• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সম্পাদকীয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইসিটিসম্পাদক, 
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সম্পাদকীয়

প্রস্তাবিত জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৮ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাতি পেতে যাচ্ছে প্রস্তাবিত জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৮৷ আমরা জানি, ২০০২ সালের অক্টোবরে সরকার প্রণয়ন করে জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০২৷ এ নীতিমালায় মোটামুটি জাতীয় জীবরে প্রতিটি ক্ষেত্রকেও সংশ্লিষ্ট করা হয়, যাতে করে আইসিটির ব্যবহারে মাধ্যমে জাতি সামগ্রিকভাবে উপকৃত হতে পারে৷ অনেক ক্ষেত্রে সে নীতিমালায় লক্ষ্য অর্জনের সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছিল৷ তবে সম্পদের সীমাবদ্ধতাসহ অন্যান্য কারণে অনেক ক্ষেত্রে সে সময়সীমা পেরিয়ে গেছে, কিন্তু লক্ষ্য অর্জিতও হয়নি৷ আবার দেখা গেছে, সরকারের অন্যান্য নীতিসিদ্ধান্তের কারণে অনেক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আজ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে৷ উদাহরণ টেনে বলা যায় জাতীয় আইসিটি নীতিমালা-২-এ ২০০৬ সারে মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হেছিল৷ একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজে জ্ঞান (নলেজ) ও তথ্য (ইনফরমেশন-কে ধরে নেয় হয় সবচেয়ে উত্পাদনশীল সম্পদ হিসেবে৷ বলা বাহূল্য, কোনো না কোনো বিবেচনায় আইসিটির ক্ষেত্রে সে ধরনের উন্নয়নের পর্যায়ে আমরা যেতে পারিনি৷ বিদ্যমান এ প্রেক্ষাপটে আইসিটি স্টেকহোল্ডাররা উপলব্ধি করেন, আমাদের বিদ্যমান জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০২ জাতীয় ল্যের আলোকে পর্যালোচনা দরকার৷ বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন বেটারবিজনেসফোরামে এ বিষয়টি উত্থাপিত হয়৷ সেই সূত্র ধইরে ২০০৮ সাল মে মাসে গঠিত হয় জাতীয় আইসিটি নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটি৷ এই কমিটি প্রয়োজনীয় পর্যালোচনা শেষে ইতোমধ্যেই প্রণয়ন করেছেন প্রস্তাবিত জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৮৷

উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত এ নীতিমালা প্রণয়নে আমাদের সংবিধানের তাগিদটি আমলে নেয়া হয়েছে৷ আমাদের সংবিধানে সীমিত সম্পদ ও বিপুল মানসম্পদকে কাজে লাগিয়ে সবার জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি করার তাগিদ আছে৷ সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে সবার জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি প্রসঙ্গে বলা আছে, রাষ্ট্র সব নাগরিকের সমসুযোগ নিশ্চিত করবে৷ রাষ্ট্র কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে নারী-পুরষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করবে এবং সব নাগরিকের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টনও নিশ্চিত করবে, যাতে করে প্রজাতন্ত্রের সবখানে সুষম উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হয়৷ এসব বিষয় মাথায় রেখে প্রণীত এই নীতিমালাকে বিবেচনা করা হচ্ছে রাষ্ট্রের নীতিপরিকল্পক ও নির্বাহীদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক নির্দেশক হিসেবে৷ এটিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ নির্দেশিকা এবং এনজিও/সুশীল সমাজের জন্য একটি সামাজিক প্রণোদনা নির্দেশিকা হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে৷

প্রস্তাবিত আইসিটি নীতিমালা যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রণীত হয়েছে তার মধ্যে আছে : একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও দ্বায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামাজিক সাম্য জোরদার করা; সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সহনশীল খরচে নাগরিক সেবা সরবরাহ করা; আগামী এক দশকে দেশটিকে একটি মধ্যমেয়াদী দেশে পরিণত করা ও ৩০ বছর সময়ে উন্নত দেশের কাতারে দাঁড়ানো ইত্যাদি লক্ষ্যে আইসিটির ব্যবহার সম্প্রসারণ ও বৈচিত্রময় করা হলো। এই দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে বেশ কয়েটি লক্ষ্য র্নিধারণ করা হয়েছে৷ এর মধ্যে আছে : সামাজিক সাম্য, উত্পাদনশীলতা, সমন্বয়সাধন, শিক্ষাও গবেষণা, কর্মী প্রজন্ম, রফতানি জোরদার, স্বাস্থ্যসেবা, সার্বজনীন প্রবেশ নিশ্চিত করা৷ এসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পেছনে তহবিল যোগানোর বিষয়টির প্রতি যে সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে, সে কথা আমরা যেনো ভুলে না যাই৷ ২০০২ সালের আইসিটি নীতিমালার অনেক ভালো ভালো নীতি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি এ দুর্বলতা কারণে৷

আমাদের আরেকটি বিষয় সচেতনভাবে মনে রাখতে হবে, আমাদেরকে প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পের প্রতি সমাধিক মনোযোগী হওয়া দরকার৷ ইতোমধ্যেই আমরা বেশ কিছু প্রযুক্তি শিল্প নিয়ে কাজ করছি৷ তবে ধ্রুপদ প্রযুক্তি শিল্পখাতে আমাদের উদ্যেগ এখনো অনুপস্থিত৷ যেমন সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি শিল্প৷ এক্ষেত্রে বলতে গেলে আমাদের এখনো শুরুটাই হয়নি৷ এক্ষেত্রেও আমাদের যে উদ্যোগ প্রয়োজন, সে কথা জানাতেই আমরা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের ওপর আমাদের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন তৈরি করেছি৷

সঠিক ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যেতে না পারলে আমরা কখনোই আইসিটির সুফল ঘরে তুলতে পারবো না৷ সে জন্য প্রকল্প গ্রহণে আমাদের সাবধানী হওয়া প্রয়োজন৷ প্রসঙ্গক্রমে বাংলাদেশে সরকারের নেয়া বিশ্বব্যাংকের অর্থসহায়তায় গড়ে তোলা প্রকল্প সাপোর্ট ফর ডেভেলপন্টে অব পাবলিক সেক্টর ইউজ অব আইসিটি আন্ডার এমট্যাপ-এর উদাহরণ টানা যায়৷ আমারে মনে হয় প্রস্তাবিত জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৮-এ বিধৃত লক্ষ্য অর্জনে এ প্রকল্পটি সহায়ক হবে না৷ অতএব এ প্রকল্পটির ব্যাপারে পর্যালোচনা প্রয়োজন হয়ে দেখা দিয়েছে৷ এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে চলতি সংখ্যার ইংলিশ সেকশনে প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট একটি লেখা থেকে৷

এখন চলছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান৷ রমজান শেষে আসবে পবিত্র ঈদুল ফিতর৷ মাসিক কর্মপিউটার জগৎ-এর পক্ষ থেকে রইলো লেখক, পাঠক, বিজ্ঞাপন দাতা, এজেন্ট ও পৃষ্ঠোপাষকদের প্রতি ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা৷

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস