• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সেমিনার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সুমন ‍ইসলাম
মোট লেখা:৮৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ল্যাপটপ
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সেমিনার
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির তথা আইসিটির সুবিধাদি পৌঁছে দিতে হবে গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি মানুষের কাছে। এজন্য ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটির সর্বোত্তম ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। নতুন করে তৈরি করতে হবে আমলাতন্ত্র। ফাইলভিত্তিক প্রশাসনিক কার্যক্রমকে ই-গভর্নমেন্টে রূপ দিতে হবে। সব মন্ত্রণালয়ের কমপিউটারায়ন করতে হবে। এর অংশ হিসেবেই দেশের সব মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক এবং ইউএনওদের ল্যাপটপ কমপিউটার দেয়া হবে এবং তাদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি শিশুর হাতে তুলে দিতে হবে ল্যাপটপ। ১৬ জুন বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ভিশন ২০২১ : ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৯ বাস্তাবায়নে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।


উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ‍ইয়াফেস ওসমান সচিব ও কর্মকর্তারা

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: আব্দুল আজিজ এনডিসি। বিজ্ঞান এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাজমুল হুদা খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট সচিব এবিএম আব্দুল হক চৌধুরী, নির্বাচন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবির, স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান সিকদার, পররাষ্ট্র সচিব মো: তৌহিদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফিরোজ কিবরিয়া, পরিকল্পনা সচিব মো: আব্দুল মালেক, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো: মাসুদ। বিজ্ঞান এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিনের স্বাগত বক্তব্যের পর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) কার্যনির্বাহী পরিচালক মো: মাহফুজুর রহমান। সচিব পর্যায়ের ১১ জন, অতিরিক্ত সচিব ৯ জন, যুগ্ম সচিব ৪৯ জন, ৬টি বিভাগের ৬ জন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ৮ জন, বিসিএস ও বেসিসের সভাপতি এবং কমপিউটার কাউন্সিলের কর্মকর্তারা সেমিনারে অংশ নেন।

প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, দেশকে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় রয়েছে সবার। একে বাস্তাবে রূপ দিতে হবে। আমলাতন্ত্রকে আবার তৈরি করতে হবে। সে সময় এসেছে। গ্রামের কৃষকরা কলসেন্টার থেকে উপকার পাচ্ছে। এ সুবিধা আরো সম্প্রসারণ করতে হবে। প্রতিটি শিশুর হাতে তুলে দিতে হবে ল্যাপটপ। শহরকেন্দ্রিক না হয়ে, গ্রামেও ছড়িয়ে দিতে হবে তথ্যপ্রযুক্তির সব সুবিধা। নইলে সার্বিক সুফল পাওয়া যাবে না। কমাতে হবে ডিজিটাল বৈষম্য। এমন অবস্থা তৈরি হবে যে, বছর চারেকের মধ্যে কাগজ থাকবেই না, সে স্থান দখল করে নেবে যন্ত্র। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সবার সহযোগিতা চান এবং সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন।



মন্ত্রিপরিষদ সচিব আব্দুল আজিজ বলেন, আমাদের সবার আগে দরকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করা। কিভাবে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবো সেই কর্মধারা আগে ঠিক করতে হবে। অনেকে মনে করেন, দেশে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে মোটেও কাজ হয়নি। এটা ঠিক নয়। মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট রয়েছে। সেগুলো ঠিকমতো আপডেট হয় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। মাধ্যমিক পর্যায়ে কমপিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ১০টি ই-কৃষি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলোকে পরিশোধন করতে হবে। হেলথ লাইন জনপ্রিয় করতে পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশ পরিকল্পনায় গতি সঞ্চার হবে। তিনি বলেন, সব কিছুর জন্যই আগে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলা ভাষায় যেসব সফটওয়্যার রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ভাবতে হবে। প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত সফটওয়্যারই দিতে হবে। সচিব বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যয় করার জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে তহবিল রয়েছে। তারা মোট ব্যয়ের ১ শতাংশ কমপিউটার থিঙ্কিংয়ে ব্যবহার করতে পারেন। অথচ দুঃখজনক ব্যাপার হলো সেটাই হয়তো হচ্ছে না। সচিব যদি তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানাশোনা হন, তাহলে তার সহকর্মীদের মধ্যেও তা সঞ্চারিত হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

বস্ত্র ও পাট সচিব এবিএম আব্দুল হক চৌধুরী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে সাথে নিয়েই আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে এগিয়েছিও যথেষ্ট। প্রযুক্তিভীতি দ্রুত কেটে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়া এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব। তাছাড়া অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন, যাদের কমপিউটার নেই। রাতারাতি এ সমস্যার সমাধানও আশা করা যায় না। পর্যায়ক্রমে হয়তো এ সমস্যার উত্তরণ সম্ভব হবে। এখনো সচিব পর্যায়ে অনেকেই কমপিউটার ব্যবহার করতে জানেন না। তাদের কক্ষে গেলে দেখা যায় কমপিউটারের ওপর ধুলা জমে আছে। মন্ত্রণালয়গুলোর ওয়েবসাইটও নিয়মিত আপডেট করা হয় না। ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে হলে এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে।

নির্বাচন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবির বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ছবিসহ ভোটার তালিকা একটি বড় সাফল্য। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ কমপিউটার, ল্যাপটপ, ওয়েবক্যাম ইত্যাদি দেখতে পেয়েছে এবং এসবের ব্যবহার দেখেছে। তালিকায় যেনো কেউ কারসাজি করতে না পারে, সেজন্য পিডিএফ ফাইল করে ভোটার তালিকা দেয়া হয়েছে ওয়েবসাইটে। এখন সব উপজেলার সাথে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় যুক্ত। ফলে সারাদেশের নির্বাচন ও ভোটার বিষয়ে তথ্য আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আসলে দরকার হচ্ছে সচেতন হওয়া। নির্বাচন কমিশনে কেউ স্থায়ী নিয়োগ পেতে চাইলে কিংবা পদোন্নতির আগে প্রতিটি কর্মীর পরীক্ষা নেয়া হবে যে, তিনি কমপিউটার জানেন কিনা। এ জানার ওপরই নির্ভর করবে তার স্থায়ী নিয়োগ বা পদোন্নতির বিষয়টি। সচিব বলেন, আমরা অনেক টুল ডেভেলপ করেছি, যা অন্যদের সাথে শেয়ার করা যেতে পারে। আমরা এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেয়ারও প্রস্তাব দিচ্ছি। যেকেউ আমাদের কাছ থেকে প্রযুক্তিজ্ঞান নিয়ে সমৃদ্ধ হতে পারবেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সব মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক এবং ইউএনওদের ল্যাপটপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

পররাষ্ট্র সচিব মো: তৌহিদ হোসেন বলেন, তার মন্ত্রণালয় এবং কর্মীরা আগে থেকেই প্রযুক্তিবান্ধব। এখানে ব্যবহার হচ্ছে অত্যাধুনিক সফটওয়্যার ও যন্ত্রপাতি। ই-মেইলের সর্বোচ্চ ব্যবহারের কারণে চিঠি ও ফ্যাক্স পাঠানোর ব্যয় কমে এসেছে। সব রেকর্ডের সার্ভার রয়েছে, যেখানে চাইলেই যেকোনো তথ্য পাওয়া যাবে। এখন চেষ্টা চলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সব মিশনের সাথে নেটওয়ার্ক স্থাপনের। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কথা ভেবে সাবমেরিন ক্যাবলের যোগ না দিয়ে আমরা ১০ বছর পিছিয়ে গেছি। আবার যেনো ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া না হয়, সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। প্রতিটি শিশুর হাতে তুলে দিতে হবে ল্যাপটপ। ওয়ান ল্যাপটপ পার চাইল্ড কর্মসূচি হাতে নিলে ১ কোটি শিশুকে ল্যাপটপ দেয়া যাবে। এজন্য বছরে পনেরো কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে, দেশের উন্নয়নের জন্য যা কঠিন কিছু নয়। এগিয়ে যেতে চাইলে এটি করতেই হবে। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আরো কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন।

স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান শিকদার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতা থাকলেও অর্জন কম নয়। পাবলিক পরীক্ষাগুলোর ফল প্রকাশ করা হচ্ছে কমপিউটারে। বিমানবন্দরে কারা যাচ্ছেন, কারা আসছেন তার সবই রেকর্ড করা হচেছ। সেখানে ডাটাবেজ রয়েছে। ফলে চিহ্নিত বা বিদেশে যেতে নিষেধ রয়েছে এমন ব্যক্তিরা কিছুতেই গ্রিন চ্যানেল পার হতে পারবেন না। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের ধরে ফেলতে পারবেন। তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন না ঘটলে তথ্যপ্রযুক্তিসহ সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়ে আগে নজর দিতে হবে। এখনো বহু থানা ও ফাঁড়ি রয়েছে যেখানে কমপিউটার দেয়া সম্ভব হয়নি। এটি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি থানায় ব্যবহার করতে হবে কমপিউটারপ্রযুক্তি। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ছাড়া সবই অচল। তাই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ন্যাশনাল মনিটরিং সেল রয়েছে। আমরা এর মাধ্যমে সব কিছু মনিটরিং করতে পারছি। আমাদের এমন যন্ত্র রয়েছে যা দিয়ে টেলিফোন ট্র্যাক করা যায়। ফলে কেউ যদি টেলিফোনে হুমকি দেয়, তাহলে ভয় না পেয়ে আমাদেরকে জানান। আমরা অত্যাধুনিক ওই যন্ত্র ব্যবহার করে হুমকিদাতাকে ট্র্যাক করে ধরে ফেলতে সক্ষম হবো। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বড় যেসব সন্ত্রাসী ধরা পড়েছে তা ওই ট্র্যাকিং ডিভাইসের কারণেই সম্ভব হয়েছে।

সচিব বলেন, অপরাধীদের ডাটাবেজ করা দরকার। এটি করা গেলে সারাদেশের থানা ও ফাঁড়িগুলোতে তাদের ছবিসহ পরিচয় পাওয়া সম্ভব হবে। ফলে অপরাধী যেখানেই থাক তার পক্ষে পালিয়ে থাকা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, সেজন্য তথ্যপ্রযুক্তিকে কেবল শহরভিত্তিক করলে উন্নয়ন হবে না। একে করতে হবে গ্রামভিত্তিক। গ্রাম পর্যায়ে আইটি ভিলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে। এটা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এ ব্যাপারে একযোগে কাজ করতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে সব তথ্য ওয়েবসাইটে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। শিগগিরই ওয়েবসাইটে ঢুকলেই এ বিষয়ে যেকোনো তথ্য পাওয়া যাবে। ফলে বিষয়টি নিয়ে যারা গবেষণা করছেন অথবা শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকেই পেয়ে যাবেন। এ ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেট করা হবে। ফলে মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যাবে, এমনকি প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করারও সুযোগ থাকবে।

পরিকল্পনা সচিব মো: আব্দুল মালেক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন একটি জনপ্রিয় স্লোগান। এই স্লোগান দিয়েই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বই বেশি। অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে না পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না। তাই এ বিষয়ে প্রথমেই নজর দেয়া জরুরি। তিনি বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ লোক যেহেতু গ্রামে বাস করেন, তাই তাদেরকে নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে হবে। এটি করা না গেলে সার্বিকভাবে কোনো লাভ হবে না। প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে হবে গ্রামগঞ্জে। সবাই যাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ ১৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাছাড়া ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে দেয়ায়। তিনি বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মের কথা জানা যায়। সহিংস ঘটনাও ঘটে থাকে। তাই পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়াটি যদি অনলাইনে তথা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে করা হয়, তাহলে নানা অনিয়ম দূর হবে এবং অপ্রীতিকর ঘটনাও রোধ হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো: মাসুদ বলেন, নানা বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও আমরা উন্নয়নের চেষ্টা করছি। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য আমাদের ক্যাপাসিটি তৈরি করতে হবে। নইলে উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।

যুগ্ম সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ না থেকে সব ক্ষেত্রেই যদি ডিজিটাল ব্যবস্থা বাস্তাবায়ন করা যায় তাহলে উন্নয়ন হবে। শিক্ষা ও ভূমিতে এই ব্যবস্থা কার্যকর জরুরি। ভূমি ক্ষেত্রে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে তা দূর করার একমাত্র পথ হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার। তিনি বলেন, ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি-দুটি মন্ত্রণালয় নয়, সব মন্ত্রণালয়েই যদি ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠা করা যায়, তাহলে সুফল পাওয়া যাবে। সবাই মিলেই গড়তে হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ।

বিসিসির কার্যনির্বাহী পরিচালক মো: মাহফুজুর রহমান তার মূল প্রবন্ধে ‘ভিশন ২০২১ : ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৯ বাস্তাবায়নে আমাদের করণীয়’ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সভাপতি বিজ্ঞান ও আইসিটি সচিব মো: নাজমুল হুদা খান বলেন, সবার মাঝে ডিজিটাল বাংলদেশ গড়ার অনুরণন শোনা যাচ্ছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক। এ সুফল নিশ্চয় পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, এজন্য দরকার দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার। এটি না থাকলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ কারো একার নয়, সবার। তাই সবাই হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে গেলে আমাদের আশা পূর্ণ হবে।

উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে কার্য অধিবেশনে সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা ৬টি ওয়ার্কিং গ্রুপে ভাগ হয়ে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নীতিমালা ২০০৯-এর উপর বিশদ আলোচনার পর বেশ কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সারাদেশে ইন্টারনেটের প্রসার, ইন্টারনেট সেবার মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা, কমপিউটার সফটওয়্যার ও সেবা খাতের রফতানিসহ কমপিউটারে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া, টেলিফোন ও ইন্টারনেটের আওতা বাড়িয়ে এবং সেবার মূল্য কমিয়ে তা কম সুবিধাভোগী জনগণের মধ্যে আনা, আগামী ৫ বছরের মধ্যে সব উপজেলাকে ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধার আওতায় আনা, ২০১৪ সালের মধ্যে ই-গভর্নেন্সে উত্তরণ, ২০১২ সালের মধ্যে ই-কমার্সের সূচনা, সব সরকারি দফতরে কমপিউটার ব্যবস্থার প্রবর্তন প্রভৃতি।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : sumonislam7@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস