• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ রিপোর্টার
মোট লেখা:৩৭৯
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশন
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক

বিআইজেএফ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক - বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রমে গতি আনতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ


কমপিউটার জগৎ প্রতিবেদক -

বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম তথা বিআইজেএফ-এর উদ্যোগে বাংলাদেশে ই-গভর্নেন্স কার্যক্রমের পর্যালোচনা এবং সুপারিশ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়৷ বিআইজেএফ সভাপতি এম. এ. হক অনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই গোলটেবিল বৈঠকে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন বিআইজেএফ সদস্য শহিদুল কে. শুভ্র৷

বেসিসের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রাউলি বলেন, বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম (ই-গভর্নেন্স) বাস্তবায়ন কাজ আমাদের নিজেদের টাকায় করা উচিত, দাতাদের টাকায় নয়৷ তাহলে টাকার মায়ায় হলেও অন্তত আমরা প্রকল্পের কাজগুলো সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো৷



বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের আমলারা মনে করেন বৈদ্যুতিন সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে তারা নিজেরা কাজ হারাবে, তাদের কাজের জবাবদিহিতা বেড়ে যাবে, ফলে তারা ইচ্ছে করে নিজেদের স্বার্থে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে৷ আমলাতন্ত্রের প্রচলিত ধারা ভাঙতে না পারলে শুধু তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নয়, কোনো খাতেই দেশকে সঠিকভাবে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না৷ তিনি বলেন, রাষ্ট্র বা সমাজে গুণগত পরিবর্তন আনার জন্য যাদের পরিবর্তন করা দরকার তাদেরই আমরা পরিবর্তন করতে পারছি না৷ সরকারের সব কাজ সর্ম্পকে জনগণের জানার পুরো অধিকার আছে৷ একমাত্র তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তা সহজে জানানো সম্ভব৷ এমনকি তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত সংগঠনগুলো কী কী কাজ করছে, কাদের জন্য করছে এটি জনগণকে জানানো হচ্ছে না৷ এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনগুলোকে তিনি উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান৷

দোহাটেকের সভাপতি এ. কে. এম. শামসুদ্দোহা বলেন, যারা বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন তাদের নিজেদেরই এ সর্ম্পকে পুরোপুরি ধারণা নেই৷ বৈদ্যুতিন সরকারের বিষয়টি উন্নত দেশের অভিজ্ঞতা দেখে চালু করে দিলেই হবে না৷ তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে বৈদ্যুতিন সরকার বাস্তবায়ন করতে হবে৷

আইইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. কে. আবুল হাশেম বলেন, তার প্রতিষ্ঠান বৈদ্যুতিন সরকার বাস্তবায়নের কয়েকটি প্রকল্পের কাজ সফলভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করেছে৷ কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এসব প্রকল্পের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা পরে বজায় থাকে না৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ড. হাফিজ মো: হাসান বাবু বলেন, আমাদের মন্ত্রনালয়গুলোর কোনো কাজে সমন্বয় নেই৷ দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রনালয় একই কাজ বিভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে৷ এ ধারণার পরিবর্তন করা না গেলে দেশ যতটুকু এগুবে, তার চেয়ে বেশি পিছিয়ে যাবে৷

বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট তারেক মোসাদ্দেক বরকতল্লাহ বলেন, বৈদ্যুতিন সরকারসহ তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আমাদের ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা বাড়াতে হবে৷ বৈদ্যুতিন সরকারকে, সরকারের প্রশাসনিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে৷

সাপোর্ট টু আইসিটি টাস্কফোর্স (এসআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কিছু কিছু সেবা স্বয়ংক্রিয় করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা) অধীনে এ প্রকল্প চালু করা হয়েছে৷ হয়তো প্রকল্পের সাফল্যের হার খুব একটা বেশি নয়, তবু সবার সাহায্য পেলে এ প্রকল্প এগিয়ে নেয়া সম্ভব৷

ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব অস্ট্রেলিয়ার ডক্টরাল কোর্সের ছাত্র আহমেদ ইমরান বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রমের ধারণা সর্ম্পকে বলেন, আমরা সাধারণত মনে করি বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম মানে ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট ইত্যাদি৷ গতানুগতিক এই ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে৷ আসলে ই-গভর্নেন্স (বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম) শাসন ব্যবস্থার স্বচ্ছতার একটি অংশ৷ এটিকে আমাদের সংস্কৃতির অংশ করে ফেলতে হবে৷ বৈদ্যুতিন সরকার কখনোই প্রকল্প হিসেবে থাকা উচিত নয়, এটি একটি সামগ্রিক বিষয়৷

সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব কারার মাহমুদুল হাসান বলেন, সরকারের সচিবদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ধারণা না বাড়ানো গেলে বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম প্রকল্প কোনো কাজে আসবে না৷ এরা তো তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণার অভাবে আগ্রহই দেখাবে না৷

প্রধান উপদেষ্টার দফতরে বাস্তবায়নাধীন এক্সেস টু ইনফরমেশন (অ২ও) প্রকল্পের কর্মরত পরামর্শক ড. কাজী মারুফ ইসলাম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ২০২৫ সাল নাগাদ বৈদ্যুতিন সরকারের লক্ষ্য স্থির করেছি৷ যা কৃষি, ভূমি, স্বাস্থ্যসেবা এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়সমহে বাস্তবায়ন করা হবে৷

বৈঠকে বক্তারা বাংলাদেশের বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু সুপারিশ পেশ করেন৷ সুপারিশগুলো হলো :
সরকারকে বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) তৈরি করতে হবে৷ কোনো একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে এই দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে, যেটির জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে এবং বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রমে পুরো বাস্তবায়ন নকশা (আর্কিটেকচার) তৈরি করবে৷ এসআইসিটি প্রকল্পের সফলতা ও বিফলতার অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিন সরকারবিষয়ক প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো৷ বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট সিস্টেমের মতো সরকারি বিভিন্ন সেবা খাতকে বিওও ভিত্তিতে ছেড়ে দিয়ে বৈদ্যুতিন সরকার কার্যক্রম বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতকে ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দিতে হবে৷ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রসারের জন্য মেধাস্বত্ত্ব আইন বাস্তবায়ন করতে হবে৷ বৈদ্যুতিন সরকার বিষয়ক গবেষণা কাজে ছাত্রছাত্রীদের উত্সাহিত করতে হবে৷ নীতিনির্ধারকদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনার জন্য পাবলিক সেক্টর প্রশিক্ষণে তথ্যপ্রযুক্তিকে গুরুত্ব দিতে হবে৷ সরকারের নিজের মধ্যে বৈদ্যুতিন সরকার চালু করতে হবে৷ সরকারি চাকরিতে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিকে গুরুত্ব দিতে হবে৷
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - ফেব্রুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা