• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > পুরনো ল্যাপটপ বা পিসির গতি বাড়ানোর ১০ টুল
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তাসনীম মাহ্‌মুদ
মোট লেখা:১২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - এপ্রিল
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ল্যাপটপ
তথ্যসূত্র:
টিপস অ্যাণ্ড ট্রিকস
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
পুরনো ল্যাপটপ বা পিসির গতি বাড়ানোর ১০ টুল
নতুন পিসি বা ল্যাপটপ কমপিউটার খুব দ্রুতগতিতে স্টার্টআপ হয়। শুধু তাই নয়, যেকোনো কাজ যেমন খুব স্বাভাবিকভাবে করা যায়, তেমনি খুব দ্রুতগতিতেও করা যায়। অর্থৎ নতুন পিসি বা ল্যাপটপে তাৎক্ষণিকভাবে যেকোনো কাজ করা যায়। কিন্তু পিসি বা ল্যাপটপের এমন চমৎকার অবস্থা খুব বেশিদিন স্থায়ী থাকে না। পিসি বা ল্যাপটপের ব্যবহারকারীরা খুব বেশি দিন তাদের প্রতিদিনের কমপিউটিংয়ের কাজে সন্তুষ্ট থাকতে পারেন না। কেননা, পিসি বা ল্যাপটপ যত বেশি ব্যবহার হবে, ধীরে ধীরে তত বেশি এর স্বাভাবিক কাজের গতি বা কার্যকর ক্ষমতা হারাতে থাকবে।
দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে পিসির গতি কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান কারণ অপ্রয়োজনীয় উপাদান তথা ডাটা বা সফটওয়্যার দিয়ে সিস্টেম পরিপূর্ণ হওয়া। ব্যবহারকারী তার কমপিউটিং জীবনের অভিজ্ঞতায় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিভিন্ন ডাটা ইনপুট, সফটওয়্যার/ইউটিলিটি ইনস্টল ও আনইনস্টল করে থাকেন। সিস্টেমে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ইনস্টল ও আনইনস্টল করার ফলে কিছু উপাদান সিস্টেমে রয়ে যায়। এসব উপাদান অত্যন্ত শক্তিশালী টুল দিয়েও সহজে ডিলিট করা যায় না। এভাবে ব্যবহারকারীর সিস্টেম এক সময় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়বে। ফলে পিসি বা ল্যাপটপের স্বাভাবিক গতি অনেক কমে যাবে এবং সিস্টেম তার স্বাভাবিক পারফরম্যান্স দেখাতে পারবে না।
সিস্টেমের স্বাভাবিক গতি যে কারণেই কমে যাক না কেন, এর সমাধানও রয়েছে। এ কথা ঠিক, দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে সিস্টেমের গতি কমে গেলেও বিভিন্ন ধরনের টুল ব্যবহার করে এবং কিছু কৌশল অবলম্বন করে পিসির গতি কিছুটা উন্নত করা যায়, তবে তা কখনই নতুন পিসির গতির মতো হবে না, যা আপনাকে অভিভূত করবে। পিসি বা ল্যাপটের গতি বাড়ানোর জন্য নিচে বর্ণিত ধাপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে।
সিক্লিনার দিয়ে গতি বাড়ানো
প্রথমেই প্রত্যেক ব্যবহারকারীকে নিশ্চিত করতে হবে- পীড়িত কমপিউটারটি অপ্রয়োজনীয় ডাটা ও সফটওয়্যার/ইউটিলিটি দিয়ে ভারাক্রান্ত নয়। এক সময় ব্যবহারকারীর কমপিউটার বিভিন্ন ধরনের স্ক্র্যাপ কোড দিয়ে সৃষ্টি করবে ডিজিটাল মাকড়সার জালের মতো অবস্থা, যা সিস্টেমকে প্রকৃত অর্থে ধীরগতিসম্পন্ন করে তুলবে। এমন অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য অনেক ইউটিলিটি ডিজাইন করা হয়েছে, যেগুলো অনাকাঙিক্ষত ফাইল ও এক্সটেনশন খুঁজে বের করে অপসারণ করতে পারে। এ ধরনের কাজের জন্য সেরা ইউটিলিটি হলো সিক্লিনার। সিক্লিনার একটি ফ্রি ইউটিলিটি, যা হার্ডডিস্ককে ঘষে পরিষ্কার করে সব অপ্রয়োজনীয় ফাইল, যেগুলো প্রচুর পরিমাণে হার্ডডিস্ক স্পেস ব্যবহার করে। এর সাথে আরও পরিষ্কার করে টেম্পোরারি ফাইল, ইন্টারনেট কুকিজ ও অব্যবহৃত রেজিস্ট্রি ফাইল। সিক্লিনার টুলের আরেকটি বাড়তি সুবিধা হলো এর রেজিস্ট্রি ট্যাব। রেজিস্ট্রি ট্যাব সুযোগ দেয় ব্যবহারকারীর সিস্টেমের রেজিস্ট্রি আর্কাইভ স্ক্যান করা এবং অনাবশ্যকতা ফিক্স বা অন্যান্য সমস্যা ফিক্স করা। এর ফলে সিস্টেমের স্পিড কিছুটা উন্নত হয়। টুলস ট্যাবের মাধ্যমে আপনি প্রোগ্রাম আনইনস্টল করতে পারবেন, ডিজ্যাবল করতে পারবেন স্টার্টআপ প্রোগ্রাম ও কোন ধরনের ফাইল ব্যবহারকারীর হার্ডডিস্কের সবচেয়ে বেশি স্পেস ব্যবহার করছে, তা বের করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, লোকেট করতে পারবেন ডুপ্লিকেট ফাইলও।
সিক্লিনারে নিচে বর্ণিত ধাপগুলো সম্পন্ন করুন :
ধাপ-১ : সিক্লিনার ডাউনলোড করার পর তা ইনস্টল করুন। এরপর প্রোগ্রাম চালু করুন। বাই-ডিফল্ট সিক্লিনার ওপেন করে ‘Cleaner’ ট্যাব।
ধাপ-২ : আপনি যেসব উপাদান পরিষ্কার করতে চান, সেসব উপাদান এখান থেকেই ফাইন টিউন করতে পারবেন। স্ক্যান করার জন্য আপনি নির্দিষ্ট কোনো প্রোগ্রাম বা ওএস কম্পোনেন্ট বেছে নিতে পারবেন। এমনকি এর মধ্য থেকে কোনো ফাইল অপসারণ করতে চান, তাও বেছে নিতে পারবেন।
ধাপ-৩ : যদি স্ক্যানে সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন, তাহলে ‘Analyse’ বাটনে ক্লিক করে জেনে নিতে পারবেন কতটুকু স্পেস আপনি ফ্রি করতে পারবেন। স্ক্যান সম্পন্ন হওয়ার পর প্রয়োজনীয় অন্যান্য অ্যাডজাস্টমেন্ট সম্পন্ন করুন এবং এরপর Run Cleaner বাটনে ক্লিক করুন ফাইল অপসরাণের জন্য।
স্টার্টআপ প্রোগ্রাম ডিজ্যাবল করা
ল্যাপটপ বা পিসির গতি বাড়ানোর আরেকটি ভালো কৌশল বা টিপ হলো স্টার্টআপ প্রোগ্রাম ডিজ্যাবল করা। এসব প্রোগ্রাম হলো সেসব প্রোগ্রাম, যেগুলো প্রতিবার কমপিউটার চালু করলেই বুট হয় এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে রান করে।
সাধারণত এসব প্রোগ্রামকে ডিজ্যাবল করা যায় এবং যখন প্রয়োজন হবে তখনই এগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এর অর্থ অবিরত অপারেশনের মাধ্যমে সিস্টেমের গতি না কমানো।
অপ্রয়োজনীয় স্টার্টআপ প্রোগ্রাম ডিজ্যাবল করতে নিচে বর্ণিত ধাপগুলো অনুসরণ করুন :
ধাপ-১ : উইন্ডোজের আগের ভার্সনে অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হতে না পারে, সেজন্য স্টার্ট মেনু চালু করে msconfig টাইপ করুন। এর ফলে সিস্টেম কনফিগারেশন মেনু ওপেন হবে। উইন্ডোজ ৮ ব্যবহারকারীরা টাস্ক ম্যানেজারে স্টার্টআপ প্রোগ্রামের লিস্ট খুঁজে পাবেন।
ধাপ-২ : ‘startup’ ট্যাবে সুইচ করে লিস্টকে স্ক্রল ডাউন করুন এবং এ মুহূর্তে আপনার দরকার নেই এমন কোনো প্রোগ্রাম আছে কি না খুঁজে দেখুন। যেকোনো অ্যান্টিভাইরাস সার্ভিস, মাইক্রোসফটের প্রোগ্রাম বা পিসি প্রস্ত্ততকারকের দেয়া কোনো প্রোগ্রাম বা ব্যাকগ্রাউন্ড প্রোগ্রাম, যেগুলো আপনি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করেন সেগুলো সিস্টেমে রেখে দেয়া উচিত অর্থাৎ এগুলো ডিলিট করা উচিত নয়। অ্যাডোবি রিডার বা অন্য যেকোনো আপডেট চেকার নিরাপদে আনচেক করতে পারেন।
ধাপ-৩ : যেসব প্রোগ্রাম আপনার দরকার নেই, সেগুলো আনচেক করে অঢ়ঢ়ষু বাটনে ক্লিক করে Ok-তে ক্লিক করুন। এরপর সিস্টেমকে রিবুট করুন পরিবর্তনগুলোকে চূড়ান্ত করার জন্য।
বিকল্প প্রোগ্রাম ব্যবহার করা
তুলনামূলকভাবে পুরনো পিসিতে সচরাচর আধুনিক রিসোর্স ও গ্রাফিক্স-ইনটেনসিভ সফটওয়্যারের সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন- ফটোশপ কম ক্ষমতার কমপিউটারে খুব ধীরে রান করে। ফটোশপের বিকল্প হিসেবে একটি ওপেন সোর্স প্রোগ্রাম, যেমন কম ইন্টেনসিভ GIMP ব্যবহার করা যেতে পারে। GIMP-এর জন্য দরকার ফটোশপের এক ভগ্নাংশ ডিস্ক স্পেস এবং পাওয়ার বা ক্ষমতা, যা মেইনটেন করে একটি ভালো লেভেলের সফিস্টিকেশন। এ ধরনের যেসব প্রোগ্রাম অর্থাৎ ওপেন সোর্স প্রোগ্রাম আপনি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করবেন, সেসব প্রোগ্রামের একটি লিস্ট তৈরি করুন, যেগুলো সত্যিকার অর্থে অনেক দ্রুতগতিসম্পন্ন।
র্যা ম আপগ্রেড করা
যদি আপনি আরও ভালো পারফরম্যান্স পেতে চান, কিছু বিষয় আপগ্রেড করার কথা ভাবতে পারেন। যদি আপনার সিস্টেমটি রান করে থাকে ২ জিবি র্যাোমে, তাহলে বাড়তি কয়েক জিবি র্যােম যুক্ত করতে পারেন, যার জন্য বাড়তি খুব বেশি কিছু খরচ হবে না। এর ফলে পারফরম্যান্সে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষেত হতে দেখা যাবে।
এসএসডিতে সুইচ করা
যেহেতু এসএসডিতে কোনো মুভিং অংশ নেই, তাই রিড/রাইট স্পিড পুরনো অপটিক্যাল (স্পিনিং ডিস্ক) হার্ডড্রাইভের চেয়ে অনেক উন্নত। তাই এসএসডিতে সুইচ করলে সিস্টেমের পারফরম্যান্স কিছুটা উন্নত হয়।
অপারেটিং সিস্টেমকে লিনআক্সে সুইচ করা
আরও জোরালো অপশন হলো পুরনো অপারেটিং সিস্টেমকে ছুড়ে ফেলা এবং এর পরিবর্তে একটি লিনআক্স বা উবুন্টু ডিস্ট্রিবিউশনকে ইনস্টল করা। অবশ্য এ প্রক্রিয়া গেমিংয়ের জন্য আদর্শ নয়। পুরনো হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে, ওয়ার্ড প্রসেসর, মিউজিক ও ওয়েব সার্ফিংয়ের মতো কিছু সাধারণ কাজ নতুন মেশিনের মতো সম্পন্ন করা যায়। এটি ফ্রি, সহজেই ইনস্টল করা যায় ও লো-রিসোর্স অপশনসহ প্রত্যেকের উপযোগী অনেক ভার্সন বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে, যা আপনার পুরনো কমপিউটারকে সাবলীলভাবে রান করাবে। যদি আপনি লিনআক্সে রূপান্তর হওয়ার চিন্তা-ভাবনা করে থাকেন, তাহলে ইনস্টল করে নিন যেকোনো লিনআক্স ডিস্ট্রিবিউশন।
দক্ষতার সাথে টেক-টাইম ম্যানেজ করা
এটিকে ঘিরে করার কিছুই নেই। একটি পুরনো কমপিউটার কোনো কোনো ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভালো কাজ করে
ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - এপ্রিল সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস