• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গণিতের অলিগলি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: গোলাপ মুনীর
মোট লেখা:২৩৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০২১ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গণিত
তথ্যসূত্র:
ম্যাথ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গণিতের অলিগলি
গণিতের অলিগলি

গোলাপ মুনীর

গণিতের মজার খেলা
যোগ৩, গুণ২, বিয়োগ৪, ভাগ২
আমরা গণিতের এই খেলাটির নাম দিতে পারি: ‘যোগ৩, গুণ২, 
বিয়োগ৪, ভাগ২’। কারণ এই নামের মধ্যেই রয়েছে গণিতের এই 
খেলাটির কৌশল। এই নামটি সচেতনভাবে মনে রাখলে যেকেউ 
গণিতের এই মজার খেলাটি খেলতে পারবেন। 
+ ৩
ঢ২
Ñ ৪
স্ট ২
এই খেলাটির মজা হলো : আমরা যেকোনো একটি সংখ্যা নিয়ে 
উপরের চারটি গাণিতিক ধারাবাহিক কাজ যদি সম্পন্ন করি, তবে সব 
সময় শেষ বা চ‚ড়ান্ত যে ফল দাঁড়াবে তা প্রথমে নেয়া সংখ্যাটির চেয়ে 
১ বেশি। আরো খুলে বললে বলতে হয় : যেকেউ তার ইচ্ছেমতো 
যেকোনো একটি সংখ্যা নিয়ে এই সংখ্যাটির সাথে প্রথমত ৩ যোগ 
করেন, দ্বিতীয়ত এই যোগফলকে ২ দিয়ে গুণ করেন, তৃতীয়ত এই 
গুণফল থেকে ৪ বিয়োগ করেন, এবং চতুর্থত এই বিয়োগফলকে ২ 
দিয়ে ভাগ করেন, তবে সবশেষ ভাগফল যা দাঁড়াবে,তা সব সময় প্রথমে 
নেয়া সংখ্যা থেকে ১ বেশি। আমরা যেকোনো সংখ্যা নিই না কেনো, 
উপরের চার ধাপের গাণিতিক কাজগুলো সম্পন্ন করলে চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে 
ফল দাঁড়াবে প্রথমে নেয়া সংখ্যা থেকে ১ বেশি। এটাই এ খেলাটির 
মজা।লক্ষ করি, আমরা খেলাটির নাম অনুসরণ করেই গাণিতিক 
কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন করেছি। এই ধারাবাহিকতা নষ্ট করা 
যাবে না। খেলাটি উদাহরণ দিয়ে স্পষ্ট করা যাক।

প্রথম উদাহরণ

ধরা যাক, কেউ তার ইচ্ছেমতো প্রথমে ৪ সংখ্যাটি বেছে নিলেন। 
তাহলে তাকে প্রথম ধাপে এর সাথে ৩ যোগকরতে হবে: ৪ +৩ = 
৭; দ্বিতীয় ধাপে এই ৭-কে ২ দিয়ে গুণ করতে হবে: ৭ ঢ ২ = ১৪; 
তৃতীয় ধাপে এই ১৪ থেকে ৪ বিয়োগ করতে হবে: ১৪ - ৪ = ১০; 
এবং চতুর্থ ধাপে এই ১০-কে ২ দিয়ে ভাগ করতে হবে: ১০ স্ট ২ = 
৫। আর সবশেষে পাওয়া এই ৫ আমাদের প্রথমে ইচ্ছেমতো নেয়া ৪ 
সংখ্যাটি থেকে ১ বেশি। 

দ্বিতীয় উদাহরণ

এবার ধরা যাক, কেউ শুরুতেই বেছে নিলেন ৪৫ সংখ্যাটি। 
তাহলে খেলার নিয়ম অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে আমাদের সবশেষে পাওয়ার 
কথা ৪৫-এর চেয়ে ১ বেশি ৪৬ সংখ্যাটি। দেখা যাক, শেষপর্যন্ত তা 
পাই কিনা। এ ক্ষেত্রে ধাপগুলো হবে নি¤œরূপ:
প্রথম ধাপ: ৪৫ + ৩ = ৪৮
দ্বিতীয় ধাপ: ৪৮ ঢ ২ = ৯৬
তৃতীয় ধাপ: ৯৬ Ñ ৪ = ৯২
চতুর্থ ধাপ: ৯২ স্ট ২ = ৪৬ 
আর এই ৪৬ হচ্ছে প্রথমে নেয়া সংখ্যা ৪৫ থেকে ১ বেশি।

তৃতীয় উদাহরণ

এবার দেখা যাক, আরো বড় কোনো সংখ্যা নিয়ে এই মজার 
খেলাটি দেখানে যায় কিনা। 
ধরা যাক, প্রথমে আমরা বেছে নিলাম ৯৯৯ সংখ্যাটি। তাহলে এ 
ক্ষেত্রে আমাদের সর্বশেষ ফলে ১০০০ সংখ্যাটি পাওয়ার কথা। 
প্রথম ধাপ: ৯৯৯ + ৩ = ১০০২
দ্বিতীয় ধাপ: ১০০২ ঢ ২ = ২০০৪
তৃতীয় ধাপ: ২০০৪ Ñ ৪ = ২০০০
চতুর্থ ধাপ: ২০০০ স্ট ২ = ১০০০
আর এই ১০০০ সংখ্যাটি প্রথমে নেয়া ৯৯৯ থেকে ১ বেশি।

কেনো এমনটি হয়

বীজগণিতের সাধারণ ধারণা থেকে এই গাণিতের খেলাটির রহস্য 
সহজেই ধরতে পারি। ধরা যাক, কেউ প্রথমে যেকোনো সংখ্যা ক 
বেছে নিলেন। তবে এ ক্ষেত্রে চারটি ধাপ হবে নি¤œরূপ:
প্রথম ধাপ: ক + ৩ 
দ্বিতীয় ধাপ: (ক +৩) ঢ ২ = ২ক + ৬
তৃতীয় ধাপ: (২ক + ৬) Ñ ৪ = ২ক + ২
চতুর্থ ধাপ: (২ক + ২) স্ট ২ = ক + ১
এখানে আমরা সবশেষে পাইলাম ক + ১, যা শুরুতেই আমাদের 
নেয়া সংখ্যা ক থেকে ১ বেশি। অতএব ক-এর বদলে আমরা যে 
সংখ্যাই নিই না কেনো, সবশেষ ফলে যা পাব, তা হবে শুরুতে নেয়া 
সংখ্যা থেকে ১ বেশি। এখানেই এই গণিতের খেলার মজা।

মানিব্যাগে কত টাকা আছে?

এটি গণিতের আরেকটি মজার খেলা। এর সাহায্যে 
কারোমানিব্যাগে কত টাকা আছে, তা সরাসরি না জেনে গণিতের 
কৌশল খাটিয়ে বলে দেয়া যায়। 
এজন্য প্রথমে মানিব্যাগের মালিককে মানিব্যাগে কত টাকা আছে 
তা আপনাকে না জানিয়ে একটি কাগজে লিখতে বলুন। ধরা যাক তিনি 
লিখলেন ৫০০। এবার তাকে বলুন আপনার কথামতো কিছু গণিতের 
কাজ করতে।
প্রথমে বলুন টাকার সংখ্যার দ্বিগুণ করতে: ৫০০ ঢ ২ = ১০০০। 
এবার বলুন এই গুণফলের সাথে ৪ যোগ করতে : ১০০০ + ৪ = 
১০০৪। এবার এই যোগফলকে ৫ গুণ করতে বলুন: ১০০৪ ঢ ৫ = 
৫০২০। এরপর বলুন এই গুণফলের সাথে ১২ যোগ করতে: ৫০২০ 
+ ১২ = ৫০৩২। এবার এই যোগফলকে ১০ গুণ করতে বলুন: 
৫০৩২ ঢ ১০ = ৫০৩২০। এখন এই গুণফল থেকে ৩২০ বিয়োগ 
করতে বলুন: ৫০৩২ Ñ ৩২০ = ৫০০০০। এবার এই বিয়োগফলকে 
১০০ দিয়ে ভাগ করতে বলুন: ৫০০০০ স্ট ১০০ = ৫০০। এ পর্যন্ত 
মানিব্যাগের মালিক গণিতের যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগের যেসব কাজ 
করলেন তিনি এর কিছুই আপনাকে জানাননি। তবে এবার আপনি 
মানিব্যাগের মালিককে বলুন সবশেষ যে ভাগফল পাওয়া গেছে, তার 
মানিব্যাগে ঠিক তত টাকা আছে।
মানিব্যাগের মালিক দেখলেন, সবশেষ ভাগফল হয়েছে ৫০০, 
আর তার মানিব্যাগেও রয়েছে ঠিক ৫০০ টাকা। উপরের উদাহরণে 
উল্লিখিত গণিতের কাজগুলো কাউকে দিয়ে করিয়ে নিয়ে এভাবে যে 
কারো মানিব্যাগের টাকার পরিমাণ জানা যাবে।

কেনো এমন হয়? 

এ খেলাটিতেও আগের খেলাটির মতো বীজগণিতের সাধারণ জ্ঞান 
কাজে লাগানো হয়েছে। ধরা যাক, মানিব্যাগে ক সংখ্যক টাকা রয়েছে।
প্রথম ধাপে এই টাকার সংখ্যাকে দ্বিগুণ করা হয়েছে: ২ক। দ্বিতীয় 
ধাপে এর সাথে ৪ যোগ করা হয়েছে: ২ক + ৪। তৃতীয় ধাপে এই 
যোগফলকে ৫ গুণ করা হয়েছে: (২ক + ৪) ঢ ৫ = ১০ক + ২০। 
চতুর্থ ধাপে এই গুণফলের সাথে ১২ যোগ করা হয়েছে : ১০ক + ২০ 
+ ১২ = ১০ক + ৩২। পঞ্চম ধাপে এই যোগফলকে ১০ গুণকরা 
হয়েছে: (১০ক + ৩২)ঢ ১০ = ১০০ক + ৩২০। ষষ্ঠ ধাপে এই 
গুণফল থেকে ৩২০ বিয়োগ করা হয়েছে: ১০০ক + ৩২০ Ñ ৩২০ 
= ১০০ক। সবশেষ ধাপে এই বিয়োগফলকে ১০০ দিয়ে ভাগ করা 
হয়েছে : ১০০কস্ট ১০০ = ক। তাহলে আমরা সবশেষে পেলাম ক, যা 
ওই ব্যক্তির মানিব্যাগে থাকাটাকার পরিমাণ জানিয়ে দেয়
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০২১ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা