• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সাইবার অপরাধ যেভাবে প্রতিরোধ করবেন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তাসনীম মাহ্‌মুদ
মোট লেখা:১২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সিকিউরিটি
তথ্যসূত্র:
সিকিউরিটি
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সাইবার অপরাধ যেভাবে প্রতিরোধ করবেন

বর্তমানে কমপিউটার এবং ইন্টারনেটের ওপর ব্যাপক বিশ্বাস এবং আস্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে বিশেষ করে ই-মেইল, এন্টারটেনমেন্ট বা বিনোদন, অনলাইন শপিং, এয়ারলাইন ও রেলওয়ে টিকেট, ব্যাংকিং, ট্রেডিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে। তবে ইন্টারনেট এবং কমপিউটার আমাদের দৈনন্দিন জীবন-ব্যবস্থাকে সহজ করার পাশাপাশি নিয়ে এসেছে নতুন অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা ও আতঙ্ক। কেননা, নজিরবিহীনভাবে সর্বসাধারণের সামনে অর্থাৎ পাবলিক ডোমেইনে আমরা সবাই ব্যক্তিগত গোপন তথ্য তুলে ধরছি এসব ডোমেইনের মাধ্যমে। প্রতারক, সন্ত্রাসী বা হ্যাকাররা সর্বক্ষণিকভাবে ওঁৎ পেতে থাকে সাইবার বিশ্বে। এরা এদের মেধা প্রয়োগ করে প্রতিনিয়ত আমাদের অগোচরে গোপন তথ্য চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।

জানা দরকার, আমরা যখন থেকে ওয়েব সার্ফিংয়ে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করি, তখন থেকে অনলাইন সিকিউরিটিসংশ্লিষ্ট হুমকির মুখোমুখি হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এসব ঝুঁকি এবং ভীতি কী, তা জানা দরকার। ঝুঁকির মধ্যে আছে ভাইরাস, হ্যাকার ইত্যাদি যারা আপনার সিস্টেমে অ্যাক্সেস করতে পারে এবং হাতিয়ে নিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যেমন ক্রেডিট কার্ডের বিস্তারিত তথ্য।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে অনলাইন সিকিউরিটি জোরদার করা যায়? এখানে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি এবং এসব ঝুঁকি প্রতিরোধের বিভিন্ন উপায় বা কৌশল তুলে ধরা হয়েছে। এ কথা সত্য, সিস্টেমকে পুরোপুরি নিরাপদ করা যায় না ঠিকই, তবে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যা নিচে সংক্ষেপে দেয়া হয়েছে-

যেভাবে ব্যক্তিগত তথ্য ও কাজ রক্ষা করা যায় :

* সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার দিয়ে নিজেকে রক্ষা করুন, যাতে করে ভাইরাস ও ট্রোজান হর্স কমপিউটারের ডাটা চুরি বা পরিবর্তন করতে না পারে। ট্রোজান হর্স প্রোগ্রাম এমন এক প্রোগ্রাম, যা প্রকৃত সফটওয়্যারের মতো আচরণ করলেও কাজ করে সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপে।

* সর্বশেষ এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেমের প্যাচ দিয়ে পিসিকে আপডেট করুন। আপডেট যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয় তা নিশ্চিত করুন।

* পিসিকে সুরক্ষার জন্য ইনস্টল করুন পার্সোনাল ফায়ারওয়াল এবং এন্টিস্পাইওয়্যার।

* মাঝেমধ্যে অনলাইন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।

* ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টকে নিয়মিতভাবে চেক করুন। কোনো অস্বাভাবিকতা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান।

* ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার অথবা অন্য ব্রাউজার সিকিউরিটি সেটিংকে মডিফাই করুন। ইন্টারনেট থেকে তথ্য গ্রহণ করার জন্য সিকিউরিটি সেটিংকে ইন্টারনেট জোনে মাঝামাঝি বা উচ্চতর পর্যায়ে সেট করুন।

ব্রাউজার আপগ্রেডের প্রয়োজনীয়তা

ব্রাউজার আপগ্রেডের প্রয়োজনীয়তাকে আমরা প্রায়শ এড়িয়ে যাই। ব্রাউজার হলো একটি প্রোগ্রাম, যা ইন্টারনেটের অন্যান্য নেটওয়ার্কের ডাটার অ্যাক্সেস এবং ফাইল ডিসপ্লে করে। ব্রাউজার প্রোগ্রাম নিয়মিতভাবে আপডেট করা হয়, যাতে নতুন ফাংশনালিটি যুক্ত করা হয়। যদি পুরনো ব্রাউজার ব্যবহার করা হয়, তাহলে নিরাপত্তার ব্যাপারে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন। কেননা পুরনো ব্রাউজারে হ্যাক করা সহজ।

* অনলাইন শপিংয়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত যদিও এ ব্যাপারটি আমাদের দেশে এখনো ব্যাপকতা পায়নি।

কুকিজ : ইন্টারনেটে যখন ব্রাউজ করবেন, তখন কমপিউটারের তথ্য প্রতারণার জন্য সংগৃহীত এবং স্টোর হতে পারে। সিকিউরিটি লেভেল বাড়ানোর জন্য প্রাইভেসি লেভেলকে সমন্বয় করুন এবং সিকিউরিটি সেটিং করুন ওয়েব ব্রাউজারে কুকিজকে ব্লক বা সীমিত করার জন্য। অন্যান্য সাইট আপনার সম্মতি ছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন। যেকোনো থার্ড পার্টির জন্য কুকিজ ব্লক বা সীমিত করুন। যদি পাবলিক কমপিউটার ব্যবহার করেন, তাহলে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে কুকিজ ডিজ্যাবল করা আছে। অন্যথায় অন্যরা আপনার তথ্যে অ্যাক্সেস করতে পারবে। যদি ফায়ারফক্স ব্যবহার করেন, তাহলে Shift+Ctrl+Del কী চাপলে একটি ডায়ালগ বক্স আবির্ভূত হবে পার্সোনাল ডাটা এবং হিস্টোরি ক্লিয়ার করার জন্য। এ কাজটি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে সহজ নয়। তবে ভার্সনভেদে এ কাজটি করতে পারেন টুল মেনুর অন্তর্গত Tools > Internet Options ব্যবহার করে।

বিপজ্জনক ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক

সাম্প্রতিককালে সন্ত্রাসীরা তাদের সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার জন্য ই-মেইলের মাধ্যমে আগাম হুমকি দেয়। আর এটি সম্ভব হচ্ছে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের অপব্যবহারের কারণে। ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অপরাধী এবং হ্যাকাররা খুব সহজেই অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করতে পারে। গ্রহণ করতে পারে আপনার কমপিউটারের কর্তৃত্ব এবং হাতিয়ে নিতে পারবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সুতরাং ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ককে নিরাপদ রাখার জন্য নিচে বর্ণিত কৌশলগুলো অবলম্বন করা যেতে পারে :

* ডিফল্ট পাসওয়ার্ডকে পরিবর্তন করুন। কেননা, বেশিরভাগ নেটওয়ার্ক ডিভাইসে থাকে আগে কনফিগার করা ডিফল্ট পাসওয়ার্ড যা খুব সহজেই অনলাইনে পাওয়া যায়।

* ওয়্যারলেস ডিভাইসে সরাসরি ফায়ারওয়াল ইনস্টল করুন। কেননা আক্রমণকারীরা ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের ফায়ারওয়ালকে এড়িয়ে যেতে পারে।

* শুধু বৈধ ব্যবহারকারীদের নেটওয়ার্কে অ্যাক্সেসের ব্যবস্থা করুন। নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হার্ডওয়্যারের প্রতিটি অংশের রয়েছে একটি এমএসি (মিডিয়া অ্যাক্সেস কন্ট্রোল) অ্যাড্রেস। এমএসি অ্যাড্রেস ফিল্টারের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেসকে সীমিত করতে পারেন। এমএসি অ্যাড্রেস হলো নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়্যারের জন্য একটি আদর্শ আইডেন্টিফায়ার, যেমন ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার। হ্যাকাররা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ক্যাপচার করতে পারে এমএসি অ্যাড্রেসসংশ্লিষ্ট বিস্তারিত তথ্য। এমএসি ফিল্টার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হ্যাকারদের হাত থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। নিচে বর্ণিত ধাপ অনুসরণ করে খুঁজে নিন আপনার ডিভাইস নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টারের এমএসি অ্যাড্রেস :

* Start > Run.

* কমান্ড প্রম্পটে টাইপ করে এন্টার চাপুন।

* কমান্ড প্রম্পট উইন্ডোতে ipconfig/all টাইপ করে এন্টার চাপুন।

* এর ফলে ফিজিক্যাল অ্যাক্সেস অ্যাড্রেস দেখতে পাবেন।

* এমএসি ফিল্টার প্রসেসের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে চাইলে চেক করে দেখুন ইউজার ডকুমেন্টেশন।

* নেটওয়ার্কের ডাটাকে এনক্রিপ্ট করলে কেউ নেটওয়ার্কে অ্যাক্সেস করতে পারলেও ডাটা ভিউ করতে পারবেন না এনক্রিপশনের কারণে।

* এসএসআইডি (সার্ভিস সেট আইডেন্টিফায়ার) নিরাপদে রাখুন। এটি WLAN-এর নাম। ওয়্যারলেস ক্লায়েন্টে এসএসআইডি ম্যানুয়ালি সেট করা যায় ক্লায়েন্টের নেটওয়ার্ক সেটিংয়ে অ্যাক্সেস করে অথবা এসএসআইডি খালি রেখে স্বয়ংক্রিয় করতে পারেন। নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটররা সচরাচর ব্যবহার করে পাবলিক এসএসআইডি, যা সেট করা থাকে অ্যাক্সেস পয়েন্টে, ফলে এই সীমানার সব ওয়্যারলেস ডিভাইসে তা ব্রডকাস্ট হয়। তাই অটোমেটিক এসএসআইডি ডিজ্যাবল করতে পারেন নেটওয়ার্ক সিকিউরিটিকে বাড়ানোর জন্য।

* বহিরাগতরা যাতে সহজে নেটওয়ার্কে অ্যাক্সেস না পায় তাই এসএসআইডিকে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস