লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
কে এম আলী রেজা
মোট লেখা:১৫৩
লেখা সম্পর্কিত
উইন্ডোজ ১০ নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেটিং
উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের সবশেষ ভার্সনে সেটিং অপশনগুলো এক জায়গায় নিচে নিয়ে আসা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য সেটিংয়ের মধ্যে রয়েছে পার্সোনালাইজেশন, প্রাইভেসি, ডিভাইস, আপডেট অ্যান্ড সিকিউরিটি ইত্যাদি। এসব সেটিংয়ের সাথে যোগ হয়েছে নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটিং সেটিং, যা এখানে আলোচনা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এ সেটিং প্রক্রিয়াগুলো আগের ভার্সনের তুলনায় অনেক সহজ করা হয়েছে।
ক. নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেটিং
উইন্ডোজের অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের তুলনায় এ ভার্সনে সেটিং অপশনে খুব সহজেই যেতে পারেন। এজন্য Start Menu ওপেন করে Settings-এ ক্লিক করলেই সেটিংস অ্যাপস চালু হবে।
এবার সামনে আসা উইন্ডো থেকে Network and Internet অপশনটিতে ক্লিক করুন। এ ট্যাবটির অধীনে বেশ কিছু সেকশন রয়েছে, যেমন- ওয়াই-ফাই সেকশন, যা লভ্য বা অ্যাক্সেস করা সম্ভব এমন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কগুলোর তালিকা দেখাবে। এখানে আরও যেসব সেটিং পাবেন, সেগুলো হলো এয়ারপ্লেন মোডে নেটওয়ার্ক সেটিং, কমপিউটারে যেসব ওয়্যারলেস ডিভাইস সংযুক্ত রয়েছে তার তালিকা দেখা বা পরীক্ষা করা, গত ত্রিশ দিনে আপনার কমপিউটারের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন হার্ডডিস্কের কতটুকু ডাটা ব্যবহার করেছেন তা পরীক্ষা করে দেখা, ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) এবং ডায়াল-আপ সেটিং, ইথারনেট ও প্রক্সি সেটিং।
এবার Advanced Options-এ ক্লিক করলে অপশন পাবেন, যা সেটিংয়ের মাধ্যমে আপনার কমপিউটারকে আশপাশের অন্যান্য কমপিউটারের কাছে দৃশ্যমান করে তুলতে পারবে। এখানে সেটিংয়ে Metered Connection নামে আরও একটি অপশন পাবেন, যা আপনাকে ডাটা ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে অধিকতর নিয়ন্ত্রণ করবে। অপশনটি চালু করা হলে সংশ্লিষ্ট অ্যাপস ভিন্নভাবে কাজ করবে, যাতে অ্যাপ্লিকেশন কম ডাটা ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। সীমিত পরিমাণ ডাটা নিয়ে যাদের কাজ করতে হয় বা করে থাকেন, তাদের জন্য এ অপশনটি অনেক কাজে আসবে। এ উইন্ডোতে আরও একটি অপশন পাবেন, তাহলো কমপিউটারে সংযুক্ত বিভিন্ন ডিভাইসের প্রোপার্টিজ বা বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করে দেখার ব্যবস্থা।
খ. ওয়াই-ফাই সেটিং ব্যবস্থাপনা সেকশন
এ সেকশনটি উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে ওয়াই-ফাই সেন্স সেটিং সমন্বয় (adjust) করার সুযোগ দেবে। ওয়াই-ফাই সেন্স এমন একটি ফিচার, যার মাধ্যমে আপনি শেয়ারড ওয়াই-ফাই সংযোগে যুক্ত হতে পারবেন। এর মাধ্যমে একটিমাত্র ওয়াই-ফাই সংযোগ একাধিক ইউজারের (friends) মধ্যে নির্বিঘ্নে শেয়ার করা সম্ভব হয়। ফ্রেন্ডসের মধ্যে থাকবে ফেসবুকের ফ্রিন্ডম আউটলুক কন্টাক্ট এবং স্কাইপি কন্টাক্ট, বাই ডিফল্ট ওয়াই-ফাই সেন্সে তিন ধরনের ফ্রেন্ড তালিকা পরীক্ষা করবে।
গ. ডাটা ইউজেস
উইন্ডোজ ১০ নেটওয়ার্ক সিস্টেমে এটি একটি নতুন সংযোজন। এর মাধ্যমে জানতে পারবেন গত ত্রিশ দিনে ওয়াই-ফাই এবং ইথারনেট সংযোগ কতটুকু ডাটা ব্যবহার করেছে।
আপনি ইউজেস ডিটেইলসে ক্লিক করলেই ডাটা ব্যবহার সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। এখানে বলা থাকবে, গত ত্রিশ দিনে আপনার কমপিউটারের কোন কোন অ্যাপস কতটুকু ডাটা ব্যবহার করেছে।
ঘ. ভিপিএন যুক্ত করা
এ সেকশনের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন যুক্ত করতে পারবেন। এর আগে ভিপিএন প্রোভাইডারের নাম, সংযোগের নাম এবং সার্ভার অ্যাড্রেস প্রস্ত্তত রাখুন। সেটিং সেকশনটি আপনাকে পুরনো সিস্টেমের কন্ট্রোল প্যানেলে নিয়ে যাবে, যেখান থেকে অ্যাডাপ্টার সেটিং, অ্যাডভান্সড শেয়ারিং অপশন এবং নেটওয়ার্ক ও শেয়ারিং সেন্টার পরিবর্তন করতে সক্ষম হবেন।
উইন্ডোর Internet Options-এ ক্লিক করলে আপনার কমপিউটারের ইন্টারনেট প্রোপার্টিজ উইন্ডো সামনে আসবে। এখানে ইন্টারনেট সংক্রান্ত সেটিং যেমন- সিকিউরিটি, প্রাইভেসি, অ্যাড-অন ইত্যাদি নিজের চাহিদামতো পরিবর্তন করতে পারবেন। এখানে Windows Firewall অপশন পাওয়া যাবে, যার মাধ্যমে আপনাকে কন্ট্রোল প্যানেলের System and Security সেশনে নিয়ে যাওয়া হবে, যেখান থেকে সিস্টেমে সিকিউরিটি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেটিং সম্পন্ন করতে পারবেন।
ঙ. ডায়াল-আপ অ্যান্ড ইথারনেট
এই সেকশনে নতুন ডায়াল-আপ সংযোগ সৃষ্টি বা স্থাপন করতে পারেন অথবা বিদ্যমান ডায়াল-আপ সংযোগ ব্যবস্থাপনার কাজটি করতে পারেন। এখান থেকে ইথারনেট সেটিংয়ের বিভিন্ন প্যারামিটার পছন্দমতো পরিবর্তন করতে পারেন।
চ. প্রক্সি সেটিং
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের পূর্ববর্তী ভার্সনগুলোতে প্রধানত ম্যানুয়ালি প্রক্সি সেটিং করতে হতো। কিন্তু উইন্ডোজ ১০-এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রক্সি সেটিংয়ের কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করা হয়। তবে আপনি চাইলে উইন্ডোজ ১০-এ ম্যানুয়ালি প্রক্সি সেটিং করতে পারেন। এজন্য আপনাকে আইপি অ্যাড্রেস ও প্রক্সি পোর্ট নাম্বার আগে থেকেই জেনে নিতে হবে।
নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেটিং নিয়ে এ লেখায় যে বিষয়গুলো আলোচনা করা হলো, তা প্রায় সবার কাছেই পরিচিত। তবে উইন্ডোজ ১০-এ এসব পরিচিত প্যারামিটার সেটিংয়ে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা আমাদের জানা প্রয়োজন। সার্বিক বিবেচনায় বলা হয়, উইন্ডোজ তার পূর্ববর্তী ভার্সনগুলোর তুলনায় উইন্ডোজ ১০-এ নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেটিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলো অনেক সহজ করে উপস্থাপন করেছে, যা রপ্ত করা মোটেই কঠিন কিছু নয়
ফিডব্যাক : kazisham@yahoo.com