লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিক রিলেশন
পাবলিক রিলেশন
আনোয়ার হোসেন
পাবলিক রিলেশনের লক্ষ্য
গত পর্বে পাবলিক রিলেশনের একটি লক্ষ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ পর্বে পিআরের অন্যান্য লক্ষ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সাইট ট্রাফিক
যদি এমন হয় যে, লোকে পেইড মিডিয়াতে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানার পর এ বিষয়ে তাদের আগ্রহ সৃষ্টি হলো। সেক্ষেত্রে তারা খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনার সাইটে চলে আসবেন। তারপর আপনার পণ্য বা সেবার বিষয়ে সন্তুষ্ট হলে ক্রেতায় পরিণত হবেন। আর পুরো বিষয়টি এখানে সম্ভব হচ্ছে সফল পাবলিক রিলেশন ক্যাম্পেইনের কারণে। আর একবার আপনার ক্যাম্পেইন লাইভে গেলে আপনার পেজ বা সাইটে কী পরিমাণ ভিজিটর আসছেন তার হিসাব রাখতে হবে। ভিজিটরেরা কোন এলাকা থেকে আসছেন, কোন এলাকা থেকে বেশি পরিমাণে আসছেন এবং তাদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার চেষ্টা করতে হবে। ফলে সুনির্দিষ্ট ভিজিটরদের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা সাজানো সম্ভব হবে। আর পরিকল্পনা সঠিক হওয়ার ওপর নির্ভর করে আপনি সফল হবেন না ব্যর্থ। এসব তথ্য থেকে জানা যাবে আপনার চালানো ক্যাম্পেইন সফল কি না, সফল হলে কতটা। একই সাথে কোনো কারণে সফলতা না এলে কারণ নির্ণয় করতেও ভিজিটর সংখ্যা জানা দরকার। সেক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।
নতুন ক্রেতা
পাবলিক রিলেশনের উদ্দেশ্য ক্রেতাদেরকে আপনার ব্র্যান্ডের দিকে ধাবিত করা। যেহেতু এর মাধ্যমে ক্রেতাদের ব্যবসায়ে আনা হয়, তাই এখানে বিনিয়োগকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে ব্যবসায় নতুন নতুন ক্রেতা আসার সাথে সাথে নজর রাখতে হবে ক্রেতাদের উৎস কোথায়। কোথা থেকে নতুন ক্রেতারা আসছেন, তা জানা খুবই জরুরি। পাবলিক রিলেশনের ক্ষেত্রে নতুন ক্রেতাদের উৎস খুব সহজে বোঝা যায় না।
উৎস বোঝার জন্য যা করা যেতে পারে
০১. ক্রেতাদের মধ্যে জরিপ চালানো। বিশেষত ক্রয়ের পর তারা ঠিক কোথা থেকে আপনার ব্র্যান্ড বা পণ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছেন তা জিজ্ঞেস করা যেতে পারে। ফলে বোঝা যাবে ক্রেতারা আসলে ঠিক কিসে প্রভাবিত হয়েছেন। আর এ তথ্য নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কার্যকর পাবলিক রিলেশন টুলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।
০২. আর অনলাইনে ক্রেতাদের উৎস বোঝার জন্য অনলাইনেও ট্র্যাক করা যেতে পারে। এজন্য ব্যবহার করা যেত গুগল অ্যানালিটিকস। এটি ব্যবহার করে ক্রেতারা ঠিক কোন পথে আসছেন তার একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে।
পাবলিক রিলেশনের মাধ্যমে যদি প্রচুর সংখ্যায় ক্রেতা আপনার ব্র্যান্ডের গ্রাহক হন বা ওয়েবসাইট ভিজিট করেন, তবে ওই ফলাফলকে অসাধারণ হিসেবেই গণ্য করতে হবে। তবে ওরকমটা যে হবেই, এমনটা ভাবার কারণ নেই।
পাবলিক রিলেশন টুল
সামান্য সাহায্য জীবন পাল্টে দেয়ার জন্য যথেষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। জীবন হয়ে উঠতে পারে আগের চেয়ে অনেক সহজতর। অনেক বড় ইতিবাচক পরিবর্তনও আসতে পারে একটুখানি সহায়তার কারণে। পাবলিক রিলেশনও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানেও সাহায্যের হাত বাড়াতে আছে অনেক দরকারি টুল, যেগুলোর ব্যবহারে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
কাভারেজ বুক কাভারেজ
আপনার কাভারেজ কনটেন্টগুলো কতটা ভালোভাবে কাজ করছে, তার দিকে নজর রাখতে হবে। তবে এর মূল্যায়ন মোটেই সহজ কাজ নয়। কাভার পেজের মাধ্যমে জানা যাবে আপনার পিআর কনটেন্ট কোথায় কোথায় কাভারেজ পেয়েছে তার হদিস। এর মাধ্যমে পিআর এজেন্সিগুলো তার ক্লায়েন্টদের জন্য কাভারেজ রিপোর্ট তৈরির জন্য দারুণ সমাধান।
ম্যানশন
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কোনো ব্যবহারকারী বা সেবা ভোগকারী নিজেই অন্য কাউকে ওই ব্র্যান্ড বা পণ্যসেবার সুপারিশ করে থাকেন। এমনটা খুবই কার্যকর একটি বাজারজাতকরণ পদ্ধতিতে। কেননা, দেখা যায় একজন ভোক্তা তার বন্ধুবান্ধব বা পরিজনদের সুপারিশকে খুবই গুরুত্বের সাথে নেন। তাই দেখা যায়, এ ধরনের সুপারিশ নতুন ভোক্তা বা ক্রেতা তৈরিতে ফলপ্রসূ। তাই ট্র্যাক করতে হবে কে বা কারা আপনার ব্র্যান্ডের সুপারিশ করছেন। শুধু তাই নয়, অনেকে আপনার ব্র্যান্ডের বা ওয়েবসাইটের লিঙ্কও শেয়ার করে থাকতে পারেন। ওটিও ট্র্যাক করতে হবে যে কে বা কারা আপনার লিঙ্ক শেয়ার করছেন।
মুক রেক
মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত যারা আপনার ব্র্যান্ডের বিষয়ে আগ্রহী, তাদের সম্পর্কে জানতে হবে। এতে পিআর স্টোরি কাভার করার বিষয়টি আরো বিস্তৃত হয়।
আমরা পাবলিক রিলেশনের আদ্যোপান্ত জানলাম। এটি কী, কেন দরকার, কীভাবে সফলতা লাভ করা যায় ইত্যাদি। সব কিছু জানার পর যদি কেউ সিদ্ধান্ত নেন, পাবলিক রিলেশন নিয়ে নতুন করে কৌশল সাজাতে প্রস্তুত, তাহলে সেটি হবে ব্যবসায়, ব্র্যান্ড বা কোনো পণ্যের জন্য খুব ভালো একটি সিদ্ধান্ত। হয়তো খুব শিগগিরই আপনার পিআর মিডিয়াতে আসবে। আপনার ব্র্যান্ড-সংক্রান্ত খবর সবাই পড়বে। তবে সবকিছুর আগে একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, পিআর একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর কৌশলগত পরিকল্পনা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে বদলে নিতে হবে। বলা যায়, এটি একটু একটু করে এগিয়ে নিতে হবে। অনেকটা সুনাম সৃষ্টির মতো। সুনাম একদিনে সৃষ্টি হয় না। এর জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। অবশ্য তার আগে সুনাম সৃষ্টির জন্য কাজ করে যেতে হবে। কেননা, সুনাম কখনোই হুট করে সৃষ্টি হয় না। ধীরে ধীরে অনেক দিনের চেষ্টার ফলে গড়ে উঠতে পারে সুনাম। পিআরও ঠিক তাই। হুট করে কিছু হয় না। এ বিষয়ে ক্রমাগত কাজের ফল একটু একটু করে পাওয়া যায়। পিআরের জন্য সলিড কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে একটা সময় আপনার ব্্র্যান্ড বা কোম্পানির সুনাম ছড়িয়ে পড়বে সর্বত্র। একই সাথে মানুষের মুখে মুখে থাকবে আপনার ব্র্যান্ড বা কোম্পানির কথা। তারাই ছড়িয়ে দেবে ব্যাক লিঙ্কও। মোট কথা, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনার উদ্দেশ্যও সফল হবে