• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ব্যাটম্যান আর্কহাম সিটি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ
মোট লেখা:১০৪১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - জানুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ব্যাটম্যান আর্কহাম সিটি

২০১১ সালের গেমগুলোর মধ্যে ব্যাটম্যান আর্কহাম সিটি নিজের স্থান শীর্ষের দিকে পাকাপোক্ত করে নিয়েছে অসাধারণ গেমপ্লে ও কাহিনীর মাধ্যমে। ২০০৯ সালে বের হওয়া এ সিরিজের প্রথম গেম আর্কহাম অ্যাসাইলাম গেমের দারুণ সফলতার পর নতুন এ গেমটিও সবার মন জয় করে নিয়েছে। অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার, স্টিলথ ও ক্লোজ কমব্যাটের অসাধারণ সংমিশ্রণের এ গেমটি ডেভেলপ করেছে রকস্টেডি স্টুডিওস। গেমটির আইওএস প্লাটফর্ম ভার্সন অবমুক্ত করেছে নেদাররেলম স্টুডিওস। নতুন গেমিং কনসোল নিনটেনডো উইই ইউয়ের জন্য ২০১২ সালে বের হতে যাচ্ছে গেমটির আরেকটি ভার্সন। গেমটির মূল পাবলিশার ওয়ার্নার ব্রাদারস ইন্টার-অ্যাকটিভ এন্টারটেইনমেন্ট এবং জাপানে পাবলিশ করেছে স্কয়ার ইনিক্স। গেমটি বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে আনরিয়েল ইঞ্জিন ৩। গেমটির শুধু সিঙ্গেল প্লেয়ার মোড রয়েছে।



গেমের প্রথমে দেখা যাবে হুগো স্ট্রেঞ্জ নামের এক ডাক্তার ব্যাটম্যানের গোপন পরিচয় জেনে যাবে এবং তাকে অপহরণ করবে ব্রুস ওয়েন রূপে থাকা অবস্থায়। হুগো ব্রুসকে বলে পালানোর চেষ্টা করলে তার গোপন পরিচয় সবার সামনে ফাঁস করে দেবে। ব্রুসকে বন্দি থাকতে হবে তার প্রটোকল ১০ নামের প্রজেক্ট সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত। এরপর তাকে বন্দি করে পাঠানো হবে আর্কহাম সিটি নামের বিশাল কারাগারে, যা কি না আর্কহাম অ্যাসাইলামের চেয়েও ৫ গুণ বড়। গোথাম সিটির সবচেয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের রাখা হয়েছে এ জেলখানায়। জেলে থাকা অবস্থায় মি. পেঙ্গুইন ব্রুসকে মারতে এলে হাতাহাতি শুরু হয় এবং এতে সে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। পরে বাটলার আলফ্রেডের সহায়তায় এয়ারড্রপের মাধ্যমে ব্যাটস্যুট ও গ্যাজেট আনিয়ে নিয়ে ব্যাটম্যান সেজে প্রটোকল ১০-এর রহস্য উদঘাটন করার কাজে নামতে হবে। ব্যাটম্যান রূপে আসার পর প্রথম কাজ হবে ক্যাটওম্যানকে টু-ফেসের হাত থেকে। জোকার টাইটান ফর্মুলা নামের এক বিষাক্ত টক্সিনে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকবে। রোগের কোনো প্রতিষেধক না পেয়ে সে একটি চাল চালবে। ব্যাটম্যানকে ফাঁদে ফেলে তার নিজের বিষাক্ত রক্ত সে ব্যাটম্যানের শরীরে দিয়ে দেবে যাতে ব্যাটম্যান নিজে বাঁচার জন্য এর প্রতিষেধকের খোঁজ বের করে। ব্যাটম্যান প্রতিষেধকের খোঁজ পেলে জোকার তা তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার ফন্দি আটেঁ ।

টাইটান ফর্মুলার আসরে ব্যাটম্যানের জীবনীশক্তি কমতে থাকবে। তার হাতে সময় থাকবে মাত্র ২৪ ঘণ্টা। এ ফর্মুলা নিয়ে ড. ফ্রিজ গবেষণা করছিল। তাই ব্যাটম্যান তাকে খুঁজে বেড়াবে। ড. ফ্রিজকে বন্দি করে পেঙ্গুইন তার শক্তিশালী আইসগান ছিনিয়ে নিয়ে আর্কহাম সিটিতে রাজত্ব করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। তাকে হারিয়ে ব্যাটম্যান উদ্ধার করে ড. ফ্রিজকে। কিন্তু ফ্রিজ জানায় এ বিষের অ্যান্টিবডি বহু আগেই নিঃশেষ হয়ে গেছে। কিন্তু ব্যাটম্যান মনে করিয়ে দেয় ৬০০ বছর ধরে বেঁচে থাকা রাস আল গল নামের এক ডিমন বা রাক্ষসের রক্তের মধ্যে আছে এ বিষের অ্যান্টিবডি। তাই মৃত্যুর সাথে লড়তে লড়তে সে গিয়ে পৌঁছায় গলের আস্তানায়। সেখানে ব্যাটম্যান তার পুরনো প্রেমিকা টালিয়ার দেখা পায় যে কি না গলের মেয়ে ও এসাসিনদের সর্দারনী। গলের সাথে ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের পর তাকে হারিয়ে তার রক্ত নিয়ে সে দেবে ফ্রিজকে। কিন্তু ফ্রিজের স্ত্রীকে জোকার কিডন্যাপ করে নিয়ে যায়। তাই ফ্রিজ শর্ত রাখে তাকে উদ্ধার করে না দিলে সে ব্যাটম্যানকে প্রতিষেধক দেবে না। তারপর ফ্রিজের সাথেও লড়াই করতে হবে। তাকে হারিয়ে জোকারের আস্তানায় গিয়ে তার সাথে বোঝাপড়া করতে হবে। প্রতিষেধকের ফলে ব্যাটম্যান রক্ষা পেয়ে যাবে, কিন্তু জোকারকে বাঁচাতে পারবে না ব্যাটম্যান। জোকারের পালা শেষে হুগোর পালা আসবে। এখনো সমাধান হয়নি প্রটোকল ১০-এর। যতই এগোবে রহস্যের জাল ততই জড়িয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন বাজি রেখে ব্যাটম্যানকে হুগোর পরিকল্পনা মাটি করতে হবে।

গেমের মজার ব্যাপার হচ্ছে গেমে মেইন প্লট একই, কিন্তু প্রতিটি সাইড মিশন আলাদা আলাদা প্লটে সাজানো। গেমে সারা শহরে ছড়ানো রিডলারের ধাঁধার সমাধান করতে হবে এবং সংগ্রহ করতে হবে ট্রফি। এতে করে আনলক হবে কনসেপ্ট আর্ট, থ্রিডি ক্যারেক্টার মডেল, ক্যারেক্টার বায়োগ্রাফি, চ্যালেঞ্জ মিশন ইত্যাদি। মূল গেমের পাশাপাশি সাইড মিশন খেলা যাবে বা মূল মিশন শেষ হওয়ার পড়েও সেগুলো খেলা যাবে। গেম শেষে সাইড মিশন খেলার জন্য ব্যাটম্যান ও ক্যাটওম্যানের মাঝে পালাবদল করে নেয়া যাবে। দু’জনকে নিয়ে খেলার কৌশল আলাদা, তাই গেমে আগের গেমের তুলনায় ব্যাপক বৈচিত্র্যের দেখা মিলবে। সাইড মিশনগুলোতে লড়াই করতে হবে নামকরা আততায়ী ডেডশট, জেসাইস নামের পাগল খুনী, টু-ফেস, বেন ও আরো অনেকের সাথে। গেমে অনেক গ্যাজেট ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে গেম খেলার স্বাদ বহুগুণে বেড়ে গেছে। সনিক ব্যাটারাং, ইলেকট্রিক শকার, রিমোট কন্ট্রোলড ব্যাটারাং, ব্যাটক্ল, স্মোক বম্ব, এক্সপ্লোসিভ জেল ইত্যাদি গ্যাজেট দিয়ে খেলার দক্ষতা আরো ভালোভাবে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে। প্রত্যেক কমব্যাটের পরে দেয়া হবে পয়েন্ট, যা পরে কমব্যাট স্টাইল, গ্যাজেট ও ব্যাটস্যুট আপগ্রেড করার কাজে লাগবে। গেমের আরো কয়েকটি ভালো দিক হচ্ছে দুর্দান্ত ফাইটিং টেকনিক, ক্রাইম সলভিং সিকোয়েন্স, অসাধারণ ভয়েস অ্যাক্টিং, অসংখ্য ধাঁধা, বিপুল পরিমাণ আনলকেবল কনটেন্ট ইত্যাদি। গেমের ত্রুটিগুলোর মধ্যে রয়েছে-খুব সহজ বস ব্যাটল, গেমপ্লের ধাঁচ পুরনো গেমের মতোই প্রায়, হাই কনফিগারেশন পিসি রিকমেন্ডেশন ইত্যাদি। সব মিলিয়ে এটি বেশ ভালোমানের একটি গেম হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে, যা না খেলে দেখলেই নয়।

সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট

প্রসেসর : ইন্টেল কোর টু ডুয়ো ২.৪ গিগাহার্টজ/এএমডি এথলন এক্সটু ৪৮০০+, মেমরি : ২ গিগাবাইট, গ্রাফিক্স হার্ডওয়্যার : ৫১২ মেগাবাইট (ন্যূনতম এনভিডিয়া জিফোর্স ৮৮০০ জিটি/এটিআই রাডেওন এইচডি ৩৮৫০) ও হার্ডডিস্ক স্পেস : ১৭ গিগাবাইট।


কজ ওয়েব
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস