শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় যেনো থাকে জাদু। রঙিন রঙে রাঙিয়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার মতো দৃশ্য। সিটেরেমিসের ডেভেলপ ও পাবলিশ করা রোল প্লেয়িং ধাঁচের গেম অ্যাজটাকা দেখলে মনে হবে শিল্পীর ক্যানভাসে ভাসমান একটি জীবন্ত ছবি। তুলির আঁচড়ে এতটাই সুন্দর করে অ্যাজটেক সভ্যতার নিদর্শন ও পরিবেশ রাঙিয়ে তোলা হয়েছে যে, তা দেখলে তন্ময় হয়ে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করবে। শুধু মনোরম দৃশ্যই নয় সাথে রয়েছে শ্রুতিমধুর সঙ্গীতের আবহ যা মনকে ভরে তুলবে।
অ্যাজটাকা গেমের পটভূমি আঁকা হয়েছে অ্যাজটেক যুগকে কেন্দ্র করে। গেমে ফুটে উঠেছে অ্যাজটেক সভ্যতার ইতিহাসে বর্ণিত নানান কাহিনীর ওপর ভর করে। মোটকথা গেমের মূলমন্ত্র হচ্ছে অ্যাজটেক মিথোলজি এবং সাথে আরো যোগ হয়েছে আদি হিস্পানিক মেক্সিকান জাতির কিছু সংস্কৃতি। গেমের নায়ক হিসেবে গেমারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সূর্য দেবতার বংশধর অ্যাজটেক যোদ্ধা হুইটজিলোকে। গেমে তার কাজ হবে তাদের জাতির ওপরে রুষ্ট দেবতাদের ক্রোধের আগুন থেকে অ্যাজটেক সভ্যতা রক্ষা করা। শয়তান পূজারী ইহেচাক দেবতাদের খুশি করে লাভ করে অসীম শক্তি এবং সেই শক্তির অপপ্রয়োগ করা শুরু করে অ্যাজটেক জাতির ওপরে ধ্বংসলীলা চালিয়ে। তাকে থামানো যাবে সাতটি প্রাচীন লিপির শক্তি দিয়ে। কিন্তু সেগুলো কোথায়? হুইটজিলোকে তার ধারালো বর্শা ও জাদুমন্ত্রের জোর প্রয়োগ করে সব বাধা-বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে খুঁজে বের করতে হবে সেই প্রাচীন লিপিগুলো। অ্যাজটেক জাতির আশা-ভরসা নির্ভর করছে সাহসী হুইটজিলোর ওপরে, সে কি পারবে এত বড় দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করতে? গেমারকে এ প্রশ্নের উত্তর বের করতে হবে তার গেম খেলার পারদর্শিতা ও বুদ্ধিমত্তার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে।
গেমটির বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্য রোল প্লেয়িং গেমগুলো থেকে এ গেমটিকে কিছুটা আলাদা করে তুলেছে। গেমটির নতুন ধরনের আর্টিস্টিক পরিবেশ, থ্রিডি ক্যারেক্টার, আনকোরা গেম কন্ট্রোলিং সিস্টেম, পাজল সমাধান করার ধারণ, শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করার কৌশল, প্রাচীন আর্টিফ্যাক্ট সংগ্রহ, দক্ষতা ও ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নানা রকমের ট্রেনিং, অপশনাল সাইড কোয়েস্ট বা বাড়তি কিছু মিশনের সাহায্যে উপরি আয়ের ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহার, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ম্যাজিক পোশন কেনা, আংটি ও অন্যান্য গয়নার সাহায্যে প্লেয়ারের শক্তি ও ক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা ইত্যাদি প্রাচীন অ্যাজটেক পরিবেশ ও রীতিনীতি বেশ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার পাশাপাশি গেমে যোগ করেছে এক ভিন্নমাত্রার স্বাদ। গেমে প্রায় ২১টি ভিন্নধর্মী লোকেশনে তুলির ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত স্টেজ বানানো হয়েছে যা দেখে নজর সরবে না।
গেমটি চালাতে মাঝারি কনফিগারেশনের পিসি হলেই চলবে। গেমটি চালানোর জন্য ২ গিগাহার্টজের প্রসেসর, এক্সপির জন্য ১ গিগাবাইট ও ভিসতা/সেভেনের জন্য ২ গিগাবাইট, হার্ডডিস্কে ১.৬ গিগাবাইট ফাঁকা জায়গা এবং ২৫৬ মেমরির ডিরেক্টএক্স ৯.০ ও পিক্সেল শেডার ২.০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে। গ্রাফিক্স কার্ডের মেমরি ৫১২ মেগাবাইট হলে ভালো হয়। মাদারবোর্ডের বিল্ট-ইন গ্রাফিক্স কার্ডেও গেমটি চালানো যাবে। তাই যাদের এক্সট্রা গ্রাফিক্স কার্ড নেই তারা গেমটি নিশ্চিন্তে চালাতে পারবেন।
কজ ওয়েব