• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গণিতের অলিগলি পর্ব-৯১
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: গণিতদাদু
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গণিত
তথ্যসূত্র:
গণিতের অলিগলি
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গণিতের অলিগলি পর্ব-৯১

গণিতের অলিগলি

রহস্যময় পরিবার গণিত
এখানে আমরা জানব অবাক করার মতো রহস্যময় এক পরিবার গণিত তথা ফ্যামিলি ম্যাথের কথা। তা জানার জন্য আপনাকে নিচের নির্দেশনাগুলো অনুযায়ী কাজ করতে হবে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে :

০১. আপনার যতজন ভাই ততকে ২ দিয়ে গুণ করুন।
০২. এ গুণফলের সাথে যোগ করুন ৩।
০৩. এ যোগফলকে ৫ দিয়ে গুণ করুন।
০৪. এ গুণফলের সাথে আপনার বোনের সংখ্যা যোগ করুন।
০৫. এ যোগফলকে ১০ দিয়ে গুণ করুন।
০৬. এ গুণফলরে সাথে যোগ করুন আপনার জীবিত দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা।
০৭. এ যোগফল থেকে ১৫০ বিয়োগ করুন।

সবশেষে যে বিয়োগফল পাওয়া গেল তা একটি রহস্যময় সংখ্যা। এ সংখ্যাটি থেকে আপনি সহজেই পেয়ে যাবেন আপনার ভাই কয়জন, বোন কয়জন, আর বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা কত। মজার ব্যাপার, যদি আপনার ভাই কমপক্ষে একজন, বোন কমপক্ষে একজন এবং দাদা-দাদি-নানা-নানির মধ্যে কমপক্ষে একজন বেঁচে থাকেন, তবে এ সংখ্যাটি সবসময় হবে একটি তিন অঙ্কের সংখ্যা। এর সবচেয়ে বামের অঙ্কটি যত, আপনার ভাইয়ের সংখ্যা তত। মাঝের অঙ্কটি যত, আপনার বোনের সংখ্যা তত। আর একদম ডানের অঙ্ক যত, আপনার বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা তত। গণিতের ভাষায় সোজা কথায়, সবশেষে পাওয়া সংখ্যাটির শতকের ঘরের অঙ্ক ভাইয়ের সংখ্যা নির্দেশক, দশকের ঘরের অঙ্ক বোনের সংখ্যা নির্দেশক, আর এককের ঘরের অঙ্ক বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা নির্দেশক। অবশ্য এখানে মনে রাখতে হবে, যদি আপনার ভাই না থাকে কিন্তু কমপক্ষে এক বোন থাকে, তবে সবশেষে পাওয়া যাবে একটি দুই অঙ্কের সংখ্যা। এর ডানের অঙ্ক যত, আপনার বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যাও হবে তত। আর বামের অঙ্ক যত, আপনার বোনের সংখ্যা তত। অপরদিকে আপনার যদি কোনো ভাই-বোন না থাকে, কিন্তু দাদা-দাদি-নানা-নানির মধ্যে অন্তত একজন বেঁচে থাকেন, তবে সবশেষ অঙ্কটি হবে এক অঙ্কের, আর তাই হবে আপনার বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা। সাধারণীকরণে বলা যায়, ধাপ সাতটি সম্পন্ন করার পর যে সংখ্যাটি পাব তাকে সবসময় তিন অঙ্কের সংখ্যার আকারে ভাবতে হবে। উদাহরণ টেনে বলা যায়, যদি সবশেষ অঙ্কটি হয় ৩২৭, তবে স্পষ্টতই এটি একটি তিন অঙ্কের সংখ্যা। আর সবশেষ সংখ্যাটি যদি পাই ৩২, তবে এটিকে তিন অঙ্কের সংখ্যা হিসেবে ০৩২ আকারে ভাবতে হবে। আর এ ০৩২-এর এককের ঘরের অঙ্ক ০, অর্থাৎ ভাইয়ের সংখ্যা ০। দশকের ঘরের অঙ্ক ৩, অর্থাৎ বোন ৩ জন, আর যেহেতু এককের ঘরের অঙ্ক ২, অতএব দাদা-দাদি-নানা-নানির মধ্যে বেঁচে আছেন ২ জন।
উদাহরণ-১

ধরি আপনার ভাই ৫ জন, বোন ২ জন, আর বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা ৩ জন। তাহলে ওপরের সাত ধাপের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পাই :

০১. ভাইয়ের সংখ্যা ৫-কে ২ দিয়ে গুণ করে পাই ১০।
০২. এ গুণফলের সাথে ৩ যোগ করলে হয় ১৩।
০৩. এই ১৩-কে ৫ দিয়ে গুণ করে পাই ৬৫।
০৪. এই ৬৫-এর সাথে বোনের সংখ্যা ২ যোগ করে পাই ৬৭।
০৫. এই ৬৭-কে ১০ দিয়ে গুণ করে পাই ৬৭০।
০৬. এর সাথে জীবিত দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা ৩ যোগ করে হয় ৬৭৩।
০৭. এই ৬৭৩ থেকে ১৫০ বাদ দিলে থাকে ৫২৩।

সবশেষে পাওয়া ৫২৩ সংখ্যাই বলে দেবে আপনার ভাই, বোন ও জীবিত দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা।

৫২৩ সংখ্যাটির- ৫ আপনার ভাইয়ের সংখ্যা, ২ আপনার বোনের সংখ্যা এবং ৩ আপনার বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা। লক্ষ করুন, আমরা শুরুতে তাই ধরেছিলাম।

উদাহরণ-২

এবার ধরা যাক, আপনার ভাই ১ জন। কোনো বোন নেই, অর্থাৎ বোনের সংখ্যা ০ (শূন্য)। আর এখনও বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা ৪। অর্থাৎ আপনার দাদা-দাদি-নানা-নানিরা সবাই বেঁচে আছেন। তাহলে ওপরে বর্ণিত সাতটি গাণিতিক ধাপ অনুসরণ করে পাই :

০১. ভাইয়ের সংখ্যা ১-কে ২ দিয়ে গুণ করে পাই ২।
০২. এই ২-এর সাথে ৩ যোগ করলে হয় ৫।
০৩. এই ৫-কে ৫ দিয়ে গুণ করলে হয় ২৫।
০৪. এই ২৫-এর সাথে বোনের সংখ্যা ০ যোগ করে পায় ২৫।
০৫. এই ২৫-কে ১০ দিয়ে গুণ করে পাই ২৫০।
০৬. এর সাথে জীবিত দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা ৪ যোগ করে পাই ২৫৪।
০৭. এই ২৫৪ থেকে ১৫০ বিয়োগ করলে থাকে ১০৪।

সবশেষে পাওয়া এই ১০৪ হচ্ছে সেই মজার সংখ্যা, যা আপনাকে জানিয়ে দেবে আপনার ভাই কতজন, বোন কতজন, আর দাদা-দাদি-নানা-নানির মধ্যেইবা কতজন বেঁছে আছেন। এই ১০৪ সংখ্যার শতকের ঘরে অঙ্ক ১ বলে দেয় আপনার ভাইয়ের সংখ্যা ১ জন। দশকের ঘরের অঙ্ক ০ বলে দেয় আপনার কোনো বোন নেই। আর এককের ঘরের সংখ্যা ৪ বলে দেয় আপনার দাদা-দাদি-নানা-নানির মধ্যে ৪ জনই বেঁচে আছেন।

রহস্যটা কোথায়?

এবার জেনে নিই এই পরিবার গণিত বা ফ্যামিলি ম্যাথের রহস্যটা কোথায়।

ধরি, আপনার ভাইয়ের সংখ্যা ক, বোনের সংখ্যা খ এবং বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা গ। তাহলে ওপরে বর্ণিত ধাপ সাতটি অনুসরণ করে পাই :

০১. ভাইয়ের সংখ্যা ক-এর দ্বিগুণ হচ্ছে ২ক।
০২. এর সাথে ৩ যোগ করলে হয় ২ক + ৩।
০৩. এর ৫ গুণ হচ্ছে ৫ (২ক + ৩) = ১০ক +১৫।
০৪. এর সাথে বোনের সংখ্যা গ যোগ করে হয় ১০ক + গ + ১৫।
০৫. এর ১০ গুণ = ১০ (১০ক + গ + ১৫) = ১০০ক + ১০গ + ১৫০।

০৬. এর সাথে জীবিত দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা ঘ যোগ করলে যোগফল হয় ১০০ক + ১০গ + ১ঘ + ১৫০।

০৭. এ থেকে ১৫০ বাদ দিলে থাকে ১০০ক + ১০গ + ১ঘ।
স্পষ্টতই সবশেষে পাওয়া ১০০ক + ১০গ + ১ঘ থেকে বোঝা যায়- শতকের ঘরের অঙ্ক ক হচ্ছে আপনার ভাইয়ের সংখ্যা, দশকের ঘরের অঙ্ক গ হচ্ছে আপনার বোনের সংখ্যা, আর এককের ঘরের অঙ্ক ঘ হচ্ছে আপনার জীবিত দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ওপরে উলিস্নখিত সাতটি গাণিতিক ধাপ অনুসরণ করে সবশেষে পাওয়া সংখ্যার শতকের ঘরের অঙ্ক আপনার ভাইয়ের সংখ্যা, দশকের ঘরের অঙ্ক আপনার বোনের সংখ্যা, আর এককের ঘরের অঙ্ক আপনার বেঁচে থাকা দাদা-দাদি-নানা-নানির সংখ্যা নির্দেশ করে। গণিতদাদু

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস