লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
কাস্টোমার রিলেশনশিপ ম্যানেজম্যান্ট
কাস্টোমার রিলেশনশিপ ম্যানেজম্যান্ট
এই আর্টিকলের শুরু থেকে আমরা রিলেশনশিপ বিল্ডিং শব্দটি ব্যবহার করছি। এখন মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক একটি ফার্ম কীভাবে রিলেশনশিপ গড়ে তুলবে। রিলেশনশিপ নির্মাণের জন্য কিছু বিষয় পূরণ করতে হবে। তাদের একটি হচ্ছে ফার্মকে তার ক্রেতাদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে, জানতে হবে তাদের মনোভাব সম্পর্কে। তারপর রিলেশনশিপ নির্মাণে মনোযোগ দিতে হবে। আর এর জন্য প্রতিনিয়ত মনোভাব বা ভাব বিনিময় থেকে শিখতে হবে। এ সম্পর্কে ভালোভাবে জানার জন্য ডায়াগ্রামটি দেখব। ডায়াগ্রামটির দুটো অংশ আছে। বামের বক্সটি হচ্ছে লার্নিং অ্যাবাউট কাস্টমার বা ক্রেতাদের সম্পর্কে জানা এবং অপরটি হচ্ছে কাস্টমাইজেশন। নতুন করে প্রশ্ন আসবে এগুলো কিসের সাথে সম্পর্কিত বা এগুলো আমরা ক্রেতাদের সম্পর্কে জানব কীভাবে। ক্রেতাদের সম্পর্কে জানতে হবে, তাদের সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা রাখতে হবে। এখন ব্যক্তিগতভাবে কোনো ক্রেতাকে জানার কোনো সুযোগ নেই, তাই তাদের জানতে হবে ফার্মের সাথে লেনদেন বা সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে। এ অর্জিত জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে কাস্টমার থেকে কাস্টমার আলাদা করা সম্ভব। ফার্মের কাছে খুব সঙ্গত কারণেই বহু ক্রেতার তথ্য থাকবে। এসব কাস্টমারকেন্দ্রিক তথ্যগুলোর উৎস হবে বহুবিধ। যেমনÑ কাস্টমার কেয়ারে ক্রেতাদের কল, ক্রয় ইতিহাস, ক্রেতাদের দিয়ে পূরণ করা ফর্মসহ ইত্যাদি উৎস।
এসব উৎস থেকে একবার তথ্য সংগ্রহ করার পর সেগুলো বার বার ব্যবহার করা যাবে। কাস্টমারদের শ্রেণিবদ্ধ করাটা ব্যবসায় সাফল্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কাস্টমার থেকে কাস্টমার আলাদা করার জন্য এসব তথ্যের ব্যবহার জরুরি। যেকোনো ব্যবসায়ে প্রতিটি কাস্টমার অন্যের চেয়ে আলাদাভাবে মূল্যায়িত হতে চায়। আর এটা যারা করে থাকে, তাদের কাছে সাফল্য ধরা দেবেই। এর সুযোগে মার্কেটিং মিক্স কাস্টমাইজড করে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়। ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করা তথ্য অনুযায়ী ক্রেতাদের মাতো করে কাস্টমাইজড মার্কেটিং মিক্স তৈরি করা। আপনি যদি পণ্য বা সেবা বিক্রি করেন, তবে মার্কেটিং মিক্সের আকার হবে ৪পি থেকে ৭পি (প্রোডাক্ট, প্রাইস, প্লেস, প্রমোশন, পিপল, প্রসেস, ফিজিকাল এভিডেন্স)। এক্ষেত্রে আপনি যদি পণ্য বাজারজাত করেন, তবে নিতে হবে ৪পি মার্কেটিং মিক্স। সেবা বাজারজাতকরণের বেলায় আরও ৩পি যোগ করতে হবে। অতিরিক্ত ৩পি কী তা আমরা উপরের চিত্রের দিকে তাকালে দেখব। সেগুলো হচ্ছে পিপল (কাস্টমার ও এমপ্লয়ি), প্রসেস ও ফিজিকাল এভিডেন্স। সহজ করে বললে পণ্য বিক্রি করলে ৪পি আর কোনো সেবা অফার করলে ৭পি। উপরের চিত্রের দিকে লক্ষ করলে দেখা যাবে, চলমান প্রক্রিয়া বোঝাতে দুই টেবিলে দুটি করে তীর চিহ্ন দেয়া আছে। এজন্য ক্রেতা সম্পর্কে জানতে হবে, তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ক্রেতাদের শ্রেণিবদ্ধ করতে হবে। এ পর্যায়ে ঠিক করতে হবে মার্কেটিং মিক্সের জন্য কোন কোন উপাদান নেয়া হবে তা নির্ধারণ করা। একটা বিষয় লক্ষ রাখতে হবেÑ কাস্টমাইজেশন কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের সাথে সম্পর্কিত নয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থাপকেরা প্রায়ই দ্বিধায় ভোগেন। আপনি চাইলে মার্কেটিং মিক্সের প্রতিটি উপাদানকে কাস্টমাইজড করে নিতে পারেন। একই পণ্য বিক্রিতে ব্যবহার করা যেতে পারে ভিন্ন যোগাযোগের উপায়, ভিন্ন সরবরাহের চ্যানেল, ভিন্ন মূল্যে, ভিন্ন প্রসেসে ভিন্ন ভিন্ন জায়গাতে। একজন কাস্টমারকে এসব কিছু সম্পূর্ণ নতুন এক অভিজ্ঞতা দেবে। তাই শুধু মূল অফারিংয়ের জন্য কাস্টমাইজিংয়ে ফোকাস করার প্রয়োজন নেই। বরং ভিন্ন ভিন্ন পণ্য বা সেবার জন্য ভিন্ন মার্কেটিং মিক্স নিয়ে খেলা শুরু করে দিতে পারেন।
এতে করে দেখা যাবে প্রতিটি ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজেশন করা সম্ভব হবে ফার্মগুলোর নিজেদের কাছে থাকা তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে। আর তারা যে মেথড ব্যবহার করে, তাকে বলা হয় ড্রিপ ইরিগেশন মেথড। ক্রেতার সাথে যোগাযোগের প্রতিটি ক্ষণকেই তাদের সম্পর্কে আরো জানার সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে। পরে অর্জিত সে জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ক্রেতাদের ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা সম্ভব হবে। তারপর ক্রেতা অনুযায়ী কাস্টমাইজড মার্কেটিং মিক্স সাজাতে হবে। মানে এটি একটি প্রক্রিয়া। এ জার্নিতে একজন ক্রেতাকে তখনই ধরে রাখা সম্ভব, যখন তিনি মনে করবেন ফার্ম থেকে প্রাপ্ত অফার, পণ্য বা সেবায় সে সন্তুষ্ট। প্রতিযোগিতার দিক দিয়ে বললে এমন অনুক‚ল অবস্থায় আসার জন্য লম্বা সময় ধরে কাজ করে যেতে হবে। সময়ের সাথে সাথে দরকার ক্রেতা সম্পর্কিত তথ্যও। যেসব ফার্ম সিআরএম চর্চা করবে, তাদের অবশ্যই ক্রেতাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর মনোযোগ দিতে হবে। শুধু ক্রেতা নয়, অন্যান্য কি স্টেকহোল্ডারের সাথেও ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। ছয় ধরনের মার্কেট ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকদের সাহায্য করবে তার ফার্মের স্টেকহোল্ডারদের চিহ্নিত করতে। এর মাধ্যমে তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলা যাবে।
আমরা জানিÑ সিআরএম ও মার্কেটিং একে অন্যের সাথে সম্পর্কিত। এখানে আমরা ট্রাডিশনাল কাস্টমার মার্কেটের বাইরে ছয় ধরনের মার্কেট ডোমেইন সম্পর্কে জানব। নিচে আমরা চিত্রে ছয়টি মার্কেট ফ্রেমওয়ার্ককে ডায়াগ্রামের মাধ্যমে জানব। সিআরএমে কাস্টমার মার্কেটের ওপর গুরুত্বারোপ করা খুবই জরুরি। প্রাথমিক থেকে শুরু করে চ‚ড়ান্ত পর্যায়ের কাস্টমারদের ওপর সমানভাবে নজর দিতে হবে। কাস্টমারদের সাথে রিলেশনশিপ তৈরি করার জন্য আরো কিছু মার্কেটের ওপর ফোকাস করা জরুরি। আমরা এখানে মোট ছয়টি মার্কেট ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে জানব। সফলতা লাভের জন্য এগুলোয় মনোযোগ দেয়া জরুরি