• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ৩য় মত
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ
মোট লেখা:১০৪১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
মতামত
তথ্যসূত্র:
৩য় মত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
৩য় মত
পঞ্চাশ বছরের তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

ইতিহাস শুধু ইতিহাসই নয়। ইতিহাস আগামী দিনে সামনের দিকে এগিয়ে চলার আলোকবর্তিকা বা দিশারী। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে অতীতের ভুল-ভ্রান্তিগুলো দূর করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে চলি। ইতিহাসকে কখনই অস্বীকার করা যায় না এবং অস্বীকার করার চেষ্টা করে কখনও কেউ সফল হননি। সাময়িকভাবে কেউ কেউ হয়তো কখনও কখনও প্রকৃত ইতিহাসকে অস্বীকার করেন কিংবা সুকৌশলে এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন, কিন্তু কখনই সফলকাম হতে পারেন না। সুতরাং প্রকৃত ইতিহাসকে যথাযথভাবে তুলে ধরা উচিত। এ ক্ষেত্রে কোনো ভুল-ভ্রান্তি তা ইচ্ছাকৃত হোক বা অনিচ্ছাকৃত হোক, ক্ষমার অযোগ্য। আবার এ কথাও সত্য যে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা সত্যিকার অর্থে এক কঠিন কাজ। কমপিউটার জগৎ পত্রিকায় ইতিহাস নিয়ে আলোকপাত করছি এ কারণে যে, গত মাসে অর্থাৎ মে ২০১৪ সালে কমপিউটার জগৎ-এ প্রকাশিত লেখার প্রসঙ্গে আমার ব্যক্তিগত অভিমত তুলে ধরতে। এ কথা সত্য যে, বাংলাদেশের মতো একটি অনগ্রসর কৃষিপ্রধান দেশের কমপিউটার প্রযুক্তি আসার পঞ্চাশ বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ই নয়, বরং বলা যায় গর্বের বিষয়ও। যদিও এ ক্ষেত্রে তেমন সফলতা দেখাতে পারেনি বহির্বিশ্বে।

কমপিউটার জগৎ-এ প্রকাশিত ‘পঞ্চাশ বছরের তথ্যপ্রযুক্তি’ লেখায় মোস্তাফা জববারের বিশেস্নষণে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির তিনটি অধ্যায় ফুটে উঠেছে চমৎকারভাবে। তার বিশেস্নষণে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের যে ইতিহাসটি তিনি তুলে ধরেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার যা আমাদের জানাই ছিল। আমি মোস্তাফা জববারের বিশ্লেষণের ’৮৭-৯৬ সময়ের যে ইতিহাসটি ফুটে উঠেছে সে সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। তা আমাদের অনেকেরই অজানা ছিল। যেমন ১৯৮৭ সালে কমপিউটার সমিতির জন্ম নেয়া, যা ১৯৯২ সালে সরকারের কাছে নিবন্ধিত হয়, ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি ঢাকায় আয়োজন করে কমপিউটার মেলা, তখনকার বাংলাদেশ সরকারের চরম ভুলের কারণে বঙ্গোপসাগরের পাশ দিয়ে যাওয়া সি-মিউ-উই-৩ নামের সাবমেরিন লাইনের সাথে প্রায় বিনা মূল্যে সংযুক্ত হতে না পারা ইত্যাদি অনেক বিষয়।

’৯৬-০৮ সময়কালকে তিনি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির সুবর্ণ যুগের ঊষালগ্ন হিসেবে আখ্যায়িত করেন যথার্থই। তার মতে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের সুবর্ণ সময়টির সূচনা হয় ১৯৯৬ সালের ২৩ জুনের পর। কেননা, এ সময় বাংলাদেশ প্রথম অনলাইন ইন্টারনেটের যুগে প্রবেশ করে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে মোবাইলের মনোপলি ভাঙ্গে। ১৯৯৬ সালেই দাবি ওঠে শুল্ক ও ভ্যাটমুক্ত কমপিউটারের। ১৯৯৮ সালে সরকার কমপিউটারের ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক ও ভ্যাট তুলে নেয়। ১৯৯৭ সালে জন্ম নেয় বেসিস।

সত্যি কথা হলো, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমবিকাশের ইতিহাস সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মহল থেকে শুরু করে সবারই কাছে প্রায় অজানাই ছিল, যা মোস্তাফা জববারের লেখায় ফুটে উঠেছে। এ তথ্যগুলোর জন্য তাকে ধন্যবাদ। তারপরও আমি বলব, এ লেখায় গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তা হলো বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে মিডিয়ার ভূমিকা। আমি মনে করি, মিডিয়ার অংশটুকু এ খেলায় সম্পৃক্ত করা হলে। লেখাটি সংক্ষিপ্ত পরিসরেও পূর্ণতা পেত। কেননা আমরা সবাই জানি, নববই দশকে অর্থাৎ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির দ্বিতীয় অধ্যায়ে যখন ডেস্কটপ প্রকাশনা ও কমপিউটারে বাংলাভাষার বিপ্লবের যুগে সূচনা হয়, তখন সরকারি নীতিনির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণ মনে করত কমপিউটারের ব্যাপক বিস্তার ঘটলে দেশে বেকারত্ব বেড়ে যাবে। দেশের তরুণ প্রজন্ম বেকার হয়ে পড়বে। এমন অবস্থায় কমপিউটার জগৎ-এর আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘জনগণের হাতে কমপিউটার চাই’ স্লোগান নিয়ে। সে সময় কমপিউটার জগৎ অনেকটা একক প্রচেষ্টায় দেশে কমপিউটারের ব্যাপক ব্যবহার ও বিস্তারের আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনের শুরুতে তরুণ প্রজন্মকে প্রোগ্রামিংয়ে উদ্ভুদ্ধ করতে আয়োজন করে দেশের প্রথম প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। এ সময় কমপিউটার জগৎ কমপিউটারের ওপর আরোপিত শুল্ক ও ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারে জোরালো দাবি তুলে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করতে সফল হয়। কমপিউটার জগৎ সর্বপ্রথম ফাইবার অপটিক ক্যাবল সংযোগের গুরুত্ব অনুধাবন করে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে এক প্রেস কনফারেন্সও করে। ইন্টারনেটের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে কমপিউটার জগৎ নিজ উদ্যোগে ইন্টারনেট সপ্তাহ পালন করে। ’৯৭-৯৮ সালের পর আরও কিছু আইসিটি বিষয়ক ম্যাগাজিন প্রকাশ হতে শুরু করে। এসব পত্রিকাও বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখে। বলা যেতে পারে, নববই দশকে আইসিটিবিষয়ক যে পত্রিকাগুলো প্রকাশিত হতে শুরু করে, সেগুলোর ভূমিকাও কম নয় বাংলাদেশের কমপিউটারায়নে।

সুতরাং আমি মনে করি, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমবিকাশের ইতিহাসে আইসিটিসংশ্লিষ্ট পত্রিকাগুলোর অবদান খাটো করে দেখা ঠিক হবে না। মূলত এই পত্রিকাগুলো ছিল বলেই বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার কিছুটা হলেও ত্বরান্বিত হয়।

বলরাম বিশ্বাস
বর্ধনবাড়ি, মিরপুর, ঢাকা

--------------------------------------------------------------------------------------

দেশের উদ্ভাবিত ডিভাইস/প্রজেক্টে উৎসাহ দেয়া হোক

সম্প্রতি বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাসহ কমপিউটার জগৎ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত ব্যতিক্রমী এক ডিভাইসের ওপর রিপোর্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত ব্যতিক্রমী এ ডিভাইসটি অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন থেকে পরিচালিত খ্যাতনামা ইনফরমেশন সোসাইটি ইনোভেশন ফান্ডের (আইএসআইএফ) নির্বাচিত প্রজেক্টের ২০৯টি উদ্ভাবনকে পেছনে ফেলে ১১তম হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় উদ্ভাবন হিসেবেও চিহ্নিত হয়েছে ডিভাইসটি। দুর্ঘটনা রোধে এই ডিভাইসটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

ড্রাইভার স্ট্র্যাকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামের এই ডিভাইসটি গন্ধ ও শারীরিক অবস্থা যাচাই করে চালকের মাতাল অবস্থা ধরতে পারবে। চালকের অসুস্থতাও পরীক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে এটির। চালক যদি অমনোযোগী হন, সড়কপথের বাইরে বিলবোর্ড বা অন্য কোথাও অফিস থাকে, তাহলেও ডিভাইসটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সময় পরিমাপ করে ঝুঁকি চিহ্নিত করে সতর্কবার্তা দিতে থাকবে। বাংলাদেশের ছাত্রদের উদ্ভাবিত এই ডিভাইসটি আইএসআইএফের নির্বাচিত প্রজেক্টে ১১তম স্থান দখল করায় আমরা গর্ববোধ করি।

লক্ষণীয়, বাংলাদেশী তরুণদের এমন অনেক উদ্ভাবন আছে, যেগুলো যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় সফলতার মুখ দেখতে পারেনি। অথচ সারা বিশ্বে এ ধরনের উদ্ভাবনকে আরো উৎসাহিত ও পরিপূর্ণতা দেয়ার লক্ষ্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া বাকি সবগুলো অন্ধকার তিমিরে হারিয়ে যায় যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায়।
আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে চাই অন্তত এই প্রজেক্ট সফলতার মুখ দেখবে, তবে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে। অবশ্য ইতোমধ্যে এই ডিভাইসটি সোহাগ পরিবহন লিমিটেড তাদের গাড়িতে ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে। আশা করি অন্যান্য পরিবহন মালিকেরা এই ডিভাইসটি ব্যবহার করবেন। আমরা আশা করব বাংলাদেশ সরকার এই ডিভাইসটি প্রতিটি গাড়িতে ব্যবহারে বাধ্য করবে। এতে এক দিকে যেমন দুর্ঘটনা কম হবে তেমনই এ প্রজেক্টটি সফলতার মুখ দেখবে, যা পরিবর্তি পর্যায়ে আরো অনেক প্রজেক্টের প্রেরণা ও উৎসাহ হয়ে উঠবে।

রিয়াদ
মিরপুর, ঢাকা
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৪ - জুন সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস