ডেভেলপার : প্যান্ডেমিক স্টুডিও
পাবলিশার : ইলেক্ট্রনিকস আর্ট
ক্যাটেগরি : থার্ড পারসন অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার
স্যাবোটিয়ার গেমটির পটভূমি হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ১৯৪০ সালের ফ্রান্স ও জার্মানি। গেমের মূল চরিত্র হচ্ছে শেন ডেভলিন। শেন হচ্ছে প্যারিসের এক নামকরা রেসিং গ্রুপের মেকানিক। কিন্তু এক রেসিং কম্পিটিশনে জার্মানির নাৎসি কর্নেল কার্ট ডাইয়েকার প্রতারণা করে একটি রেস জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় এবং পুরস্কারের টাকাসহ একটি রেসিংকারের মালিক হয়ে যায়। কিন্তু প্রতারণার ব্যাপারটি শেন জেনে ফেলে এবং সে প্রচন্ড রেগে যায়। তখন সে এবং তার বন্ধু জুলিয়াস মিলে সেই পুরস্কারের রেসিংকারটি ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করে। কিন্তু এই কাজে সফল হওয়ার আগেই তারা কর্নেল কার্টের লোকদের হাতে ধরা পড়ে যায়। কর্নেলের নির্দেশে জুলিয়াসকে হত্যা করা হয়, কিন্তু শেন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপর শেন কর্নেল কার্টকে মেরে বন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সহায়তায় শেনকে নিয়ে গেমারকে পুরো গেমটিতে কর্নেল কার্টের পিছু ধাওয়া করতে হবে। গেমের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও মৌলিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বাহারি রকমের আলোর ব্যবহার। গেমে যখন নায়ক কোনো ঘরের ভেতরে থাকবে তখন সবকিছু রঙ্গিন দেখাবে, কিন্তু ঘরের বাইরে বের হলে তার চারপাশ সাদাকালো হয়ে যাবে। তবে বিভিন্ন দোকান, হোটেল ও স্ট্রিট ল্যাম্পের আলোগুলো রঙ্গিন দেখাবে এবং ওগুলোর নিচে দিয়ে যাবার সময় ক্যারেক্টার রঙ্গিন হয়ে যাবে এবং বাকি সময় সাদাকালো থাকবে। গেমে নায়ককে নিয়ে গোপনীয়তার সাথে কর্নেলের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য হোটেলে গিয়ে নানান লোকের সাথে কথা বলতে হবে। পথিমধ্যে জার্মান সৈন্যদের সাথে দেখা হয়ে গেলে মারামারি করতে হবে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে জার্মান সৈন্যদের সাথে মারামারি লেগে গেলে যদি আশপাশে ফ্রান্সের বাসিন্দা থেকে থাকে তাহলে তারা শেনকে মারপিটে সহায়তা করবে। গেমার শেনকে নিয়ে ফ্রান্স ও জার্মানির বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করতে পারবে, এমনকি বিল্ডিংয়ের ছাদ দিয়েও চলাচল করা যাবে। কিছু মিশনে স্নাইপার দিয়ে সৈন্যদের মারতে হবে। বিল্ডিংয়ের ছাদের ওপর থেকে ভালো করে নিশানা করা যাবে, তাই ছাদে উঠে খেলতে হবে। গেমে বেশ কিছু গুপ্তহত্যা করতে হবে, তাই খুব সাবধানে খেলতে হবে।
গেমে প্রতি মিশনের শেষে বোনাস দেয়া হবে, সেটি সংগ্রহ করতে থাকলে শেন ধীরে ধীরে হাতাহাতি লড়াই, গোলাগুলি, স্নাইপিং শট করতে আরো দক্ষ হয়ে যাবে। গেমে ব্ল্যাক মার্কেট থেকে গেমার শেনের ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন অস্ত্র, গুলি, গ্রেনেড ও বিভিন্ন এলাকার ম্যাপ কিনে নিতে পারবে। গেমে গেমার বিভিন্ন গাড়ি চালাতে পারবে। এছাড়া গেমে গেমারের নিজস্ব গোপন গ্যারেজ দেয়া হবে, সেখানে গাড়ি এনে রাখা যাবে এবং সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলো মেরামত করা যাবে।
গেমের গ্রাফিক্স ও সাউন্ড সিস্টেম বেশ ভালোমানের। এছাড়াও গেমটিতে রয়েছে অ্যাসাসিন’স ক্রিডের মতো যেকোনো বিল্ডিং বেয়ে ওঠার ক্ষমতা, স্প্লিলন্টার সেল সিরিজের মতো স্টিলথ মোড, কল অব ডিউটি বা মেডেল অব অনারের মতো বিশ্বযুদ্ধের উত্তেজনা, গ্রান্ড থেফট অটো (জিটিএ) বা ড্রাইভার গেম সিরিজের মতো ইচ্ছেমতো শহরে বিচরণ করা এবং যেকোনো গাড়ি চালানো। তবে গেমটির গেমপ্লে অনেকটাই মিলে যায় জিটিএ গেম সিরিজের সাথে, তাই জিটিএ ভক্তদের তা বেশ ভালো লাগবে। গেমটির রেটিং অনুযায়ী তা ছোটদের খেলতে দেয়া উচিত নয়।
গেমটি খেলার জন্য ইন্টেল কোর টু ডুয়ো ২.৪ গিগাহার্টজ বা এএমডি অথলন ৬৪ এক্স২ ৩৬০০+ সমমানের প্রসেসর, ১ গিগাবাইট র্যােম, ২৫৬ মেগাবাইট ভিডিও মেমরিসহ গ্রাফিক্সকার্ড (এনভিডিয়া জিফোর্স ৭৮০০ জিটিএক্স বা এটিআই রাডেয়ন এইচডি ২৬০০ প্রো) ও হার্ডডিস্কে প্রায় ৭ গিগাবাইট পরিমাণ ফাঁকা স্থান।