি এই স্মার্টফোন দিয়ে। এতে কাজ করে সব ধরনের অ্যাপ, ধারণ করে ফাইল, রক্ষা করে যাবতীয় যোগাযোগ। স্মার্টফোন দিয়ে ওয়েব সার্ফ করছি, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছি, ছাত্র-শিক্ষকেরা সুযোগ নিচ্ছেন ক্লাউড স্টোরেজ ও ফাইল শেয়ারিংয়ের। আজকের অ্যাপলের আইফোন ও স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি গোটা দুনিয়াটাকেই যেন দখল করে বসেছে। আইফোন আর গ্যালাক্সিকে কার্যত আজকে কমবেশি বলা যায় এক ধরনের মুঠোকমপিউটার। আসলে স্মার্টফোন দিয়ে আপনি করতে পারেন এরচেয়েও অনেক বেশি কিছু। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় এর পর্দার ছোট আকার এবং এর সীমিত মোবাইল ইন্টারফেস। এই সমস্যা দূর করতে সৃষ্টি করা হয়েছে ‘সুপারবুক’। এই সুপারবুক এসব বাধা দূর করে সুযোগ করে দেবে আপনার স্মার্টফোনটিকে একটি পরিপূর্ণ ল্যাপটপ কমপিউটার হিসেবে ব্যবহারের। সুপারবুক নামের এই ল্যাপটপ শেল আসছে আপনার স্মার্টফোনকে বদলে দিতে। এটি অনেকটা ল্যাপটপ শেল ঘবীউড়পশ-এর মতো। নেক্সডককে কানেক্ট করতে হয় একটি উইন্ডোজ ১০ ডিভাইসের সাথে এবং ব্যবহার করে কন্টিনাম। সুপারবুকে কোনো উইন্ডোজ-১০ ডিভাইস কানেক্ট করতে হয় না। তবে আপনার অ্যান্ড্রয়িড ডিভাইসটি হতে হবে একটি অ্যান্ড্রয়িড ৫.০, যা ললিপপ নামেও পরিচিত। আর এর থাকবে দেড় জিবি কিংবা তার চেয়েও বেশি র্যােম। স্পেসিফিকেশন যত ভালো হবে (২ জিবি বা তার চেয়েও বেশি র্যা ম ও কমপক্ষক্ষ একটি ৬৪ বিট প্রসেসর), এটি চলবেও তত বেশি ভালোভাবে। তা ছাড়া সুপিরিয়র ডিসপ্লে আপনি পেতে পারেন স্মার্টফোনকে ল্যাপটপের ওপর বিমিং করে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা পাবেন অ্যান্ড্রমিয়াম ওএস অভিজ্ঞতা। এটি মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্য খুবই পারফেক্ট। যে মোবাইল প্রফেশনালেরা চান কুইক ও সস্তা কমপিউটার সলিউশন, তাদের জন্য এটি খুবই উপযোগী। কিংবা যেসব ছাত্র চায় তাদের টাইপিং ও রিসার্চিংকে আরও সহজতর করে তুলতে, তাদের জন্যও এটি উপযোগী। সুপারবুকের মিশন নেক্সডকের মতো একই- ডেস্কটপের গণতন্ত্রায়ন : ডেমোক্র্যাটাইজিং অব ডেস্কটপ।
স্মার্টফোন + সুপারবুক = পুরো এক ল্যাপটপ
সুপারবুক আসলে কী?
মূলত সুপারবুক হচ্ছে একটি স্মার্ট ল্যাপটপ শেল। এর রয়েছে একটি ১৩৬৬ বাই ৭৬৮ মেগাপিক্সেলের ১১.৬ ইঞ্চি এলসিডি পর্দা, ফুল সাইজ আইল্যান্ড স্টাইল কিবোর্ড ও বড় গেশ্চার-ক্যাপেবল মাল্টিটাচ ট্র্যাকপ্যাড। এর বিল্টইন ব্যাটারি সচল থাকে ৮ ঘণ্টারও বেশি সময়। তবে এটি এখনও স্পষ্ট নয় আপনার অ্যান্ড্রয়িডের ব্যাটারি ডকটির ব্যাটারি লাইফ আরও জোরালো করে তুলবে কি না। এটি ফোন চার্জ করার ক্ষমতা রাখে। যখনই আপনার অ্যান্ড্রয়িড স্মার্টফোনকে এই সুপারবুকের সাথে সংযুক্ত করবেন, সাথে সাথেই এর অ্যাপগুলো তৈরি হয়ে যাবে আপনাকে পুরোপুরি ল্যাপটপ অভিজ্ঞতা দিতে। সুপারবুককে ভাবতে পারেন আপনার স্মার্টফোনের আল্টিমেট অ্যাক্সেসরি হিসেবে। আপনাকে শুধু যে কাজটুকু করতে হবে, তা হলো একটি ইউএসবি টাইপ সি’র মাধ্যমে অথবা ল্যাপটপে থাকা বিল্টইন মাইক্রো ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়িড ডিভাইসটিকে সুপারবুকের সাথে কানেক্ট করে দেয়া।
ধারণাটি নতুন নয়
এ ধরনের ধারণা যদিও নতুন কিছু নয়, তবু ধারণাটি বেশ গতিশীল হয়ে উঠছে। ক্রাউডসোর্সিংয়ের প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে অ্যান্ড্রয়িড স্মার্টফোনের জন্য সুপারবুক হচ্ছে ৯৯ ডলারের একটি ল্যাপটপ ডক। একবার অ্যান্ড্রয়িড ডিভাইসটি এর সাথে কানেক্ট হয়ে গেলে, এই সুপারবুক শেলে পাওয়া যাবে সিপিইউ, মেমরি ও স্টোরেজ। ব্যবহারের অ্যাপস ও অন্য সবকিছুই আপনি পেয়ে যাবেন ল্যাপটপ ফরম্যাটে।
বছরের পর বছর কনজ্যুমার টেক কোম্পানিগুলো স্বপ্ন দেখে আসছে কনভারজেন্সের। অর্থাৎ এরা স্বপ্ন দেখেছে এমন একটি ডিভাইসের, যা হবে আপনার প্রয়োজনীয় সব কমপিউটিংয়ের নেক্সাস বা সংযোগস্থল। মূলত এরা কঠোর চেষ্টা করেছে আপনাকে এমন একটি স্মার্টফোন কেনাতে, যা কার্যত হবে পকেটে করে নেয়ার মতো একটি কমপিউটার। আবার এটি হবে বাড়িতে কাজ করার মতো একটি ল্যাপটপ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মাইক্রোসফটকে দেখা গেছে এই ধারণার সবচেয়ে দৃশ্যমান সমর্থক। এর কন্টিনাম ফিচার সুযোগ দেয় উইন্ডোজ ফোনকে একটি হালকা ওজনের উইন্ডোজ ১০ সংস্করণকে চালানোর। একটি ডিসপ্লে ডকে পস্নাগইন করে তা করা যাবে। তবে সমস্যা হচ্ছে, কোনো ব্যক্তিই উইন্ডোজ ফোন কেনেন না। মাইক্রোসফটের আগে উবুন্টু কাজ করে এসেছে এ ধরনের একটি প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে। ২০১৩ সালে এর ব্যর্থ ‘এজ প্রজেক্ট’ থেকে এদের এই চেষ্টার শুরু। এর আগে মটোরোলার ‘অ্যাট্রিক্স ফোন’ কাজ করেছিল একইভাবে। কিন্তু এর ল্যাপটপ ডকের দাম ছিল ৫০০ ডলার।
এর উপকারিতা কী?
আপনি হতে পারেন একজন ছাত্র, একজন সৃজনশীল মানুষ, একজন বৈমানিক কিংবা অন্য কেউ। আপনি যে-ই হোন, সুপারবুক আপনাকে দেবে একটি একক কমপিউটারের চেয়ে অনেক বেশি করার স্বাধীনতা। আপনি বিমানে চড়েছেন ল্যাপটপবিহীনভাবে, গিয়ে নেমেছেন যেকোনো দেশে, সেখানে চালাতে চান স্বাভাবিক কাজ। সুপারবুক আপনাকে সে সহায়তা দেবে।
যে প্রশ্ন রয়ে গেছে
এখন যা বলা হচ্ছে, তা চিরদিনের জন্য সত্য হিসেবে থাকবে না। একটি সস্তা ফোন একটি দামী ফোনের চেয়ে বেশি ব্যবহারবান্ধব হবে না। প্রচুরসংখ্যক ক্রোমবুক এখন আগের চেয়ে অনেক সস্তা এবং পুরোপুরি কর্মক্ষম। যখন আপনার ফোন একটি ছোট্ট কমপিউটার, এটি তখন ছো্ট্ট ল্যাপটপ নয়। সুপারবুকের সফলতার বেশিরভাগই নির্ভর করবে অ্যান্ড্রমিয়াম ওএস আপনার অ্যান্ড্রয়িড স্মার্টফোনকে একটি কার্যকর ডেস্কটপ সফটওয়্যারে কতটুকু পরিণত করতে পারে তার ওপর। অ্যান্ড্রয়িডের নিজের রয়েছে প্রচুর অ্যাপ, যা ডেস্কটপে পর্যাপ্ত ট্রানসেস্নট হতে পারে। আপনি ইউটিউবে ভিডিও দেখতে পারেন, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড দিয়ে ডকুমেন্ট লিখতে পারেন ও খেলতে পারেন বহু গেম। সুপারবুকের ডিসপ্লে টাচস্ক্রিন নয়। তাই এর ব্যবহার স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা পশ্চাৎপদ বলে মনে হবে। অ্যান্ড্রমিয়াম বলে এটি এর এসডিকে ওপেন করবে, যাতে ডেভেলপারেরা অ্যান্ড্রমিয়ামের জন্যও তাদের অ্যাপ টেইলর করতে পারে

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - অক্টোবর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস