• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ওয়েবসাইট ও ডোমেইন হোস্টিং প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আরিফুল হাসান অপু
মোট লেখা:৫
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
হোস্টিং
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ওয়েবসাইট ও ডোমেইন হোস্টিং প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ



তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে বিশ্বের একটি বড় মাধ্যম হচ্ছে ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটের ব্যাপক ব্যবহার এখন শুধু ব্যবসায় বাণিজ্য আর তথ্য দেয়া-নেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর মাধ্যমে সারাবিশ্বের মানুষ একটি জয়গায় কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। জ্ঞানের বিনিময় মুহূর্তেই সব খবর চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের দেশেও ওয়েবসাইট ওয়েব পোর্টাল বা ওয়েব সলিউশনের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও ওয়েবসাইটের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট চলে আসার সাথে সাথে এর ব্যবহারও ব্যাপক হারে বাড়ছে। বর্তমানে অফিস, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার ফল অনলাইন/ওয়েবসাইটে দেয়ার ফলে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এর ব্যাপক কদর রয়েছে।

কিন্তু ওয়েবসাইট ও ডোমেইন হোস্টিং জরিপ প্রতিষ্ঠান ওয়েব হোস্টিং (webhosting.info)- এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে ৩৫-৪৫ শতাংশ ওয়েবসাইট চালু হওয়ার পর নবায়ন না হবার কারণে পরের বছরেই অথবা বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এই ওয়েবসাইটে প্রতি সপ্তাহে কী পরিমাণ নতুন ডোমেইন তৈরি হলো আর কী পরিমাণ বন্ধ হয়ে গেলো তার পরিসংখ্যান দেয়া হয়। এছাড়াও ডোমেইন ও হোস্টিংবিষয়ক খুঁটিনাটি অনেক তথ্য-উপাত্ত এখানে পাওয়া যাবে।

যেসব কারণে ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যায়

০১. সঠিক বা রেজিস্টার্ড কোম্পানি থেকে ডোমেইন না কিনলে। এক হিসেবে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ডোমেইন নবায়ন না হওয়ার পেছনে একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে গ্রাহক ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সঠিক কোম্পানি সিলেকশন করতে পারে না এবং ডোমেইন নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে না নেয়ার কারণে ওই কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নিজের ডোমেইন/ওয়েবসাইটটি বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে কোম্পানির বড় অংশ থাকে। প্রতিষ্ঠিত কোনো কোম্পানি থেকে না নিয়ে পার্সোনাল ডোমেইন কিনলে এ ধরনের সমস্যা বেশি হচ্ছে।

০২. দ্বিতীয় বছর ফি ইচ্ছেমতো বাড়ানোর ফলে। অনেকেই বর্তমানে এ ধরনের সমস্যার শিকার হচ্ছেন। ১ম বছর কম টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলেও ২য় বছর দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ চার্জ দাবি করে। ফলে ভোক্তা আর নবায়নে আগ্রহী হয় না।

০৩. ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান না হলে, তখন গ্রাহক নবায়নে আগ্রহী হয় না। অথচ একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজেকে এবং নিজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া যায়।

০৪. আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ওয়েবসাইট কোম্পানি ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাজ পরবর্তী লেনদেন ঠিকমতো না হওয়ার ফলেও অনেক ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে আমরা অনেক কোম্পানি ও ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানতে পারি কিভাবে ওয়েবসাইট নিয়ে বিপদে পড়েছে।

নজরুল ইসলাম হাজারি। পেশায় একজন কমপিউটার ব্যবসায়ী। ৪ বছর আগে থেকে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আসছেন, কিন্তু অনেক বলা সত্ত্বেও রেজিস্টার্ড কোম্পানি থেকে ডোমেইন ও হোস্টিংয়ের পাসওয়ার্ড ও কন্ট্রোল প্যানেল পাননি এবং অনেকবার অনুরোধ করেও প্রয়োজনীয় সার্ভিস না পেয়ে হতাশ হয়ে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট আর নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।



ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আনিসুল হক। দীর্ঘ ৭ বছর আগে থেকে কলেজের নামে ওয়েবসাইট ও ই-মেইল সার্ভিস নিয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন আগে নবায়ন করার জন্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করলে দেখা যায়, ওই কোম্পানি বর্তমানে এ ব্যবসায় ছেড়ে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে। নিজের কাছে প্রয়োজনীয় কন্ট্রোল প্যানেল না থাকার কারণে পড়েছেন চরম বিপদে। ওয়েবসাইটভিত্তিক সেবা থেকে বঞ্চিত ও প্রতারিত হবার পর দেখা যায় ওই ব্যক্তি তথ্যপ্রযুক্তির অন্যান্য সেবার ব্যাপারে আগ্রহী হননি। এ জন্য দেশীয় বাজারে সফটওয়্যারের ও আইটিনির্ভর সেবার প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে হোঁচট খাচ্ছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস তথা বেসিসের সেক্রেটারি জেনারেল নাহিদ আহমেদ বলেন, ‘বেসিসে এ ধরনের সমস্যা সমাধানে অথবা অভিযোগ দায়েরের কোনো ধরনের সিস্টেম নেই, তবে বেসিসের সদস্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে বেসিস সমাধানে সহযোগিতা করবে। তবে গ্রাহকদের এ ব্যাপারে আরো সচেতন হতে পরামর্শ দিয়েছেন। ডোমেইন হোস্টিং অথবা ওয়েবসাইট তৈরি করার আগে ওই কোম্পানি কতটুকু স্থিতিশীল, তা দেখে নিতে হবে। এ ধরনের ঝামেলা এড়াতে গ্রাহকদের সচেতন হতে হবে। শুধু দামের দিকে না তাকিয়ে কোম্পানির সেবা সম্পর্কে আগে জানতে হবে। তবে এ ধরনের সমস্যা অনেক কমে আসবে।

ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন ও ওয়েব হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে সব সময় প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি পছন্দ করা দরকার, ডোমেইন ভালোভাবে চেক করে ও এর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিক দলিলপত্র করে নিতে হবে। যেখানে উভয় পক্ষের সব ধরনের সার্ভিস সম্পর্কে স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে। গ্রাহকের যদি কমপিউটার তথা প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকে তবে এ সম্পর্কে যার ভালো জ্ঞান আছে, তার পরামর্শ নেয়া দরকার।

গ্রাহকদেরও মনে রাখতে হবে, একটি ওয়েবসাইট বানালেই ব্যবসায় সম্প্রসারণ হবে। এ জন্য ওয়েবসাইট তৈরির আগে এ সাইটের রিডার কারা এ বিষয়ে স্পষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভাষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমানে বিভিন্ন ভাষায় ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের রিডারদের জন্য বাংলা ভাষায় ওয়েবসাইট আদর্শ হতে পারে। এখানে প্রয়োজনীয় তথ্য খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে। সাথে প্রয়োজনীয় সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে আপনার তথ্য যাতে খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়, সে জন্য প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামিং করতে হবে। এখানে একটি ব্যাপার মনে রাখতে হবে, ভোক্তা কখনো আপনার ডোমেইন নেম দিয়ে সার্চ দেবে না। সার্চ দেবে আপনার সার্ভিসগুলো দিয়ে। এছাড়াও অনেকভাবে ওয়েবসাইটকে ভোক্তার কাছাকাছি পৌঁছে দেয়া সম্ভব। আর এভাবেই একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন।



আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে। বর্তমানে ওয়েব সলিউশনে কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকার কারণে অনেকে প্রতারিত হলেও প্রতারক কোম্পানি/ব্যক্তির নামে অভিযোগ করার কোনো জায়গা নেই। এ ব্যাপারে নীতিমালা তৈরির সাথে সাথে গ্রাহককেও সচেতন হতে হবে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : info@ahopu.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
পাঠকের মন্তব্য
১৬ জুন ২০১০, ১:০৬ AM
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস