লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - সেপ্টেম্বর
পিসির ঝুটঝামেলা
সমস্যা : উইন্ডোজ আপডেট করার পর থেকে আমার পিসি স্লো চলছে। আমি যতটুকু জানি, উইন্ডোজ আপডেট করাটা সিস্টেমের জন্য উপকারী। তাহলে আপডেট করার পর থেকে সমস্যা কেনো করছে। উল্লেখ্য, আমি উইন্ডোজ ৮ প্রফেশনাল ৬৪ বিট অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করি। আমি পিসির এ আপডেটজনিত সমস্যা কীভাবে দূর করতে পারি?
-সাবিবর আহমেদ, যশোর
সমাধান : উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে অটোমেটিক আপডেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। এই আপডেটিং ফিচারের মাধ্যমে উইন্ডোজ নিজে ইন্টারনেট থেকে আপনার অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন ও হার্ডওয়্যারের জন্য প্রয়োজনীয় আপডেট ডাউনলোড করে থাকে। পাশাপাশি উইন্ডোজের ডিফল্ট সিকিউরিটি সিস্টেম উইন্ডোজ ডিফেন্ডারও আপডেট হয়। তবে অনেক সময় আপডেট আপনার পিসির স্ট্যাবিলিটি নষ্ট করে দিতে পারে। যেমন- আপডেট করে পিসি রিস্টার্ট করার পর এরর মেসেজ, পিসি স্লো হয়ে যাওয়া, হ্যাং করা ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে আপডেটটি হয়েছে তা ডিলিট করে ফেলাই হচ্ছে তাৎক্ষণিক সমাধান। অটোমেটিক আপডেটিং ফিচার অফ করে দিতে হবে, যদি তা বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে।
নতুন ইনস্টল হওয়া আপডেটটি ডিলিট করার জন্য প্রথমে কন্ট্রোল প্যানেল থেকে প্রোগ্রামস অ্যান্ড ফিচারসে যেতে হবে। বাম পাশের টাস্কস মেনু থেকে ভিউ ইনস্টলড আপডেটসে ক্লিক করলে আরেকটি নতুন উইন্ডো আসবে। এ উইন্ডোতে যেসব আপডেট ডাউনলোড করা হয়েছে, তার লিস্ট দেখতে পাবেন। ডেট অনুযায়ী আপডেট লিস্ট সাজিয়ে নিন এবং সেখান থেকে নতুন ইনস্টল হওয়া আপডেটগুলো সিলেক্ট করে তা রিমুভ করে দিন। কন্ট্রোল প্যানেল থেকে উইন্ডোজ আপডেটষভিউ আপডেট হিস্ট্রি থেকেও আপডেট লিস্ট পাওয়া যাবে। নতুন ইনস্টল হওয়া আপডেটগুলো মুছে ফেলে দিলেই পিসি আগের মতো হয়ে যাবে।
সমস্যা : আমার পিসিতে উইন্ডোজ ৭ আল্টিমেট ৬৪ বিট ও উইন্ডোজ ৮ প্রফেশনাল ৬৪ অপারেটিং সিস্টেম একসাথে ইনস্টল করা আছে আলাদা দুটি ড্রাইভে। উইন্ডোজ সিলেকশন মেনুতে উইন্ডোজ সেভেন প্রথমে রয়েছে। আমি উইন্ডোজ ৮ বেশি ব্যবহার করি। উইন্ডোজ ৭-এ তেমন একটা ঢোকা হয় না। তাই উইন্ডোজ ৮-কে ডিফল্ট উইন্ডোজ বানাতে চাই, যাতে পিসি অন করলে উইন্ডোজ সিলেকশন মেনু না এসে সরাসরি উইন্ডোজ ৮-এ লগইন করে। এটা কি করে করা যায় তা জানাবেন?
-মুকুল, মোহাম্মদপুর
সমাধান : ডুয়াল বুটিং যারা করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে এটি খুব সাধারণ এক সমস্যা। দুটি অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে যেকোনো একটি বেশি ব্যবহার হলে আরেকটি অবহেলায় পড়ে থাকে। অর্থাৎ তেমন একটা ব্যবহার করা হয় না। অপারেটিং সিস্টেম চয়েস মেনু এসে পিসি চালু করার গতিতে কিছুটা বাধা দেয়। এটি অনেকের কাছে বিরক্তির কারণ। এ সমস্যা দূর করার জন্য যে অপারেটিং সিস্টেমটি বেশি ব্যবহার করা হয়, সিটিকে ডিফল্ট অপারেটিং সিস্টেম বানিয়ে নিতে হয়।
পছন্দের অপারেটিং সিস্টেমটিকে ডিফল্ট বানানোর জন্য প্রথমে মাই কমপিউটারে রাইট ক্লিক করে প্রোপার্টিজ সিলেক্ট করলে নতুন একটি উইন্ডো আসবে, যার বাম পাশের প্যানেল থেকে অ্যাডভান্সড সিস্টেম সেটিংসে ক্লিক করলে সিস্টেম প্রোপার্টিজ নামের পপআপ উইন্ডো আসবে। এখান থেকে অ্যাডভান্সড ট্যাবে ক্লিক করে স্টার্টআপ অ্যান্ড রিকোভারি লেখা অপশনের পাশের বাটন সেটিংসে ক্লিক করুন। এখান থেকে আপনার পছন্দের অপারেটিং সিস্টেমটিকে ডিফল্ট অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে সিলেক্ট করুন ড্রপডাউন মেনু থেকে। প্রয়োজনে নিচের টাইম টু ডিসপ্লে লিস্ট অফ অপারেটিং সিস্টেমস সময় ৩০ সেকেন্ড থেকে কমিয়ে ১ বা ২ সেকেন্ড করে দিতে পারেন। এতে আপনি বুটিং সিস্টেম চয়েস করার সময় অন্য অপারেটিং সিস্টেমে যেতে চাইলে এই পরিমাণ সময় পাবেন। চাইলে এটিকে বাড়িয়ে ৫/১০ সেকেন্ডও করতে পারেন। টিক চিহ্ন উঠিয়ে দিলে বা সময়ের মান ০ করে দিলে অপারেটিং সিস্টেম চয়েস মেনু দেখাবে না। তাই পিসি তাড়াতাড়ি স্টার্ট হয়ে ডিফল্ট উইন্ডোজ লোড করে নেবে।
সমস্যা : আমার পিসি স্লো হয়ে গেছে এবং মাঝে মাঝে হ্যাং করে। এটা কি পিসির কোনো সমস্যা নাকি ভাইরাসের সমস্যা। আমার পিসিতে কোনো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নেই। কোন অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার ভালো হবে তা জানাবেন। বিনামূল্যে পাওয়া যায় এমন ভালো কোনো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার আছে কি?
-মাহবুব, চট্টগ্রাম
সমাধান : কমপিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে পিসি মাঝে মাঝে হ্যাং করতে পারে, কোনো কারণ ছাড়া রিস্টার্ট হতে পারে, অদ্ভুত সব এরর মেসেজ আসতে পারে, পিসি স্টার্ট হতে অনেক সময় লাগতে পারে অথবা পিসির অন্যান্য কার্যক্রম বেশ ধীরগতির হয়ে যেতে পারে। হার্ডডিস্কে সমস্যা হলে যেসব এরর মেসেজ দেখাবে, তাতে বোঝা যাবে ডিস্কে সমস্যা হচ্ছে। অনেক বেশি সফটওয়্যার ইনস্টল করলে এবং সি ড্রাইভে অথবা যে ড্রাইভে অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে, তাতে বেশি জায়গা না থাকলে পিসি স্লো হয়ে যেতে পারে। হার্ডডিস্ক নিয়মিত ডিফ্র্যাগমেন্ট ও স্ক্যানডিস্ক না করলে পিসির পারফরম্যান্স ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আপনি কোন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন, তা উল্লেখ করেননি। আপনি যদি এক্সপি বা ভিসতা ব্যবহার করেন, তবে আলাদাভাবে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করে নেয়াটা ভালো। ইন্টারনেট ব্যবহার করলে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের পরিবর্তে ইন্টারনেট সিকিউরিটি ব্যবহার করতে হবে। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার শুধু হার্ডডিস্ক ও পেনড্রাইভ থেকে আসা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেবে। ইন্টারনেট সিকিউরিটি নেট ব্রাউজিং, মেইলিং ও অন্য সব ধরনের কাজ করার সময় ভাইরাস থেকে পিসিকে সুরক্ষিত রাখবে।
বাজারে বেশ কিছু ভালোমানের অ্যান্টিভাইরাস/ইন্টারনেট সিকিউরিটি সফটওয়্যার রয়েছে- যার মধ্যে নরটন, বিটডিফেন্ডার, ক্যাসপারস্কি অন্যতম। এগুলোর মধ্য থেকে যেকোনো একটি ব্যবহার করলেই হবে। উইন্ডোজ ৭ ও ৮-এ ডিফল্টভাবে মাইক্রোসফটের সিকিউরিটি সফটওয়্যার উইন্ডোজ সিকিউরিটি এসেনশিয়াল বা উইন্ডোজ ডিফেন্ডার দেয়া আছে। সফটওয়্যারটি বেশ কাজের। যে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারই ব্যবহার করুন না কেনো, তা নিয়মিত আপডেট করে নিতে হবে। নিয়মিত আপডেট করাটা অনেকটা ভোঁতা ছুরিতে ধার দেয়ার মতো ব্যাপার। ঠিকমতো আপডেট দেয়া থাকলে তা আরও বেশি সুরক্ষা দিতে পারবে। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা সাবধানী হতে হবে। উল্টাপাণ্টা লিঙ্কে ক্লিক করা, অপরিচিত সাইটে রেজিস্ট্রেশন, ই-মেইলে আসা স্প্যাম মেইল খোলা ইত্যাদি ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। পেনড্রাইভ লাগানোর সাথে সাথে তা ভাইরাস স্ক্যান করে নিতে হবে। পিসির অটোরান/অটোপ্লে অপশন অফ রাখলে ভালো হয়
ফিডব্যাক : jhutjhamela24@gmail.com