লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
ই-ক্যাব কনফারেন্সে তাগিদ ই-কমার্সের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপায় উদ্ভাবন দরকার
ই-ক্যাব কনফারেন্সে তাগিদ ই-কমার্সের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপায় উদ্ভাবন দরকার বিশ্ববাজারে পরিচিত করতে হবে স্থানীয় ই-সোর্সিং
গোলাপ মুনীর
গত ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন
ই-ক্যাবের (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) আয়োজনে
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘গ্রামীণ থেকে বৈশ্বিক ই-বাণিজ্য নীতিসম্মেলন ২০২১’ (রুরাল টু গেøাবাল ই-কমার্স পলিসি কনফারেন্স
২০২১)। পুরো সম্মেলনটি অনলাইনে আয়োজিত হয় দুটি ভাগে ভাগ
করে। প্রথম ভাগে ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও একই সাথে সম্মেলনের
‘বাংলাদেশে ডিজিটাল কমার্স : মাস্টার প্ল্যানের অনুসন্ধান (২০২১-
২০২৫)’ শীর্ষক প্রথম সেমিনার অধিবেশেন। আর দ্বিতীয় ভাগের
আয়োজনে ছিল সম্মেলনের ‘কোভিড-উত্তর বিশ্বে গ্রামীণ ই-কমার্স :
বিশ্ববাজারে স্থানীয় ই-সোর্সিং পরিচিতকরণ’ শীর্ষক দ্বিতীয় সেমিনার
অধিবেশন। আজকের এই ই-কমার্স যুগে ই-কমার্স-সংশ্লিষ্ট নীতিসম্মেলনটি ছিল নিঃসন্দেহে একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। দুটি
আলাদা অধিবেশনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে ই-কমার্স-সংশ্লিষ্ট আলাদা দুটি
বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে বক্তারা তাদের মূল্যবান অভিমত
তুলে ধরেন। উভয় অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তাদের মূল্যবান
বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে আলাদা দুটি সুপারিশমালাও প্রস্তাবাকারে
তুলে ধরা হয়। ই-কমার্স-সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এ সম্মেলনের উদ্বোধনী
অনুষ্ঠান ও সম্মেলনের অধিবেশন দুটির বিষয়বস্তু আলাদা আলাদা
ভাবে কমপিউটার জগৎ পাঠক ও ই-কমার্স-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের
জন্য এখানে উপস্থাপিত হলো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
প্রথম অধিবেশনের শুরুতেই ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ফারহা তৃণা। উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ই-ক্যাব প্রেসিডেন্ট শমী
কায়সার। তিনি তার স্বাগত বক্তব্যে অভ্যাগতদের স্বাগত জানানোর
পর বাংলাদেশে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি নিয়ে কথা বলেন।
শমী কায়সার তার বক্তব্যে জানানÑ করোনা মহামারীর সময়েও
দেশে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। লেনদেনের
পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে ৩ হাজার
কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থার
আওতায়। তিনি আরো জানানÑ মহামারীর সময়ে প্রতিদিন সরবরাহের
সক্ষমতা ১ লাখ ৬০ হাজারে গিয়ে পৌঁছেছে।
শমী কায়সার মনে করেনÑ প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা
সজীব ওয়াজেদ জয়ের দক্ষ প্রচেষ্টার সূত্রেই এমনটি অর্জন সম্ভব
হয়েছে। একই সাথে তিনি আইসিটি খাত দক্ষতার সাথে পরিচালনার
জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি তার বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেনÑবাংলাদেশে ই-কমার্সের বিকাশ
এখনো শহরকেন্দ্রিক। এর বিকাশ গ্রামমুখী করে তুলতে হবে। দেশের
ই-কমার্সকে এগিয়ে নেয়ার জন্য মহামারী-উত্তর নীতি-পরিকল্পনা
প্রয়োজন। পাশাপাশি সীমান্তের বাইরে বিদেশে আমাদের ই-কমার্স
বাজার সম্প্রসারণে নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার।
প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আইসিটি
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি তার বক্তব্যের শুরুতেই
করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা যাওয়া মিতা হকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এরপর তিনি ই-ক্যাবের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ই-ক্যাব শুরু
থেকেই দুর্দান্ত কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বিগত ১২ বছর ধরে চলা
উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি ওই সময়ে আলিবাবা, অ্যামাজন ও
অন্যান্য বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন-পরিধির উদাহরণও টানেন।
তিনি বলেন, যেকোনো কারণেই হোকআমরা ১৯৯২ সালে সাবমেরিন
ক্যাবলেরসাথে সংযুক্ত হতে ব্যর্থ হই। নইলে আমরা ই-কমার্সে আরো
এগিয়ে যেতে পারতাম। তিনি জানানÑ বর্তমানে ই-কমার্স খাতে দেশে
৪০০,০০০ উদ্যোক্তা রয়েছেন। তাদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার
তহবিল রয়েছে, যেখানে সুদের হার মাত্র ৪ শতাংশ। তিনি মনে
করেন, ই-কমার্স খাতের ওপর আস্থা বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন
উদ্ভাবনের ওপর জোর দিতে হবে। এ ছাড়া তিনি ১৬টি ডিজিটাল
প্রভাব ও ডিজিটাল দ্বীপের ব্যাপারেও কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র
সচিব ড. মো: জাফর উদ্দিন। তিনি তার বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেনÑ মহামারীর কারণে আমরা সবাই
ডিজিটাল বাণিজ্য ও লেনদেনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছি। এই
মহামারীর সময়ে অনেক সঙ্কটাপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিজিটাল
প্ল্যাটফরমগুলো সহায়ক ভ‚মিকা পালন করেছে এবং এখনো করছে।
তিনি পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রাসঙ্গিক উদাহরণটি টেনে আনেন এবং কী
করে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফরম এ সমস্যার সমাধান করে, তার বর্ণনা
দেন। তিনি ই-কমার্সের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত
করার ওপর জোর দেন।তিনি তার বক্তব্যে জ্ঞানভিত্তিক মডেলগুলোর
ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তা ছাড়া তিনি মনে করেন, ই-কমার্স খাতের
স্বচ্ছতার ওপর জোর দিতে হবে। তিনি মনে করেন, এই সময়ে এ
খাতের ৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জন সম্ভব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার ও প্ললী
উন্নয়ন মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম এমপি। তিনি তার বক্তব্যে বলেনÑ
ই-কমার্সে প্রবৃদ্ধি অর্জনের পেছনে মুখ্য ভ‚মিকা রেখেছে যোগাযোগ।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মহামারীর সময়ে
ই-কমার্সের মাধ্যমে সেবা সরবরাহ করা সম্ভব, তা আজ প্রমাণিত।
টেলিমেডিসিন এমনি পরিস্থিতিতে সহায়ক হতে পারে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেনÑ দেশে জিডিপির
প্রবৃদ্ধি লক্ষণীয়। পরিকল্পনা ও উন্নয়নে আইসিটি প্রাধান্য পেয়েছে।
ই-কমার্সের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো
বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় পুরো দেশকে সংযুক্ত করছে। ই-কমার্স খাতে
আমরা কী করে আরো এগিয়ে যেতে পারি, সে আলোচনার ওপর
আমাদের জোর দেয়া দরকার।
প্রথম সেমিনার
বাংলাদেশে ডিজিটাল কমার্স : মাস্টার প্ল্যানের অনুসন্ধান ২০২১-২০২৫
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তির সাথে সাথেই শুরু হয় ‘বাংলাদেশে
ডিজিটাল কমার্স : মাস্টার প্ল্যানের অনুসন্ধান (২০২১-২০২৫)’ শীর্ষক
প্রথম সেমিনার অধিবেশেন। সেমিনারের এই অধিবেশনের মূল বক্তা
ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডবিøউটিও সেলের ডিজি হাফিজুর রহমান।
সেমিনারের এই অধিবেশনে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন : এটুআইয়ের
নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা আনির চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুট
গভর্নর আবু ফারাহ মো: নাসের, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট
(বিএফটিআই) পরিচালক ও নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ওবায়দুল আজম,
বিআইডিএ-র বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রচারবিষয়ক মহাপরিচালক (যুগ্ম
সচিব) শাহ মোহাম্মদ মাহবুব, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির,
ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মো: আব্দুল হক অনু, পোপারফ্লাই প্রাইভেট
লিমিটেডের কো-ফাউন্ডার ও সিএমও রাহাত আহমেদ, এফএনএফ
বাংলাদেশ প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন, ই-ক্যাবের আন্তর্জাতিকবিষয়ক
পরিচালক জিয়া আশরাফ, বিল্ড-এর সিইও ফেরদৌস আরা বেগম
এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটির সহযোগী অধ্যাপক ড. বিএম
মইনুল হোসেন।
সেমিনারের এই অধিবেশনের মূল বক্তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
ডবিøউটিও সেলের ডিজি হাফিজুর রহমান তার মাস্টার প্ল্যান পেশ
করেন। তিনি জানান, ২০২০ সালে বিশ্বে ই-কমার্সের মাধ্যমে ৪.২
ট্রিলিয়ন ডলারের লেনদেন সম্পাদিত হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে
অনলাইন লেনদেন ব্যবস্থা ও দ্রæতগতির ইন্টারনেট আলাদা গুরুত্ব
পাচ্ছে। তার উপস্থাপিত তথ্যমতে, বাংলাদেশ বর্তমানে আর্থনীতিক
অবস্থান বিবেচনায় ৪৭তম অবস্থানে রয়েছে। তিনি জানান, ২০১৯
সালে বাংলাদেশের বিক্রির পরিমাণ তথা সেলস ভলিউম ছিল ১৬৪
কোটি ৮০ লাখ ডলার। এই পরিমাণ ২০২০সালে ২০০ কোটি ডলার
ছিল ও ২০২৩ সালে ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছুবে।
উদ্যোক্তাদের বিষয়ে হাফিজুর রহমান বলেনÑ দেশে ২০০০
ওয়েবসাইটভিত্তিক ও ৪০০,০০০ ফেইসবুকভিত্তিক ই-কমার্স উদ্যোক্তা
রয়েছেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, পুরো ই-কমার্স খাতের ৭৫
শতাংশেরও বেশি নগরভিত্তিক। বাংলাদেশের ইন্টারনেটের দাম
সস্তা বিবেচনায় অষ্টম স্থানে। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে
বাংলাদেশে ইন্টারনেট সবচেয়ে সস্তা। দেশে রয়েছে ১১ কোটি ২০
লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। তবে পুরো জনগোষ্ঠীর মাত্র ১.৩ শতাংশ
ইন্টারনেটের মাধ্যমে কেনাকাটা করে।
হাফিজুর রহমান একপর্যায়ে ডিজিটাল কমার্স মাস্টার প্ল্যান
(২০২১- ২০২৫) নিয়েও কথা বলেন। এ ছাড়া যেসব লক্ষ্য এখনো
অর্জিত হয়নি সেসব নিয়েও কথা বলেন এবং সে ব্যাপারে মনোযোগী
হওয়ার তাগিদ দেন। তিনি তার বক্তব্যে ডিজিটাল বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ
ও সেগুলো মোকাবেলার উপায় উল্লেখ করেন।
সেমিানারের এই অধিবেশনের নির্ধারিত আলোচক এটুআই-এর
নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা আনির চৌধুরী ই-ক্যাবকে অভিনন্দন জানিয়ে
তার বক্তব্য শুরু করেন। তার অভিমতÑ ই-ক্যাবের সহযোগিতা
ই-কমার্সের জন্য খুবই সহায়ক ছিল। একশপও নানাভাবে সহায়ক
ছিল। আগে ই-কমার্স ছিল শহরভিত্তিক। এখন তা গ্রামেও ছড়িয়ে
পড়ছে। তিনে বলেন, অনেক গ্রামীণ বিক্রেতা পচনশীল পণ্য বিক্রি
করেন। তাই এ ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক সহায়তা ও সরবরাহ চেইন
পরিচালনার মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন। ‘ফুড ফর
ন্যাশন’ এমনি একটি প্রোগ্রাম, যা সম্প্রতি চালু করা হয়েছে। এটি বেশ
ভালোভাবে কাজ করছে।
তিনি তার বক্তব্যে মধ্যস্থতাকারী বিক্রেতার গুরুত্বের ওপর জোর
দেন। তার মতে, ‘ফুড ফর ন্যাশন’ একটি কার্যকর গ্রামীণ সরবরাহ
চেইন গড়ে তুলতে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রাখতে পারে। তিনি মনে
করেন ছোট উৎপাদকের জন্য ডিজিটাল আইডি আরো সহজলভ্য করা
উচিত। সবার জন্য ইউনিভার্সাল বিজনেস আইডি থাকা দরকার।
তিনি আরো পরামর্শ দেন, ইএসসিআরওডবিøউ-কে অর্থ প্রদানের
জন্য ব্যবহার করা উচিত, কারণ তা আস্থা তৈরি করে। তার মতে,
কোভিড-১৯ ই-কমার্সকে ত্বরান্বিত করেছে। ই-কমার্স এখন পরিণত
হচ্ছে পি-কমার্সে।
২০ কমপিউটার জগৎ মে ২০২১সেমিনারের অপর আলোচক
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর
আবু ফারাহ মো: নাসের তার
বক্তব্যে উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনের
লক্ষ্যে ৫০০ কোটি টাকার একটি
স্টার্টআপ ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
৪ শতাংশ হারের সাধারণ মুনাফায়
যেকেউ এই ফান্ড থেকে সর্বোচ্চ
১ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারে।
তিনি আরো জানান, ৫ বছরের
মধ্যে আরো ৫০০ কোটি টাকার
ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, এই করোনা
মহামারী আমাদের সবাইকে
ই-কমার্সের গুরুত্ব অনুধাবন করতে
শিখিয়েছে। ই-কমার্স ব্যবসায়ের
জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার
প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। তিনি
তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের
পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের কথা
উল্লেখ করেন। তিনি মনে করেন,
ই-কমার্সের ইকোসিস্টেম তৈরিতে
আইসিটি মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ
ভ‚মিকা পালন করছে। তিনি
আশা প্রকাশ করেন : আইসিটি
ব্যবহারের মধ্য দিয়ে গোটা
অর্থনীতি এক সময় নগদহীন হয়ে
উঠবে। নগদহীন অর্থনীতি অন্যান্য
ক্ষেত্রকেও ডিজিটাইজ করে তুলতে
সহায়তা করবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে নির্ধারিত আলোচক বিএফটিআই
পরিচালক ও নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ওবায়দুল আজম বলেন, গ্রামীণ
পর্যায় থেকে বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির জন্য গ্রামের মহিলাদের গ্রামীণ
ব্যবসায়ে অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি জানান, লালসবুজডটকম
নামের একটি ওয়েবসাইট গঠন করা হয়েছে। ৮৯০টি উপজেলায় দুই
বছর ধরে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এমনকি এই মহামারীতেও
১৫ হাজারেরও বেশি মহিলা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তিনি তার বক্তব্যে
আন্তর্জাতিক গেটওয়ে, কর ও নীতি সমস্যার কথা উল্লেখ করেন।
ই-ক্যাবের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ই-কমার্সের উন্নয়নে ই-ক্যাব
নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ই-কমার্স খাতে অনেক এনজিও ঋণ দিচ্ছে।
তা থেকে মুনাফা আসছে। তিনি মনে করেন, কার্ড বা ট্রেড লাইসেন্স
সহজতর করার বিষয় নিয়ে ভাবা উচিত। তিনি পরামর্শ দেন, আরো
ভালো একটি মাস্টার প্ল্যন তৈরি করা উচিত। অংশীজনদের সাথে এ
জন্য সংলাপের প্রয়োজন। ই-কমার্স গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে দিতে হবে।
ই-কমার্স গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করতে পারে।
বিআইডিএ-র বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রচারবিষয়ক মহাপরিচালক
(যুগ্ম সচিব) শাহ মোহাম্মদ মাহবুব সেমিনারে স্পন্সর, পাবলিসিটি,
ক্রসবর্ডার ই-কমার্স ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি ডিমান্ড সাপ্লাই
চেইনের প্রয়োজনের তাগিদও দেন। তিনি বলেন, ই-কমার্সের বিকাশের
স্বার্থে উদ্ভাবনের মাধ্যমে পণ্যমানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে; আনুষঙ্গিক ও
শুল্ক বিভাগকে আরো দক্ষ করে তুলতে হবে; আন্তঃসীমান্ত ই-কমার্স
পরিচালনা সহজতর করতে হবে এবং বিশ্বব্যাপী সেরা পণ্য সরবরাহ
ও অন্যান্য পরিষেবাকে জোরালো
করে তুলতে হবে; একই সাথে
বিভিন্ন মহলের চিহ্নিত সমস্যাগুলো
বিবেচনায় নিয়ে সমস্যা উত্তরণের
উপায় উদ্ভাবন করতে হবে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, এ
খাতের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের
সাথে যোগাযোগ গড়ার ক্ষেত্রে
বিআইডিএ সহায়ক ভ‚মিকা পালন
করতে পারে। এ প্রসঙ্গে তিনি
বিদেশি বিনিয়োগের নীতিমালা
প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ
করেন। তা ছাড়া তিনি মনে করেন,
ই-কমার্স পরিচালনার জন্য ওয়ান
স্টপ পরিষেবা চালু করা দদরকার।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ
আলমাস কবির তার বক্তব্যের
শুরুতেই ই-কমার্স খাতে
ফ্রন্টলাইন সেবা দেয়ার জন্য
ই-ক্যাবকে ধন্যবাদ জানান। তিনি
বলেন, করোনার লকডাউনের
কারণে দ্রæততার সাথে এ খাতে
অনেক কিছু অর্জন সম্ভব হয়েছে।
স্বাভাবিক সময়ে এসব অর্জন
করতে বেশ কয়েক বছর অপেক্ষা
করতে হতো। তিনি এ খাতের
আস্থা অর্জনের পাশাপাশি ডিজিটাল
পেমেন্ট পদ্ধতি অধিকতর কার্যকর
করে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ
করেন। তিনি গ্রাহকদের জন্য ফিনটেক ইউজার ইন্টারফেস সহজতর
করে তোলার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এমএফএসের জন্য
আন্তঃক্রিয়াশীলতা একটি চলমান প্রক্রিয়া।
তিনি জানান, অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে এই করোনার সময়ে
ডিজিটাল লেনদেনের হার ১৫ শতাংশ থেকে ২৫-৩০ শতাংশে উন্নীত
হয়েছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, সরকার ৫ শতাংশ হারে নগদ
প্রণোদনা দিচ্ছে। তিনি সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টকে আরো কার্যকর
করে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অপরদিকে তিনি শিল্প-কারখানা
বিকাশের স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সংযোজিত বাস্তবতা, কৃত্রিম বাস্তবতা
ও ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদিসহ নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের
তাগিদও দেন। তা ছাড়া তিনি মনে করেন, কাস্টম ক্লিয়ারিন্সের জন্য
এনবিআরএ-র সহায়তা নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন দরকার। তার
মতে, আরো কয়েক বছর পর এফ-কমার্সকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
ই-কমার্সকে গ্রামীণ পর্যায়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। তা না হলে
এ খাতের প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়।
ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু বলেনÑ
ই-ক্যাব রফতানি আয়ের সংজ্ঞা পরিবর্তনের কথা আলোচনায়
এনেছে। বর্তমান সংজ্ঞামতে, দেশের ভেতরে উৎপাদিত যে পণ্যগুলো
ডলারের বিনিময়ে দেশের সীমান্তের বাইরে চলে যায়, সেসব পণ্যসূত্রে
আসা আয়কে রফতানি আয় বিবেচনা করা হয়। এ সংজ্ঞা পরিবর্তনে
চিন্তাভাবনা করা দরকার। তবে এখন প্রবাসীরা ডলার দিয়ে ই-কমার্সের
মাধ্যমে দেশ থেকে যেসব পণ্য কিনছেন, এই আয় রফতানি আয়
হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পোপারফ্লাই প্রাইভেট লিমিটেডের কো-ফাউন্ডার ও সিএমও
রাহাত আহমেদ তার বক্তব্যে বিক্রেতা সম্প্রদায়েরপ্রশ্নে বলতে গিয়ে
বলেন,এদের বিকশিত করতে হবে। বিক্রেতাদের সক্ষমতা বাড়াতে
হবে। তিনি বলেন, আমাদের জানতে হবেÑ প্রয়োজনীয় চাহিদা
মেটানোর মতো পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন পণ্য আমাদের রয়েছে কিনা।
বিক্রেতা সম্প্রদায়কে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আমাদের অগ্রাধিকারমূলক
কর্মসূচি থাকা দরকার।
এফএনএফ বাংলাদেশ প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন তার বক্তব্যে
জানান, এফএনএফ কাজ করছে ৬০টিরও বেশি দেশে। তিনি তার
বক্তব্যে ই-কমার্সের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার ওপর জোর তাগিদ দেন।
ই-কমার্সের সক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার ব্যাপারে তিনি অবকাঠামো
নির্মাণ, প্রশিক্ষণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, নীতি-নির্দেশনা, অংশীজনদের
মতামতের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা
গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিশ্বাসী।
ই-ক্যাবের আন্তর্জাতিকবিষয়ক পরিচালক জিয়া আশরাফ বলেন,
সাধারণ মানুষকে ডিজিটাল পরিষেবা ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।
সরকারের সহায়তায় তিন লাখেরও বেশি অঞ্চল ডিজিটাল পরিষেবার
আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, আনুষঙ্গিক সহায়তা আরো
দক্ষ করে তোলার জন্য এফবিসিসিআই ও ট্রাক সমিতিসহ সবাইকে
একযোগে কাজ করা দরকার। তিনি বলেন, ই-কমার্স খাতে অধিকতর
প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রয়োজন এ খাতের ওপর মানুষের আস্থা গড়ে
তোলা। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ব্যাপারে সব সময় সচেতন
থাকতে হবে।
বিল্ড-এর সিইও ফেরদৌস আরা বেগম সেমিনারে জানান,
বর্তমানে ৬ শতাংশ ক্রেতা অনলাইনে কেনাকাটা করে। এরা পুরো
জনগোষ্ঠীর মাত্র ১.৩ শতাংশ। তিনি বলেন, পাঁচ বছরের মাস্টার প্ল্যান
বাস্তবায়ন করতে হলে এ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো
মোকাবেলায় এখনই মাঠে নামতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটির সহযোগী অধ্যাপক ড. বিএম
মইনুল হোসেন বলেন, পুরো বিশ্ববাজার কোটি কোটি ডলারের। এর মধ্যে
বাংলাদেশের দখলে ৪ শতাংশ। তিনি বলেন, সবার জন্য একটি নিবন্ধিত
আইডি তৈরি করা প্রয়োজন। আর আইডি-সম্পর্কিত পদ্ধতিগুলোর জন্য
একটি আইডি ম্যানেজমেন্ট সেল বা উইং থাকতে পারে।
সেমিনারের এ অধিবেশনে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন
ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ তমাল।
শুরুতেই এ অধিবেশনে অংশ নেয়ার জন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদ
জানান। তিনি বলেন, আমরা ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে একটি রোডম্যাপ
তৈরি করেছি, যেখানে অনলাইনের মাধ্যমে গ্রামীণ পণ্য গ্রামের
উদ্যোক্তাদের পণ্য শহর ও আন্তর্জাতিক বাজারে চলে যেতে পারে।
আবার অন্যদিকে যেন ক্রসবর্ডার ই-কমার্সের মাধ্যমে দেশীয় পণ্যের
বাজার বিদেশি ক্রেতা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
তিনি তার বক্তব্যে ই-ক্যাবের বিভিন্ন সময়ের কার্যক্রম তুলে
ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে এও জানান, এই নীতি-সম্মেলনে
আলোচকদের দেয়া মতামত বই আকারে প্রকাশ করে দেশের নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
দ্বিতীয় সেমিনার
কোভিড-উত্তর বিশ্বে গ্রামীণ ই-কমার্স : বিশ্ববাজারে স্থানীয়
ই-সোর্সিং পরিচিতকরণ
অর্থনীতিতে গ্রামীণ ই-কমার্সের একটি ভ‚মিকা রয়েছে। এই
করোনা মহামারীর সময়েও লক্ষ করা গেছে, দেশে ই-কমার্সের পরিধি
বেড়েছে। লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি। এর ফলে
প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিংয়ের উন্নয়ন সাধনেরপ্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
এমনি প্রেক্ষাপটে আলোচ্য দ্বিতীয় সেমিনার অধিবেশনের শিরোনাম
নির্ধারণ করা হয় : ‘কোভিড-উত্তর বিশ্বে গ্রামীণ ই-কমার্স : বিশ্ববাজারে
স্থানীয় ই-সোর্সিং পরিচিতকরণ’।
ই-ক্যাবের করপোরেট-বিষয়ক পরিচালক আসিফ আহনাফের
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সেমিনার অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা
জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন নাহিম রাজ্জাক এমপি, ডাক ও
টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন এবং ভ‚মি
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ। এ অধিবেশনের
সেমিনারের মূল বক্তা ছিলেন ই-ক্যাবের সরকার ও নীতি এসসির
চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক জামি।
এ সেমিনারের নির্ধারিত প্যানেল আলোচক ছিলেন : বাংলাদেশ
এনজিও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হেদায়েতউল্লাহ আল মামুন
এনডিসি, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল
ইসলাম, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ
তানভীর আহমেদ রনি, ই-ক্যাব গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান
সদরউদ্দিন ইমরান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডবিøউটিও সেলের ডিজি
মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, ই-ক্যাবের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক
সাইদুর রহমান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার,
ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম
জসিম উদ্দিন চিস্তি, ডাক অধিদফতরের ডিজি সিরাজ উদ্দিন এবং
ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ তমাল।
সেমিনারে আলোচকেরা ইন্টারনেট ও ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায়
কাজ করার তাগিদ দেন। তারা ই-কমার্সের ক্রমবর্ধমান চাহিদা
মেটানোর জন্য সরবরাহ ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের কথা বলেন।
তাদের প্রত্যাশাÑ সরকারি ও বেসরকারি খাতের সহায়তা ও সম্পৃক্ততার
মাধ্যমে দেশেরই-কমার্স খাত এগিয়ে যাবে। তাদের অভিমত, গ্রামীণ
ই-কমার্সের অগ্রগতি ছাড়া দেশের সামগ্রিক ই-কমার্সের উন্নতি সম্ভব
নয় এবং সেই পুরো ডিজিটাইজেশনও সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে একটি
নীতিমালা প্রয়োজন। এজন্য সব অংশীজনদের তথা স্টেকহোল্ডারদের
এগিয়ে আসতে হবে। সেমিনারে জানানো হয়, ই-ক্যাব ই-পোস্ট
প্রদানে সহায়তা করছে। আলোচকেরা বলেন, ডিজিটাল পেমেন্ট ও
এসক্রো পরিষেবা সহজতর করা দরকার।
এ অধিবেশনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ই-ক্যাবের সভাপতি
শমী কায়সার। সবাইকে স্বাগত জানিয়ে তার বক্তব্যের সূচনা করেন।
এরপর তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন আইসিটি খাতের
মধ্য দিয়ে বাস্তব রূপ লাভ করছে। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনাকে সবিশেষ ধন্যবাদ জানান।
২২ কমপিউটার জগৎ মে ২০২১তিনি বলেন, করোনা সঙ্কটের সময়েও বিশ্বব্যাপী সবকিছু
ঠিকঠাকভাবে চলার পেছনে ডিজিটাইজেশনের ভ‚মিকা রয়েছে।
তিনি আরো জানান করোনা মহামারী চলার সময়েও ই-কমার্সের
প্রবৃদ্ধি ছিল লক্ষণীয়। এ সময়ে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬০-
৭০ শতাংশ। ব্যবসায়িক লেনদেন হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকার।
এর মধ্যে ৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ডিজিটাল
ব্যবস্থায়। ই-কমার্সের মাধ্যমে প্রতিদিনের পণ্য সরবরাহ ক্ষমতা ১ লাখ
৬০ হাজারে পৌঁছেছে। তিনি সবাইকে এ সেমিনারে অংশ নেয়ার জন্য
ধন্যবাদ জানান। এ সেমিনারের মূল বক্তা ই-ক্যাবের সরকার ও নীতি এসসির
চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক জামি মহামারী সময়ের ই-কমার্স পরিস্থিতি
নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী জিডিপির পতন ঘটেছে
৪.৫ শতাংশ। কিন্তু ই-কমার্সে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে ৩৫ শতাংশ। আশা করা
হচ্ছে এর মধ্যে ৫০ শতাংশ বজায় থাকবে। তিনি বলেন, গ্রামীণ পণ্য
আন্তঃজেলা পরিবহনের রসদ জোগানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ
করেনÑ তৈরি পোশাক রফতানিতে
বিশ্বে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে
থাকা দেশ। এর বিতরণ ক্ষমতা
দিনে ১ লাখ ৬০ হাজারে উন্নীত
হয়েছে। এর মধ্যে ১২ শতাংশ
বিতরণ চলে গ্রাম থেকে। এই ১২
শতাংশের মধ্যে ২৩ শতাংশের
পেমেন্ট চলে অনলাইনে।
ই-কমার্সের সমস্যার কথা
উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেনÑ
কুটির শিল্প-সংশ্লিষ্টরাসহ ছোট
ছোট ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের
আইনি ও আর্থিক বাধার মুখে
পড়েন। তা ছাড়া এখনো রয়েছে
বিপুল পরিমাণ চাহিদা-শূন্যতা।
পণ্য পরিবহনে ক্ষতির পরিমাণ
৩০-৪০ শতাংশ। আছে প্রয়োজনীয় গুদাম-সুবিধার অভাব। গ্রামীণ
বণিকদের পণ্য পরিবহনের জন্য ২-৩টি মধ্যস্থতাকারীর স্তর পার হতে
হয়। গ্রামের উৎপাদকদের প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিং সম্পর্কে তেমন কোনো
ধারণা নেই। তাদের থাকে না ট্রেড লাইসেন্স। তাদের বেলায় এখনো
লজিস্টিক সাপোর্ট ও পেমেন্ট সিস্টেম চলে পুরনো কায়দায়। এখনো
ব্যবহার হচ্ছে এলসিভিত্তিক পদ্ধতি। ৮০ শতাংশ সিএমএসএমই
রয়েছে গ্রাম এলাকায়। জিডিপিতে এসএমই’র অবদান ১ শতাংশ।
অথচ এসএমই হচ্ছে বাংলাদেশের বৃহত্তম কর্মসংস্থান খাত।
তিনি তার বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেনÑ জাতীয় ডিজিটাল নীতি
প্রণীত হয়েছে। ই-ক্যাবের সহায়তায় প্রতিটি জেলায় ই-পোস্টের
ব্যবস্থা করা হয়েছে। ই-ক্যাব আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যনীতি নিয়েও কাজ
করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এসক্রো শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি
মনে করেন, এসক্রো পরিষেবা চালু না করা হলে গ্রামীণ পরিষেবা ও
আস্থার বিকাশ ঘটবে না। তা ছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়নও ই-কমার্স
বিকাশের অন্যতম বিবেচ্য।
রেজওয়ানুল হক জামি তার বক্তব্যে বলেন, ব্র্যান্ডিংয়ের ওপর
আমাদের জোর দিতে হবে। তা ছাড়া আমাদের রয়েছে একটি কমার্স
ডিরেক্টরির অভাব। এ অভাব যথাসম্ভব দ্রæত পূরণ করতে হবে। তিনি
মনে করেন, ইটিএ ও ইএফটি ই-কমার্সের মাধ্যমে চালু হলে আমাদের
রফতানি বাড়বে। ই-কমার্সকে প্রমিত করে তুলতে হলে আমাদের
চালু করতে হবে ওয়ানস্টপ সার্ভিস। সবাইকে ট্রেড লাইসেন্স দেয়া
উচিত। সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য থাকা চাই আমাদের নিজস্ব কৌশল
তথা স্ট্র্যাটেজি। এ সেমিনারের আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ এনজিও
ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ই-ক্যাবের উপদেষ্টা হেদায়েতুল্লাহ আল
মামুন বলেনÑ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নের দিকে
এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রামগুলো এখন ই-কমার্স চালু করার পর্যায়ে এসে
দাঁড়িয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা
পালন করছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এখন একটি চাহিদা-চালিত
অর্থনীতি। গ্রামগুলো এখন শহরতলিতে পরিণত। তিনি আরো বলেন,
গ্রাম এলাকায় এখন সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে।
নির্ধারিত আলোচক বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান
মফিজুল ইসলাম ই-ক্যাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার বক্তব্যের সূচনা
করেন। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ই-কমার্সের সামনে সম্ভাবনা ও
ঝুঁকি উভয়ই রয়েছে। তার মতে, সবাইকে পণ্য পরিবহনে প্রতিযোগিতাসক্ষম হতে হবে। গ্রামের কৃষক, দোকানদার ও বিক্রেতারাই হচ্ছে
গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি।
তার বক্তব্যে তাগিদ ছিল : গ্রামীণ
জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল বাণিজ্যে
সম্পৃক্ত করতে হবে; সুরক্ষিত
লেনদেন নিশ্চিত করতে হবে এবং
ই-কমার্সের ক্রেতা-বিক্রেতার
মধ্যে আস্থা গড়ে তুলতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে
সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের
ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ তানভীর
আহমেদ রনি বলেন, এখন সঠিক
সময় হচ্ছে গ্রামীণ ই-বাণিজ্য নিয়ে
কাজ জোরালোভাবে শুরু করার।
এ জন্য গ্রাম এলাকায় ইন্টারনেট
সুবিধা আরো বাড়িয়ে তুলতে
হবে। এজন্য আর্থিক ও মোবাইল
পরিষেবারও সম্প্রসারণ প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, প্যাকেজিংয়ের
ব্যাপারে আমাদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ইলিশ মাছ ও আমের মতো
সহজে বিনষ্টপ্রবণ পণ্যের আরো ভালো মানের প্যাকেজিং দরকার। যে
কোনো পণ্য সঠিকভাবে ক্রেতার কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে চাইলে
প্যাকেজিং শিল্পের উন্নয়ন প্রয়োজন। সেই সাথে পরিবহন প্রতিষ্ঠান ও
গুদামগুলোরও এ ক্ষেত্রে সচেতন ভ‚মিকা পালন করতে হবে।
এ সেমিনারের অপর আলোচক ই-ক্যাব গবেষণা কেন্দ্রের
চেয়ারম্যান সদরউদ্দিন ইমরান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ই-কমার্সে
মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন রয়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সেতুবন্ধ
গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, গুণগত মানোন্নয়ন হচ্ছে
ই-কমার্সের সাফল্যের মুখ্য উপাদান। তিনি আরো বলেন, সক্ষমতা
বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত প্রকল্পগত উদ্যোগ। তিনি ই-কমার্স
খাতে নেতৃত্বদাতা সংস্থার প্রয়োজনের ওপরও আলোকপাত করেন
এবং বলেন, এ ধরনের সংস্থার প্রয়োজন রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডবিøউটিও সেলের ডিজি মোহাম্মদ হাফিজুর
রহমান তার বক্তব্যে বলেনÑ পেমেন্ট সিস্টেমগুলো আরো উন্নত করা
দরকার। ফেরত ও প্রতিস্থাপন নীতি চালু করতে হবে। তার মতে,
ভোক্তার সন্তুষ্টি ও প্রত্যাশা পূরণে ব্যবস্থাপনাকেই কাজ করতে হবে।
গ্রাম এলাকার সরবরাহ শতভাগ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন দরকার। ই-কমার্স সংশ্লিষ্টদের সেবার
মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণের ভ‚মিকা রয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ই-ক্যাবের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক সাইদুর
রহমান বলেনÑ ই-কমার্সের জন্য ই-পোস্ট কোড শিথিল করা উচিত। তিনি
তার বক্তব্যে রসদ সংযোগ সম্পর্কের বিষয়টিরও উল্লেখ করেন। তিনি
দেশের মানুষকে অনলাইন শপিংয়ের ব্যাপারে আরো মনোযোগী হওয়ার
পরামর্শ দেন। তাদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য প্রচার চালাতে হবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন,
অবকাঠামোগত বর্ণালী যুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কলড্রপ
কমে এসেছে। তিনি আরো জানানÑ গ্রামীণফোন ও রবি পূর্ণ ফোরজি
ইন্টারনেট সেবা সারাদেশে সরবরাহ করছে। ফাইবার অপটিকের
লাইন আরো উন্নত হয়ে উঠবে। তখন যোগাযোগ আরো সহজ হবে।
ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
এসএম জসিম উদ্দিন চিস্তি তার আলোচনায় উল্লেখ করেনÑ ই-কমার্সকে
আরো প্রণোদনা দেয়া দরকার। ভর্তুকির জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
ওরিন্টেশনেরও প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ই-কমার্সে
সম্পৃক্ত করার জন্য গ্রামের জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যে পরিণত করতে হবে।
গ্রামীণ ই-কমার্সকে অধিকতর সুয়োগের আওতায় আনা দরকার। তিনি
আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য সহজতর করে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ডাক অধিদফতরের ডিজি সিরাজ উদ্দিন তার বক্তব্যে ডাক
অধিদফতর ও ই-কমার্স প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেনÑ মাত্র ৪২
জেলায় পরিষেবা রয়েছে। তার মতে, এই পরিষেবা দেশের ৬৪টি
জেলায় সম্প্রসারণ করা দরকার। তা ছাড়া আমাদের ডাকঘরগুলোর
ডিজিটালায়ন দরকার। সেই সাথে আমাদের ভাবতে হবে কী করে গ্রাম
এলাকার পণ্যগুলো দ্রæত বিপণন করা যায়।
ই-ক্যাব জেনারেল সেক্রেটারি আবদুল ওয়াহেদ তমাল তার
আলোচনায় সব মহলকে একসাথে কাজ করার আহŸান জানান। তিনি
এ সময় ডিজিটাল কমার্স লাইসেন্স সহায়ক হয়েছে বলে জানান। তিনি
জানান, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার দূরত্ব অনেকটা কমে এসেছে।
ডি জিটার হাট ও আম মেলা ই-বাণিজ্য প্রসারে ইতিবাচক ভ‚মিকা রেখেছে।
তিনি তার পর্যবেক্ষণে জানান, গ্রামীণ ই-বাণিজ্য ও আন্তঃসীমান্ত
অর্থনীতি পরস্পর সম্পর্কিত। পোস্ট অফিস পরিষেবা সরবরাহ করে
ই-বাণিজ্যের ব্যয় কমিয়ে আনতে পারে।
এ সেমিনারের বিশেষ অতিথি ও ই-ক্যাব পরিচালক নাহিম
রাজ্জাক এমপি নীতি-সংলাপের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান, সেই
সাথে বিশেষ ধন্যবাদ জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও সেমিনারের
প্রধান অতিথি মোস্তফা জব্বারকে। তার পরামর্শ হচ্ছে : দুটি গ্রæপ করে
কাজ করা উচিত। একটি গ্রæপ কাজ করবে নীতি ও পরামর্শ বিষয়
নিয়ে, অপর গ্রæপ কাজ করবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে। প্রতিটি কাজের
আগে প্রয়োজন লক্ষ্য নির্ধারণ। তিনি গ্রামীণ ই-বাণিজ্য ও সীমান্তনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তার মতে, ২০২৩ সালের মধ্যে
বাংলাদেশ ই-কমার্স খাকে ৩০০ কোটি ডলার আয় করবে। তিনি
বলেন, পাইলট প্রকল্প হিসেবে ‘ই-কমার্স ভিলেজ’ চালু করা দরকার।
অপর বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব
মো: আফজাল হোসেন ই-কমার্সের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে কথা
বলেন। দেশে ই-কমার্স বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ই-কমার্স
বিকাশে আস্থা অর্জন গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। তিনি গ্রামীণ
ই-কমার্স বিকাশের স্বার্থে প্যাকেজিংয়ের উন্নয়ন ও সংশ্লিষ্টদের
প্রশিক্ষণের গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। গ্রামীণ ই-কমার্সে ভ্যাট
ও করছাড় সুফল বয়ে আনবে। তা ছাড়া সক্ষমতা বাড়ানো নিয়েও
আমাদের ভাবতে হবে। তিনি জানান, এরই মধ্যে ১৪টি মেইল
প্রক্রিয়াজাত করার জায়গা রয়েছে, যা উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা
যেতে পারে। তিনি মনে করেনÑ গুদাম, পরিবহন ও চিলিং সুবিধা
সংযোজন দরকার। তা ছাড়া প্রয়োজন রয়েছে সংযোগ, বিতরণ ও
সরবরাহ-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ঘটানোর ব্যাপারে।
বিশেষ অতিথি মো: মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেমিনারে
উপস্থাপনা মান বেশ সমৃদ্ধ। তার মতে, জেলা ব্র্যান্ডিং গ্রামীণ ই-বাণিজ্য
উন্নয়নে সহায়ক ভ‚মিকা রাখতে পারে। তিনি প্রকল্পগুলো পাইলটিং
করার ওপর জোর তাগিদ দেন। তিনি আরো বলেন, ই-কমার্স ভিলেজ
একটি দুর্দান্ত ধারণা। এ সম্পর্কিত নীতিমালা প্রণয়ন দরকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী
মোস্তাফা জব্বার সেমিনারে সমৃদ্ধ উপস্থাপনার জন্য ই-ক্যাবের প্রশংসা
করেন। তিনি বলেন, এখন সববিছু ডিজিটালাইজ করে তোলার যুগ।
এই মহামারীর সময়েও ডিজিটাল বাণিজ্য অনেক এগিয়ে গেছে। এখন
বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বা পঞ্চম সমাজবিপ্লবের দিকে এগিয়ে
যাচ্ছে। এখন বাণিজ্য মানে ডিজিটাল বাণিজ্য। তিনি কর্মসংস্থানের
চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েই আলোচনা করেন। তিনি তার বক্তব্যে ডিজিটাল
হাইওয়ে সঠিকভাবে গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। ডিজিটাল
হাইওয়ে সবকিছু সংযুক্ত করছে। তিনি বলেন, এখন ফাইভ-জি
ফোন বাংলাদেশে নির্মিত হয়ে রফতানি হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে
ইন্টারনেট পাচ্ছে। সবকিছুই ডিজিটালাইজ করা হবে। মানুষ তাদের
স্মার্টফোন দিয়ে পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ পাবে। তিনি এ সময়
‘ধামাকা’ অ্যাপটি উদ্বোধন করেন।
এই অধিবেশনের শেষ প্রান্তে এসে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন
নাসিমা আক্তার নিপা। তার মতেÑ ডোর-টু-ডোর সংযোগ তৈরি
প্রয়োজন। ওয়াই-ফাই কানেকশন সহজলভ্য করে গ্রাম এলাকায়ও
ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে
তার ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যের সমাপ্তি টানেন
প্রথম অধিবেশনের সেমিনারেগৃহীত প্রস্তাবনা
ডিজিটাল লেনদেন পরিষেবা সহজতর ও অংশগ্রহণমূলক করতে হবে
সক্ষমতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে
ক্ষুদ্রঋণ তোলার প্রক্রিয়া আরো সহজ করতে হবে
গ্রামীণ ই-কমার্সে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো নিশ্চিত করতে হবে
সীমান্ত-নীতি সহজতর করা প্রয়োজন
ট্রেড লাইসেন্স বা ব্যবসায়ের পরিচয়পত্র সরবরাহ করতে হবে
লজিস্টিক আরো কার্যকর ও সহজলভ্য করতে হবে
শুল্ক প্রক্রিয়া আরো সহজ করতে হবে
ব্যবসায়সংশ্লিষ্ট ওয়ানস্টপ পরিষেবা চালু করতে হবে
ইএসসিআরও পরিষেবা দ্রæত কার্যকর করতে হবে
ফিনটেক ইউজারের ইন্টারফেস আরো সহজ করতে হবে
ডিজিটাল পরিষেবা ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনা দরকার
সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনা আরো দক্ষ করে তুলতে হবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি
ব্যবহার বাড়াতে হবে
শুল্ক ছাড়পত্রের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি-কাঠামো গঠন দরকার
কয়েক বছর পর এফ-কমার্স নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার
চালানের ব্যয় নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখা প্রয়োজন
ভ্যাটকে ডিজিটাল পেমেন্ট থেকে ২-৩ বছরের জন্য অব্যাহতি দিতে হবে
দ্বিতীয় সেমিনারে গৃহীত প্রস্তাবমালা
গ্রাম এলাকার পরিষেবাগুলোর আধুনিকায়ন দরকার
ই-বাণিজ্যকে অধিকতর গ্রামকেন্দ্রিক করে তোলা দরকার
পরিবহন ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে
গ্রামে ইন্টারনেট, ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা সহজলভ্য করতে হবে
প্রতিদিনের কাজে ই-কমার্সের বিতরণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে
গুদাম, কোল্ডস্টোরেজ ও চিলিং ইত্যাদি সুবিধা বাড়াতে হবে
প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিংয়ের ওপর জোর দিতে হবে
বাণিজ্য ডিরেক্টরি প্রণয়ন করতে হবে
সুসংগঠিত গ্রামীণ অর্থনীতির প্রয়োজন সুষ্ঠু নীতিমালা
বিভিন্ন বিভাগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে