লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
প্রতিদিনের কাজের সহায়ক প্রয়োজনীয় অ্যাপ
প্রতিদিনের কাজের সহায়ক প্রয়োজনীয় অ্যাপ
প্রতিদিন মুক্তি পাওয়া সব অ্যাপ ট্র্যাক করা খুব কঠিন। এমনকি ভালোদের মধ্যে ভালো অ্যাপ চিহ্নিত করাও বেশ কঠিন। কঠিন এই কাজকে সহজ করার জন্য বরাবরের মতোই সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া কিছু অ্যাপ স¤পর্কে জানব।
হেভেন
ধরুন, বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছেন আপনার বাসার কাছে প্রতিদিন একটি ডেলিভারি ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকে, অথবা কালো স্যুট, শার্ট পরা একজন আপনি যেখানে যাচ্ছেন আপনার পিছু পিছু সেখানেই গিয়ে হাজির হচ্ছে। আপনার উদ্বিঘনতা ক্রমেই বাড়ছে। আপনি সন্দেহ করছেন, সরকার বা কেউ আপনাকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে। আপনি যদি একজন সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট বা সরকারি কর্মচারী হন, তবে এরকম কিছু ঘটা আপনার জন্য খুব যে অস্বাভাবিক তা কিন্তু নয়। এমন পরিস্থিতিতে মানসিক অবস্থা কেমন হতে পারে, তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের চেয়ে আর কে ভালো বুঝবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি এ ঠিকাদার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি সার্ভিলেন্স প্রোগ্রামের প্রচুর গোপনীয় নথি ফাঁস করে দিয়ে সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। উইকিলিকস নামের সেসব গোপন নথির কারণে বিশ্বের অনেক দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় পর্যন্ত পালাবদল ঘটে যায়। স্নোডেন সব সময় সরকারি নজরদারির বিরোধিতা করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি ‘হেভেন’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন, যা আপনার স্মার্টফোনটিকে একটি পার্সোনাল সিকিউরিটি ডিভাইসে পরিণত করবে। স্মার্টফোনে প্রচুর সেন্সর থাকে। যাদের অন্যতম ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, জাইরোস্কোপ এবং এক্সেলেরোমিটার। হেভেন অ্যাপটি এসব সেন্সরকে কাজে লাগিয়ে আপনার ফোনের আশপাশে সন্দেহজনক কিছু পেলে তা চিহ্নিত করে এবং সতর্ক করার জন্য টেক্সট মেসেজ পাঠায়। অ্যান্ড্রয়িড ৪.১ বা তার বেশি অপারেটিং সিস্টেমসমৃদ্ধ ফোনগুলোতে হেভেন ইনস্টল করার পর আপনি ফোন ব্যবহার করে সন্দেহজনক শব্দ বা নড়াচড়া চিহ্নিত করতে পারবেন। এমনকি সেসব শব্দ বা মুভমেন্ট কোন মাত্রায় চিহ্নিত করতে চান তাও ঠিক করে দেয়া যাবে। আবার ভিডিও রেকর্ড করার জন্য ফোনে থাকা ক্যামেরাও ব্যবহার করা যাবে। সতর্কবার্তা পেতে ফোনের ভেতরে সেটিংয়ে যে নাম্বারে বার্তা পেতে চান, তা ঠিক করে দিলেই হবে। তবে যদি মনে হয়, ফোন নাম্বার দেয়া ঝুঁকির কারণ হতে পারে, তবে সিকিউরিটি ফোকাসড মেসেজিং অ্যাপ সিগনাল ব্যবহার করা যেতে পারে। সেটিং নির্দিষ্ট করে কাউন্টডাউন ঠিক করে দিয়ে ফোনটি রেখে দিতে পারেন কাক্সিক্ষত জায়গায়, যেখানটায় আপনি গুপ্তচরবৃত্তি চালাতে চাচ্ছেন। কাউন্টডাউন শেষ হলেই আপনার ফোনটি সার্ভিলেন্স মোডে চলে যাবে। সঠিক মাত্রায় নড়াচড়া বা শব্দ শনাক্ত করার পর এটি সেগুলো রেকর্ড করা শুরু করবে। এরপর আপনাকে একটি সতর্ক বার্তাও পাঠাবে।
সিনেমাবক্স
মোবাইলে নিয়মিত সেরা সব ছবির খোঁজখবর রাখতে চাইলে সিনেমাবক্স হতে পারে ভালো একটি পছন্দ। এটি অ্যান্ড্রয়িডের পাশাপাশি আইওএসেও চলবে। অ্যাপটিকে বলা যায়, বিনোদনের ওয়ানস্টপ শপ। একের ভেতর পাওয়া যাবে সব ধরনের বিনোদন। পুরোপুরি ফ্রিতে মিলবে হাই কোয়ালিটি মানের সব কনটেন্ট।
ওয়ানবক্স
এটিকে বলা যায় সাম্প্রতিক ও ভালো মানের মুভি ও টিভি শোর এক অসাধারণ সংগ্রহশালা। এর সাহায্যে বিনোদন চলে আসবে আপনার হাতের মুঠোয়। এতে উপভোগ করা যাবে হাই ডেফিনেশন কোয়ালিটির সব কনটেন্ট। মুভিপ্রেমীদের জন্য এটি হতে পারে খুব ভালো একটি পছন্দ।
লাস্টপাস
আজকাল পাসওয়ার্ডের ব্যবহার নেই কোথায়? একাধিক সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট, একাধিক ই-মেইল বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রোফাইলসহ ই-কমার্স সাইটগুলোতে কাস্টমার অ্যাকাউন্ট বা প্রোফাইল খোলা। এগুলোর প্রত্যেকটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড মনে রাখার প্রয়োজন পড়ে, যা অনেক ক্ষেত্রেই মনে রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বিরক্তিকর এসব কাজ থেকে মুক্তি দিতে পারে লাস্টপাস নামের এই অ্যাপটি। এর কাজ একাধিক। এটি যেমন আপনার হয়ে আপনার সব পাসওয়ার্ড মনে রাখবে, তেমনি দরকার হলে আপনার জন্য নতুন প্রোফাইল খুলে দিতেও সাহায্য করবে। এটি যেকোনো ডিজাইনে ডেস্কটপ, স্মার্টফোন, ট্যাব ইত্যাদিতে ব্যবহার করা যাবে। ভিন্ন ভিন্ন সাইটে প্রবেশ করার আগে লাস্টপাস হয়ে খুব সহজেই সেগুলোতে প্রবেশ করা যাবে। কোনো পাসওয়ার্ডই মনে রাখতে হবে না। তবে একটি পাসওয়ার্ড মনে রাখেতে হবে। সেটি হচ্ছে লাস্টপাস পাওয়ার্ড। এর মাধ্যমে যে কাজগুলো করা যাবে, তাদের উল্লেখযোগ্য পাসওয়ার্ড ম্যানেজার, পাসওয়ার্ড স্টোরেজ, লগইনসহ আরো অনেক কিছু। এটি ব্যবহার করা যাবে একসাথে একাধিক ডিভাইসে। কোনো একটি ডিভাইসে কোনো কিছু সেভ করলে তাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যান্য ডিভাইসেও সেভ হয়ে যাবে। এটি ব্যবহার করা যাবে ক্রেডিট কার্ডস, ফটোসহ আরো কিছুক্ষেত্রে নিরাপত্তা পেতে। এখন থেকে যেকোনো নোটে ছবি অ্যাটাচ করে তা লক করে দেয়া যাবে। আবার চাইলে কোনো নথির সাথে অডিও ফাইল যোগ করে তা লক করে দেয়া যাবে।
ইউসি ব্রাউজার মিনি
এই অ্যাপটি মূলত অ্যান্ড্রয়িড গো ডিভাইসের জন্য। তবে একে ব্যবহার করা যাবে অন্য যেকোনো ডিভাইসের জন্যও। এর সাইজ খুবই ছোট। আকার ছোট হওয়ার কারণে এতে মূল ব্রাউজারের সব ফিচারকে জায়গা দেয়া সম্ভব হয়নি। এতে আছে শুধু কিছু বেসিক ফিচার। সেসবের অন্যতম নাইট মোড, ইনকোগনিটো মোড এবং অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ, নেভিগেশন কার্ডস, দ্রুত ব্রাউজিং, স্মার্ট ডাউনলোডিং, অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে ভিডিও নিয়ন্ত্রণ করাসহ আরো অনেক কিছু। পুরোপুরি পারফেক্ট অ্যাপ একে বলা যাবে না। নতুন হওয়ার কারণে কিছু বাগ রয়ে গেছে। অন্যসব সুবিধার সাথে এটি ব্যবহার করা যাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
আপদেয়ার হোম
এটি হচ্ছে একটি ক্লাউড সিস্টেম। এই সেবার আওতায় রাখা যাবে যেকোনো পরিমাণ ফাইল, ভিডিও, মিউজিকসহ বিভিন্ন ডাটা। সেসব ডাটা আপলোডের পর ক্লাউড থেকে সেসবে অ্যাক্সেসও করা যাবে