লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
মিলস’ প্রাইম নাম্বার
মিলস’ প্রাইম নাম্বার
১.৩০৬৩৭৭৮৮৩৮ ৬৩০৮০৬৯০৪৬ ৮৬১৪৪৯২৬০২ ৬০৫৭১২৯১৬৭ ৮৪৫৮৫১৫৬৭১ ৩৬৪৪৩৬৮০৫৩ ৭৫৯৯৬৬৪৩৪০ ৫৩৭৬৬৮২৬৫৯ ৮৮২১৫০১৪০৩ ৭০১১৯৭৩৯৫৭ ০৭২৯৬৯৬০৯৩ ৮১০৩০৮৬৮৮২ ২৩৮৮৬১৪৪৭৮ ১৬৩৫৩৪৮৬৮৮ ৭১৩৩৯২২১৪৬ ১৯৪৩৫৩৪৫৭৮ ৭১১০০৩৩১৮৮ ১৪০৫০৯৩৫৭৫ ৩৫৫৮৩১৯৩২৬ ৪৮০১৭২১৩৮৩ ২৩৬১৫২২৩৫৯ ০৬২২১৮৬০১৬ ১০৮৫৬৬৭৯০৫ ৭২১৫১৯৭৯৭৬ ০৯৫১৬১৯৯২৯ ৫২৭৯৭০৭৯৯২ ৫৬৩১৭২১৫২৭ ৮৪১২৩৭১৩০৭ ৬৫৮৪৯১১২৪৫ ৬৩১৭৫১৮৪২৬ ৩৩১০৫৬৫২১৫ ৩৫১৩১৮৬৬৮৪ ১৫৫০৭৯০৭৯৩ ৭২৩৮৫৯২৩৩৫ ২২০৮৪২১৮৪২ ০৪০৫৩২০৫১৭ ৬৮৯০২৬০২৫৭ ৯৩৪৪৩০০৮৬৯ ৫২৯০৬৩৬২০৫ ৬৯৮৯৬৮৭২৬২ ১২২৭৪৯৯৭৮৭ ৬৬৬৪৩৮৫১৫৭ ৬৬১৯১৪৩৮৭৭ ২৮৪৪৯৮২০৭৭ ৫৯০৫৬৪৮২৫৫ ৬০৯১৫০০৪১২ ৩৭৮৮৫২৪৭৯৩ ৬২৬০৮৮০৪৬৬ ৮৮১৫৪০৬৪৩৭ ৪৪২৫৩৪০১৩১ ০৭৩৬১১৪৪০৯ ৪১৩৭৬৫০৩৬৪ ৩৭৯৩০১২৬৭৬ ৭২১১৭১৩১০৩ ০২৬৫২২৮৩৮৬ ৬১৫৪৬৬৬৮৮০ ৪৮৭৪৭৬০৯৫১ ৪৪১০৭৯০৭৫৪ ০৬৯৮৪১৭২৬০ ৩৪৭৩১০৭৭৪৬ ৭৭৫৭৪০৬৪০০ ৭৮১০৯৩৫০৮৩ ৪২১৪৩৭৪৪২৬ ৫৪২০৪০৮৫৩১ .....।
আসলে উপরে লেখা হয়েছে একটিমাত্র সংখ্যা। সংখ্যাটির শুরুতে ১ লিখে এরপর দশমিক দিয়ে পরের সবগুলো অঙ্ক ধারাবাহিকভাবে বসানো হয়েছে। দশমিকের পর অনেকগুলো অঙ্ক থাকায় তা এক সারিতে লেখা সম্ভব হয়নি। মজার ব্যাপর হলো, এরপরও এই সংখ্যাটির দশমিকের ঘরের পরের অনেক অঙ্ক বা ডিজিট এখানে উল্লেখ সম্ভব হয়নি। কারণ, এর দশমিকের ঘরে রয়েছে হাজার হাজার অঙ্ক। এখন আমরা যদি এই সংখ্যাটিকে দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত লিখি, তবে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ১.৩১। আর তিন দশমিক স্থান পর্যন্ত লিখলে তা হয় ১.৩০৬। এভাবে আরও কয়েক ঘর বাড়িয়ে লিখলে দশমিকের পরের অঙ্ক সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। সে যা-ই হোক, আমরা এখানে তিন দশমিক স্থান পর্যন্ত বিবেচনা করে সংখ্যাটিকে ১.৩০৬ হিসেবেই বিবেচনা করব। এটি একটি কনস্ট্যান্ট বা ধ্রম্নবসংখ্যা। অর্থাৎ এর মান সব সময় স্থির বা একই থাকে। কখনই কমবেশি হয় না। গণিত জগতে এই ধ্রম্নবসংখ্যাটি Mills’ Constsnt নামে পরিচিত। গণিতবিদ উইলিয়াম এইচ মিলসের নামানুসারে এই সংখ্যাটির এমন নাম দেয়া হয়েছে। ১৯৪৭ সালে তিনি প্রমাণ করেন ১-এর চেয়ে বড় একটি মাত্র বাস্তব সংখ্যা অ রয়েছে, যেখানে অহ -এর মান সব সময় একটি মৌলিক সংখ্যা বা প্রাইম নাম্বার হবে। এখানে হ-এর মান ৩-এর যেকোনো গুণিতক হয়- অর্থাৎ ৩, ৯, ২৭, ৮১, ২৪৩, ..... ইত্যাদি। এটি পরিচিত মিলস’ থিওরেম নামে। তিনি দেখান, এই ধ্রম্নব সংখ্যাটি হচ্ছে শুরুতেই উল্লেখ করা সংখ্যাটি। পরবর্তী সময়ে অন্য গণিতবিদ দেখান এই অ-এর মান হিসেবে আরও অগণতি সংখ্যা রয়েছে, যেগুলোর বেলায় এই শর্ত খাটে। যা-ই হোক, শুরুতেই নেয়া সংখ্যাটি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে মিলস’ কনস্ট্যান্ট নামে।
এখন দেখা যাক- অ৩, অ৯, অ২৭, অ৮১, অ২৪৩, ..... ইত্যাদির মান কী দাঁড়ায় এবং এই মানগুলো মিলসের থিওরেম অনুসারে প্রত্যেকটি মৌলিক সংখ্যা (যেসব সংখ্যা ওই সংখ্যা ও ১ ছাড়া অন্য কোনো সংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য নয়) হয় কি না। এখানে বলে নেয়া দরকার, মানগুলো আমরা কাছাকাছি পূর্ণসংখ্যা হিসেবে বিবেচনা করব।
এখানে মিলস কনস্ট্যান্ট অ = ১.৩০৬.....। অতএব-
অ৩ = ২.২২৯..... = ২
অ৯ = ১১.০৮২..... = ১১
অ২৭ = ১৩৬১.০০..... = ১৩৬১
অ৮১ = ২৫২১১০০৮৮৮৭
অ২৪৩ = ১৬০২২২৩৬২০৪০০৯৮১৮১৩১৮৩১৩২০১৮৩
এভাবে আমরা আরও অ-এর ৩-এর গুণিতক সংখ্যক ঘাত বা পাওয়ারের অসংখ্য মান বের করতে পারব। দেখা যাবে, এই মানগুলো প্রত্যেকটিই একেকটি মৌলিক সংখ্যা। এগুলোকে বলা হচ্ছে মিলস’ প্রাইম নাম্বার। উপরে আমরা পাঁচটি মিলস’ প্রাইম নাম্বার বের করেছি। মিলসের ষষ্ঠ প্রাইম নাম্বারটি হচ্ছে- ৪১১৩১০১১৪৯২১৫১০৪৮০০০৩০৫২৯৫৩৭৯১৫৯৫৩১৭০৪৮ ৬১৩৯৬২৩৫৩৯৭৫৯৯৩৩১৩৫৯৪৯৯৯৪৮৮২৭৭০৪০৪০৭৪৮৩২৫৬৮৪৯৯।
সপ্তমটি হচ্ছে- ৬৯৫৮৩৮০৪৩৭৬৯৬২৭৪১৬০৮৫৩৯২৭৬৫৭৩৫৩ ৮৫৯২৮৬৪৮৩৫৯.....২৫৭৩৯০২৬৮৪৮৭৫৩৪১৭৯৭৫৭৬৯৯১১০৩৭৮০৯৭০৪৫৯৫৫৯৪৯ (২৫৪ অঙ্কের)।
অষ্টমটি হচ্ছে- ৩৩৬৯১৮২২৮১৯৫৭৪০৭৪২২৭৭৩০৭৭৫৩৩৬৫৯১৯ ৪৬৪৭২৪৭৩৫৯৮০৪৪৬.....৪০৫০১৩১৩৮০৯৭৪৬৯৫৯৩৬৯২৬৭৬৫৬১৬৯৪৬১৪২৫৩১১৩৩৮৬৫৩৬২৪৩ (৭৬২ অঙ্কবিশিষ্ট)।
মিলসের প্রাইম নাম্বারের সংখ্যা অসংখ্য।
উইলসন প্রাইম নাম্বার
শুরুতেই সাধারণ পাঠকদের জানিয়ে রাখি, এ লেখায় বাংলা ভাষার আশ্চর্যবোধক চিহ্নের (!) মতো একটি গাণিতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হবে। গণিতে এর নাম ফ্যাক্টরিয়্যাল। ফ্যাক্টরিয়্যাল খুব জটিল কোনো বিষয় নয়। একটি সংখ্যার ফ্যাক্টরিয়্যাল বলতে কী বুঝি, তা কয়টি উদাহরণ থেকেই সাধারণ পাঠকের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে। ফ্যাকটরিয়্যাল ৫ বোঝাতে আমরা গণিতের চিহ্ন দিয়ে লিখি এভাবে- ৫!। তেমনি ৭! বলতে বুঝব ফ্যাক্টরিয়্যাল ৭। এখন প্রশ্ন এগুলোর সংখ্যামান কত? তা জানতে নিচের উদাহরণগুলো লক্ষ করুন :
১! = ১
২! = ১ক্ম২ = ২
৩! = ১ক্ম২ক্ম৩ =৬
৪! = ১ক্ম২ক্ম৩ক্ম৪ =২৪
৫! = ১ক্ম২ক্ম৩ক্ম৪ক্ম৫ =১২০
৮! = ১ক্ম২ক্ম৩ক্ম৪ক্ম৫ক্ম৬ক্ম৭ক্ম৮ = ৫৭৬০ ইত্যাদি।
আশা করি কোনো সংখ্যার ফ্যাকটরিয়্যাল কী, এ উদাহরণগুলো থেকে বিষয়টি বোঝা গেছে। এবার মূল আলোচনায় আসা যাক।
উইলসন প্রাইম নাম্বার শুধু উইলসন প্রাইম নামেও অভিহিত হয়। এই প্রাইম নাম্বারের কথা প্রথম প্রকাশ করা হয় ১৯৩৮ সালে। ইংরেজ গণিতবিদ জন উইলসনের নামানুসারে এর নামকরণ। চ যদি একটি প্রাইম নাম্বার হয়, তবে ওই চ-কে তখনই উইলসন প্রাইম বলা হবে, যখন (চ-১)! + ১ নিঃশেষে বিভাজ্য হবে চ২ দিয়ে।
উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করা যাক। আমরা জানি ৫ একটি প্রাইম নাম্বার। এখন আমরা জানতে চাই, এই ৫ উইলসন প্রাইম কি-না। উপরে উল্লিখিত শর্তমতে, ৫ সংখ্যাটি উইলসন প্রাইম হবে, যদি (৫-১)! +১ নিঃশেষে বিভাজ্য হয় ৫২ অর্থাৎ ২৫ দিয়ে। এখন (৫-১)! +১ = ৪! +১ = ১ক্ম২ক্ম৩ক্ম৪ +১ = ২৪ +১ = ২৫, যা ২৫ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য। অতএব ৫ একটি উইলসন প্রাইম।
এবার দেখব, প্রাইম নাম্বার ৭ একটি উইলসন প্রাইম কি না। শর্তমতে, ৭ তখনই উইলসন প্রাইম হবে যদি (৭-১)! +১ নিঃশেষে বিভাজ্য হবে ৭২ বা ৪৯ দিয়ে। এখানে (৭-১)! +১ = ৬! +১ = ১ক্ম২ক্ম৩ক্ম৪ক্ম৫ক্ম৬ +১ = ৭২০, যা ৪৯ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য নয়। অতএব ৭ সংখ্যাটি উইলসন প্রাইম নয়।
এবার দেখব, প্রাইম নাম্বার ১৩ উইলসন প্রাইম কি না। শর্তমতে, ১৩ উইলসন প্রাইম হলে (১৩-১)! + ১ নিঃশেষে বিভাজ্য হবে ১৩২ বা ১৬৯ দিয়ে। এখন (১৩-১)! +১ = ১২! +১ = ১ক্ম২ক্ম৩ক্ম৪ক্ম৫ক্ম৬ক্ম৭ক্ম৮ক্ম৯ক্ম১০ক্ম১১ক্ম১২+১ = ৪৭৯০০১৬০০ + ১ = ৪৭৯০০১৬০১।
আর, ৪৭৯০০১৬০১ = ৪৭৯০০১৬০১ গু ১৬৯ = ২৮৩৪৩২৯।
অতএব আমরা দেখলাম, (১৩ -১)! + ১ নিঃশেষে ১৩২ দিয়ে বিভাজ্য। অতএব আমরা বলতে পারি ১৩ একটি উইলসন প্রাইম।
একইভাবে দেখা যাবে, ৫৬৩ একটি উইলসন প্রাইম। এ পর্যন্ত তিনটি উইলসন প্রাইমের কথাই জানা গেছে। এগুলো হলো : ৫, ৩ এবং ৫৬৩। গণিতবিদেরা বলছেন, যদি এর বাইরে আরও কোনো উইলসন প্রাইম থেকে থাকে, তবে তা হবে ২ক্ম১০১৩ -এর চেয়ে বড়। আন্দাজ করা হচ্ছে, অশেষভাবে অনেক উইলসন প্রাইমের অস্তিত্ব রয়েছে। নতুন নতুন উইলসন প্রাইম জানার জন্য কমপিউটার সার্চ দেয়া হয়েছে
-গণিতদাদু