• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ওয়েব টু কী এবং কেনো?
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: আরিফুর রহমান
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইনটারনেট
তথ্যসূত্র:
ইন্টারনেট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ওয়েব টু কী এবং কেনো?



ওয়েব ২.০ (Web2.0) শব্দটি প্রথম ২০০৩ সালে বিজনেস আইটি ম্যাগাজিন সিআইও আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে এরিক নর ব্যবহার করলেও, ওয়েব ২.০-এর ধারণাটি প্রথম আলোচনায় আসে ২০০৪ সালে ও’রেল্লি মিডিয়ার একটি ওয়েব কনফারেন্সের পর।

ওয়েব ২.০ কী

গুগলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম বসওয়ার্থ (Adam Bosworth) ওয়েব ২.০-কে ব্যাখ্যা করেন একটি সমৃদ্ধ ইন্টেলিজেন্ট ক্লায়েন্ট হিসেবে যা ওয়েবে তথ্য শেয়ার করে এবং অধিক সমৃদ্ধ মিডিয়া নিয়ে কাজ করে। যেমন : ফটো, সাউন্ড, ভিডিও ইত্যাদি। তিনি স্বীকার করেন, এগুলো নতুন কিছু নয়। তিনি ইনফরমেশন ওভারলোডিংকে নতুন ওয়েবের প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করেন। তার মতে রেট, রিভিউ এবং আলোচনার জন্য ব্যবহৃত টুলগুলো হচ্ছে ওয়েব ২.০-এর প্রকৃত আবিষ্কার।

আবার ওয়েব ২.০-কে ব্যাখ্যা করতে গ্লোবালাইজেশন, ইন্টারন্যাশনালাইজেশন আর গ্লোবাল ভিলেজের মতো বিভিন্ন ধারণা ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ ওয়েব ২.০ একটিমাত্র ব্যাপার বা জিনিস নয়। ওয়েব ২.০ হলো কতগুলো প্রচেষ্টার সমষ্টি। আর এই প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে এপিআই, আরএসএস, সোস্যাল নেটওয়ার্ক ইত্যাদি।

ওয়েব ২.০ বলতে একটি সম্পূর্ণ অংশগ্রহণভিত্তিক ওয়েবকে বোঝায়। এ অংশগ্রহণ মানুষ এবং মেশিন উভয়ের। ফলে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব টেকনোলজি ও ওয়েব ডিজাইনে এসেছে লক্ষণীয় পরিবর্তন, যার মূল লক্ষ্য সৃষ্টিশীলতা, নিরাপদ তথ্য আদানপ্রদান, সমষ্টিগত কাজ ও ওয়েব ব্যবহারকে উৎসাহিত করা।

এখানে মনে রাখা প্রয়োজন, ওয়েব ২.০ ক্রমপরিবর্তনশীল ওয়েব ছাড়া অন্য কিছু নয়। এটি সেই ওয়েব যা কিনা এতদিন ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু সমস্যা, পরিচিতি এবং প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে ভিন্ন। তাই ওয়েব ২.০ শব্দটির ব্যবহার ওয়েবের এই ক্রমপরিবর্তনের পরিচায়ক।

বৈশিষ্ট্য

ওয়েব ২.০ সাইটগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তথ্য গ্রহণের বাইরেও সাইটগুলো ব্যবহারকারীকে আরো বেশি কিছু করার সুযোগ দেয়। ওয়েব ১.০-এর পরস্পর প্রতিক্রিয়াশীল সুবিধাগুলোকে ব্যবহার করে তৈরি ওয়েব ২.০ সাইটগুলো নেটওয়ার্ককে একটি প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে, ফলে ব্যবহারকারী তার সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন চালাতে পারে শুধু ব্রাউজার ব্যবহার করে। এ কারণে ওয়েব ২.০-কে প্রায়ই ব্যাখ্যা করা হয় প্লাটফর্ম ওয়েব হিসেবে। ওয়েব ২.০-কে দেখা হয় উভয়মুখী মাধ্যম হিসেবে যেখানে ব্যবহারকারী পাঠক ও লেখক উভয়ই।

ওয়েব ২.০ সাইটের ডাটাগুলো ব্যবহারকারী পেতে পারে এবং ব্যবহার করতে পারে তার ইচ্ছেমতো।

ওয়েব ২.০ সাইটগুলোর আর্কিটেকচার এমন হয় যা ইউজারকে উৎসাহিত করে অ্যাপ্লিকেশনে নতুন মাত্রা যোগ করতে।

অধিকাংশ ওয়েব ২.০ সাইটের বৈশিষ্ট্যগুলো হয় সমৃদ্ধ এবং এর ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসে ব্যবহার হয় অ্যাজাক্স, ফ্লেক্স, জেকে ফ্রেমওয়ার্কের মতো সমৃদ্ধ মিডিয়া।

সংক্ষেপে ওয়েব ২.০-এর বৈশিষ্ট্য হলো : ব্যবহারকারীর চাহিদা পূরণ, তার অংশগ্রহণ, ডায়নামিক কনটেন্ট, মেটাডাটা, ওয়েব স্ট্যান্ডার্ড ইত্যাদি।

ফিচার

মাঝে মাঝে জটিল ও ক্রমপরিবর্তনশীল ওয়েব ২.০ প্রযুক্তির অবকাঠামোতে যুক্ত হয় সার্ভার সফটওয়্যার, অন্য সাইটের সংযুক্তি, মেসেজিং প্রোটোকল, ব্রাউজার প্লাগইন এবং এক্সটেনশন ও বিভিন্ন ক্লায়েন্ট অ্যাপ্লিকেশন। ওয়েব ২.০ সাইটগুলো সাধারণত নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো সংযোজন করে থাকে :

০১. সার্চ :

কী ওয়ার্ডের মাধ্যমে সাইট থেকে কোনো তথ্য সহজে খুঁজে বের করে।

০২. লিঙ্ক :

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত অংশে নিয়ে যায়।

০৩. অথরিং :

সর্বক্ষণিক পরিবর্তিত কনটেন্ট তৈরি করে। যেমন- উইকিতে একজন আরেকজনের কাজকে পরিবর্তন কিংবা পরিবর্ধন করতে পারে। আবার ব্লগে পোস্ট এবং কমেন্ট জমা হতে থাকে।

০৪. ট্যাগ :

ট্যাগ মৈত্রীর মাধ্যমে কনটেন্টকে ক্যাটাগরিতে ভাগ করে। ট্যাগ হলো একটিমাত্র শব্দ দিয়ে কনটেন্টকে বর্ণনা করা যা সার্চিংয়ে সাহায্য করে।

০৫. এক্সটেনশন :

অ্যালগরিদমের মাধ্যমে কিছু কিছু কাজকে স্বয়ংক্রিয় করে এবং প্যাটার্ন ম্যাচ করে।

০৬. সিগন্যাল :

আরএসএস (রিএলি সিমপ্লি সিন্ডিকেশন) প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনো কনটেন্টের যেকোনো পরিবর্তন ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো যায়।

strong>ওয়েবভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন এবং ডেস্কটপ

ক্লায়েন্ট সাইড ফ্রেমওয়ার্ক যেমন : অ্যাজাক্সের ব্যবহার ওয়েব ডেভেলপমেন্টকে ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশনের খুব কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। যেমন : ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডশিট, স্লাইডশো প্রেজেনটেশন ইত্যাদি।

কিছু ব্রাউজারভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম এসেছে, যেমন-আইওএস (eyeOS) এবং ইউওএস (youOS) যাতে ডেস্কটপ ওএস-এর মতো অনেক ফিচার ও অ্যাপ্লিকেশন পাওয়া যায়। এই অপারেটিং সিস্টেমগুলো ক্লায়েন্ট কমপিউটারের হার্ডওয়্যার নিয়ন্ত্রণ করে না, ফলে অনেক সার্ভিসই গতানুগতিক ওএস-এর মতো কাজ না করে অ্যাপ্লিকেশন প্লাটফর্মের মতো কাজ করে।

আবার কিছু অ্যাপ্লিকেশন আছে যাদের চালাতে সাধারণত একটি ফ্রেমওয়ার্ক প্রয়োজন হয়। এই ফ্রেমওয়ার্ককে বলা হয় আরআইএ ফ্রেমওয়ার্ক। আর এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনকে বলা হয় আরআইএ (Rich Internet Applications)।

আরএসএস (Really Simple Syndication) হলো কমপিউটারে তৈরি ডাটা-ফাইল ফরমেট, যা এক সাইটের সাথে অন্য সাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের সাথে যোগাযোগে ব্যবহার হয়। আরএসএস ব্যবহার করে ডেভেলপাররা সহজে অন্য ডাটা সোর্সের সাথে নিজেদের ডাটা সোর্সের সমন্বয় করতে পারে।

আর যে টুলটি এসব সম্ভব করেছে তা হলো এপিআই। এপিআই ওয়েবভিত্তিক ডাটা এবং ফাংশনের প্রবাহ সৃষ্টি করে। ফলে এক সাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের সাথে অন্য সাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের ডাটা আদানপ্রদান ও যোগাযোগ সহজ হয়।

সম্ভাবনা

ওয়েব ২.০ পাবলিক সেক্টরেও অবদান রাখতে পারে সরকারকে রাজস্ব অর্জনে সাহায্য করার মাধ্যমে। ওয়েব ২.০ উইকি, বিভিন্ন ফোরামগুলোর ছড়ানো জ্ঞান, টুলস্ আর অভিজ্ঞদের একসাথে করার মাধ্যমে উন্নত শিক্ষা ও গবেষণায় সম্ভাবনা তৈরী করেছে।

সমাজসেবায় ওয়েব ২.০ যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সমাজসেবা এখন হতে পারে ঘরে বসে। চিকিৎসা সেবা, আইনিসেবা কিংবা কোনো এলাকার তথ্য বিশ্লেষণে ওয়েব ২.০-এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, যেমন : চ্যাট, ব্লগ, জিআইএস (জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম) ব্যবহার হতে পারে।

সমালোচনা

বিতর্ক রয়ে গেছে এখনও যে, ওয়েব ২.০ নতুন কোনো ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব তৈরি করেনি বরং তথাকথিত ওয়েব ১.০-এর প্রযুক্তি ও ধারণাকেই ব্যবহার করছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।

বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তি যেমন : অ্যাজাক্স, পুরনো এইচটিটিপি প্রোটোকলকেই ব্যবহার করছে শুধু এর ওপর একটি স্তর যোগ করে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক non_frnd@yahoo.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস