• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > আর্মা ২
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
আর্মা ২
যুদ্ধভিত্তিক শূটিং গেমগুলোর মধ্যে সেরাদের তালিকায় রয়েছে কল অব ডিউটি, মেডেল অব অনার, ডেল্টা ফোর্সসহ আরো কিছু নামকরা গেম সিরিজ। গেমারদের নজরে না পড়া গেমের তালিকায় রয়েছে আর্মা সিরিজের গেমগুলো যেগুলোর মান বেশ ভালোই বলা চলে, তবুও তা পড়ে রয়েছে লোকচক্ষুর আড়ালে। তবে এবার রাশিয়ার অন্ধকারাচ্ছন্ন চেক রিপাবলিকের গেম ডেভেলপার কোম্পানি বোহেমিয়া ইন্টার-অ্যাকটিভ স্টুডিও তাদের দক্ষতার বলে গেম সিরিজটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে গেমে বেশ কিছু চমক এনে। গেমের কাহিনী বানানো হয়েছে তাদের মাতৃভূমির প্রেক্ষাপটে যা গেমে চেরনারাস নামে অভিহিত, যার অর্থ হচ্ছে কালো রাশিয়া। পাবলিশারদের তালিকায় রয়েছে- ৫০৫ গেমস (ইউরোপ), মরফিকন (জার্মানি), গট গেম এন্টারটেইনমেন্ট (উত্তর আমেরিকা), একেলা (রাশিয়া) এবং অনলাইনে গেমটি পাবলিশ করেছে ভাল্ব ও স্টারডক। গেমটির ডিজাইনার ইভান বুচতা এবং এটি শুধু উইন্ডোজের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে।



আর্মা নামের এ ট্যাক্টিক্যাল শূটিংভিত্তিক গেমটি অনেকের কাছে আর্মড অ্যাসাউল্ট নামেও পরিচিত। আর্মা সিরিজের মধ্যে দুটি মূল গেমের পাশাপাশি ২য় পর্বের একটি এক্সপানশন বের হয়েছে, যার নাম অপারেশন অ্যারোহেড। গেমে সংযুক্ত হয়েছে প্রচুর যানবাহন ও এয়ারক্রাফট, যার সংখ্যা অবাক করার মতো। গেমের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও নিজস্ব স্কোয়াড মেম্বারদের আদেশ দান করার ব্যাপারটি অন্যান্য গেমের তুলনায় বেশ চমকদার। গেমটির ক্যাম্পেইন মোড সিঙ্গেল প্লেয়ার হিসেবে অফলাইনে বা কো-অপারেটিভ মোডে চারজন একসাথে অনলাইনে খেলার ব্যবস্থা রয়েছে।



গেমের পটভূমি তৈরি হয়েছে ২০০৯ সালের রাশিয়ার চেরনারাসের এক শক্তিশালী ও সুসংগঠিত বিদ্রোহী দল রেড স্টার মুভমেন্ট ও তৎকালীন রাশিয়া সরকারের সাথে কাল্পনিক এক যুদ্ধ নিয়ে। গ্রেগরি আকুলা লোপোটেভের নেতৃত্বে রেড স্টার মুভমেন্ট বা চেডাকিস নামের সংগঠনের লক্ষ্য হচ্ছে বর্তমান রাশিয়ার ডেমোক্র্যাটিক সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন করে তা সোস্যাল রিপাবলিক অব চেরনারাস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। বেশ কয়েক দফা সিভিল ওয়ারের পর রাশিয়া সরকার ইউনাইটেড স্টেটসের কাছে চেডাকিসকে নির্মূল করার জন্য সাহায্য ভিক্ষা করে। তাদের আহবানে সাড়া দিয়ে ইউনাইটেড স্টেটস সাহায্যের জন্য পাঠায় ইউএস মেরিন কর্পস থেকে বাঘা বাঘা কিছু সৈনিকের দলকে। দলনায়ক সার্জেন্ট ম্যাথিউ কুপারসহ পাঁচজনের দল নিয়ে গেমারকে ধীরে ধীরে আকুলার সব দুর্গ ধূলিসাত করে তাকে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে হবে। গেমে উল্লিখিত চেরনারাস এলাকাটি মূলত রাশিয়ার পূর্বে অবস্থিত জাগোরিয়া ও ইউটেস দ্বীপ নিয়ে গঠিত। প্রায় ২২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকার স্যাটেলাইট ইমেজের ওপরে কাজ করে বানানো হয়েছে গেমের দৃশ্যপট। তবে বিশাল এ এলাকা গেম চলাকালীন ব্যাকগ্রাউন্ডে লোড হবে, তাই গেম লোড করার জন্য কোনো সময় নষ্ট হবে না।

আর্মা ২ ও তার এক্সপানশনসহ গেমে মোট ১০টি আলাদা ফ্যাকশন বা জাতি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- ইউনাইটেড স্টেটস মেরিন কর্পস, আর্মড ফোর্সেস অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশন, চেরনারাশিয়ান ডিফেন্স ফোর্সেস, চেরনারাশিয়ান মুভমেন্ট অব দ্য রেড স্টার, ন্যাশনাল পার্টি, সিটিজেনস অব চেরনারাস, ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি, তাকিস্তানি আর্মি, ন্যাটো ও ইউএনও এবং তাকিস্তানি লোকালস। প্রত্যেক ফ্যাকশনের যানবাহন ও অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দারুণ বৈচিত্র্য যা গেমারের নজর কাড়বে। প্রতিটি অস্ত্রের রয়েছে ভিন্ন ভেদনক্ষমতা ও নিশানা করার ক্ষমতা। অস্ত্রের বুলেটের রেঞ্জ ক্যাপাবিলিটি, ব্যালিস্টিসিটি, মাজল ভেলোসিটি, বুলেট ড্রপ, স্নাইপারের ভিউ ফাইন্ডার ও মিসাইল প্রজেক্টাইলের ওপরে বেশ নজর রেখে গেমটি বানানো হয়েছে যাতে খেলার সময় পূর্ণ বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয়।



গেমে প্রায় ৮০টি সত্যিকারের যুদ্ধাস্ত্র রাখা হয়েছে, যার মধ্য রয়েছে নানারকমের অ্যাসল্ট রাইফেল, মেশিনগান ও মিসাইল লঞ্চার। গেমের সবচেয়ে নজরকাড়া বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ১৩০টি আলাদা যানবাহনের ব্যবহার। খেলার সময় সামনে যে ধরনের গাড়িই চোখে পড়ুক, তার সব চালানো যাবে। মিলিটারি যানবাহনের পাশাপাশি সিভিলিয়ান কার, বাইসাইকেল, ট্র্যাক্টর এমনকি বেশ কয়েক ধরনের আকাশযান চালানোর মজা উপভোগ করা যাবে। গেমের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হচ্ছে মিশন এডিটর যা দিয়ে গেমার নিজের পছন্দ অনুযায়ী মিশন ও পরিবেশ বানিয়ে নিতে পারবে সিঙ্গেল প্লেয়ার বা মাল্টিপ্লেয়ার মোডে খেলার জন্য। খুব সহজে বেসিক মিশন বানানোর জন্য মিশন এডিটরে যুক্ত করা হয়েছে উইজার্ড নামের অপশন এবং জটিল মিশন বানানোর জন্য কিছু স্ক্রিপ্টিং কমান্ডের সহায়তা নিতে হবে। গেমে বেশ কিছু টুল সংযোজন করা হয়েছে যা দিয়ে ডেভেলপাররা খুব সহজেই গেমের ম্যাপ মডিফাই করতে পারবে এবং অনলাইনে তা শেয়ার করতে পারবে।

থার্ড জেনারেশনের গেম ইঞ্জিন হিসেবে রিয়েল ভার্চুয়ালিটি ইঞ্জিন প্রায় ১০ বছর ধরে ডেভেলপ করা হয়েছে গেমের গ্রাফিক্স ও ইফেক্টের মাঝে নিখুঁত বাস্তবতার ছোঁয়া আনার জন্য। গেম ইঞ্জিনটিতে রয়েছে ডিরেক্টএক্স ৯ এবং পিক্সেল শ্রেডারের পরিপূর্ণ সমর্থন। গেম ইঞ্জিনটি এতদিন মিলিটারিদের নানারকম ট্রেনিং সিমুলেশনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এ গেম ইঞ্জিনের ফলে গেমটিতে দিন-রাতের চক্র, আবহাওয়ার পরিবর্তন, জলবায়ুর বৈচিত্রতা, কুয়াশা ও বৃষ্টিপাতের নিখুঁত গ্রাফিক্স এবং প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত দৃশ্য অবলোকন করার ব্যবস্থা আনা সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, গেমের শত্রুপক্ষের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, নিশানা লক্ষ্যভেদ করার নির্ভুলতা, গেমের এলিমেন্টগুলোর সাথে গেম ক্যারেক্টারের মানানসই আচরণ, অস্ত্রগুলোর মাঝে লক্ষণীয় পার্থক্যসহ আরো বেশ কিছু নতুনত্ব যোগ করা হয়েছে। গেমের গ্রাফিক্স কল অব ডিউটি বা মেডেল অব অনারের মতো চোখ ধাঁধানো হয়নি। গেমের গ্রাফিক্সের দিকে নজর না দিয়ে এ গেমে গেমপ্লের দিকে বেশি কষ্ট করা হয়েছে। গেমটি খেলে না দেখলে বোঝার উপায় নেই কি কারণে অন্যান্য শূটিং গেমের চেয়ে বেশ আলাদা ও অসাধারণ রোমাঞ্চকর। ।

ডেভেলপার : বোহেমিয়া ইন্টার-অ্যাকটিভ
পাবলিশার : ৫০৫ গেমস
ইঞ্জিন : রিয়েল ভার্চুয়ালিটি ৩
ক্যাটাগরি : ট্যাকটিক্যাল শূটার
মোড : সিঙ্গেল/মাল্টিপ্লেয়ার

সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট

প্রসেসর : পেন্টিয়াম ৪, ৩ গিগাহার্টজ
র‌্যাম : ১ গিগাবাইট
গ্রাফিক্স কার্ড : ২৫৬ মেগাবাইট (পিক্সেল শ্রেডার ৩ যুক্ত)
হার্ডডিস্ক স্পেস : ১০ গিগাবাইট

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস