• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ব্যবসায়ে ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং ও প্রবলেম সলভিং
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আনোয়ার হোসেন
মোট লেখা:৭৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৮ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ব্যাবসা
তথ্যসূত্র:
ব্যবসা ও কমপিউটার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ব্যবসায়ে ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং ও প্রবলেম সলভিং
ব্যবসায়ে ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং ও প্রবলেম সলভিং
আনোয়ার হোসেন


সংগঠনের সাফল্য লাভের জন্য কর্মীদের মধ্যে যেসব গুণাবলি থাকার প্রয়োজন, তার অন্যতম ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং ও প্রবলেম সলভিং। একে এক ধরনের দক্ষতা হিসেবে গণ্য করা হয়। এর আগের পর্বে আমরা ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং ও প্রবলেম সলভিংয়ে সৃষ্টিশীলতার ভূমিকা ও এ লক্ষ্যে কৌতূহলী থাকার গুরুত্ব সম্পর্কে জেনেছি। এ পর্বে জানব কৌতূহলী থাকার একাধিক উপায় সম্পর্কে।

০১. যা কিছু দেখছেন বা শুনছেন তার সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ জানানো
এটাকে শুনতে যেমনই মনে হোক না কেন, বাস্তবে এটাই খুব শক্ত একটি ধাপ। যেকোনো কিছু কোনো প্রশ্ন করা ছাড়া মেনে নেয়া সবচেয়ে সহজ। কঠিনটা হলো, কেন ওটা হলো এমন প্রশ্ন করা। উদাহরণস্বরূপÑ আপনি কোনো একটি ডিভাইসের সাহায্যে বই পড়েন। এখন আপনি ডিভাইসের ডিসপ্লে বা ছবি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাহলে আপনার মনের মধ্যে জেগে ওঠা প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য নেমে পড়তে পারেন। খুঁজে দেখতে পারেন কেনো ও কীভাবে ওগুলো কাজ করে। ওগুলোর পেছনে কী আছে।

০২. আগ্রহের বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিন
জানতে হলে প্রশ্ন করতে হবে। এখন সব বিষয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করলে জীবনে আর অন্য কিছু করার সময় পাওয়া যাবে না। তাই নির্দিষ্ট হতে হবে। মানে সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর জানার জন্য প্রশ্ন করতে হবে। পাইকারি হারে সব বিষয়ের ওপর নয়। সেক্ষেত্রে লটারির মতো করে কোনো একটি বিষয় বেছে নেয়া যাবে না। এমন একটি বিষয় বেছে নিতে হবে, যার প্রতি আপনার আগ্রহ আছে। উদাহরণস্বরূপ আপনার হয়তো ডিজাইনের প্রতি, অস্বাভাবিক কোনো আকৃতির প্রতি অথবা মানুষের প্রকৃতির প্রতি আগ্রহ আছে। সেক্ষেত্রে আপনাকে এ বিষয়গুলোর আরও গভীরে চলে যেতে হবে। আর ভালোভাবে বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, একজনের আগ্রহের জিনিসপত্রের ছবি, লেখা বা সে বিষয়ের ওপর কনটেন্টের অনেক পোস্ট দেখা মেলে তার জীবনের নানা ক্ষেত্রে, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও।

০৩. নতুন কিছু করার চেষ্টা করতে হবে
উন্নতি বা ভালো করার শর্ত হচ্ছে নতুন কিছু করার চেষ্টা অব্যাহত থাকতে হবে সব সময়। প্রতি সপ্তাহে নতুন কিছু শেখার বা খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর একবার যখন আপনি নতুন কিছু শেখার বা জানার স্বাদ পেয়ে যাবেন, সেটা আপনার মস্তিষ্কের নিউরনে আঘাত করবে। আর নতুন কিছু শেখার এই আগ্রহ বা ইচ্ছা ক্রমেই বাড়তে থাকবে। সেটা হবে চমৎকার একটি বিষয়।

০৪. মানুষকে প্রশ্ন করুন, গুগলকে নয়
গুগলকে আপনি যেকোনো প্রশ্নই করতে পারেন। আর তার উত্তরও পেয়ে যাবেন। সত্যটা হচ্ছে, এটা অপেক্ষাকৃত ভালো কোনো উপায় নয়। তার চেয়ে অনেক ভালো উপায় হচ্ছে রক্ত-মাংশের মানুষকে প্রশ্ন করা। কেননা, একজন মানুষ আর গুগলের মধ্যে বেশ কিছু মোটা দাগের পার্থক্য আছে। যেগুলো একজন মানুষের শেখায় বিশাল প্রভাব ফেলতে সক্ষম।

০৫. প্রত্যক্ষভাবে কৌতূহলী হোন
শুধু যে প্রশ্ন করেই সব কিছু জানা যায়, তা তো নয়। অনেক সময় এ কথা বলতে শোনা যায় যে, চোখ-কান খোলা রাখো। এই চোখ-কান খোলা মানে চারপাশে কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে এসবের ওপর নজর রাখা। আর যদি তা করা হয়, তবে ঠিকই অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে গুগল সার্চ না করে বা কাউকে জিজ্ঞেস না করেই। তাই একটু বুদ্ধি খরচ করে নিজেকেই মনে ভেতর জেগে ওঠা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো কাজ করে বা কাউকে সাহায্য করলেও যদি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে উত্তর মেলে, তবে তাই করতে হবে।

০৬. একঘেয়েমিকে না বলুন
কোনো কাজের সময় বিরক্তি বা একঘেয়েমি আসার মানে তখন আপনার পক্ষে কোনোভাবেই মনোযোগ দেয়া সম্ভব হবে না। তাই একঘেয়েমিকে দূরে রাখতে হবে। তাহলে আপনি যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকেই ভাবনার রসদ পেয়ে যেতে পারেন, যা আপনাকে এনে দিতে পারে অজানা অনেক প্রশ্নের উত্তর। যেমন আপনি হয়তো ডাক্তারের চেম্বারে লম্বা সিরিয়ালে বসে আছেন। সময় কাটানো বেশ বিরক্তিকর। এ সময় যদি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে চারপাশে গভীর মনোযোগ দেন, তবে হয়তো মানুষের আলাপচারিতার মধ্যেই পেয়ে যেতে পারেন এমন সব তথ্য, যা আপনি খুঁজছেন বা যা আপনার দরকার।

০৭. কর্তব্য পালনে নিষ্ঠাবান হোন
কঠোর পরিশ্রমের সাথে সাথে কর্তব্যবোধ থাকতে হবে, আবার নিষ্ঠাবানও হতে হবে। আপনি যা করতে চান, তা নিষ্ঠার সাথে পালনের চেষ্টা করলে সে কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। আর সেসব কাজে সুসম্পন্ন হওয়া আপনার কৌতূহলকে আরো বাড়িয়ে দেবে। আর স্বাভাবিক কারণেই এগুলো আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনাকেও বাড়াবে।

০৮. ব্যায়াম করুন
সুস্থ দেহের সাথে কর্মঠ মনের সম্পর্ক চিরন্তন। আপনি যদি সুস্থই না থাকতে সক্ষম হন, তাহলে কৌতূহলী হওয়ার বা কোনো সমস্যার একাধিক সমস্যা খোঁজার কোনো সুযোগ নেই। সবার আগে অবশ্যই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। একজন যখন জিমে একটা সময় কাটায়, তখন তার মনটা মুক্ত থাকার কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো কিছুর গভীরে যাওয়ার সুযোগ পায়। এতে অসাধারণ সমাধান পাওয়ার সাথে সাথে বা কৌতূহলী থাকা সহজ হয়। অন্যথায় মনকে সব সময় দখল করে রাখা হয়, যা কোনো বিষয়ের গভীরে যাওয়ার জন্য প্রধান প্রতিবন্ধক। তাই সুস্থ দেহের সাথে সুস্থ মন পেতেও নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। 

০৯. ভালো প্রশ্ন করা শিখতে হবে
প্রশ্ন আর ভালো প্রশ্নের মধ্যে স্পষ্টতই পার্থক্য আছে। যেকেউ চাইলেই প্রশ্ন করতে পারে। ভালো প্রশ্ন নয়। ভালো প্রশ্ন মানে কোনো বিষয়ে গভীর কোনো পর্যবেক্ষণের পর আসা কৌতূহল। যেকেউ ‘কেন’ অথবা ‘কীভাবে’ ব্যবহার করে সাধারণ প্রশ্ন করতে পারে। কিন্তু ভালো প্রশ্নটি হবে আরো গভীর কিছু, যেমন ‘সকালে বাজে আবহাওয়া সৃষ্টি হওয়ার আগে আকাশ লাল হয় কেন?’
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৮ - আগস্ট সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস