১৯৮৭ সালে চিং ডব্লিউ ট্যাং এবং স্টিভেন ভ্যান স্লাইকে ইস্টম্যান কোডাকে প্রথম ডায়োড ডিভাইস পেশ করেন। আলাদা হোল ট্র্যান্সপোর্টিং এবং ইলেকট্রন ট্র্যান্সপোর্টিং পর্দার পুনঃসংযুক্ত করার মাধ্যমে এ ডিভাইস অসাধারণ দুটো পর্দার গঠন ব্যবহার করে। তখন অর্গানিক পর্দার মাঝখানে আলোর নিক্ষেপণ ঘটে। এ সমস্যার সমাধানের তাগিদে অপারেটিং ভোল্টেজ লঘুকরণ এবং কর্মদক্ষতার উন্নয়ন ও অগ্রবর্তী নেতৃত্বের ফলস্বরূপ বর্তমানের ওএলইডির (অর্গানিক লাইট-ইমিটিং ডায়োড) গবেষণা ও ডিভাইস উৎপাদনের অব্দযুগ।
এলসিডি ও ওএলইডির পার্থক্য
* ওএলইডির তুলনায় এলসিডি প্রশস্থ।
* এলসিডির স্ক্রিন রিফ্রেশ রেট ওএলইডির চেয়ে কেম।
* ওএলইডির ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল এলসিডির চেয়ে ভালো। এলসিডির ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল ১৬৫ ডিগ্রির ওপরে।
* এলসিডির আয়ু ৬০ হাজার ঘণ্টা এবং ওএলইডির লাল ও সবুজের ৪৬ হাজার থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার ঘণ্টা, নীল অর্গানিক্সের প্রায় ১৪ হাজার ঘণ্টা।
* ওএলইডির বস্ন্যাক লেভেল সম্পূর্ণ কালো, যেখানে এলসিডির ধূসর থেকে গাঢ় ধূসর।
* এলসিডি ওএলইডির তুলনায় ভারি।
* এলসিডি কমপিউটার মনিটর, ল্যাপটপ এবং টিভি ও মুঠোফোনের স্ক্রিনে ব্যবহার হয়। ওএলইডি টিভি ও মুঠোফোনের স্ক্রিনে এবং কমপিউটার মনিটর ও পিডিএ’র ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়।
ওএলইডির ব্যবহার
* মোবাইল ফোন ও হালকা ডিজিটাল মিডিয়া প্লেয়ার, কার রেডিও এবং ডিজিটাল ক্যামেরার মতো অন্যান্য কমার্শিয়াল অ্যাপ্লিকেশন প্রদর্শনীর কাজে ওএলইডি টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়।
* এইচটিসি, এলজি এবং সনি এরিকসনের কালার মুঠোফোনগুলোর মতো মোটোরোলা এবং স্যামসাংয়ের কালার মুঠোফোনগুলোতে ওএলইডি টেকনোলজি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়।
* নকিয়ার পণ্য এন৮৫ এবং এন৮৬-এ ওএলইডি ব্যবহার হয়েছে।
* জেনভি, ইরিভার ক্লাইক্স, জিউন এইচডি ও সনি ওয়াকম্যান এক্স সিরিজের ডিজিটাল মিডিয়া প্লেয়ারগুলোতে ওএলইডি খুঁজে পাওয়া যায়।
* এইচটিসির নিজস্ব লিজ্যান্ড ফোনগুলোর মতো গুগল এবং এইচটিসি নেক্সাস ওয়ানের স্মার্টফোনগুলোতেও (অ্যামোলেড) অ্যাকটিভ ম্যাট্রিক্স অর্গানিক লাইট-ইমিটিং ডায়োড স্ক্রিন ব্যবহার করা হয়েছে।
* ২০০৯ সালে শিয়ারওয়াটার রিসার্চ প্রথম কালার ওএলইডি ডাইভিং কমপিউটার, প্রিডেটরের সূচনা ঘটায়, যার ব্যাটারি ছিল পরিবর্তনশীল।
* লিউমিব্লেড ব্র্যান্ডের অধীনে ফিলিপস লাইটিং ওএলইডি লাইটিং তৈরি করেছে।
* ব্ল্যাকবেরির পরবর্তী স্মার্টফোন ব্ল্যাকবেরি ১০ ডিভাইসে ওএলইডি ডিসপ্লে ব্যবহারের কথাও জানা যায়।
ওএলইডির জগতে স্যামসাংয়ের স্থান
* ২০০৪ সালে বিশ্বের চল্লিশ শতাংশ ওএলইডি ডিসপ্লে তৈরি করেছে স্যামসাং।
* ২০০৬ সালে বিশ্বের ওএলইডি বাজারের মোট ৪৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ১০ কোটি ২ লাখ ডলারই ছিল স্যামসাংয়ের।
* ২০০৫ সালে ২১ ইঞ্চি (৫৩ সেমি), ২০০৮ সালে ৩১ ইঞ্চি (৭৮ সেমি) এবং ২০০৮ সালের অক্টোবরে ১৯২০ বাই ১০৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি ৪০ ইঞ্চি ও এলইডি টেলিভিশন বাজারে আনে স্যামসাং।
* ২০১০ সালের জুনে স্যামসাং ওয়েভ এস৮৫০০ ও স্যামসাং আই৯০০০ গ্যালাক্সি এসে ব্যবহার হয় সুপার এএমওএলইডি। এ বছরই বিশ্বের এএমওএলইডি বাজারে স্যামসাংয়ের শেয়ার ছিল ৯৮ শতাংশ।
* বিশ্বের ওএলইডি বাজারে ব্যাপক সাড়া পাওয়া এ কোম্পানিটি ২০১২ সালে ৫৫ ইঞ্চি ওএলইডি টেলিভিশনের সূচনা করে। যার ফলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট আমেরিকায় স্যামসাংয়ের ৫৫ ইঞ্চি (৫৪.৬ ইঞ্চি) কেএন৫৫এস৯সি মডেলের ওএলইডি টেলিভিশন যাত্রা শুরম্ন করে। আকর্ষণীয় ও পাতলা পর্দার এ টিভিতে একসাথে দুটো অনুষ্ঠান উপভোগ করা যাবে।
ওএলইডির উপকারিতা
* ওএলইডি এলসিডি টেকনোলজিতে তৈরি একটি ফ্ল্যাট প্যানেল ডিসপ্লে।
* হালকা ও নমনীয় প্লাস্টিক উৎসেও ওএলইডি প্রদর্শন সম্ভব।
* ওএলইডি পিক্সেল সঠিক রং উপস্থাপন করে কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই। এমনকি ৯০ ডিগ্রি কোণ থেকে স্বাভাবিক অবস্থা, যেখান থেকেই দেখা হোক না কেন, এর রংয়ের কোনো পরিবর্তন হয় না।
* স্ট্যান্ডার্ড এলসিডি স্ক্রিনের তুলনায় ওএলইডি দ্রুত সময়ে উত্তর দিতে পারে।
* ওএলইডির কন্ট্রাস্ট রেটিও ১০০০০০০:১ স্ট্যাটিকের ওপরে।
* ওএলইডিতে সূর্যের রশ্মি পড়লেও ছবি দেখতে কোনো অসুবিধা হয় না।
ওএলইডির অপকারিতা
* ওএলইডির সবচেয়ে বড় টেকনিক্যাল সমস্যা হলো এর অর্গানিক ম্যাটেরিয়ালের লিমিটেড লাইফটাইম।
* পানি লাগলে অর্গানিক ম্যাটেরিয়ালের ক্ষতি হতে পারে।
* বহুমূল্যের শিল্পোৎপাদন।
* বিক্রয়মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ইত্যাদি