লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
ই-কমার্সে আধিপত্য করবে এশিয়া : বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে
আমাদের দেশে ই-কমার্স এখন আর কোনো নতুন বিষয় নয়। ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া এবং দেশজুড়ে ই-বাণিজ্য মেলার আয়োজন দেশের মানুষের কাছে অনলাইনে বেচাকেনা পরিচিত করে তুলতে সাহায্য করেছে কমপিউটার জগৎসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। কেনাকাটাও যে কম হচ্ছে, তা নয়। ক্রমবিকাশ অব্যাহত থাকলেও আমাদের দেশ এখনও ই-কমার্সে বেশ পিছিয়ে আছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশের দিকে তাকালেই ব্যাপারটা আরও স্পষ্ট বোঝা যায়। ই-মার্কেটার নামে একটি বাজার গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠানের হিসাব মতে, আগামী বছরগুলোতে ইউরোপ কিংবা আমেরিকা নয়, বিটুসি (B2C) ই-কমার্সের বাজারে আধিপত্য করবে এশিয়ার দেশগুলো। বিটুসি বা বিজনেস টু কনজ্যুমার এক ধরনের ই-কমার্স মডেল, যেখানে ভোক্তা পর্যায়ের ক্রেতা প্রস্ত্ততকারী প্রতিষ্ঠান বা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনলাইনে পণ্য কিনে থাকে। গত বছরের তুলনায় এশিয়া-প্রশামত্ম মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ বছর বিটুসি ই-কমার্স প্রবৃদ্ধির হার ২৩.১ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি মূলত ইন্দোনেশিয়া ও চীন, যাদের ই-কমার্স প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৭১ ও ৬৫ শতাংশ। ই-কমার্সের উৎপত্তি ও বিকাশ যে উত্তর আমেরিকায়, সেখানে এ হার চলতি বছরে ১২.৫ শতাংশ। ই-মার্কেটারের হিসাব-নিকাশ যদি ঠিক থাকে, তবে এই প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে কমবে। পশ্চিম ইউরোপেও কাছাকাছি, ১৪ শতাংশ। তবে এখানে কিছু বিবেচ্য বিষয় আছে। আমেরিকা বা ইউরোপে ই-কমার্স শুধু পরিচিত নয়, বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ। এসব দেশে ই-কমার্স প্রচলন হয়েছে এশিয়া-প্রশামত্ম মহাসাগরীয় অঞ্চলের চেয়ে অনেক আগে। পূর্ণ বিকশিত একটি বাজারের নতুন করে বিকাশের সুযোগ কম থাকে। আর ঠিক সে কারণেই অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় খুব কম পরিমাণে ই-কমার্স বেচাকেনার পরও মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় এ হার আরও বেশি, ৩১ শতাংশ। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে ২০.৯ শতাংশ এবং ল্যাটিন আমেরিকায় এ হার ২২.১ শতাংশ পর্যমত্ম উঠেছে। সম্ভাবনার কথা, পৃথিবীর সব অঞ্চলেই ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধির হার ক্রমবর্ধমান। চলতি বছরে পৃথিবীতে গড়ে প্রায় ১৭ শতাংশ হারে ই-কমার্স বিক্রি বেড়েছে।
চলতি বছরে মোট বিটুসি ই-কমার্স লেনদেনের পরিমাণে উত্তর আমেরিকা প্রথম স্থানে থাকলেও ২০১৪ এবং পরবর্তী বছরগুলোতে সবাইকে ছাড়িয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল উঠে আসবে প্রথম স্থানে। এ অর্জনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে চীন ও জাপান। চলতি বছর চীন ও জাপানের মোট বিটুসি ই-কমার্স লেনদেনের পরিমাণ যথাক্রমে ১৮ হাজার ১০০ কোটি ও ১১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার, যা আগামী বছরে যথাক্রমে ২৭ হাজার ৪০০ কোটি ও ১২ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে বলে ধারণা করছে ই-মার্কেটার। প্রবৃদ্ধির হারে শীর্ষে থাকা ইন্দোনেশিয়া কিন্তু মোট লেনদেনের পরিমাণে বেশ পিছিয়ে আছে। চলতি বছরে এরা ১৭৯ কোটি ডলারের ই-কমার্স লেনদেন করে, যা আগামী বছরে ২৬ কোটি ডলারে গিয়ে ঠেকবে। ই-কমার্সে শক্তিশালী এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত অন্যতম। একক দেশ হিসেবে অবশ্য এখনও বেশ শক্ত অবস্থানে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যা আগামী বছরগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। চলতি বছরে তাদের মোট বিটুসি ই-কমার্স লেনদেনের পরিমাণ ৩৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, যা ২০১৪ সালে ৪৪ হাজার ২০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে।
বর্তমান সময়টাকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য ই-কমার্সের স্বর্ণযুগ বলা যেতে পারে। কারণ শুধু মোট লেনদেন কিংবা প্রবৃদ্ধি নয়, ই- কমার্সের সাথে যুক্ত মানুষের সংখ্যাও এ অঞ্চলে দ্রুত বাড়ছে। চলতি বছরে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০৩ কোটি নতুন মানুষ ই-কমার্সের সাথে যুক্ত হবে, যার ৪৪.৪ শতাংশ এশিয়া-প্রশামত্ম মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে। শুধু চীনে ১৪ কিংবা তার বেশি বয়সী মানুষ যারা বছরে কমপক্ষে একবার ই-কমার্সে লেনদেন করেছে তাদের সংখ্যা প্রায় ২৭ কোটিতে উন্নীত হবে। এখানেই শেষ নয়, উন্নতির আরও সুযোগ আছে এ অঞ্চলে, যার প্রতিফলন পরবর্তী বছরগুলোতে দেখা যাবে।
ই-মার্কেটারের হিসাব মতে, ই-কমার্স সংক্রান্ত সব সূচকে রয়েছে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আধিপত্য। এ আধিপত্যের মূল কারণ সাম্প্রতিকের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। এরপরও বিপুলসংখ্যক লোক এখনও সেই অন্ধকারে পড়ে আছে যে অন্ধকারে এরা আগে ছিল। জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়ক পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ ২০১২-এর হিসাব মতে, ২০১১ সাল পর্যমত্ম প্রায় ৪২১ কোটি ৭৭ লাখ মানুষের বাস এই অঞ্চলে, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৬০.৪৮ শতাংশ। ইউরোপ কিংবা উত্তর আমেরিকার সাথে তুলনা করলে এ বিপুল জনসংখ্যার খুব কমই ইন্টারনেটের সাথে পরিচিত, ই-কমার্সের কথা বাদই দিলাম। এর অর্থ উন্নতির এখনও এত বেশি সুযোগ আছে যে, উন্নয়ন ঘটলে শুধু প্রযুক্তিগত দিক থেকে নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক এগিয়ে যাবে এশিয়ার দেশগুলো। এগিয়ে অবশ্য যাচ্ছেও। কিন্তু চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোই বারবার আলোচনায় উঠে আসছে। এ অঞ্চলের অন্যান্য কিছু দেশের মতো এখনও বাংলাদেশ ই-কমার্সে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ঘটাতে পারছে না। তবে এটাকে ব্যর্থতা না ভেবে উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত। ই-কমার্সে উন্নয়নের খাতগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব সরকারের। আর সাধারণ ব্যবহারকারীর উচিত ই-কমার্স দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করা। যেসব কারণে বাংলাদেশ ই-কমার্সে এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো সাফল্য পায়নি, তার কয়েকটি কারণ এবং সম্ভাব্য সমাধান এখানে দেয়া হলো।
প্রতিদিন বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার কিছু না কিছু লোকের কমপিউটারে হাতেখড়ি হচ্ছে। এরা নতুন কিছু শিখছে, অজানাকে জানছে। এটা আশার কথা হলেও ১৬ কোটি মানুষের তুলনায় এর সংখ্যা খুবই নগণ্য। আর যারা কমপিউটার ব্যবহার জানেন, তাদের বেশিরভাগই মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে টাইপ করা কিংবা মিডিয়া প্লেয়ারে গান শোনা পর্যমত্ম। কমপিউটারের শক্তির পূর্ণ ব্যবহার তো দূরের কথা, এ বিপুল সম্ভাবনার যন্ত্রটির উদ্ভাবনী দিক সম্পর্কে এরা অজ্ঞই থেকে যাচ্ছে। এজন্য প্রয়োজন সচেতনতা বাড়ানো। বাংলাদেশের বিভিন্ন কমপিউটার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি সরকার অনুমোদিত এবং নিয়মিত হালনাগাদ হতে হবে। বাংলাদেশের কমপিউটার ব্যবহারকারী জনসংখ্যার স্বল্পসংখ্যক লোকের হাতে পৌঁছেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট সংযোগ সহজলভ্য না হওয়ায় জনমনে অনীহা দেখা যায়। দেশের প্রতিটি প্রান্তে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের দাম কমানো এ সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি দেশের তরম্নণ প্রজন্ম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ইন্টারনেটকে এরা একে অপরের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে জেনে আসছে। অনলাইনে পণ্য কেনা যায় এমনটা এখন অনেকে জানলেও স্পষ্ট ধারণা নেই। অনেকের মনে আছে প্রতারণার ভয়। তাই ই-কমার্স নিয়ে থাকতে হবে সুনির্দিষ্ট আইন এবং সেই আইনের সুনির্দিষ্ট প্রয়োগ। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে হতে হবে তৎপর। ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলো সহজে ব্যবহারযোগ্য হতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুন্দর নকশা, অধিকতর নিরাপত্তা, দ্রুত লোডিং ও ইউজারফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস থাকতে হবে। নতুন ই-কমার্স ব্যবসায় স্থাপনে ইচ্ছুক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কর সুবিধা ও প্রয়োজনীয় মূলধন পেতে সাহায্য করতে হবে। ই-কমার্স ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ অপূর্ণ থেকে যাবে। এছাড়া ভবিষ্যতে বেশিরভাগ কেনাকাটা হবে অনলাইনে। এখনই উদ্যোগ না নিলে বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে পড়বে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান ই-কমার্স পণ্যের মধ্যে আছে অনলাইন টিকেট ও হোটেল বুকিং, কিছু কাপড় ও খাবার পণ্য এবং ওয়েবসাইট সংক্রামত্ম কিছু ডিজিটাল পণ্য। যেকোনো ধরনের পণ্যই এ তালিকায় নিয়ে আসতে হবে। ঢাকার বাইরে পণ্য সরবরাহে এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তা কাটিয়ে উঠে দেশের সব মানুষকে ই-কমার্সের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এজন্য প্রাথমিকভাবে পণ্য সরবরাহের একটি চ্যানেল তৈরি করা উচিত, যেখানে সব পণ্য রাজধানী থেকে সরবরাহ না করে বিভাগীয় পর্যায়ে আউটপোস্ট রাখতে হবে। কোনো একক ই-কমার্স কোম্পানির পক্ষে এ চ্যানেল তৈরি করা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই এ উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে, যা সব ই-কমার্স কোম্পানি প্রয়োজনীয় ফির বিনিময়ে ব্যবহার করতে পারবে। অনলাইনে অর্থ পরিশোধের মাধ্যম বা পেমেন্ট গেটওয়ে নিয়ে বাংলাদেশে বেশ সমস্যা ছিল। ধীরে ধীরে তা অবশ্য কাটিয়ে উঠছে। দেশীয় কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে গেলেও বিদেশী পেমেন্ট গেটওয়ে এখনও বাংলাদেশের নাগালের বাইরে। ফলে বিদেশী ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে আমরা কিছুই কিনতে পারছি না। এই তো সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সর্বোচ্চ ১ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত কেনাকাটার সুযোগ করে দিয়েছে। এর আগে তাও ছিল না। তারপরও এই ক্রেডিট কার্ড হাতে পাওয়ার জন্য রয়েছে নানা ঝামেলা। সাধারণ মানুষের হাতে পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই। বাংলাদেশ পৃথিবীর খুব কম দেশের একটি, যেখানে এখনও পেপাল চালু করা সম্ভব হয়নি। এ কাজগুলো করতে হবে সরকারকে। সাধারণ মানুষের জন্য ই-কমার্স সহায়ক একটি পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে, যে পরিবেশে সাধারণ মানুষ নিশ্চিমেত্ম-নির্বিঘ্নে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারে। বাংলাদেশে ই-কমার্স সংক্রামত্ম নিয়মিত প্রকাশনা থাকতে হবে, যেখানে ই-কমার্সে বিভিন্ন অর্জনের গল্পের পাশাপাশি পরামর্শ থাকবে। এটা মানুষকে ই-কমার্সে আগ্রহী করে তুলতে সাহায্য করবে। সেই সাথে ই-কমার্স সংক্রান্ত নিয়মিত নির্ভুল পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে হবে। এ পরিসংখ্যান বাংলাদেশের ই-কমার্সের বর্তমান পরিস্থিতি অভ্যমত্মরীণ ও বহির্বিশ্বে তুলে ধরবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ খাতগুলোতে এখনও উন্নতির সুযোগ আছে। তবে আমাদের অর্জনের ঝুলিও কিন্তু কম ভারি নয়। আপনারা হয়তো জেনে অবাক হবেন, গত বছর বাংলাদেশে ই-কমার্স লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫ কোটি টাকা, যা চলতি বছরে বেড়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ই-কমার্সে উন্নত বা উন্নয়নশীল আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে তুলনা করলে হয়তো এ পরিমাণ খুবই নগণ্য মনে হতে পারে। তবে আমাদের বাজারের আকার বিবেচনায় আনলে প্রবৃদ্ধির হার আশার হাতছানি দিচ্ছে। ই-কমার্সে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামের পর সুদূর লন্ডনে ই-কমার্স মেলার আয়োজন করেছে কমপিউটার জগৎ। দেশের বিভিন্ন প্রামেত্ম এ মেলা ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনাও আছে তাদের। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। এ সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। এ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ই-কমার্সের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় এখন অনেক ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেয়া শুরু করেছে। বিকাশ ও বাংলাদেশ পোস্ট অফিস দেশের প্রতিটি প্রামেত্ম অর্থ লেনদেন এবং আপামর জনসাধারণকে ব্যাংকিং সুবিধা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সময়টা নতুন নতুন ই-কমার্স ব্যবসায় চালু করার সুবর্ণ সময়। একদিকে যেমন চাহিদা আছে, অপরদিকে জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে বিপুলসংখ্যক নতুন ই-কমার্স ব্যবহারকারী তৈরি হবে। সরকারি চেষ্টার পাশাপাশি ই-কমার্স কোম্পানিগুলোরও উচিত অনলাইনে তাদের পণ্য কেনাকাটা করতে প্রচারণা চালানো। আরেকটি আশার কথা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও বিশেষ করে তরুণেরা ই-কমার্স সেবা চালু করছে। সেখানে আপনার সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বা শখের বস্ত্তটি কিনে নিতে পারবেন।
অনেক সাফল্যের গল্প থাকলেও বাংলাদেশে ই-কমার্স একটি নতুন ধারণা অথবা বলা যায় নতুন একটি বিপ্লব। সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেয়া ছাড়া যে বিপ্লব কোনোমতেই এগিয়ে যাবে না। অনুকূল পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব সরকারের। সেই পরিবেশকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নেয়া সাধারণ মানুষের কাজ। চীন, জাপান বা ইন্দোনেশিয়ার মতো না হোক, ই-কমার্সে সফল দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। এশিয়ার একটি অংশ হিসেবে এশিয়ার সাথেই ই-কমার্সে এগিয়ে যেতে হবে আমাদেরকে
ফিডব্যাক : m_hasan@ovi.com