• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > শাবাশ টাইগার আইটি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: এম. এ. হক অনু
মোট লেখা:২৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইটি
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
শাবাশ টাইগার আইটি

‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেকনোলজি’ তথা এনআইএসটি’র বেঞ্চমার্কে প্রথম তিনটির মধ্যে স্থান দখল করতে পেরেছে বাংলাদেশী সফটওয়্যার কোম্পানি টাইগার আইটি লিমিটেড। এর ফলে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম এ সার্টিফিকেশন অর্জন করলো এবং বিশ্বের ছয়টি ‘অটোমেটেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম (এএফআইএস) সার্টিফায়েড’ দেশের মধ্যে একটি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলো।



স্বয়ংক্রিয়ভাবে আঙ্গুলের ছাপ শনাক্তকরণ সিস্টেমে সফটওয়্যার ডেভেলপ করে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এনআইএসটি’র সার্টিফিকেশন অর্জন করে বাংলাদেশী কোম্পানি টাইগার আইটি। এ অর্জন দেশের আইটি খাতের জন্য এক মাইলফলক।

বায়োমেট্রিক প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় দেশসমূহের মধ্যে বরাবরই এগিয়েছিল। ২০০৭-০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা ও পরিচয়পত্র প্রস্ত্তত করা ছিল এর প্রথম ধাপ। টাইগার আইটি উদ্ভাবিত সফটওয়্যারের সহায়তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স্বল্পতম সময়ে অন্যতম বৃহৎ বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি রেকর্ড সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল শফিকুল ইসলাম পরিচয়পত্র প্রস্ত্ততের ক্ষেত্রে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য আইডি ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল কনগ্রেস থেকে ২০০৮ সালের আইডি পদক পান। এটি কোনো সাধারণ অর্জন বা ঘটনা ছিল না। এর বাইরে টাইগার আইটি একটি এএফআইএস সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিটটি (এসডিকে) উন্নয়ন করে নিজেকে এনআইএসটি সার্টিফায়েডে অন্তর্ভুক্ত করে। যা এই অর্জনকে আরো গৌরবান্বিত করে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মাত্র ছয়টি দেশের গৌরবজনক এ অর্জন রয়েছে। এনআইএসটির এই সার্টিফিকেটকে ডিফেক্টো মান হিসেবে বিশ্বব্যাপী মেনে নেয়া হয়।

টাইগার আইটি ২০০৮ সালের প্রথম দিকে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য কাজ শুরু করে। এরা শুধু একটি বায়োমেট্রিক এসডিকে উদ্ভাবন করেনি, বরং বিশ্বের শীর্ষ তিনটির মাঝে একটি সার্টিফায়েড এসডিকে উদ্ভাবনের স্বীকৃতি আদায় করে। অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে উদ্ভাবিত টাইগার আইটির এই এএফআইএস এসডিকে ২০০৯ সালের জুন মাসে এনআইএসটি’র কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং ২৯ জুন কর্তৃপক্ষ তাদের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেখা যায়, চারটি ক্যাটাগরিতে টাইগার আইটির অবস্থান শীর্ষে। এছাড়াও ৩টি ক্যাটাগরিতে টাইগার আইটি দ্বিতীয় এবং দু’টি ক্যাটাগরিতে চতুর্থ স্থান দখল করে। সার্বিকভাবে টাইগার আইটি বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাতারে দাঁড়াতে সক্ষম হয়। টাইগার আইটি ছাড়া অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান বিশ্বসেরার মাঝে আছে সেগুলো হলো এনইসি, কজেন্ট, সাজেম এবং এল১। আরো বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে এই লিঙ্কটিতে fingerprint.nist.gov/SDK/।

যাচাই করার ‘বৃহৎত্তর ও সংশ্লিষ্ট’ ডাটাসেটে দুই আঙ্গুলের ছাপ যাচাই পরীক্ষায় টাইগার আইটি শতকরা ০.০১% ভুল এবং শতকরা ৯৯.৮/৯৯.৯ ভাগ নির্ভুল শনাক্ত করে তিনটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের মাঝে ঠাঁই করে নিতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে বারো বছরের পুরনো ডাটার যাচাই পরীক্ষায় টাইগার আইটি চারটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের মাঝে ঠাঁই করে নেয়। এক্ষেত্রে টাইগার আইটির নির্ভুলতা ছিল শতকরা ৯৮.৯ ভাগ ও ভুলের হার ছিল শতকরা মাত্র ০.০১ ভাগ।


জিয়াউর রহমান

ওয়েব ২.০ প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে নির্মিত টাইগার এএফআইএস একটি সার্ভিস ইঞ্জিনের সহায়তা দিয়ে থাকে, যা প্যারালাল প্রসেসিং প্রযুক্তি এবং স্ট্যান্ডার্ড বাণিজ্যিক হার্ডওয়্যারে সম্প্রসারণযোগ্য। টাইগার এএফআইএস-এর ব্যবসায়ী নিয়মরীতি ও কর্মপ্রবাহ প্রতিটি ব্যবহারকারীর জন্য সম্পূর্ণভাবে নিজের মতো করে সাজানোর উপযোগী।

ক্রেতারা সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকতে পারেন যদি তারা পরিচিত ব্যবস্থাপনা ও ক্রেডেনশিয়াল সলিউশনসহ টাইগার আইটি লিমিটেডের টাইগার আইডি সমাধানটি গ্রহণ করেন। টাইগার আইডি হচ্ছে একটি সুলভমূল্যের সমন্বিত মডিউলার এসওএ (সার্ভিস ওরিয়েন্টেড আর্কিটেকচার) স্যুট যাতে অন্তর্ভুক্তির পূর্বপ্রস্ত্ততি, অন্তর্ভুক্তি, সেবার জন্য ফি নির্ধারণ ও আদায়, পরিচিতির সংশোধন, প্রত্যয়ন ও নিশ্চিতকরণ, ক্রেডেনশিয়াল, ব্যক্তিগতকরণ ও ব্যবস্থাপনা (ঐতিহ্যগত ও ইলেক্ট্রনিক কার্ড ও পাসপোর্টসহ), পরিচয়পত্র দেয়া ও জীবনচক্র ব্যবস্থাপনা, গুরুত্বপূর্ণ তালিকা ও বাতিল তালিকা, দ্রুত অন্তর্ভুক্তিকরণ/বাতিল, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও উন্নত ব্যবস্থাপনা, রিপোর্টিং এবং ব্যবস্থাপনা ড্যাশবোর্ড ইত্যাদি রয়েছে। এই মডিউলগুলো ওয়েব ২.০ সমতুল্য যাতে পরিচিতি ব্যবস্থাপনা কর্মপ্রবাহ এবং ডাটাবেজ ইঞ্জিনকে পরিচিতি ব্যবস্থাপনা ও ক্রেডেনশিয়াল প্রোগ্রামের জন্য সমন্বিত করা হয়েছে।

এনআইএসটির পরীক্ষার ফল ঘোষণার ফলে টাইগার আইটি তাদের এই অনন্য পণ্যটি নাইজিরিয়া ও কলম্বিয়া সরকারের কাছে বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও উগান্ডা সরকার এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করেছে এবং তা কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য পর্যালোচনা করে দেখছে। টাইগার আইটির আইডি সলিউশন এখন আফগানিস্তানের ব্যাংকিং ও কানাডার শিশুদের পরিচয়পত্র ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ এখন বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির সুপার পাওয়ারে পরিণত হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে এএফআইএস বা স্বয়ংক্রিয় আঙ্গুলের ছাপ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি এখন সারা দুনিয়াতেই একটি অপরিহার্য প্রযুক্তিতে পরিণত হয়েছে। আমাদের নিজেদের জীবনেই আমরা এ প্রযুক্তি প্রয়োগ করেছি। আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা, যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট, পুলিশ অফিস ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই এই প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এছাড়াও নিরাপত্তা প্রশ্নে এতদিন পর্যন্ত আমরা এ প্রযুক্তির জন্য অন্যদের ওপর নির্ভর করে আসছি। আমাদের নিজেদের উদ্ভাবিত এ প্রযুক্তি সেজন্যই একটি বিশাল অর্জন হিসেবে গণ্য হতে পারে। একই সাথে এ প্রযুক্তিতে আমাদের এই অর্জন বিশ্বসেরার মর্যাদা দিতে সক্ষম হয়েছে। এখন বিশ্ববাসী জানতে পারছে, আমরা বিশ্বসেরা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে সক্ষম।

এ প্রসঙ্গে টাইগার আইটির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত। মাত্র দুই বছর সময়ে আমরা এমন একটি অ্যালগরিদম উদ্ভাবন করতে পেরেছি, যা করার জন্য বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো দশকের পর দশক এবং শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেছে। আমরা তাদের সমকক্ষতা অর্জন করতে পেরে যারপরনাই আনন্দিত। আমাদের অতি উন্নত, মডিউলার ও ওয়েব ২.০ সমতুল্য পরিচিতি ব্যবস্থাপনা ও ক্রেডেনশিয়াল সলিউশন (টাইগার আইডি) বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ‘বাংলাদেশের ডিজিটাল পরিচিতি ও ক্রেডেনশিয়াল ব্যবস্থাপনা’ কাজে ব্যবহার হয়ে এর সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। আমি আত্মবিশ্বাসী কারণ, আমাদের বাইয়োমেট্রিক প্রযুক্তি আগামী মাসগুলোতে বাজারে আরো নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।’ www.tigeritbd.com

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক anu@comjagat.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস