• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > লিনআক্সে স্কাইপ চালানো
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মর্তুজা আশীষ আহমেদ
মোট লেখা:৭৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইন্টারনেটলিনআক্স, 
তথ্যসূত্র:
লিনআক্স
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
লিনআক্সে স্কাইপ চালানো

লিনআক্সের গত সংখ্যায় আমরা দেখেছি, কিভাবে লিনআক্সে পার্টিশন সমস্যার সমাধান করা যায়। লিনআক্স নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই জানতে চেয়েছেন লিনআক্সে ভয়েস চ্যাট বা ভিডিও কনফারেন্সিং সম্পর্কে। এখন লিনআক্সে স্কাইপের ভার্সন পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে লিনআক্সে ভয়েস চ্যাট বা ভিডিও কনফারেন্সিং বেশ সহজেই করা যায়। এ পর্বে লিনআক্সের স্কাইপ চালানো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।



লিনআক্সের কিছু ডিস্ট্রিবিউশন পুরোপুরি উইন্ডোজের মতো করে (দেখতে একই রকম) অপারেটিং সিস্টেম বানিয়েছে, যাতে উইন্ডোজের ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করা যায়। এসব লিনআক্সের ব্যবহারকারী দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর ফলে বিভিন্ন তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার নির্মাতারা তাদের সফটওয়্যারগুলোর লিনআক্স ভার্সন বের করছেন। তার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হচ্ছে, লিনআক্সে ভয়েস চ্যাট বা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের স্কাইপের ব্যবহার।

প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক, কেনো স্কাইপ ব্যবহার করবো? স্কাইপ বিশ্বব্যাপী পরিচিত ভিডিও কনফারেন্সিং এবং ভয়েস কনফারেন্সিংয়ের জন্য এক অনন্য সফটওয়্যার। এর ভয়েস চ্যাট পুরোপুরি ফোন কলের মতো। এখন অবশ্য স্কাইপের পাশাপাশি বিভিন্ন মেসেঞ্জারও এ ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে। ধীরে ধীরে এ ধরনের সেবা প্রায় ফোন কলের বিকল্প হয়ে উঠছে। সমস্যা একটাই, আর তা হচ্ছে যাকে কল করা হবে তাকে অবশ্যই মেসেঞ্জারে লগ ইন করা অবস্থায় থাকতে হবে।



এসব অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারের মধ্যে অফিস স্যুট, সিডি-ডিভিডি রাইটিং টুলস, মিডিয়া প্লেয়ার প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। সাধারণত লিনআক্সের পুরো ভার্সনে এসব অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার বা মিডিয়ার কোডেক দেয়া থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আংশিক ভার্সনে দেয়া থাকে না। এগুলো আলাদাভাবে ডাউনলোড করে নিতে হয়। আবার তাড়াতাড়ি অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারী কাস্টোমাইজ অপশনে না গিয়ে সরাসরি ইনস্টল করেন। মনে রাখতে হবে স্কাইপ চালাতে গেলে অবশ্যই আগে কোডেক সমস্যার সমাধান করতে হবে। তাহলে লিনআক্সে স্কাইপ নিয়ে বিপদে পড়তে পারেন। এজন্য সবার আগে ঠিকমতো ইন্টারনেট কনফিগার করে নিন।

প্রথমেই আপনাকে জেনে নিতে হবে আপনার আইপি অ্যাড্রেস কত, সার্ভারের ডিফল্ট গেটওয়ে কত, ডিএনএস সার্ভারের আইপি অ্যাড্রেস কত এবং আপনার পোর্ট কত। প্রয়োজনীয় ডাটা সংগ্রহের পর প্রথমেই দেখে নিতে হবে সিস্টেম ট্রেতে আপনার নিক (নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড বা ল্যান কার্ড)-এর আপলিঙ্ক এবং ডাউনলিঙ্ক আইকন দেখাচ্ছে কিনা। নিকের আইকনের ওপর রাইট বাটন ক্লিক করে প্রথমে ল্যান ডিজ্যাবল করে নিতে হবে।

সাধারণত সিস্টেমে একাধিক ল্যান না থাকলে নিক কনফিগার করতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। ইন্টারনেট কনফিগার করার উপায় নিয়ে ইতোপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই কনফিগার করতে পারেননি শুধু সিস্টেমে একাধিক ল্যান থাকার কারণে বা আইএসপির অটোমেটিক আইপি ব্যবহার করার ফলে। আইএসপি যদি অটোমেটিক আইপি ব্যবহার করে তাহলে সিস্টেমের জন্য DHCP সার্ভার সিলেক্ট করে দিতে হবে। ল্যান ডিজ্যাবল করার পর নেটওয়ার্ক টুলস চালু করতে হবে।

আপনার সিস্টেমে যদি একাধিক নিক থাকে, তাহলে কোন নিক থেকে নেটওয়ার্ক কনফিগার করতে চাচ্ছেন তা সিলেক্ট করে নিন। এক্ষেত্রে ডিভাইস ট্যাব থেকে নেটওয়ার্ক ডিভাইস ইথারনেট ইন্টারফেস সিলেক্ট করতে হতে পারে। এরপর আইপি ইনফরমেশন থেকে আইপিভি৪ সিলেক্ট করে কনফিগার বাটনে ক্লিক করে নিক কনফিগার করতে হবে। আইপি অ্যাড্রেসের স্থানে আপনার সিস্টেমের আইপি অ্যাড্রেস দিন। একইভাবে সাবনেট মাস্ক এবং ডিফল্ট গেটওয়ে দিতে হবে। ওকে করে সেভ করুন।

এবার ইন্টারনেট ব্রাউজার চালু করুন মেনুবার থেকে এডিট মেনু অপশন সিলেক্ট করে অ্যাডভান্স বাটনে ক্লিক করার পর নেটওয়ার্ক অপশন থেকে একইভাবে সার্ভারের আইপি অ্যাড্রেস এবং পোর্ট নম্বর দিয়ে সেভ করে বেরিয়ে আসুন। এভাবে নিকের আইকন থেকে রাইট বাটন ক্লিক করে ল্যান এনাবল করে রিস্টার্ট করতে হবে। পুণরায় সিস্টেম চালু হলে ফায়ারফক্স দিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে দেখুন ঠিকমতো ইন্টারনেট কনফিগার করা হয়েছে কিনা।

লিনআক্সে ম্যাক স্পুফিং করার জন্য প্রতিবার লিনআক্স স্টার্ট হবার সময় কন্সোলে বা টার্মিনালে আপনাকে একটি কোড লিখে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাসওয়ার্ড দিতে হবে। কোডটি হচ্ছে sudo ifconfig eth0 hw ether ০০:xx:xx:xx:xx:xx। এখানে ০০:xx:xx:xx:xx:xx-এর স্থলে আপনার পছন্দমতো নিকের (NIC- নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড) ম্যাক অ্যাড্রেস দিতে হবে। এই অ্যাড্রেসটি প্রয়োগ করার জন্য অ্যাপ্লিকেশনঅ্যাক্সেসরিজটার্মিনাল সিলেক্ট করে কোড ইনপুট দিতে হবে। সাধারণত ব্যাশ শেলেই এই কোড কাজ করে। কোড অ্যাপ্লাই করা হলে এন্টার চাপার পর আপনার কাছ থেকে সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাসওয়ার্ড চাইবে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাসওয়ার্ড দেয়া হয়ে গেলে আপনার নিকের ম্যাক অ্যাড্রেসও পরিবর্তন হবে। একটি টেক্সট ফাইল খুলে তার কোডটি লিখে এক্সটেনশন পরিবর্তন করে ডসের ব্যাচ ফাইলের মতো করে কাজ করতে পারেন। আর তা সিস্টেম স্টার্টআপে রেখে দিলে আপনাকে বার বার সিস্টেম স্টার্ট করার ম্যাক স্পুফিং করার দরকার হবে না।

ইদানীং অনেক আইএসপি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এমনভাবে ইন্টারনেট সেটআপ করে দেয়, যাতে কোনো আইপি অ্যাড্রেস দেবার প্রয়োজন পড়ে না। ডায়ালআপ সার্ভিসের মতো শুধু ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে দিলেই ইন্টারনেট কনফিগার করা হয়ে যায়। এধরনের সার্ভিস দেয়া হয় DHCP সার্ভারের মাধ্যমে। এধরনের ইন্টারনেট কনফিগার করতে হলে সার্ভার টাইপ DHCP সিলেক্ট করে দিলেই সিস্টেম নিজে নিজেই আইপি অ্যাড্রেস ছাড়াই ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে যাবে।

সাধারণত যেকোনো সফটওয়্যারের উইন্ডোজ ভার্সনের ক্ষেত্রে একটি লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নিলেই তা মোটামুটি উইন্ডোজের সব ভার্সনেই চালানো যায়। উইন্ডোজের পুরনো ভার্সনে অনেক ক্ষেত্রে চালাতে সমস্যা হলেও প্রায় সব সফটওয়্যার উইন্ডোজের নতুন ভার্সনে চলে। আলাদা আলাদা ডিস্ট্রিবিউশনের জন্য যেকোনো স্কাইপের ভার্সন ডাউনলোড করলে তা সিস্টেমে চালানো যাবে না। প্রত্যেকটি লিনআক্স আলাদা ধরনের। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাই যে ডিস্ট্রিবিউশনের লিনআক্স সিস্টেমে ব্যবহার করা হচ্ছে সেই ডিস্ট্রিবিউশনের স্কাইপ ভার্সন ডাউনলোড করতে হবে। যেসব লিনআক্স বেশ জনপ্রিয় তার বেশিরভাগ সাপোর্ট দিচ্ছে স্কাইপ। লিনআক্স ডিস্ট্রিবিউশনের মধ্যে ফেডোরা/রেডহ্যাট, ম্যান্ড্রিভা, সুসে, উবুন্টু, কেন্টওএস, ডেবিয়ান প্রভৃতি লিনআক্সের সাপোর্ট স্কাইপ এখন দিচ্ছে।

ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে গেলে http://www. skype.com/download/skype/linux/ সাইটটি ভিজিট করে স্কাইপ ডাউনলোড করে নিন। এক্ষেত্রে যে ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে চালানো হয় সেই ডিস্ট্রিবিউশন অনুযায়ী ডাউনলোড করে নিতে হবে। ইনস্টল করে নিলেই সিস্টেমে স্কাইপ চালাতে পারবেন।

ইনস্টল করার সময় সিস্টেমে কন্সোল ইনস্টল করা থাকতে হবে। সেই সাথে আরো কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেমে ইনস্টল করা থাকতে হবে। এগুলো হচ্ছে Qt-এর ৪.২.১ ভার্সন বা তদুর্ধ। D-Bus-এর ১.০.০ ভার্সন এবং libasound2-এর ১.০.১২ ভার্সন। এগুলো স্কাইপ ইনস্টল করার সময় নিজে থেকেই ইনস্টলার ডাউনলোড করে নেবে। আর যদি তা না নেয় তাহলে ম্যানুয়ালি সিস্টেমে ডাউনলোড করে ইনস্টল করে তারপর স্কাইপ ইনস্টল করতে হবে। আর কোনো কারণে ইনস্টল করা না গেলে ভিজিট করুন support.skype.com সাইটটি। এখান থেকে স্কাইপজনিত সব সমস্যার সমাধান দেয়া হয়। সবশেষে মনে করিয়ে দিই যে স্কাইপ চালানোর জন্য স্কাইপের সদস্য হতে হয়। এটি অনেকটা মেসেঞ্জারের মতো হলেও মেইলের মাধ্যমে এর ব্যবহার সীমিত। ‍

কজ ওয়েব


ফিডব্যাক :mortuza_ahmad@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - ডিসেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস