• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > এখন প্রয়োজন ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মোস্তাফা জব্বার
মোট লেখা:৯৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
শিক্ষা
তথ্যসূত্র:
নিবন্ধ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
এখন প্রয়োজন ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা




দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আনিসুজ্জামান আমাদের দেশের বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের শিক্ষার দিকে তাকালে যে দুটি সত্য আমাদের চোখে প্রথমে ধরা পড়ে তা হলো, শিক্ষা সব মানুষের কাছে পৌঁছায়নি এবং দ্বিতীয়ত যাদের কাছে পৌঁছেছে তারা একই ধরনের শিক্ষা লাভ করছে না।’’ শিক্ষার সমস্যা সম্পর্কে তার চূড়ান্ত মন্তব্য হলো, ‘‘আমরা বাইরে নানারকম প্রসাধন করে রেখেছি এ শিক্ষাব্যবস্থার। এই প্রসাধনের অন্তরালে গভীর ক্ষত রয়েছে। আমরা একটু খুটিয়ে দেখলে সে ক্ষত দেখতে পাব। সে ক্ষত কিভাবে নিরাময় হবে, আপনারা সবাই মিলে তা ভাববেন।’’ (যুগান্তর, ২৪ মার্চ, ২০০৭) আমি আমার শ্রদ্ধেয় স্যারের সাথে একটু যোগ করতে চাই। কার্যত বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রসাধন মাখানোই নয়, এটি দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্তও। এর সর্বাঙ্গে দগদগে ঘা। একে বিদ্যমান পদ্ধতিতে কোনোভাবেই সারানো যাবে না। এটি কেবল যে সবার কাছে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে তাই নয়, এটি এখন বেকার তৈরি করা ছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্য সাধন করে না। ফলে শিক্ষার সামগ্রিক সংস্কার করতে হবে। বাস্তবতা হলো, দুই বছর মেয়াদী ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর যে খাতেই যাই করুক না কেনো শিক্ষা খাতে পরিবর্তন করার কোনো উদ্যোগই নেয়নি। তারা বিদায়ের শেষ প্রামেত্ম একটি টাস্কফোর্স গঠন করে কোনমতে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল, কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন করা হয়ে ওঠেনি।



আমাদের সাংবিধানিক অধিকার, রাষ্ট্র দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সমমানের উপযুক্ত শিক্ষা নিশ্চিত করবে। কিন্তু স্বাধীনতার আটত্রিশ বছর পরও আমরা সেই অধিকার পাইনি। বরং শিক্ষাব্যবস্থার নামে একটি জগাখিচুড়ি বিরাজ করছে সর্বত্র।



আমরা জানি, উনিশ শতকে সারা দুনিয়ায় শিল্পযুগের যে শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত হয় তারই আলোকে বাংলাদেশে এখনো ইংরেজ প্রচলিত সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষা নামের আরেকটি ধারা বিরাজ করে। সাধারণ শিক্ষার মাঝেও বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম, এ লেভেল, ও লেভেল, সিনিয়র ক্যামব্রিজ, জুনিয়র ক্যামব্রিজ ইত্যাদি বিভাজন আছে। অন্যদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা নানাভাবে বিভক্ত।

সাধারণ শিক্ষার পাঠক্রম শিল্প বিপ্লবের হলেও মাদ্রাসা শিক্ষার পাঠক্রম মোটেই জীবন বা কর্মমুখী নয়। তবে এই সময়ে এসে কার্যত উভয় ধারার পাঠক্রম প্রাগৈতিহাসিক হয়ে গেছে। বর্তমানের প্রয়োজন অনুযায়ী এই পাঠক্রম প্রস্ত্তত করা নয়। পাঠ্যপুস্তকের মানও অত্যন্ত নিম্ন। পাঠদান পদ্ধতি সেকেলে। বই-খাতা-কলম-চক-ডাস্টার-ব্ল্যাকবোর্ড দিয়ে এক ধরনের গতানুগতিক শিক্ষা দেয়া হয়। এই শিক্ষাব্যবস্থার মূল্যায়ন ব্যবস্থাটিও চরমভাবে মুখস্থবিদ্যা ও লেখা-টিকচিহ্ননির্ভর। আমি মনে করি, এই ঘুণে ধরা পচা শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন না করলে আমাদের স্বাধীনতার লড়াইটাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন বা উন্নয়নের জন্য আগের সরকারের প্রচেষ্টা ইতিবাচক নয়। এদেশে বার বার শিক্ষা কমিশন হয়েছে। একমুখী-বহুমুখী-সমন্বিত ইত্যাদি নানা নামে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ইংরেজি বাধ্যতামূলক না ঐচ্ছিক, সেসব বিষয় নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। কমিশন থেকে গাদা গাদা সুপারিশ করা হয়েছে। এক কমিশন যাকে হ্যাঁ বলেছে, অন্য কমিশন তাকে না বলেছে। এক বোতলের মদ অন্য বোতলে ঢালা হয়েছে। থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড় করে এক ধরনের জোড়াতালির শিক্ষা এখন চলছে। কার্যত কোনো কমিশনই বাস্তব অবস্থা উপলব্ধি করেনি। ফলে শিশুশিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত কোনো স্তরের শিক্ষাই একুশ শতক/তথ্যযুগ বা জ্ঞানভিত্তিক সমাজের উপযোগী নয়।



অথচ শিক্ষাব্যবস্থা একটি দেশের, একটি সমাজের সার্বিক অগ্রগতির ভিত্তি। বিশেষ করে জ্ঞানভিত্তিক সমাজের জন্য উপযুক্ত, প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করতে না পারলে ব্যক্তিগত ও সামাজিক সঙ্কট তৈরি হবে। আমাদের মনে রাখা দরকার বর্তমানের সাধারণ শিক্ষা পদ্ধতিটির প্রচলন হয়েছিল উনিশ শতকের শিল্প বিপ্লবকে মনে রেখে। তখনকার হোয়াইট কলার কর্মীবাহিনীর দিকে লক্ষ করে তৈরি ওই শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তথ্যযুগে নেই। সেজন্যই হোয়াইট কলার কর্মীকে জ্ঞানকর্মীতে রূপান্তর করার ব্যবস্থা করতে হবে।



বলার অপেক্ষা রাখে না, এ কাজটি করার জন্য শিক্ষার বিষয়বস্ত্ত, শিশু থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত স্তরে স্তরে সেই বিষয়বস্ত্ত বিন্যস্ত করার জন্য স্তরবিন্যাস করা প্রয়োজন। প্রথমে স্থির করা উচিত আমরা একটি মানুষকে কোন স্তরে কতটা শিক্ষা দিতে চাই। শিশু পর্যায়ের একটি শিশু কী শিখবে, প্রাথমিক পর্যায়ে সেই শিশুটি আরো কতটা শিখবে, নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে তার কোন বিষয়ে জ্ঞান কতটা হওয়া উচিত বা মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে তার কী শিক্ষার দরকার সেটি নির্ণয় করতে হবে।

আমাদের সমাজ এবং রাষ্ট্রে কী ধরনের কর্মী দরকার সেই অনুপাতেই আবার শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরি করতে হবে। বিশেষ করে আমাদের সাধারণ শিক্ষার মাঝে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে। বিজ্ঞান বা অঙ্কভীতির জগৎ থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে আত্মবিশ্বাসী, জ্ঞানী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমনস্ক করতে হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যায় পর্যন্ত সর্বত্রই বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আমাদের ছেলেমেয়েদের আগ্রহ কমছে। গণিত অলিম্পিয়াড ও অন্যান্য অনুপ্রেরণাদায়ক কোনো কাজই এক্ষেত্রে আমাদের অধোগতি রোধ করতে পারছে না।

এই উদ্দেশ্য সাধন করতে প্রথমেই কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার। প্রচলিত দালানকোঠা-চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চির পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমি প্রস্তাব করি প্রচলিত ক্লাসরুমগুলোকে কমপিউটার ল্যাবে পরিণত করার। আমি আরো প্রস্তাব করি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার তৈরি করে তার সাথে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ কমপিউটার দিয়ে যুক্ত করতে হবে। সম্প্রতি এমআইটি ল্যাবে উদ্ভাবিত, ওএলপিসি কার্যক্রমের অধীনে ১০০ ডলারের ল্যাপটপের যে কার্যক্রম চলছে সেটি বা তার মতো সাশ্রয়ী মূল্যের ল্যাপটপে কমপিউটারকে অবলম্বন করে শিক্ষার্থীর বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বা অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। কার্যত এই যন্ত্রটিই হবে শিক্ষার কেন্দ্র। এটি পাঠ্যপুস্তক, মূল্যায়ন যন্ত্র, পাঠাগার বা খেলার সামগ্রী সবকিছুই হবে। ছাত্র-শিক্ষকরা এর সহায়তাতেই নতুন ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলবে। তারা পাঠ্যপুস্তককে সফটওয়্যার হিসেবে পাবে।

প্রচলিত বইতে যেখানে শুধু স্থির বর্ণ ও চিত্র দিয়ে শিক্ষা দেয়া হয়, সেখানে এ ব্যবস্থায় ছবি ও বর্ণকে চলমান করার পাশাপাশি শব্দ বা সাউন্ড ব্যবহার করা হবে। দ্বিমাত্রিকতা এবং ত্রিমাত্রিকতার সাথে চলমানতা ও বিশেষ ইফেক্ট যুক্ত করে শিক্ষার্থীর সামনে একটি নতুন অভিজ্ঞতা দেয়া হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের অনুভব করার ক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়বে। বর্তমানে তারা বিষয়বস্ত্তর যে শতকরা ৪০ ভাগ উপলব্ধি করতে পারে, সেটি তখন শতকরা ৮০ ভাগে উন্নীত হবে।

শিক্ষাদান পদ্ধতিতে নতুন এ উপকরণ ব্যবহার করার ফলে মূল্যায়ন ব্যবস্থারও পরিবর্তন হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একটি স্থির বাড়িঘর থেকে সর্বত্র বিরাজমান প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে-বাড়িতে যেখানেই থাকুক এমনকি দূরবর্তী স্থানেও যদি থাকে, তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার পাশাপাশি সারা দুনিয়ার সাথে যুক্ত থাকবে। স্কুলের তথ্যভান্ডারের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বিশ্ব জ্ঞানভান্ডারের সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে পারবে। এদের জন্য গড়ে তুলতে হবে ডিজিটাল লাইব্রেরি। পাঠ্যপুস্তকগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য বইগুলোকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর শুরু হলে শিক্ষার সুযোগও অবারিত হবে। বাড়িতে, স্কুলে, ক্লাসরুমে যেখানেই সে থাকুক পাঠাগার তার হাতের মুঠোয় থাকবে। শিক্ষকের সাথে তার যোগাযোগ ক্লাসরুমের বাইরে বিস্তৃত হবে, হবে সর্বক্ষণিক।

ছাত্রছাত্রীদের হাতে ল্যাপটপ দেবার ফলে দেশের সার্বিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। কার্যত পুরো দেশটিতেই একটি পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগবে। ছাত্রছাত্রীরা অগ্রসেনানী হিসেবে কাজ করবে এবং তাদের অভিভাবকদের জন্য নতুন জ্ঞানভান্ডার খুলে দেবে। ছাত্রছাত্রীদের ল্যাপটপ থেকেই অভিভাবকদের ডিজিটাল যাত্রা শুরু হবে। তার প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত পাবার পাশাপাশি এটি পরিবারের যোগাযোগযন্ত্রে পরিণত হবে। শিক্ষার কার্যক্রমটি বদলে যাবার মানেই জনসংখ্যার বৃহত্তম অংশ বদলে যাওয়া।

এদের পাশাপাশি এর সাথে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোও বদলাবে। প্রকাশনা, মূল্যায়ন বা শিক্ষা সেবাদানকারীদের অবস্থাও বদলে যাবে। ফলে দেশে একটি ডিজিটাল সংস্কৃতির জন্ম হবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার একটি লক্ষ্য হবে ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষকে শিক্ষাদান করা। আর্থিক কারণে বা শহর-গ্রামের জন্য শিক্ষায় কোনো বিভাজন রেখা তৈরি করা যাবে না। কোনো ডিজিটাল ডিভাইড থাকতে পারবে না। শিক্ষার বিভিন্ন ধারাকে একত্রিত করে সব নাগরিকের জন্য একই শিক্ষা দিতে হবে।

শিক্ষার সর্বনিম্ন স্তর থেকে ডিজিটাল প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এর অর্থ দাঁড়াবে শিশুরা সবার আগে ডিজিটাল শিক্ষা পাবে। তাদের হাতে কমপিউটার দিয়ে তাদের শিক্ষার অভিজ্ঞতাকে আনন্দময় করতে হবে। স্কুলের ভীতিকর অবস্থার বদলে শিশুরা স্কুলে হাসতে-খেলতে আসবে- এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শিশুদেরকে হালের বলদের মতো কাঁধে শিক্ষার জোয়াল না দিয়ে এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে সে নিজেই ভাবে যে এটি তার প্রয়োজন। ধাপে ধাপে এই ডিজিটাল ব্যবস্থা উপরের দিকে উঠবে এবং এক সময়ে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাটি ডিজিটাল হবে। এই ব্যবস্থা প্রচলনের প্রথম বছরে প্রস্ত্ততি নিতে হবে। এর পরের বছরে শিশুশ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাকে ডিজিটাল করা হবে। এজন্য পাঠ্যপুস্তককে সফটওয়্যারে পরিণত করা, প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ সংগ্রহ ও অবকাঠামো তৈরি করা এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণের কাজ করতে হবে। পরবর্তী বছরে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী, এর পরের বছরে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী এবং তার পরের বছরে নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষাকে ডিজিটাল করা হবে। দশম শ্রেণীর শিক্ষাকে ডিজিটাল করার পরের বছরে উচ্চ মাধ্যমিক এবং পরবর্তী বছরগুলোতে উচ্চশিক্ষাকে ডিজিটাল করা হবে। সার্বিকভাবে মোট দশ বছরে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে ডিজিটাল করা হবে। প্রস্ত্ততি ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়-পরিকল্পনা সমন্বয় করা যাবে।

প্রস্তাবনা : রাষ্ট্র দেশের ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলমান জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের জন্য মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত একই মানের একই ধারার উপযুক্ত শিক্ষা নিশ্চিত করবে। মাদ্রাসা এবং স্কুল নামের ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা থাকবে না। প্রয়োজনে ধর্মীয় শিক্ষার সুব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি নাগরিকের জন্য এই শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হবে। বিদ্যমান অবকাঠামোর উন্নয়ন করে প্রতিটি প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় তথ্যপ্রযুক্তির ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার তৈরি করে তার সাথে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে (১০০ ডলারের বা সম কিংবা কাছাকাছি দামের ল্যাপটপ) কমপিউটার দিয়ে যুক্ত করতে হবে। এই কমপিউটারকে অবলম্বন করে শিক্ষার্থীর বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বা অবকাঠামো নেটওয়ার্ক সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। কার্যত কমপিউটার যন্ত্রটিই হবে শিক্ষার কেন্দ্র। এটি পাঠ্যপুস্তক, মূল্যায়ন যন্ত্র, পাঠাগার বা খেলার সামগ্রী সবকিছুই হবে। ছাত্র-শিক্ষকরা এর সহায়তাতেই নতুন ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলবে। তারা পাঠ্যপুস্তককে সফটওয়্যার হিসেবে পাবে। বাড়িতে, স্কুলে, ক্লাসরুমে যেখানেই সে থাকুক পাঠাগার তার হাতের মুঠোয় থাকবে। শিক্ষকের সাথে তার যোগাযোগ ক্লাসরুমের বাইরে বিস্তৃত হবে, হবে সর্বক্ষণিক।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : msutafajabbar@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৯ - মার্চ সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস