• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > মার্সেনারি ২- ওয়ার্ল্ড ইন ফ্লেমস
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:৫৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেমকমপিউটার গেম, 
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
মার্সেনারি ২- ওয়ার্ল্ড ইন ফ্লেমস

যুদ্ধবিগ্রহকে কেন্দ্র করে এখন বেশি গেম বানানো হচ্ছে। হয়তো গেমারদের চাহিদা মেটাবার জন্যই। বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে কাল্পনিক ভবিষ্যতের যুদ্ধ কোনোটাই বাদ যাচ্ছে না। আজকের আলোচ্য গেমের যুদ্ধক্ষেত্রটিও কাল্পনিক কিন্তু তা কোনো ভিনগ্রহের ভূমিতে নয়। এই গেমের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে ভেনিজুয়েলাকে কেন্দ্র করে ২০১০ সালের সময়ে। যুদ্ধের মূল কেন্দ্রে রয়েছে তেল, মানে কালো তরল সোনা নিয়েই হবে এই কাল্পনিক যুদ্ধ। গেমের মূল মন্ত্রই হচ্ছে- ‘Money is Power and Oil is Money’। ভেনিজুয়েলার তেলের মজুদকে ঘিরে কিছু দুর্নীতিবাজ গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে রেষারেষির ফলে দেশটি পরিণত হয় যুদ্ধক্ষেত্রে। কিন্তু আপনাকে খেলতে হবে মার্সেনারি হয়ে, যাদের, সঙ্গে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা অনেকটা ভাড়াটে যোদ্ধার মতো। টাকা যেখানে তারা সেখানে, টাকাই তাদের সব। এক্ষেত্রে তাদের সৈনিকও বলা যায় না, কারণ তাদের লক্ষ্য শুধু তাদের যে কাজের জন্য ভাড়া করা হয়েছে তা সম্পন্ন করে টাকা নিয়ে অন্য কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়া।

মার্সেনারি গেম সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ওয়ার্ল্ড ইন ফ্লেমস গেমের মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই সবার মাঝে দারুণ সাড়া পড়ে গেছে। এই সিরিজের আগের গেম মার্সেনারি- ‘প্লেগ্রাউন্ড অব ডেস্ট্রাকশন’ বের হয়েছিল ২০০৫ সালে। এটিও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। দুটি গেমেরই নির্মাতা হচ্ছে প্যান্ডেমিক স্টুডিও, যা স্টার ওয়ারসের কিছু গেম নির্মাণ করে সাড়া ফেলেছিল। প্রথম গেমের পাবলিশার ছিল নামকরা প্রতিষ্ঠান লুকাস আর্টস এবং নতুন এই পর্বের পাবলিশার হচ্ছে ইলেকট্রনিক আর্টস। এই সিরিজের গেমগুলো অন্যান্য থার্ড পারশন শূটিং গেমগুলোর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের। গেমটি খেলার সময় বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ লক্ষণীয়, কারণ শত্র“পক্ষ ও মিত্রপক্ষ নির্বাচনের সময় কোন পক্ষে বেশি সুবিধা করা যাবে তা বিবেচনা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। খেলার আগে কোন প্লেয়ার নিয়ে খেললে বেশি সুবিধা করতে পারবেন তা ঠিক করাটাও আপনার যাচাই ক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে।



প্রথম পর্বের ধারাবাহিকতায় এবারেও রাখা হয়েছে আগের গেমের তিনটি প্রধান চরিত্র। যারা হচ্ছে- প্রাক্তন ডেল্টা ফোর্সের সদস্য ক্রিস জ্যাকবস নামের আমেরিকান, সুইডিশ নেভির প্রাক্তন এক্সপ্লোসিভ স্পেশালিস্ট ম্যাথিয়াস নেলসন ও সুন্দরী চীনা তরুণী জেনিফার মুই যে কিনা দারুণ অ্যাথলেট ও এমআই-৬ নামের সিক্রেট ইন্টেলিজেন্ট সার্ভিসের প্রাক্তন সদস্য। তাদের প্রত্যেকের রয়েছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। পেশিবহুল নিগ্রো ক্রিস গেমে অন্যদের চেয়ে বেশি গোলাবারুদ বহন করতে সক্ষম, পাশাপাশি সে ইংরেজি ও কোরিয়ান ভাষায় দক্ষ। দাড়িতে ঝুটি করা ও স্পাইক করা সোনালি চুলের ম্যাথিয়াস হচ্ছে গেমের প্রধান চরিত্র। ইংরেজি, রাশিয়ান ও সুইডিশ এই তিনটি ভাষায় পারদর্শিতার পাশাপাশি তার রয়েছে দ্রুত লাইফ রিজেনারেট করার ক্ষমতা। মুই শত্র“দের চোখ ফাঁকি দিয়ে কার্য সম্পন্ন করতে ও দ্রুত দৌড়াতে সক্ষম। চাইনিজ ভাষাভাষীদের সঙ্গে কথোপকথনের ক্ষেত্রেও তার জুরি নেই।

গেমের কাহিনীতে র্যাজমন সোলানো নামের এক ব্যক্তি মার্সেনারি ভাড়া করে তার কার্য উদ্ধারের পর তাদের প্রাপ্য মূল্য পরিশোধ না করে উল্টো তাদের মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে। তাই মার্সেনারি হিসেবে প্লেয়ারের কাজ হবে তার সব কাজে বাধা প্রদান করা। ভেনিজুয়েলার ক্ষমতাবান ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে যেমন দেশের তেলের মজুদের ওপরে নিজের অধিকার নিতে চায়। সে গড়ে তোলে ভিজেড (VZ) নামের সংগঠন এবং তার বিপরীতে দেশের সম্পদ বাঁচাতে তৈরি হয় পিপলস লিবারেশন আর্মি অব ভেনিজুয়েলা (P.L.A.V.)। সঙ্গে মিত্রবাহিনী হিসেবে যোগদান করে ইউনাইটেড স্টেটস, রাশিয়া, ব্রিটেন, চায়না ইত্যাদি। তাদের সবার লোলুপ দৃষ্টি সেই মূল্যবান তরল সম্পদের দিকে। জ্যামাইকান পাইরেটস নামের দলটি কারো পক্ষে কাজ করবে না- তারা সবার বিপক্ষে, তাদের কাজ লুটপাট করা। P.M.C বা প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি নামের দলটি হবে প্লেয়ারের নিজস্ব, মার্সেনারিদের সহযোগিতায় গঠিত একটি দল যার ওপরে থাকবে গেমারের কর্তৃত্ব। এই কোম্পানির সাহায্যে ভাড়া করা যাবে যন্ত্রপাতি উন্নত করার জন্য মেকানিক, মালামাল সরবরাহ ও লোকেশন বের করার জন্য হেলিকপ্টার পাইলট, নির্র্দিষ্ট স্থানে ধবংসলীলা চালানোর জন্য সক্ষম পাইলট ইত্যাদি।



গেমের অন্যান্য ফ্যাকশন বা দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ইউনিভার্সাল পেট্রোলিয়াম, দ্য এলাইড নেশন, পিপলস লিবারেশন আর্মি অব চায়না ইত্যাদি। প্রতি দলের রয়েছে আলাদা আলাদা অস্ত্রভাণ্ডার ও খেলার কৌশল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি অস্ত্রের নাম হচ্ছে- Assault Rifle- AK-74, AK-103, Automatic Rifle-RPD, RPG-RPG7, Sniper Rifle-Dragunov SVD, Carbine-M4, Light MG-SAW (M-249), Combat Rifle-XM8, Light MG-SAW (M-249), Anti Air-STINGER, Anti Armor Rifle-Barrett M95, Pistol-Sig Sauer, SMG-PP2000, Fuel Air RPG, QBZ-95, Micro Uzi, MAC-10, Shotgun-Benelli M4 Super 90 ইত্যাদি।

গেমের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে হেলিকপ্টার হাইজ্যাক করার জন্য গ্র্যাপলিং হুক, অনেকটা টম্ব রাইডার লিজেন্ডে লারার গ্র্যাপলিং হুক-এর মতো। আরো রয়েছে অসংখ্য যানবাহন- সাধারণ গাড়ি থেকে শুরু করে ট্যাঙ্ক, হেলিকপ্টার কোনো কিছুই বাদ দেয়া হয়নি। প্লেয়ারের পানিতে সাঁতরানোর ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে। আগুনের কারসাজি, বোমার আঘাতে বিল্ডিং ধসে পড়া, ক্ষতিগ্রস্ত বোট বা জাহাজের পানিতে ডুবে যাওয়া, বোম্বিং ও স্মোক ইফেক্ট, যানবাহন চালানোর পাশাপাশি গোলাগুলি করা সব কিছুতেই রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া।

গেমের গ্রাফিক্সের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে প্যান্ডেমিক স্টুডিওর নিজস্ব গেম ইঞ্জিন হ্যাভোক ফিজিক্সের উন্নত সংস্করণ ৫.৫, তাই গেমের গ্রাফিক্স ও সাউন্ড কোয়ালিটি আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রাণবন্ত ও মনোমুগ্ধকর করা সম্ভব হয়েছে। গেমটি উইন্ডোজ, এক্সবক্স ৩৬০, প্লেস্টেশন ২ ও ৩ উভয়ের জন্য রিলিজ দেয়া হয়েছে। গেমটি ভালোভাবে চালানোর জন্য এক্সপি সার্ভিস প্যাক ৩ ও ভিসতা সার্ভিস প্যাক ১-এর প্রয়োজন পড়বে।

যা যা প্রয়োজন

প্রসেসর : পেন্টিয়াম ৪ (হাইপার থ্রেডিং)/ এএমডি এথলন ৬৪ এক্স ২
র্যা ম : ১ গিগাবাইট
এজিপি : ২৫৬ মে.বা. (জিফোর্স ৬৮০০ জিটি) হার্ডডিস্ক
স্পেস : ১০ গিগাবাইট


ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - অক্টোবর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস