• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নে আইসিটি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
এসএমই
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নে আইসিটি


এসএমই। পুরো কথায় ‘স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ’। বাংলায় ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প’। বর্তমান বিশ্বে এসএমই একটি বহুল আলোচিত বিষয়। এসএমই বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত কোনো একক সংজ্ঞা নেই। বিভিন্ন দেশ বিভিন্নভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে সংজ্ঞায়িত করেছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীর সংখ্যা, প্রতিষ্ঠানের সম্পদ অথবা এই দু’টির উভয়কে ভিত্তি করে এই সংজ্ঞা নির্ধারণ করে। কোনো কোনো দেশ আবার উৎপাদনশীল খাত ও সেবা খাতকে পৃথকভাবে সংজ্ঞায়িত করে।

বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) উন্নয়ন নীতি কৌশল ২০০৫’-এ এসএমই’র সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দিয়েছে। ২০০৮ সালের জুন মাসে শিল্প মন্ত্রণালয়ের এসএমই সেল এ সংজ্ঞায় কিছু পরিবর্তন আনে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের এই পরিবর্তন অনুসারে বাংলাদেশের কোনো শিল্পকে এসএমই হিসেবে চিহ্নিত করার সংজ্ঞাগুলো নিম্নরূপ :

ক. ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের/এন্টারপ্রাইজের সংজ্ঞা :

০১.
ক্ষুদ্র শিল্পখাত বলতে সেসব শিল্প/এন্টারপ্রাইজকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি ও কারখানা ভবন ছাড়া অন্যান্য স্থায়ী সম্পদের মোট মূল্য ৫০ হাজার থেকে ১.৫ কোটি (.০৫ মিলিয়ন থেকে ১৫ মিলিয়ন) টাকা এবং/অথবা কর্মরত জনবল অনুর্ধ্ব ৫০ জন।

০২.
মাঝারি শিল্পখাত বলতে সেসব শিল্প/এন্টারপ্রাইজকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি ও কারখানা ভবন ছাড়া অন্যান্য স্থায়ী সম্পদের মোট মূল্য ১.৫ কোটি থেকে ২০ কোটি (১৫ মিলিয়ন থেকে ২০০ মিলিয়ন) টাকা এবং/অথবা যেখানে কর্মরত জনবল সর্বোচ্চ ১৫০ জন।

খ. ট্রেডিং এবং অন্যান্য সেবাখাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প/এন্টারপ্রাইজের সংজ্ঞা :

০১.
ট্রেডিং এবং অন্যান্য সেবাখাতে ক্ষুদ্র শিল্প/এন্টারপ্রাইজ বলতে সেসব প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জমি ও ভবন ছাড়া স্থায়ী সম্পদের দাম ৫০ হাজার থেকে ৫০ লাখ (.০৫ মিলিয়ন থেকে ৫ মিলিয়ন) টাকা এবং/অথবা জনবল অনুর্ধ্ব ২৫ জন।

০২.
ট্রেডিং এবং অন্যান্য সেবাখাতে মাঝারি শিল্প/এন্টারপ্রাইজ বলতে সেসব প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে, যেসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জমি ও ভবন ছাড়া স্থায়ী সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ থেকে ১০ কোটি (৫ মিলিয়ন থেকে ১০০ মিলিয়ন) টাকা এবং/অথবা জনবল সর্বোচ্চ ৫০ জন।

উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাথে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের যেমন বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসংক্রান্ত শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংজ্ঞাকেই সবচেয়ে বেশি হারে ব্যবহার করতে দেখা যায়। এই প্রতিবেদন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বা এসএমই বলতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের এ সংজ্ঞাকেই ব্যবহার করা হয়েছে।

টেকসই উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের গুরুত্ব

উন্নত দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প টেকসই উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত। বেশি হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন করার কাজে বিভিন্ন দেশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে উন্নয়নের বাহন হিসেবে বেছে নিয়েছে। ইউনাইটেড নেশনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (UNIDO) বিভিন্ন দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে উন্নয়নের জন্য গুরুত্ব আরোপ করেছে এবং বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, ভারত ইত্যাদি দেশের উন্নয়নের মূলেও রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবদান। বিশ্বব্যাংকের এক রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রায় ১৪০ কোটি এসএমই ১৩০টি দেশের ৬৫ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।

এসএমই উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ

বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি এসএমই টাস্কফোর্স গঠন করে। এই টাস্কফোর্সে সরকার মনোনীত ৮ জন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ১১ জন সদস্য ছিলেন। পরে সরকার ২০০৫ সালের জুন মাসে ১৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি এসএমই অ্যাডভাইজরি প্যানেল গঠন করে।

বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ‘দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্রে’ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং রফতানি শিল্পের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপসহ নিবিড় কর্মসংস্থানভিত্তিক শিল্পায়নের কথা বলা হয়েছে। শিল্পনীতি ২০০৫-এ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে অন্যতম অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়ন নীতিকৌশল-২০০৫’ প্রণয়ন করে। বেসরকারি খাতকে সহায়তা দেয়া এবং শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরে বিরাজমান বৈষম্য দূর করা, সবার জন্য সমান্তরাল ক্ষেত্র নিশ্চিত করে বিনিয়োগবান্ধব ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে শিল্পায়নে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়ন নীতিকৌশল ২০০৫’ অনুসারে সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতকে ১১টি বুস্টার খাতে বিভক্ত করে। তবে এই বুস্টার খাতগুলো প্রতি তিন বছর পর পর পুনর্মূল্যায়ন হওয়ার কথা। এই খাতগুলো হলো : ০১. ইলেকট্রনিক্স ও বৈদ্যুতিক সামগ্রী; ০২. সফটওয়্যার নির্মাণ; ০৩. হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেটাল-ওয়ার্কিং; ০৪. অ্যাগ্রোপ্রসেসিং/অ্যাগ্রিবিজনেস/প্লানটেশন অ্যাগ্রিকালচার/টিস্যু কালচার; ০৫. চামড়াজাত সামগ্রী; ০৬. নিটওয়্যার ও রেডিমেড গার্মেন্টস; ০৭. প্লাস্টিক ও অন্যান্য সিনথেটিক; ০৮. স্বাস্থ্যসেবা এবং ডায়াগনস্টিক; ০৯. শিক্ষাসেবা; ১০. ওষুধ/প্রসাধনী/ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা এবং ১১. ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যার।

এসএমই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা

‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়ন নীতিকৌশল ২০০৫’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার যাবতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন, অর্থায়ন, তথ্য সরবরাহ, উদ্বুদ্ধকরণ, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও উদ্যোক্তাদের সহায়তা ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে। কোম্পানি আইন ১৯৯৮-এর ২৮ ধারামতে, এসএমই ফাউন্ডেশনের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশনের আলোকে যৌথ মূলধনী কোম্পানি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিদফতরে নিবন্ধীন করে এ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

এসএমই ফাউন্ডেশন এদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশের জন্য সরকারের কাছে এসএমইবান্ধব বিভিন্ন নীতি প্রশ্নে অ্যাডভোকেসি করছে। এসএমই খাতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবাকে আন্তর্জাতিক বাজারে উপস্থাপন, ব্যবস্থাপনার দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি পরিচালনাগত দক্ষতা উন্নয়নের চেষ্টা করছে। তাছাড়া এ ফাউন্ডেশন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ক্রেডিট হোলসেলিং, প্রযুক্তি উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

এসএমই ফাউন্ডেশন দেশে এসএমই উন্নয়নে বিভিন্নমুখী কর্মসূচি পরিচালনার মাধ্যমে মহিলা উদ্যোক্তাসহ এসএমই উদ্যোক্তাদের স্থানীয় ও তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব সম্পাদন করছে।

এসএমই বিকাশে সাধারণ বাধাসমূহ

বিভিন্ন গবেষণায় বাংলাদেশের এসএমই শিল্প বিকাশে যেসব অন্তরায় চিহ্নিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : ০১. উপযুক্ত নীতি সম্পর্কিত বাধা, ০২. অর্থের যোগান না পাওয়া, ০৩. লাগসই প্রযুক্তি না পাওয়া, ০৪. দক্ষতা উন্নয়ন ও মানব উন্নয়নবিষয়ক প্রশিক্ষণের অভাব, ০৫. পণ্যের বাজারজাতকরণ এবং ০৬. উপযুক্ত তথ্যের অভাব। আমাদের সীমাবদ্ধ সম্পদের মধ্যেও এসব সমস্যার প্রতিটিই সমাধান করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের আগ্রহ। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির সফল প্রয়োগ বাংলাদেশের এসএমই শিল্প বিকাশে চিহ্নিত সমস্যাগুলোর প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আইসিটি ও ইনফরমেশন সিস্টেম

তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিতরণের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাকে এককথায় বলা হয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বা ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি)। ব্যবসায়িক কারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অথবা দক্ষ তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তথ্য আহরণ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিতরণের গুরুত্ব অনেক। আইসিটি’র ব্যাপক উন্নতির ফলে মানুষ পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় আনতে পেরেছে। ইন্টারনেটের কল্যাণে মানুষ সবসময় ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারছে। আজকে ব্যবসায়-বাণিজ্যে কমপিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল, টেলিফোন ইত্যাদি ছাড়া যেনো কোনো কিছুই কল্পনা করা যায় না।

আইসিটি প্রয়োগে আধুনিক ইনফরমেশন সিস্টেম তৈরি করা যায়। ইনফরমেশন সিস্টেম হলো এক সেট আমত্মঃসম্পর্কীয় উপাদান, যা কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন সিদ্ধান্ত নেয়া ও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করার জন্য ডাটা সংগ্রহ বা উদ্ধার, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও বণ্টন করে থাকে। ব্যবস্থাপক ও কর্মীদের সিদ্ধান্ত নেয়া, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ইনফরমেশন সিস্টেম সমস্যা বিশ্লেষণ, জটিল বিষয় অনুধাবন এবং নতুন পণ্য তৈরিতে সহযোগিতা করে।

এসএমই উন্নয়নে আইসিটি

উন্নত বিশ্বে আইসিটি’র প্রয়োগে এসএমই’র সার্বিক উন্নয়ন করার জন্য UNIDO, EU-এর প্রতিটি দেশের সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা একযোগে কাজ করছে। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে তারা উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছে। অর্গনাইজেশন অব ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ১৯৯৮ সালে এক গবেষণায় দেখিয়েছে এসএমই’র তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির গ্রহণ/প্রয়োগের সাথে ওই এসএমই’র আকার বেড়ে যাওয়ার সাথে ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলেও আইসিটি’র সফল প্রয়োগে এসএমই’র উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন দেশের সরকার এসএমই খাতে আইসিটি’র প্রয়োগ উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির প্রয়োগে এসএমই’র জন্য উপযোগী বিভিন্ন ধরনের ইনফরমেশন সিস্টেম তৈরি করা যায়, যা এসএমই’র সার্বিক কার্যক্রম উন্নয়নে সাহায্য করে থাকে।

কাজের দক্ষতা বাড়ানো :

কাজের দক্ষতা বলতে কাজকে দ্রুত ও কম সময়ে সঠিকভাবে সম্পন্ন করা বুঝায়। কাজের প্রতিটি ধাপের পর্যাপ্ত ইনফরমেশন পাওয়া গেলে কাজ দক্ষতার সাথে করা যায়। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির প্রয়োগে বাস্তবায়িত ইনফরমেশন সিস্টেম ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্যই হলো কাজের দক্ষতা বাড়ানো।

কাজ ফলপ্রদ করা :

এসএমইতে আইসিটি’র প্রয়োগে বাস্তবায়িত ইনফরমেশন সিস্টেমে ব্যবহারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো কাজকে ফলপ্রদ করা। কাজের প্রতিটি ধাপে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন পেলেই কাজকে ফলপ্রদ করা যেতে পারে।

উন্নত গ্রাহকসেবা :

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে বিভিন্ন কোম্পানি গ্রাহকসেবার মানোন্নয়ন করছে। কারণ, যে প্রতিষ্ঠান যত বেশি গ্রাহকসেবা দিতে পারবে, সে প্রতিষ্ঠানই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সক্ষম হবে। ইনফরমেশন সিস্টেমের মাধ্যমে এই গ্রাহকসেবার মান উন্নত করা যায়।

পণ্য তৈরি ও উন্নয়ন :

অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক, বীমা, অর্থায়ন সেবা, পর্যটন সংস্থা ইত্যাদি তাদের ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে তথ্যকে প্রধান শক্তি হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে কিংবা উৎপাদিত পণ্যের মান উন্নয়ন করে। এই উৎপাদিত পণ্যকে ‘ইনফরমেশন ইনটেনসিভ প্রোডাক্ট’ বলে। ইনফরমেশন সিস্টেমের সহযোগিতায় তথ্যের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে উৎপন্ন পণ্য বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।

পণ্যের বিপণন :

এসএমই খাতে আইসিটি’র ব্যবহার করে তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবাকে আন্তর্জাতিক বাজারে উপস্থাপন ও বিক্রি করা যেতে পারে। ই-কমার্সের কল্যাণে সব এসএমই পণ্যই আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে পারে। এসএমই’র জন্য এটি একটি বড় সুবিধা।

ব্যবসায়-সুযোগ শনাক্ত করা ও কাজে লাগানো :

পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সেই সাথে বদলাচ্ছে মানুষের রুচি, চাহিদা এবং জীবনধারণ প্রণালী। ফলে ব্যবসায়ের ক্ষেত্র ও ধরন পাল্টে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ইনফরমেশন সিস্টেম বাজারতথ্যের সমন্বয় করে এর সাহায্যে ব্যবসায়ের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। একটি প্রতিষ্ঠানের কত দ্রুত এবং কী কী বিষয় পরিবর্তন করতে হবে, ইনফরমেশন সিস্টেম তা সহজেই নির্ণয় করে দেয়। সুদূর ও দুর্গম এলাকায় প্রতিষ্ঠানের সাথে তথ্যের সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নিতে কমিউনিকেশন টেকনোলজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ফলে ব্যবসায়ের নতুন সুযোগ খুঁজে নেয়া, নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া এবং তা তাৎক্ষণিক কার্যকর করতে বড় কোনো বাধার মুখোমুখি হতে হয় না।

গ্রাহক ধরে রাখা ও প্রতিযোগীকে দূরে রাখা :

ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান এবং গ্রাহক প্রত্যেকেই পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে লাভবান হতে পারে। ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর মাধ্যমে গ্রাহকদের ধরে রাখতে পারে এবং প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানকে দূরে রাখতে পারে। ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ রাখতে হবে, তাদের প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের কত বেশি সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। ইনফরমেশন সিস্টেমের সহায়তায় গ্রাহকদের এবং প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রাহক ধরে রাখা যায়।

এসএমই’র জন্য উপযোগী সাধারণ আইসিটি পণ্য

এসএমই’র জন্য উপযোগী যে আইসিটি হার্ডওয়্যার পণ্য সাধারণভাবে ব্যবহার হচ্ছে তা হলো : টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ফ্যাক্স, কমপিউটার, প্রিন্টার, প্লটার, স্ক্যানার, ক্যামেরা, মডেম ইত্যাদি। সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে সাধারণ অফিস অ্যাপ্লিকেশন। যেমন : ডকুমেন্ট প্রসেসিং, সাধারণ স্প্রেডশিট বিশ্লেষণ প্রোগ্রাম, গ্রুপওয়্যার, পার্সোনাল ইনফরমেশন ম্যানেজার, সাধারণ অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার, ইনভেনটরি কন্ট্রোল সফটওয়্যার ইত্যাদি। বর্তমানে কমিউনিকেশন ও ডাটা বিনিময়ের জন্য ইন্টারনেট ও ই-মেইল খুবই জনপ্রিয়। এসব হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার একত্রে SOHO বা Small Office Home Office নামে জনপ্রিয়। এর সাহায্যে যেকোনো এসএমই উদ্যোক্তা যখন যেখানে খুশি সেখানে অফিসের কাজ করতে পারে।

এসএমই’র কাছে ইন্টারনেটের ব্যবসায়িক মূল্য

এসএমই’র কাছে ইন্টারনেটের ব্যবসায়িক মূল্য অনেক বেশি। ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এতে করে প্রতিষ্ঠান লাভবান হয়। কোনো প্রতিষ্ঠান এর পণ্য ও সেবা, তাদের মূল্য, বিপণন, মান ইত্যাদি সম্পর্কে যেসব কৌশলগত সুবিধা ইন্টারনেট থেকে পেতে পারে, তা নিচে উল্লেখ করা হলো :

বিশ্বব্যাপী প্রচার ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ :

বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য, সেবাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পৃথিবীতে একই সাথে প্রচার চালানো যায় বা তথ্য-উপাত্ত বিতরণ করা যায়। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর হয়। স্থানীয় ও আঞ্চলিক বাজারের সাথে সাথে বিশ্ববাজারে প্রবেশের সুযোগ উন্মোচিত হয়। ই-মেইল, ইলেকট্রনিক্স মেইলিং লিস্ট, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সাইট এবং অন্যান্য ইন্টারনেট সেবা আন্তর্জাতিক যোগাযোগ তৈরিতে সহায়তা করছে।

ক্রেতা-বিক্রেতার মতবিনিময় :

ইন্টারনেটের আরেকটি প্রধান গুণ হচ্ছে পারস্পরিক যোগাযোগ। ইন্টারনেটভিত্তিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এসএমই’র সাথে ক্রেতা বা সম্ভাব্য ক্রেতাদের সাথে সহজেই যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়। ওয়েবসাইটে সর্বসাধারণের সাথে আলোচনা এবং চ্যাটিং করা যায়। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় সম্ভব হয়। তাছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছ থেকে ফরমায়েশ পাওয়া, তাদের প্রত্যুত্তর বা মতামত জানা এবং তাদেরকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়। ই-মেইলের মাধ্যমে ক্রেতাদের প্রশ্ন এবং তাদের মন্তব্য দ্রুত জানা সম্ভব হয়। ফলে বাজারের সম্ভাব্য সুযোগগুলো দ্রুত নেয়া যায়। মোট কথা ইন্টারনেটপ্রযুক্তি ক্রেতার আনুগত্য তৈরি করতে ব্যবসায়কে সহায়তা করে।

কাস্টমাইজেশন :

ইন্টারনেট, ইন্ট্রানেট এবং এক্সট্রানেটের আরেকটি ব্যবসায়িক গুণ হচ্ছে, এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে একক বা সুনির্দিষ্ট ক্রেতার জন্য তথ্য ও সেবা নিশ্চিত করে। প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেয়া হয়। যেমন : বিল, ব্যাংক হিসাবের ব্যালেন্স।

পারস্পরিক সহযোগিতা :

ইন্টারনেট বিভিন্ন টিম, ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং ব্যবসায়ী অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করে। ইন্টারনেট, ইন্ট্রানেট এবং এক্সট্রানেট ডাটা শেয়ার এবং অন্য নেটওয়ার্ক রিসোর্স উদ্ধারে সক্ষম। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এসএমই ডাটাবেজ থেকে যেকোনো ডাটা এসএমই উদ্যোক্তা নিতে পারে।

ইলেকট্রনিক কমার্স :

ই-কমার্সের জন্য ইন্টারনেট প্রয়োজন। ইন্টারনেট ক্রেতা ও সরবরাহকারীর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে একটি ইলেকট্রনিক বাজার সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে উভয়পক্ষ ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করে থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠান তার নতুন পণ্য ও সেবার বাজার সৃষ্টি করতে ই-কমার্স কাজে লাগায়।

সার্বিক কার্যক্রমের সমন্বয় :

ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের বাহ্যিক অনলাইন কার্যক্রমের সাথে অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে সমন্বিত করে। এর ফলে তথ্য-উপাত্তের আধুনিকায়ন বা হালনাগাদ করা নিশ্চিত হয়, যা এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য জরুরি। আবার হালনাগাদ তথ্যই ই-কমার্সের জন্য বিশেষ উপযোগী।

এসএমই-উপযোগী অ্যাডভান্সড আইসিটি পণ্য

উন্নত বিশ্বের এসএমইগুলো আইসিটি’র অ্যাডভান্সড টুলগুলো ব্যবহার করে সুবিধা নিচ্ছে। আমাদের দেশে মাঝারি শিল্পগুলোর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কিছু অ্যাডভান্স আইসিটি টুল ব্যবহার করছে এবং আইসিটি’র সুফল পাচ্ছে। এসএমই’র জন্য উপযোগী কিছু অ্যাডভান্স টুল, যা উন্নত বিশ্বে ব্যবহার হচ্ছে তার পরিচিতি উল্লেখ করা হলো :

ইআরপি :

এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানিং বা ইআরপি হচ্ছে সামগ্রিক ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের একক আধার। মানবসম্পদ উন্নয়ন, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, ইনভেন্টরি, বাজারজাতকরণ, বিপণন, অ্যাকাউন্টিং ও ট্যাক্সের মতো বিষয়গুলো এক জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ইআরপি খুবই সহায়ক। যেকোনো মুহূর্তে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাপনার তথ্য রিপোর্টিংয়ের জন্য ইআরপি’র বিকল্প নেই।

সিআরএম :

ব্যবসায়িক যোগাযোগ রক্ষার্থে মানবসম্পদ ও প্রযুক্তির সমন্বয়ই ‘কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট’ বা সিআরএম। সিআরএম কার্যক্রমের মধ্যে আছে সেল্স কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট, অ্যাকাউন্টিং হিস্ট্রি, অর্ডার এন্ট্রি, কাস্টমার সার্ভিস এবং সাপোর্ট, ফিল্ড সার্ভিস, লিড জেনারেশন ইত্যাদি।

এসসিএম :

কাঁচামাল কেনা থেকে তৈরি পণ্য বাজারজাত করা পর্যন্ত প্রক্রিয়া সরল করাই এসসিএম বা সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের প্রধান কাজ। এর মাধ্যমে ভুলের পরিমাণ কমে, উৎপাদন সময় কমে এবং সার্বিক দক্ষতা বেড়ে যায়। ই-প্রকিউরমেন্ট সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টেরই একটি অংশ।

এন্টারপ্রাইজ অ্যাপ্লিকেশন ইন্টিগ্রেশন :

প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তথ্যের প্রবাহ নিশ্চিত ও সাবলীল করতে বিভিন্ন ইআরপি ও অন্যান্য সফটওয়্যারের সমন্বিত করাই হলো এন্টারপ্রাইজ অ্যাপ্লি¬কেশন ইন্টিগ্রেশন।

আরপিএম :

অতি অল্প সময়ের মধ্যে একটি প্রোডাক্ট ডিজাইন করার জন্য আরপিএম বা র্যানপিড প্রোটোটাইপিং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং একটি কার্যকর পদ্ধতি। এর মাধ্যমে একটি নতুন প্রোডাক্ট ডিজাইনের সময় ৯০ দিন থেকে মাত্র ৩ দিনে কমিয়ে আনা সম্ভব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় আগামী ২০ বছরে এটি ব্যাপক অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। একটি প্রোডাক্ট ডিজাইন থেকে শুরু করে উৎপাদনের খরচ ও সময় দুটোই নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনতে এর বিকল্প নেই।

নলেজ ম্যানেজমেন্ট :

মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নলেজ ম্যানেজমেন্ট। কর্মীদের মধ্যে নলেজ শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা ও কর্মীদের দক্ষতার সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।

আইসিটি প্রয়োগে এসএমই’র অনীহার কারণ

আইসিটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সার্বিক দক্ষতা ও কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারা সত্ত্বেও বাংলাদেশের বেশিরভাগ এসএমই এর প্রয়োগ করছে না। এসএমইতে আইসিটি প্রয়োগ খুবই ধীরগতিতে হচ্ছে, যা কাম্য নয়। পক্ষান্তরে উন্নত বিশ্বের এসএমইগুলো সাধারণ আইসিটি টুল তো অবশ্যই, এমনকি অ্যাডভান্সড টুলও ব্যবহার করছে এবং আইসিটি থেকে পাওয়া সব সুযোগসুবিধা গ্রহণ করছে।

আমাদের দেশের এসএমই’র পক্ষ থেকে চাহিদা কম থাকার কারণে দেশের আইসিটি সলিউশন প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানগুলো এসএমই’র জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা চালু করতে উৎসাহবোধ করেনি। আবার প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা না থাকার কারণে এসএমইগুলো আইসিটি ব্যবহারে উৎসাহিতও হয়নি। এ যেনো এক দুষ্ট চক্র। এ দুষ্ট চক্র থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। অতীতে আইসিটি পণ্য ও সেবাগুলো খুবই ব্যয়বহুল ও জটিল ছিল। বর্তমানে এ অবস্থায় উন্নয়ন হয়েছে।

এসএমইতে আইসিটি প্রয়োগের প্রতিবন্ধকতা

আইসিটি অবকাঠামো :

এসএমই খাতে দেশের সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান ও জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা বিবেচনা করে সরকার এসএমইতে আইসিটি সহজলভ্য করতে পারে। যেসব এসএমই আইসিটি ব্যবহার করতে ইচ্ছুক তাদের কারিগরি সহযোগিতা দেয়া এবং অন্যান্য এসএমই’র জন্য আইসিটি’র সুবিধা জানিয়ে সচেতনতার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া যেতে পারে। বিনাসুদে কিংবা নামমাত্র সুদে দীর্ঘমেয়াদী কিস্তিতে আইসিটি যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার এসএমই’র জন্য সরবরাহ করা যেতে পারে। এর ফলে এসএমই আইসিটি ব্যবহারে উৎসাহিত হবে। দেশের আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমই’র জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার তৈরিতে উৎসাহিত করা এবং এ জন্য প্রয়োজন হলে আর্থিক সহযোগিতা করা যেতে পারে। এসএমই’র জন্য ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ সহজলভ্য করা খুবই জরুরি। এর ফলে এসএমই উদ্যোক্তারা ই-কমার্সের কথা বিবেচনা করবেন।

মানবসম্পদ উন্নয়ন :

এসএমই খাতে আইসিটি ব্যবহার করার জন্য এসএমই’র সাথে জড়িত মানবসম্পদকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনে দক্ষ করে তোলা যেতে পারে। এসএমই খাতে আইসিটি’র ক্ষমতা উদ্ঘাটন করার জন্য উদ্যোক্তা ও ম্যানেজারদের নিয়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা যেতে পারে। দেশের বিভিন্ন আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এসএমই’র জন্য বিশেষায়িত আইসিটি কোর্স চালু করা যেতে পারে।

আইসিটি’র জন্য অর্থায়ন :

এসএমই খাতে আইসিটি’র প্রয়োগের জন্য হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন, যা একটি ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়। এজন্য সরকার আর্থিক সহযোগিতা দিতে পারে। ব্যাংক কিংবা লিজিং কোম্পানি যাতে নামমাত্র সুদে এই খাতে বিনিয়োগ করে সরকারকে সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

আইনগত কাঠামো :

ইলেকট্রনিক লেনদেনকে বৈধতা দেয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট আইনের প্রয়োজন, যা আমাদের দেশে এখনো অনুপস্থিত। সরকারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আইনের বাস্তবায়ন করতে হবে। এই আইনের ফলে এসএমইগুলো ই-কমার্সে প্রবেশ করতে পারবে। এসএমই পণ্যের বাজার দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে যাবে। বাংলাদেশী এসএমই পণ্যের বাজার হবে বিশ্বব্যাপী।

আইসিটি প্রয়োগ করে এসএমই উন্নয়নে কিছু সুপারিশ

বাংলাদেশের এসএমই উন্নয়নের জন্য সরকারের প্রতি কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো। তা পর্যায়ক্রমে কিছু স্বল্প মেয়াদে, কিছু মধ্য মেয়াদে এবং কিছু দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হলে এসএমই’র উন্নয়ন হবে।



আইসিটি’র সুবিধা সম্পর্কিত সচেতনতা বাড়ানো :

আইসিটি’র বিভিন্ন সাধারণ ও অ্যাডভান্সড টুলের ক্ষমতা এসএমইগুলোর কাছে তুলে ধরার জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা, প্রদর্শনী, মেলার আয়োজন করা, যাতে এসএমই উদ্যোক্তারা অংশ নিতে পারেন। এতে এসএমই উদ্যোক্তাদের মধ্যে আইসিটি সম্পর্কিত সচেতনতা বাড়বে এবং আইসিটি গ্রহণে/প্রয়োগে উদ্যোগী হবে।

এসএমই খাতে আইসিটি’র সাক্ষরতা বাড়ানো :

এসএমই উদ্যোক্তা, ব্যবস্থাপক ও কর্মীদের আইসিটি জ্ঞানের সাক্ষরতা বাড়ানোর জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের এসএমইতে ভিন্ন ধরনের আইসিটি টুলের প্রয়োজন হয়। এ জন্য আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকে এসএমই উপযোগী কোর্স ডিজাইন করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সিলেবাসকে এসএমই উপযোগী করে সাজাতে হবে। সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বাধ্যতামূলক করতে হবে।

আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমই উপযোগী বিজনেস সলিউশন তৈরির জন্য উৎসাহিত করা :

দেশের আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে এসএমই উপযোগী বিজনেস সলিউশন তৈরি করে, সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিতে হবে। যেমন- এসএমইবান্ধব সফটওয়্যার তৈরির জন্য প্রণোদনা দেয়া এবং আয়কর রেয়াতের সুবিধা সৃষ্টি করা। সরকারের আইসিটি ইনকিউবেটরে যেসব আইসিটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের জন্য বাধ্যতামূলক কিছু এসএমইবান্ধব সফটওয়্যার তৈরি করা, যা এসএমই ফাউন্ডেশন বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ ও মনিটর করবে।

এসএমই উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করা :

এসএমই’র জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য যাতে মাতৃভাষার মাধ্যমে সহজেই পাওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন কনটেন্ট প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানকে বাংলায় কনটেন্ট তৈরির বিষয়ে উৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। সরকার তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করেছে। এ আইনের সুফল যাতে এসএমইগুলো পেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এসএমই’র জন্য ওপেন সোর্স সফটওয়্যারকে জনপ্রিয় করা :

বেশিরভাগ এসএমই’র পক্ষে সফটওয়্যার কিনে ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ওপেন সোর্স সফটওয়্যারকে জনপ্রিয় করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে করে বাংলাদেশের এসএমইগুলো বিনামূল্যে সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারবে। এ বিষয়ে আইসিটি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। ওপেন সোর্স নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কাজ করছে তাদেরকে অর্থনৈতিক সহায়তা দেয়া, যাতে করে এরা এসএমই-উপযোগী সলিউশন তৈরি করে বিনামূল্যে সরবরাহ করতে পারে।

অনলাইনে ট্যাক্স/ভ্যাট/ট্রেড লাইসেন্স ও বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধের সুবিধা দেয় :

এসএমইগুলো যাতে সহজেই যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় অনলাইনে তাদের ট্যাক্স, ভ্যাট ও ট্রেড লাইসেন্স তৈরি ও নবায়ন করতে পারে, সে ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এসএমই’র জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো ধরনের সেবার যেমন গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ইত্যাদির বিল যাতে অনলাইনে পরিশোধ করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। ফলে এসএমইগুলো আইসিটি ব্যবহারে অভ্যস্থ হবে।

ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়ন করা :

বাংলাদেশে ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। দুর্নীতি ও সুশাসনের জন্য ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়ন খুবই জরুরি হয়ে পড়ছে। ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়িত হলে এসএমইগুলো সরকারের বিভিন্ন সেবা নিয়ে উপকৃত হতে পারবে। সরকারি বিভিন্ন কেনাকাটায় এসএমই’র অংশ নেয়া বাড়বে। দেশীয় পণ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

ই-কমার্স বাস্তবায়ন করা :

ইলেকট্রনিক ট্রানজেকশন আইন বাস্তবায়ন করে ই-কমার্স চালু করা খুবই জরুরি। অন্যথায় আমাদের দেশের এসএমইগুলো অন্যান্য দেশ থেকে পিছিয়ে যাবে। অনলাইন বাণিজ্য করতে পারলে এসএমইগুলো স্থানীয় বাজার ও আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের পণ্য প্রদর্শন করতে পারবে। অন্যান্য দেশের পণ্যের মান দেখে তারা তাদের পণ্যের গুণগত মানের উন্নয়ন ঘটাতে পারবে।

ই-বিজনেস অ্যাডভাইজরি সার্ভিস চালু করা :

অনলাইনে ব্যবসায়-বাণিজ্য করতে চাইলে এ জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার জন্য একটি ই-বিজনেস অ্যাডভাইজরি সার্ভিস চালু করতে হবে। ই-কমার্স চালুর জন্য এসএমইদের সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।

ইন্ট্রিগ্রেটেড এসএমই ডাটাবেজ তৈরি করা :

সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা এসএমইদের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে একটি এসএমই ডাটাবেজ তৈরি করা প্রয়োজন, যা ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করবে। এসএমই নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তারা এই ডাটাবেজ থেকে বিভিন্ন তথ্য পেতে পারেন। সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়ায় এই ডাটাবেজ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একটি পূর্ণাঙ্গ এসএমই ডাটা সেন্টার চালু করা হলে সার্বিকভাবে এসএমইগুলোর সুবিধা হবে।

এসএমই ইআরপি সেন্টার চালু করা :

ইআরপি খুব ব্যয়বহুল হওয়ায় এসএমইগুলো যাতে সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারে, সেজন্য একটি ন্যাশনাল এসএমই ইআরপি সেন্টার চালু করা যেতে পারে। এই সেন্টার চালুর ফলে এসএমইগুলো নামমাত্র মূল্যে ইআরপি সফটওয়্যার ব্যবহারের সুবিধা পাবে।

আইসিটি প্রয়োগে এসএমই উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম

এসএমই ফাউন্ডেশন তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে এসএমইগুলোকে তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং সরাসরি ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পণ্য বিপণনে সক্ষম করে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এছাড়াও পণ্যের সার্টিফিকেট পেতে সহায়তা, বিভিন্ন নিয়ম-কানুন, প্রাযুক্তিক তথ্য সরবরাহ ও বিভিন্ন শিক্ষা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে এসএমইগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এসএমই ফাউন্ডেশন সহায়তা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে এসএমই উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন যেসব কাজ করেছে, তার পরিচিতি নিচে তুলে ধরা হলো :

এসএমই উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা :

এসএমই উদ্যোক্তাদের আইসিটি কর্মকান্ডে দক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন তথ্যপ্রযুক্তিসেবা যোগানোর কাজ করে যাচ্ছে। ‘এসএমই উন্নয়নে আইসিটির ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী এক্সপার্ট কনসালটেশন মিটিং গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার লক্ষ্য ছিল এসএমই উন্নয়নে বর্তমানে আইসিটি’র সুযোগ-সুবিধাগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার, আইসিটি’র প্রধান ক্ষেত্রগুলো নির্ণয় করা এবং আইসিটি খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করা। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো: কায়কোবাদ। এতে বিভিন্ন এসএমই প্রতিষ্ঠান ও অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ভার্চুয়াল অফিস উন্নয়ন :

এসএমই ফাউন্ডেশন তাদের অভ্যন্তরীণ অফিসের কার্যক্রম দক্ষতার সাথে করার জন্য একটি ভার্চুয়াল অফিস প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে ফাউন্ডেশনের দৈনন্দিন কর্ম সম্পাদনে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও বিভিন্ন বিষয়ে মতপ্রকাশ ও মুক্ত আলোচনার জন্য ভার্চুয়াল অফিস ব্যবহার করছেন। ভার্চুয়াল অফিসের বিভিন্ন সুবিধার মধ্যে রয়েছে নোটিস বোর্ড, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, গ্রুপ মেসেজিং, ডকুমেন্ট শেয়ারিং, ফটো গ্যালারি, উপস্থিতি ব্যবস্থাপনা, ছুটি ব্যবস্থাপনা, ইনভেন্টরি ব্যবস্থাপনা, কনফারেন্সিং, রিসোর্স সিডিউলিং, মিটিং মিনিটস সংরক্ষণ, অনলাইন লাইব্রেরি সুবিধাদান ইত্যাদি।

এসএমই ওয়েব পোর্টাল :

এসএমই ফাউন্ডেশন তার এসএমই ওয়েব পোর্টালটি http://www.smef.org.bd নতুন আঙ্গিকে, নতুন কাঠামো দিয়ে নতুন ডিজাইনে উন্নয়ন করেছে। এখানে পাওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন সম্পর্কিত তথ্য, সরকারি বিভিন্ন ফরম, সরকারের বিভিন্ন নীতি, এক্সেস টু ফিন্যান্স ও এক্সেস টু টেকনোলজি সম্পর্কিত তথ্য, এসএমই নারী উদ্যোক্তা ফোরাম, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর ওয়েব লিঙ্ক, এন্টারপ্রাইজগুলোর আমত্মঃসংযোগ, ই-কমার্সবিষয়ক তথ্য ইত্যাদি। এসব তথ্যের নিয়মিত হালনাগাদকরণের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য এখানে সন্নিবেশিত আছে। ওয়েব পোর্টালের একটি বাংলা সংস্করণ প্রকাশের কাজ চলছে।

এসএমই অ্যাসোসিয়েশন/ট্রেড বডির ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট :

এসএমই ফাউন্ডেশন তাদের নিজস্ব রিসোর্স ব্যবহার করে বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল মার্চেন্ডাইজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইএমএমএ) http://www.bemma.org.bd-এর ওয়েবসাইট উন্নয়ন করে দিয়েছে। বর্তমানে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিইএমএমএ তাদের সদস্যদের তথ্যসেবা প্রদান করছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ওয়েবসাইটটির উদ্বোধন করা হয়।

বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইআইওএ) http://www.beioa.org-এর ওয়েবসাইটও এসএমই ফাউন্ডেশন উন্নয়ন করে দিয়েছে। এই ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন করেন বর্তমান সরকারের শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। বর্তমানে এসএমই ফাউন্ডেশন নাসিব ও বাংলাক্রাফট-এর ওয়েবসাইট দুটির উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।

এসএমই ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট ডিসপ্লে : এসএমই ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে এসএমইদের উৎপাদিত পণ্যের বিশ্বব্যাপী পরিচিতি ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্রেতারা আমাদের এসএমইদের উৎপাদিত পণ্য বিষয়ে অবহিত হবেন এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারীর সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। এর ফলে আমাদের দেশীয় এসএমই পণ্যের বিশ্বব্যাপী বাজার উন্মুক্ত হবে।

আইসিটি’র প্রয়োগ করে এসএমই উন্নয়নের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন এ বছর আরো বেশ কিছু কাজের উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের ফলে প্রত্যক্ষভাবে বাংলাদেশের এসএমইগুলো উপকৃত হবে।

এসএমই হেল্পলাইন সেন্টার

আইসিটি’র সুফল প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের এসএমইএসডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৩২টি এসএমই হেল্পলাইন সেন্টার স্থাপন করা হয়। এসএমই ফাউন্ডেশন এসব হেল্পলাইন সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ২৫টি জেলায় যে ৩২টি হেল্পলাইন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, তার ২৫টি বিসিক শিল্প নগরীতে এবং ৭টি ট্রেডবডি/অ্যাসোসিয়েশন অফিসে স্থাপিত হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ৩৯টি জেলায় হেল্পলাইন সেন্টার স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।

হেল্পলাইন সেন্টারের উদ্দেশ্য :

হেল্পলাইন সেন্টারগুলো নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যে স্থাপিত হয়েছে :

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নের লক্ষ্যে সহায়তা এবং উপদেশমূলক সেবা প্রদান করা। এসএমই খাত বিকাশে এতে সরকারি কার্যক্রম ও সেবাগুলো, সংশ্লিষ্ট আইন ও নিয়মাবলী, রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সিং ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে উদ্যোক্তাদের তথ্য সরবরাহ করা। এসএমই বিকাশে সহায়তাদানের লক্ষ্যে উদ্যোক্তাদের তথ্যপ্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করা। প্রয়োজনীয় কারিগরি উৎসের সন্ধান এবং অর্থ যোগানের উৎস, কুশলী মানবসম্পদের সন্ধান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা, ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সেবার প্রয়োজনীয় সংযোগ দান। সর্বক্ষণিকভাবে এসএমই ওয়েব পোর্টাল ব্যবহারের সুযোগ দান।

হেল্পলাইন সেন্টার ব্যবস্থাপনা :

শিল্প মন্ত্রণালয়, এসএমই ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সংশ্লিষ্ট ট্রেডবডির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি জাতীয় কমিটি দেশব্যাপী স্থাপিত হেল্পলাইন সেন্টারগুলো পরিচালনা করবে। এই কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে কেন্দ্রগুলোর ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। জাতীয় পর্যায়ের কমিটির আওতায় জেলা পর্যায়ে একটি করে কমিটি থাকবে। জেলা পর্যায়ের কমিটি জেলা বিসিক, বিজনেস চেম্বার ও পৌরসভা/সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত হবে। জেলা পর্যায়ের ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত হবে :

০১.
জেলা চেম্বার সভাপতি ও বিসিক শিল্পসহায়ক কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা, যুগ্ম আহবায়ক; ০২. মিউনিসিপ্যালিটি/সিটি করপোরেশনের একজন প্রতিনিধি, সদস্য; ০৩. একজন বেসরকারি প্রতিনিধি (শিল্পোদ্যোক্তা), সদস্য এবং ০৪. বিসিক জেলা প্রধানের মনোনীত একজন প্রকৌশলী, সদস্য সচিব।

উক্ত কমিটি জেলায় স্থাপিত সেন্টারগুলোর ব্যবস্থাপনা, তদারকি এবং পর্যাপ্ত সেবা প্রদানের বিষয়ে নিশ্চত করবে। কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে সরবরাহ করা সেবা যথা ডকুমেন্টেশন সার্ভিস, ব্যবসায় রেজিস্ট্রেশন, প্রজেক্ট প্রোফাইল বিক্রি ও অন্যান্য সেবার জন্য নির্ধারিত হারে ফি ধার্য করবে। কেন্দ্রগুলোর বিসিক কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীরা সর্বক্ষণিকভাবে এফবিসিসিআই ও জেলা চেম্বারের পূর্ণ সহযোগিতা নিয়ে কাজ করবেন।

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের দেশ। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে, বাংলাদেশের ৯৬ শতাংশ শিল্পই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। গবেষণার মাধ্যমে আরও জানা গেছে, আমাদের দেশের জিডিপি’র শতকরা ১২ ভাগ আসে শিল্প থেকে এবং এই জিডিপি’র শতকরা প্রায় ৬ ভাগই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবদান। কৃষিখাতের বাইরের খাতগুলোর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থানই হয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে। দেশের পঁয়ত্রিশ লাখেরও বেশি শ্রমিক জড়িত আছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে। আমাদের দেশের সার্বিক টেকসই উন্নয়ন তথা এই বিপুলসংখ্যক নর-নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।

...........................................................................................
সাক্ষাৎকার

‘এসএমই ফাউন্ডেশন প্রাথমিকভাবে ৬টি খাতে কাজ করছে’



মমতাজ উদ্দীন আহমেদ
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এসএমই ফাউন্ডেশন

এসএমই ফাউন্ডেশন বড় আকারের শিল্পের সাথে এসএমইগুলোর ‘ডিজিটাল ডিভাইড’ কমানোর জন্য আগামী অর্থবছরে ১১টি বুস্টার সেক্টরের মধ্যে ৬টি খাতে কাজ করছে। এসএমই ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট উন্নয়ন, আইসিটি ব্যবহারে সক্ষমতা বাড়ানো, নির্বাচিত এসএমই পণ্যের ডিজিটাল ক্যাটালগ তৈরি ও আইসিটি সম্পর্কে সচেতনতা ও উপযোগিতা সৃষ্টিমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

ই-ট্রানজেকশন আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এবং এ আইনের গুরুত্ব ও বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনার জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন এ বছরেই ‘এসএমই উন্নয়নে আইসিটি’র ভূমিকা’ শীর্ষক একটি কর্মশালা সম্পন্ন করেছে। এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। এছাড়া কর্মশালাটিতে বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। আশা করা যায়, তারা আইনটি বাস্তবায়নে উদ্যোগী হবেন।

এসএমই হেল্পলাইন সেন্টারগুলো কার্যকর করার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যাদি আমরা সংগ্রহ করছি। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আমরা আলোচনায় বসতে তৈরি আছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি হেল্পলাইন সেন্টারগুলো সঠিকভাবে চলার ব্যাপারে গতি সঞ্চার হবে। হেল্পলাইন জাতীয় কমিটির বিগত সভায় এ বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। ফাউন্ডেশনের পরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি আলোচিত হবে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএমই ওয়েব পোর্টালটি বাংলা ভাষায় করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে অনেক তথ্য বাংলায় আপলোড করা হয়েছে। বাকি তথ্য বাংলায় অনুবাদ করার প্রক্রিয়া চলছে। তাছাড়া ছয়টি খাতের (০১. প্লাস্টিক অ্যান্ড আদার সিনথেটিক, ০২. ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, ০৩. লেদার অ্যান্ড লেদার গুডস, ০৪. এগ্রো প্রসেসিং, ০৫. লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেটাল ওয়ার্কস, ০৬. ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড ড্রেস মেকিং) স্টাডি রিপোর্ট অনুসারে এসএমইবান্ধব কনটেন্ট তৈরিতে এসএমই ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কনটেন্ট আপলোড করা হয়েছে। বিগত সাত মাসে আমাদের ওয়ের পোর্টালে প্রায় ১৪ লাখ হিট হয়েছে।

যদিও সফটওয়্যার শিল্পখাত শিল্প মন্ত্রণালয় প্রণীত ১১টি বুস্টার সেক্টরের মধ্যে একটি, তবুও এসএমই ফাউন্ডেশন প্রাথমিকভাবে উল্লিখিত ৬টি সেক্টরের উন্নয়নে কর্মরত আছে। এ অর্থবছরে আইসিটি এসএমই উন্নয়নে গতি সঞ্চারের তেমন কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই, তবে অচিরেই আমরা এ বিষয়ে উদ্যোগ নেব।

এ কথা সত্য, আইসিটি অবকাঠামো এই প্রযুক্তি আত্মস্থকরণে এসএমইগুলোর বড় বাধা। এ বছর আমরা আইসিটি দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনগুলোর ওয়েবসাইট তৈরি, কমপিউটার, ফটোকপিয়ার, স্ক্যানারসহ অন্যান্য আইসিটি যন্ত্রপাতি দেখাসহ তাদের দক্ষতা উন্নয়নের কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি যাতে করে এসএমইগুলো তাদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে আইসিটি পরিষেবা পেতে পারে। তা ছাড়া সারাদেশে স্থাপিত হেল্পলাইনগুলোকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার চেষ্টা চলছে।
...........................................................................................

‘এসএমই উন্নয়নের লক্ষ্যেই সরকার গঠন করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন’



আফতাব উল ইসলাম
চেয়ারম্যান, এসএমই ফাউন্ডেশন

বাংলাদেশের শিল্পকারখানার শতকরা প্রায় ৯০ ভাগের চেয়ে বেশি হলো এসএমই। অধিক হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের জন্য এসএমই’র উন্নয়ন খুবই জরুরি। সরকার এ লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সৃষ্টি করেছে। এসএমই ফাউন্ডেশন যাতে আরো বেশি কার্যকরভাবে এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারে, সেজন্য আমি ও আমার বোর্ড আন্তরিকভাবে কাজ করবে।

বাংলাদেশের এসএমই বিকাশের প্রধান বাধা হচ্ছে এ খাতে আর্থিক সহযোগিতা পর্যাপ্ত নয়। ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এসএমই’কে ঋণ দিতে উৎসাহবোধ করে না। ফলে এসএমইগুলো সহজে ঋণ পায় না। বাংলাদেশে মোট ব্যাংক ঋণের মাত্র ২১ শতাংশ এসএমই খাতে প্রবাহিত হয়েছে, যেখানে অন্যান্য দেশে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ঋণ এসএমই খাতে দেয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিগত ২ বছরে এসএমই খাতে ঋণপ্রবাহের পরিমাণ মাত্র ২ শতাংশ বেড়েছে। এসএমই খাতে ঋণপ্রবাহের পরিমাণ ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে পারলে সত্যিকার অর্থে এসএমই’র উন্নয়ন হবে।

আমাদের দেশ ক্ষুদ্র ঋণের দেশ হিসেবে বিশ্বখ্যাতি অর্জন করেছে। সে ধারাবাহিকতায় আমরা এসএমই খাতে ঋণের প্রবাহ বাড়িয়ে ‘মিনি ক্রেডিট’-এর দেশ হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করব। এসএমই খাতে দক্ষ জনশক্তির প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি উন্নয়ন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির প্রয়োগ, এসএমইবান্ধব নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়নে সরকারকে সহযোগিতা ও নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচি চালু করব।

শেষ কথা

বাংলাদেশের শিল্পকারখানার ৯০ শতাংশের বেশিই এসএমই। অতএব দেশের শিল্পোন্নয়নে এসএমই’র ভূমিকা যে বড় মাপের, তা অনস্বীকার্য। বিতর্কাতীতভাবে সবাই স্বীকার করছেন, বিপুল কর্মসংস্থানসহ শিল্পোন্নত বাংলাদেশের কথা ভাবতে হলে এসএমই-কে বাদ দিয়ে চিন্তার অবকাশ নেই। এই এসএমই খাতকে সমৃদ্ধতর পর্যায়ে নিতে হলে অন্যসবের মাঝে অন্যতম কাজ হবে এসএমইগুলোতে আইসিটি’র ব্যাপক ব্যবহার। আর এজন্য প্রয়োজন এখাতে তহবিলের যোগান দেয়া। সরকার বাজেটে এখাতে একটি বিশেষ বরাদ্দ রাখতে পারে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সরকারের পক্ষ থেকে বাধ্য করা যেতে পারে এসএমইগুলোকে ঋণ দেয়ার ব্যাপারে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে এক্ষেত্রে আইসিটি’র ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা। তাছাড়া এসএমই খাতে আইসিটি’র ব্যবহারে গতি আসবে না। এক্ষেত্রে আসবে না কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : mujib@smef.org.bd

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস