• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বাংলাদেশের আইটি শিল্পের প্রযুক্তির জন্য নীতিবিবেচ্য
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: লুনা শামসুদ্দোহা
মোট লেখা:৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - এপ্রিল
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
বাংলাদেশ
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ৩
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বাংলাদেশের আইটি শিল্পের প্রযুক্তির জন্য নীতিবিবেচ্য





লুনা শামসুদ্দোহা
চেয়ারম্যান, দোহাটেক

বাংলাদেশের সম্ভাবনা নির্ভর করছে একটি প্রজন্ম পরিবেশের ওপর, যা আইটি খাতকে টিকিয়ে রাখবে ও এর প্রসার ঘটাবে। কথা হচ্ছে এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ও জনগণের উন্নয়নের জন্য আইটি কী ভূমিকা রাখতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত বাংলাদেশে চর্চা হয়েছে। আমি আমার বক্তব্য শক্তিশালী আইটি শিল্পের জন্য অপরিহার্য শর্তসমূহের মধ্যে সীমিত রাখব। এ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও অনেক কিছুই আমরা তৈরি করতে পারিনি। এ লেখায় আমি সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রের ওপর আলোকপাত করবো, যা ইন্ডাস্ট্রি ইকোসিস্টেমের জন্য যথাযথ হবে। উল্লেখ থাকবে আউটসোর্সিং ও সম্ভাব্য কৌশল বিষয়েও। সব শেষে উল্লেখ করবো সম্ভাবনা ও বেসরকারি খাত বিষয়ে।

আমি মনে করি, এ খাতকে শুধু প্রযুক্তি হিসেবে দেখার বিষয় নয়। এটি অর্থনীতি, ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনা ও শাসন সংক্রান্ত বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আইটি নীতিমালা/কর্মপন্থা প্রণয়নে বিভিন্ন শিল্প বিজ্ঞান ও বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। বিষয়টি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার প্রকৌশল বিভাগের ওপর কিংবা সরকারের সিস্টেম অ্যানালিস্টদের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। এ বিষয়টি বাংলাদেশের আইটি খাতের ধীর প্রবৃদ্ধির মুখ্য কারণ। ডিজিটাল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অর্থনীতিতে যে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে সে লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা বাজেট পর্যালোচনায় বিবেচনায় আনতে হবে।

ইন্টারনেট সংযোগ

আইটির সর্বব্যাপিতার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ একটি একক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিগত সরকারের নীতি ছিল উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রার ও অবাস্তবায়নযোগ্য। এদের উদ্দেশ্য ছিল হই-চই করা ও অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় চালানো, যা থেকে এরা বিপুল আয় করেছে। কিন্তু আইটি খাতের প্রবৃদ্ধি ঘটতে দেয়নি। বিশ্ব বাণিজ্যে অংশ নেয়ার জন্য ব্রডব্যান্ড রেট অবশ্যই চীন ও ভারতসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আউটসোর্সিং দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। সম্প্রতি পরিবর্তিত ব্রডব্যান্ড রেট আগের তুলনায় আশাব্যঞ্জক।

কমপিউটার প্রকৌশলী এবং গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষা

বিগত কয়েক বছরে কমপিউটার প্রকৌশলীদের অপর্যাপ্ত অফটেকের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে ছাত্রভর্তি ব্যাপক কমে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল কোর্সসমূহে আরো বেশি করে ছাত্রভর্তি হওয়ার ব্যাপারে আমাদেরকে উৎসাহিত করতে হবে। বর্তমানে ছাত্রভর্তির মানে ব্যাপক পতন ঘটেছে। স্কুল-কলেজে গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষায় জোর দেয়া হচ্ছে কম। দ্রুত এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার।

আউটসোর্সিং সম্পর্কে জানা

প্রধান প্রধান শিল্পে আউটসোর্সিং করা কাজ অনুশীলনের জন্য বিভিন্ন পরিশোধিত মডেল রয়েছে। আইটি আউটসোর্সিং বিজনেস মডেল সম্পর্কে পর্যাপ্ত জানার অভাব পূরণ করতে হবে শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো থেকে know-how কিনে এনে। শিল্প, শিক্ষাঙ্গন ও নীতিনির্ধারকদের জন্য জ্ঞান পাওয়ার যোগ্য করে তুলতে হবে।

ব্যবস্থাপনা ব্যক্তিত্ব

বিপুলসংখ্যক ব্যবস্থাপনা ব্যক্তিবর্গকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে এরা এ খাতের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। যথাযথ ব্যবস্থাপনা শিক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তির অভাবে এ খাতের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একটি ক্যাডার সৃষ্টি করতে হবে ব্যবস্থাপক, উদ্ভাবক, ব্যবসায় পরামর্শক, প্রধান নির্বাহী ও ব্যবসায়ী শ্রেণীসহ আইটি বিশেষজ্ঞ, পেশাজীবী আইটি কর্মী, ডিজাইনারদের সমন্বয়ে।

উদ্ভাবনামূলক অর্থায়ন

অন্যান্য দেশে উদ্ভাবনামূলক কাজে অর্থায়নের যোগান ও অনুশীলন যেভাবে চলে, আমাদের দেশে তা করতে হবে। প্রচলিত মডেলে যেভাবে এ খাতে ঋণ দেয়া হয়, তা কার্যকর নয়। এখানে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডিং স্বদেশজাত ও অপর্যাপ্ত। আমাদের নো-হাউ অর্জন করতে হবে। নইলে এখানে প্রবৃদ্ধি ঘটবে না। কোম্পানিগুলো বাইরে চলে যাবে।

বাহ্যিক অর্থায়ন

এ খাতে বৈদেশিক অর্থায়ন বা বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে হবে। এ ধরনের তহবিল আকৃষ্ট করতে কর্পোরেট বিষয়াবলী আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। বিশেষ করে প্রাথমিক পর্যায়ের অর্থায়নের ক্ষেত্রে তা প্রয়োগযোগ্য।

বৈদেশিক বিক্রি

বিক্রির মিশন নিয়ে অব্যাহতভাবে বিদেশে বিপণনের জন্য বিভিন্ন মেলায় অংশ নিতে হবে। শুধু একটি বার্ষিক আইটি মেলায় অংশ নেয়া এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। সুযোগ-সুবিধা সর্বোচ্চমাত্রায় আদায় করার লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা চালাতে হবে, যাতে করে প্রতিযোগিতামূলক আউটসোর্সিংয়ের স্বাগতিক দেশগুলো বাংলাদেশী পেশাজীবীদের ভিসা সুবিধা দেয়।

বিশেষ ক্ষেত্রে জোর দেয়া

আইটি শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রের প্রবৃদ্ধির জন্য ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন দরকার। আইটিইএস, সফটওয়্যার তৈরি ও জ্ঞানভিত্তিক শিল্পক্ষেত্রের কল্যাণের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে পৌঁছানোর জন্য সুস্পষ্ট ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। এ দুইকে আলাদা আলাদা রেখে বাংলাদেশে কোনোটিরই উপকার বয়ে আনেনি।

ই-গভর্নেন্স

ই-গভর্নেন্সের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান দুর্বলতা হচ্ছে প্রয়োজন নির্ধারণে অযোগ্যতা। অটোমেশন ও পরিবর্তন যে অবদান বয়ে আনতে পারে, সরকার ও স্থানীয়ভাবে দাতা সংস্থাগুলোর বিদ্যমান প্রকল্পের মাধ্যমে তা আনা সম্ভব হয়নি। শিগগিরই এই সক্ষমতা আনা দরকার, যাতে করে প্রত্যাশিত কল্যাণ অর্জন করা যায়। সর্বোত্তম ও প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাবগুলো বাছাইয়ের জন্য মূল্যায়নকারীদের সক্ষমতার অভাবও রয়েছে। সে কারণে প্রপোজেল এওয়ার্ডিংয়ে অপরিমিত বিলম্ব ঘটে। একইভাবে সঠিক মূল্যায়নকারীকেও মূল্যায়নের কাজ দেয়া হয় না। ব্যর্থ প্রকল্পের উঁচু হার এরই একটি পরিণাম।

ইনফরমেশন সিস্টেম পলিসি

যথাযথ ইনফরমেশন সিস্টেম পলিসি অবশ্যই কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি থাকা চাই সরকারের প্রয়োজন-যথাযথ নিরাপত্তা মান। এক্ষেত্রে অনেক কিছু প্রত্যাশা করার আছে।

মেধা সম্পদ

মেধাস্বত্ব নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। সফটওয়্যার কোম্পানি এই একটি মাত্র সম্পদ সৃষ্টি করেছে। মালিকানার স্বীকৃতি দিতে হবে। এর জন্য ন্যায্য রাজস্বও পরিশোধ করতে হবে। নয়তো সব উদ্যোগ হারিয়ে যাবে কিংবা বাংলাদেশের বাইরে চলে যাবে। প্রকৃতপক্ষে সরকারকে উৎসাহিত করতে হবে বেসরকারি কোম্পানির মেধাস্বত্ব অর্জনের জন্য, যাতে করে এগুলো অন্যান্য জায়গায় বাজারজাত করা যায়। সফল ই-গভর্নেন্স প্রকল্পের জন্য সহযোগিতার একটি প্রক্রিয়ার কথা বিবেচনায় আনা দরকার। বিদেশেও এর সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের প্রকল্পের জন্য বিদেশে আমরা যোগ্যতা অর্জন করেছি এবং সরকারের সাথে সহযোগিতা গড়ে তুলে আমরা উপকৃত হতে পারি।

সরকার ও নতুন ব্যবসায়ের নমুনা

আইটি খাতে নতুন বিজনেস দ্রুত গ্রহণ করতে হবে এবং আইটি কেনার ক্ষেত্রে ক্রয়-প্রক্রিয়া যথাযথভাবে চালু করতে হবে। ‘Software as a service’ হচ্ছে একটি নতুন নমুনা এবং সরকার তার প্রতিটি বিভাগের জন্য নিজস্ব সফটওয়্যার তৈরি করার প্রত্যাশা করতে পারে না। এটি উন্মুক্ত রাখা চাই বিজনেস মডেলের জন্য। যার মধ্যে থাকবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব।

উন্নীতকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ বাজেট

যেহেতু ডিজিটাল কর্মক্ষেত্রে উত্তরণের অর্থ হচ্ছে একটি দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আটকে থাকা, বাধাহীন সার্ভিসের জন্য অর্থ পরিশোধ সুস্পষ্টভাবে কার্যকর করতে হবে, নইলে সরকারি সংস্থার জন্য তা ধ্বংসকর বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। হোস্টিং ও কানেকটিভিটি অর্থ যোগানোর অক্ষমতা মাঝপথে বাধার কারণ হতে পারে, যা এ ধরনের সরকার সামাল দিতে পারবে না।

আউটসোর্সিং

আউটসোর্সিং গন্তব্য-তাড়িত হয় না। আউটসোর্সিং তাড়িত হয় দেশ দিয়ে, অর্থাৎ বিদেশে কাজ স্থানান্তরিত করার মাধ্যমে। প্রাথমিক বাজার নির্ণায়কগুলো হচ্ছে সম্ভাব্য স্থানে কাজের উৎস সম্পর্কে বিবেচনা ও ধারণা, যেখানে কাজ আউটসোর্স করা যাবে। যেহেতু আউটসোর্সের অর্থ হচ্ছে ব্যয় কমানোতে অবদান রাখা, সেজন্য তা হতে হবে দক্ষতাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় ব্যয়ের। আউটসোর্সিংয়ের বিজনেস মডেল বুঝতে হবে এবং নিয়োগদাতাকে আস্থাশীল হতে হবে যে, কাজের অনুশীলন হয় অধ্যবসায়ের সাথে। যেসব কোম্পানি বাইরে কাজ আউটসোর্স করে, সেগুলো অপ্রত্যাশিত কোনো সুযোগ নিতে পারে না। বাংলাদেশ যতক্ষণ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তুলতে না পারবে এবং এর অনুশীলন ও প্রয়োজন সম্পর্কে সতর্ক না হবে, ততদিন বাংলাদেশ একটি অর্থপূর্ণ আউটসোর্সিং ডেস্টিনেশন হওয়ার প্রত্যাশা করতে পারে না। আমরা বিগত ৭ বছরের সরকারে আইটির সম্ভাবনা সম্পর্কে কোনো উপলব্ধি লক্ষ করিনি। আমরা ভাবিনি স্বল্প মেয়াদে বাংলাদেশে একটি শিল্প গড়ে উঠতে পারতো এবং তা গড়েও উঠেনি।

বাংলাদেশ মানসম্পন্ন সফটওয়্যারের উৎস

বাংলাদেশের যুবকদের মধ্যে কমপিউটিংয়ের স্বাভাবিক মেধা রয়েছে। এ খাতে অধিকতর ভালো ছাত্রদের আকৃষ্ট করতে হবে। মেধাবীদের আকৃষ্ট করার কাজে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরো বেশি কাজ করতে হবে। শুধু যোগ্যজনেরাই পারেন মানসম্পন্ন সফটওয়্যার সরবরাহ করতে। এর জন্য প্রয়োজন উদ্যোগ ও ব্যবসায়িক কৌশল। যথাযথ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলে বাংলাদেশ সফলতা অর্জন করতে পারে। আমার কোম্পানি ‘দোহাটেক’ যোগান দিয়ে আসছে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরের জন্য পুরস্কার বিজয়ী সলিউশন এবং ‘প্যান অ্যামেরিকান হেলথ অরগানাইজেশন’-এর জন্য ইআরপি। দোহাটেকের রয়েছে রাজস্ব অর্জনকারী ই-গভর্নেন্স, কর্পোরেট ম্যাসেজিংয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত সফটওয়্যার, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইন্স্যুরেন্স অ্যাডভাইজরি পোর্টাল এবং প্রোপ্রাইটরি মাল্টি-বায়োমেট্রিক মেচিং সলিউশন। এগুলো সবই করা হয়েছে দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের দিয়ে। আমি অন্তর্ভুক্ত ‘কাউন্সিল অব গ্লোবাল থট লিডার্স’-এ। আমি একজন মাইক্রোসফট রোল মডেল। যুক্তরাজ্যের এক প্রযোজক ও পরিচালক দোহাটেকের ওপর একটি ভিডিওচিত্র তৈরি করেছেন এবং তা ৪৬টি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে। দোহাটেক সুইজারল্যান্ড থেকে দুটি পুরস্কার পেয়েছে। আমি ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের প্রতিষ্ঠিত ‘এভিয়ান গ্রুপ ব্রেইনস ট্রাস্ট ফর রেসপনসিবল লিডারশিপ’ এবং আইএমডির সাথেও আছি- এ সবকিছুই ঢাকা থেকে সফটওয়্যার উদ্যোগের জন্য। এটি মান ও দক্ষতার প্রতি একটি স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিক সাথীদের সম্মান।

প্রযুক্তি উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা

প্রগতির অপরিহার্য শর্ত হচ্ছে প্রযুক্তির উন্নয়ন। প্রসারকামী যেকোনো দেশের জন্য তা অবশ্যকরণীয়। সব আধুনিক সরকার তাদের কৌশলে এ বিষয়টিকে সবার আগে রাখে- কোন দেশ প্রযুক্তিগতভাবে কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে অর্থনীতির উন্নতি কিংবা অবনতি। অতীতের সরকারগুলোকে দেখিনি এ ব্যাপারে যথার্থ জোর দিতে। অর্থনীতি ও উৎপাদনশীলতার উন্নয়ন চাইলে দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে।

সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা

সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন বিষয়ে সবটুকুই করে। সরকার শুধু আলোচনা করে ট্রেড বডিগুলোর সাথে। সেখানে সত্যিকারের কোনো বিবেচ্য বিষয় যেমন আসে না, তেমনি সেগুলো জানার প্রত্যাশাও সেখানে নেই। প্রবৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের সম্ভাবনাময় স্বল্পসংখ্যক কোম্পানি রয়েছে। সরকার কোম্পানিবিশেষের বক্তব্য শুনতে পারে। বিভিন্ন দেশের কৌশল হচ্ছে, কোনো সম্ভাবনাকেই না হারানো। সরকারের উচিৎ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা এবং উদ্ভাবনামূলক ধারণাকে বাণিজ্যিক মূল্যে রূপায়ণের ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া। শিল্পকারখানাকে খোলাখুলিভাবে প্রবৃদ্ধির দৌড়ে নামতে হবে সম্ভাব্য সবধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য। আমাদের সবাইকে স্বীকার করতে হবে, আমরা কাজ করি একটি জটিল পরিবেশে এবং আন্তর্জাতিক বিপণন খুবই ব্যয়বহুল। ফলে বাংলাদেশকে আইটি মানচিত্রে স্থান করে দিতে বাংলাদেশের শিল্পের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের উচিত সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু যোগাড় করা। এর জন্য যা খরচ হবে, অর্থনৈতিক অর্জন তার চেয়ে আরো অনেক বেশি হবে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : lunadoha@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস