• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সরকারের ডিজিটাল কর্মসূচির বাস্তবায়ন চাই
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কজ
মোট লেখা:১০৪১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
মতামত
তথ্যসূত্র:
৩য় মত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সরকারের ডিজিটাল কর্মসূচির বাস্তবায়ন চাই
সরকারের ডিজিটাল কর্মসূচির বাস্তবায়ন চাই
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই সরকার তার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানোর অর্থাৎ ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নেয়। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রায়সময় তাদের দাফতরিক কর্মকা- সূচারুভাবে এবং দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ডিজিটালাইজড করার কার্যক্রম গ্রহণ করে এবং এর জন্য প্রচুর অর্থ বরাদ্দ নিয়ে থাকে। কিন্তু বিস্ময়কর হলো, সরকার তার মন্ত্রণালয়গুলোকে ডিজিটালাইজড করার জন্য যেভাবে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে, সেভাবে কিন্তু কাজ হতে দেখা যায় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। এর প্রমাণ পাওয়া যায় সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে।
সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো, সরকাররের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় উন্নয়নমূলক যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করে, তার বেশিরভাগই কোনো মাস্টার প্ল্যান বা পরিকল্পনা ছাড়াই রাজনৈতিক কৌশল বা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের কৌশল হিসেবে। আর এ কারণেই এসব প্রকল্পে যেমন থাকে না সঠিক তদারকি, তেমনই থাকে সীমাহীন অব্যবস্থাপনা।
সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল করার শতকোটি টাকার ডিজিটাল কর্মসূচি ভেস্তে গেছে। কোনো মাস্টার প্ল্যান বা পরিকল্পনা ছাড়াই প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। কিন্তু সীমাহীন অব্যবস্থা ও তদারকির অভাবে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৩৯টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে কমপিউটার ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আনা হয়। কিন্তু যন্ত্রাংশের বেশিরভাগ এখন অকেজো ও ব্যবহারের অনুপযোগী। অর্থের অভাবে এসব যন্ত্রাংশ এখন ঠিক করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি কাজ চলার সময় ১০ বছরে এ কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক পদে ৬ বার পরিবর্তন আনা হয়। সব প্রকল্প পরিচালককেই পূর্ণকালীন দায়িত্ব না দিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়- সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মোট ৩ হাজার ৩৪৬টি কমপিউটারসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ৭৯২টিই নষ্ট হয়ে আছে। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৬৬৭টি কমপিউটার ও যন্ত্রপাতির মধ্যে সবগুলোই নষ্ট। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৯২টি যন্ত্রপাতির মধ্যে ৭০টি নষ্ট, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ২৭টি যন্ত্রপাতির মধ্যে ২৪টি নষ্ট এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ৪৪টির মধ্যে ৪২টিই নষ্ট। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থাও একই।
এ কর্মসূচির মাধ্যমে সরবরাহ করা যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন কারণে আর মেরামত করা হয়নি। মেরামত না করায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই এসব যন্ত্রপাতি আর ব্যবহার করা যায়নি। মূল কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ নেই। চুক্তি শেষে যন্ত্রপাতি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির কারিগরি কর্মীরও অভাব ছিল। ঢাকার বাইরের প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি কোনো মেরামত ব্যবস্থা না থাকায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রমতে, ২০০২ সালে ৮৩ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে এই কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে। ২০০৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে দুইবার সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে ১০১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ও বাস্তবায়ন সময় বাড়িয়ে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এ কর্মসূচির আওতায় ৫৫টি উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা ৩৯টিতে নামিয়ে আনা হয়। এ প্রকল্পের মূল কার্যক্রম ছিল ওয়েবসাইট ও প্রসেস অটোমেশন সফটওয়্যার নির্মাণে সহায়তা করা, অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা দেয়া, হার্ডওয়্যার সরবরাহ এবং কর্মকর্তা প্রশিক্ষণসহ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেয়া।
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, শতকোটি টাকার এই কর্মসূচি চালু হয়েছে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই। এসআইসিটি কর্মসূচি বাস্তবায়নের আগে কোনো মাস্টার প্ল্যান বা বিস্তারিত সমীক্ষাও করা হয়নি। এ কর্মসূচির আওতায় সরবরাহ করা সফটওয়্যার অনেক প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় আপডেট না করায় তা আর ব্যবহার হয়নি। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন লোকবলের অভাব এবং চুক্তি শেষে সফটওয়্যার সরবরাহকারীদের কাছে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা পাওয়া যায়নি।
আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশে বড় ধরনের তহবিল সঙ্কট রয়েছে। সরকারের এত বড় একটি কর্মসূচি এভাবে জগাখিচুড়ির মতো চলতে পারে না। আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে, কার কার স্বার্থে পরিকল্পনাহীনভাবে এ ধরনের একটি কর্মসূচি চালু করা হলো, আর কেনই বা শতকোটি টাকার এই প্রকল্প আজ এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ল? তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এ প্রকল্পে বিদ্যমান অব্যবস্থা দূর করতে হবে।
আবুল হোসেন
নীলক্ষেত, ঢাকা
আইসিটিতে জাপানিদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে কার্যকর উদ্যোগ চাই
এক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবহেলিত সেক্টর বা খাত ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাত। সে সময় খাতের উন্নয়নে বাজেটে থাকত না তেমন কোনো উল্লেখ করার মতো অর্থ বরাদ্দ। অবশ্য সে অবস্থা এখন আর নেই। এ খাতের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এ খাতে বেড়েছে শিক্ষেত জনবল, সৃষ্টি হয়েছে এ খাত-সংশ্লিষ্ট প্রচুর দক্ষ ও অদক্ষ জনবল। আর এ কারণেই বলা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি বেশ এগিয়েছে বা যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছে। এ খাতে যেমন শুরু হয়েছে বিপুল কর্মযজ্ঞ, তেমনি বেড়েছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ। বিশেষ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই। তথ্যপ্রযুক্তিতে সৃষ্ট দক্ষ ও অদক্ষ জনবল ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতিতে যেমন অবদান রাখতে শুরু করেছে, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তথ্যপ্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও নীতি-নির্ধারণী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী তথ্যপ্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনারত অবস্থায় ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে নিজেদেরকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারেরা ইতোমধ্যে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জগতে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়েছে।
আর তাই বিশে^র বিভিন্ন দেশ এখন বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি জাপান বাংলাদেশের আইটি খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং শিগগিরই একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করার কথা। উল্লেখ্য, জাপান বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থ বিনিয়োগ করছে স্বাধীনতার পর থেকেই। পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থ বিনিয়োগের কথা থাকলেও তা পরে প্রত্যাহার করে নেয় দুর্নীতির অভিযোগে। যদিও সে অভিযোগ ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সুতরাং, আমরা কোনোভাবেই প্রত্যাশা করি না এ ধরনের কোনো অভিযোগ পরবর্তী কোনো সময়ে উত্থাপিত হবে। আইসিটিতে জাপানি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য আমাদের অবকাঠামোকে অবশ্যই উন্নত করতে হবে। আরেকটি ব্যাপার, অতীতে অনেক দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেও পরে তা ভেস্তে গেছে কমিশনভোগীদের কারণে। কমিশনভোগীদের কারণে আমাদের দেশের উন্নয়ন কর্মকা- শুধু যে ভেস্তে গেছে তা নয়, বরং আমাদের জাতির মানসম্মানও গেছে। সেই সাথে সরকারের নেতারাও বিশ্ববাসীর কাছে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিতি পায়, যা আমাদের কাম্য নয়। সুতরাং এসব বিষয় মাথায় রেখে জাপানের সাথে চুক্তিবব্ধ হতে হবে এবং যেকোনোভাবে জাপানিদের আস্থা অর্জন করে বিনিয়োগের পথ সুগম করতে হবে।
বিপ্লব দাস
দক্ষেণ মুগদা, ঢাকা


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - আগস্ট সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা