গত সংখ্যায় এ বিভাগে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসের পাশাপাশি কিভাবে কমান্ড মোডেও কাজ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। তবে শেল বলে লিনআক্সে একটা ব্যাপার আছে। অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম যেমন একটাই কমান্ড মোড রাখে (যেমন উইন্ডোজ) লিনআক্স, কিন্তু তেমন নয়। একই কমান্ড লাইনের মধ্যে এখানে অনেক শেল থাকে। সহজ কথায় শেল হচ্ছে কিছু কমান্ডের সমন্ব^য়। একই শেলে তার সব কমান্ড কাজ করবে। কিন্তু এক শেলে অন্য শেলের কমান্ড কাজ করবে না। লিনআক্স ধারাবাহিকের এই পর্বে দেখানো হয়েছে শেল কিভাবে কাজ করে এবং ব্যাশ শেলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড।
লিনআক্সের ক্ষেত্রে কমান্ডগুলো বিভিন্ন শেলে বিভক্ত থাকে। এই শেলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ব্যাশ শেল। বেশিরভাগ লিনআক্স অপারেটর লিনআক্সের ব্যাশ শেলে কাজ করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।
বর্তমান সময় হচ্ছে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI)-এর যুগ। অপারেটিং সিস্টেমের কার্নেল ঠিক রেখে শুধু ইন্টারফেস পরিবর্তন করে অপারেটিং সিস্টেমের যেকোনো লুক দেয়া সম্ভব। তাই ইন্টারফেসের মিল মানেই যে অপারেটিং সিস্টেমের মিল তা কোনোভাবেই বলা যায় না। এই মিল, বলা সম্ভব যখন কার্নেলের মিল পাওয়া যায় বা কমান্ডের মিল পাওয়া যায়। ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম এবং লিনআক্সের কিছু শেল কমন। এজন্যই ম্যাক এবং লিনআক্সের মিল আছে তা অনেকে বলে থাকেন।
টিউনআপ ইউলিটির মূল ইন্টারফেস
সব অপারেটিং সিস্টেমে এখন গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসের জয়জয়কার। আসলে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস কিন্তু অপারেটিং সিস্টেমের বাইরের রূপ। এর ভেতরে মূলত কমান্ডভিত্তিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। যদি এমন হয়, কোনো কারণে সিস্টেমের গ্রাফিক্যাল অংশ কাজ করছে না। তখন গ্রাফিক্যাল অংশ ঠিক না করা পর্যন্ত কমান্ড লাইনই ভরসা। আর ট্রাবলশূটিংয়ের জন্য কমান্ড লাইনের কোনো বিকল্প নেই। আর কমান্ড লাইনে যেকোনো কাজ দ্রুত করা যায় এটা সর্বজনবিদিত। তাই লিনআক্সে অ্যাডভান্সড লেভেলের কমপিউটিংয়ের জন্য ব্যাশ শেল জানা প্রয়োজন।
ব্যাশ শেলের কিছু কমান্ড এবং কমান্ডের কার্যাবলী
alias–এলিয়াস তৈরি করবে। সাধারণত এলিয়াস-এর ধারণা পাওয়া যায় ডাটাবেজে। এলিয়াস হচ্ছে একই ধরনের ফাইল বা প্রোগ্রাম বা ফরম ইত্যাদি। শুধুই তাদের কর্মক্ষেত্র আলাদা হবে এমন। একটি উদাহরণ থেকে এর ধারণা পাওয়া যায়, একই কমপিউটারের ইউজার অনেক থাকতে পারে। যদি সব ইউজারের ক্ষমতা একই হয় তাহলে তারা এলিয়াস। যদিও তাদের কাজ আলাদা।
apropos–হেল্পের ম্যানুয়াল পেজ খুঁজে বের করবে। হেল্পের ম্যানুয়াল পেজ খুঁজে বের করার প্রয়োজন হলে এই কমান্ড কাজে লাগে।
awk– ফাইন্ড এবং রিপ্লে¬সের জন্য এ কমান্ড ব্যবহার করা হয়। আমরা ওয়ার্ড প্রসেসরে যেভাবে কোনো শব্দ খুঁজে বের করে রিপ্লেস করি, ঠিক একইভাবে এই কমান্ড কাজ করে।
break–লুপ থেকে সরাসরি বের হবার কমান্ড। যাদের প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ধারণা আছে তারা এই কমান্ড সরাসরি বুঝতে পারবেন। কোনো লুপ তৈরি হবার পর আনকন্ডিশনালি লুপ থেকে বের হবার জন্য এই কমান্ড।
builtin–এক শেলের ভেতর থেকে অন্য শেল চালানো। সরাসরি ব্যবহার হওয়া এক শেল থেকে অন্য শেল ব্যবহার করতে চাইলে এই কমান্ড ব্যবহার করা যায়।
bzip2–ফাইল জিপ (কম্প্রেস করার কমান্ড)। ই-মেইল করার সময় একাধিক ফাইল অ্যাটাচ করার সময় আমরা সাধারণত ফাইল জিপ করি। কমান্ড মোডে সরাসরি ফাইল জিপ করার জন্য এই কমান্ড কাজ করে।
cal–এই কমান্ড দিয়ে ক্যালেন্ডার প্রদর্শন করানো যায়। কাজ করার সময় হঠাৎ ক্যালেন্ডারের প্রয়োজন পড়লে এই কমান্ড কাজে লাগানো যায়।
case–শর্তসাপেক্ষে কমান্ড চালানো। যাদের প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ধারণা আছে তারা এই কমান্ড সরাসরি বুঝতে পারবেন। সাধারণত সুইচিংয়ের জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
cat–এই কমান্ডের মাধ্যমে যেকোনো ফাইলের কনটেন্ট দেখা যায়।
cd–ডিরেক্টরি পরিবর্তন করার। অর্থাৎ এক ডিরেক্টরি থেকে অন্য ডিরেক্টরিতে জাম্প করার কমান্ড।
cfdisk–পার্টিশন করার কমান্ড। কমান্ড মোডে লিনআক্স ইনস্টল করার সময় এটি কাজে লাগে।
chgrp–গ্রুপের মালিকানা পরিবর্তন করার কমান্ড।
chmod–পারমিশন পরিবর্তন করার কমান্ড।
chown–ফাইলের মালিকানা এবং গ্রুপ পরিবর্তন করার কমান্ড।
chroot–ভিন্ন রুট ডিরেক্টরিতে কমান্ড চালানোর কমান্ড। অনেক সময় একই সাথে একাধিক রুট ডিরেক্টরিতে কমান্ড চালানোর প্রয়োজন হতে পারে। সাধারণত মাল্টি ইউজারে কাজ করার সময় এ কমান্ড কাজে লাগে। লিনআক্স পুরোপুরি মাল্টি ইউজার এবং মাল্টি টাস্কিং সাপোর্ট করে বলে এ কমান্ড কাজে লাগে।
cksum–CRC checksum এবং byte count প্রিন্ট করার কমান্ড।
clear–স্ক্রিন ফাঁকা করার কমান্ড। ডস মোডের cls কমান্ডের মতো কাজ করে।
cmp–দুটো ফাইলের মধ্যে তুলনা করার কমান্ড।
comm–শর্ট করা ফাইলসমূহ তুলনা করার কমান্ড।
command Run a command–শেল ফাংশন বাইপাস করে কমান্ড চালানোর কমান্ড। শেল ফাংশন বাইপাস করার অর্থ হচ্ছে- ধরা যাক কেউ ব্যাশ শেলে কাজ করছে। এখন একই শেলে অবস্থান করার সময়েই আরেকটি শেলে কাজ করার দরকার হলে এ কমান্ড কাজে লাগে।
continue–লুপের পরবর্তী কার্যক্রম আবার চালু করা। কোনো লুপকে সাময়িকভাবে বন্ধ করার পরে আবার লুপ চালানোর প্রয়োজন পড়লে এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
cp–ফাইল কপি করার কমান্ড। ডস মোডের কপি কমান্ডের মতো এ কমান্ড ফাইল কপি এবং পেস্ট করতে কাজে লাগে।
cron–শিডিউল করা কমান্ডসমূহ চালানোর কমান্ড।
crontab–কমান্ড শিডিউল করার কমান্ড।
csplit–ফাইল দুইভাগ করার কমান্ড। সাধারণত কোনো ফাইলের নির্দিষ্ট অংশে ফাইলটিকে দুইভাগে বিভক্ত করার জন্য সরাসরি এই কমান্ড কাজে লাগানো হয়।
cut–ফাইল অনেক অংশে ভাগ করার কমান্ড।
date–সময়, তারিখ প্রদর্শন ও পরিবর্তনের কমান্ড।
dc–ক্যালকুলেটর। এ কমান্ডের মাধ্যমে সরাসরি ক্যালকুলেটর চালু করা যাবে।
dd–ফাইল কনভার্ট করে কপি করা যায় এ কমান্ডের মাধ্যমে।
ddrescue–ডাটা রিকভারি কমান্ড। ডিস্ক স্ক্যান করার সময় ফাইল মুছে গেলে এ কমান্ড ব্যবহার করা যায়। সাধারণত দুর্ঘটনাক্রমে সিস্টেম বন্ধ হলে এ কমান্ড দিয়ে হারানো ফাইল উদ্ধার করা হয় থাকে।
declare–ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করার কমান্ড।
df–ডিস্কে কতটুকু ফাঁকা জায়গা আছে তা দেখানো যায় এ কমান্ডের মাধ্যমে।
diff–দুটো ফাইলের তুলনামূলক পার্থক্য দেখায়।
diff3–তিনটি ফাইলের তুলনামূলক পার্থক্য দেখায়।
dig–সার্ভারের অবস্থা দেখার কমান্ড।
dir–ডিরেক্টরির লিস্ট সংক্ষেপে দেখানোর কমান্ড।
dirname–ডিরেক্টরির পাথ পরিবর্তন করে নতুন নাম দেবার কমান্ড।
dirs–লগে থাকা ডিরেক্টরির নামগুলো দেখাবে।
du – ফাইল কতটুকু জায়গা দখল করে আছে তা দেখাবে।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mortuzacsepm@yahoo.com