মাইক্রোইডস কোম্পানি বরাবরের মতো এবারো বের করেছে পাজল ও অ্যাডভেঞ্চারভিত্তিক গেম, যার নাম ড্রাকুলা ৩- দ্য পাথ অব দ্য ড্রাগন। এটি ড্রাকুলা সিরিজের ৩য় পর্ব। যারা সাইবেরিয়া, অ্যামারজোন, সিঙ্কিং আইল্যান্ড নামের গেমগুলো খেলেছেন, মাইক্রোইডস কোম্পানির গেমের গ্রাফিক্স ও গেমপ্লের বৈচিত্র্যতার সঙ্গে তারা ভালোভাবেই পরিচিত।
গেমে আপনাকে খেলতে হবে ফাদার আর্নো মরিয়ানির চরিত্রে। তাকে ভ্যাটিকান থেকে তার উপরওয়ালাদের নির্দেশে যেতে হবে ড্রাকুলার আবাসস্থল ট্রান্সসিলভানিয়াতে, বিতর্কিত এক রোমানিয়ান ডাক্তারের কার্যকলাপের ওপরে অনুসন্ধান করার জন্য। কর্মস্থলে পৌঁছানোর পরে সে জানতে পারবে কিছু রহস্যময় মৃত্যুর কথা যার সঙ্গে ডাক্তার জড়িত। আর্নো হঠাৎ করে বুঝতে পারবে সে খুব ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে পড়ে গেছে, যেখান থেকে ফেরার পথ নেই। তাই ভ্যাম্পায়ারের ভয়ে ভীত না হয়ে আপনাকে চালিয়ে যেতে হবে আপনার অনুসন্ধান, করতে হবে নানারকম পরীক্ষা-নীরিক্ষা, প্রয়োজনীয় তথ্য বের করার জন্য এলাকার সবার সঙ্গে কথা বলতে হবে। সোজা কথা গেমের প্রতিটা পদক্ষেপ আপনাকে খুব ভেবেচিন্তে নিতে এবং প্রচুর মাথা ঘামাতে হবে গেমটি খেলতে। সব তথ্যের মাঝে মিল খুঁজতে হবে, তাদের মাঝে পার্থক্য বের করতে হবে, নিজের চিন্তাধারা ও কল্পনাশক্তির সাহায্যে বের করতে হবে দাঁতভাঙ্গা ধাঁধার সমাধান।
গেমের যাত্রাপথও কম নয়, প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে রোম থেকে দুর্গম এলাকা ট্রান্সসিলভানিয়াতে, এরপর আবার ভ্রমণ করতে হবে বুদাপেস্ট থেকে তুরস্কের পথে। গেমের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে শুধু মাউস দিয়ে পুরো গেম খেলা। গেমে যোগসূত্র রচনা করা হয়েছে কল্পনা ও বাস্তবতা, প্রথা ও ইতিহাস, অলৌকিকতা ও বিজ্ঞানের মাঝে। যার ফলে খেলার সময় কিছু ব্যাপার নিয়ে আপনি হতভম্ব হয়ে যাবেন। দেখতে পাবেন এমন কিছু যা আপনার কল্পনার বাইরে, শুনতে পারবেন এমন কিছু যাতে আপনার শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে যাবে শীতল স্রোত, অনুভব করবেন এমন কিছু যা কখনো অনুভব করার কথা চিন্তাও করেননি। সব কিছু যুক্তির সাহায্যে কিভাবে সমাধান করতে হয় তার এক দারুণ বর্ণনা পাবেন এই গেমটিতে।
গেমটি মূলত ফাস্ট পারশন গেম। এতে প্রতিটি স্টেজে ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ক্যামেরা ঘোরানো যাবে। গেমের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের গ্রাফিক্স অসাধারণ, কারণ তা খুবই উঁচুমানের ছবির সাহায্যে বানানো হয়েছে। গেমের মুভির গ্রাফিক্সও খুবই বাস্তবসম্মত ও মনোমুগ্ধকর। গেমের কাহিনীর সময়কাল হচ্ছে ১৯২০ সালের, তাই সে আমলের ধাঁচে বানানো হয়েছে গেমের পরিবেশ। পুরনো ফুলদানি, টেবিল, দেয়ালঘড়ি, বিছানা, পথঘাট, পোশাক-আশাক, সবকিছুতেই রয়েছে সেই আমলের গন্ধ। গেমের স্পেশাল ইফেক্টগুলোও সবার নজর কাড়বে। গেমটি চালাতে উঁচুমানের মেশিনের প্রয়োজন পড়ে না বলে তা সবাই খেলতে পারবেন খুব সহজেই। গেমটি চালাতে প্রয়োজন পড়বে ৮০০ মেগাহার্টজের পেন্টিয়াম ৩, ১২৮ মেগাবাইট র্যা।ম, ৬৪ মেগাবাইট ভিডিও মেমরি ও ৪ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস।
এ ধরনের অ্যাডভেঞ্চার গেমের মধ্যে ভালোমানের কয়েকটি নাম হচ্ছে- জার্নি, ইকো, নিবিরু, রিটার্ন টু দ্য মিস্টিরিয়াস আইল্যান্ড, ব্রোকেন সোর্ড, স্টিল লাইফ, ওভারক্লকড, দ্য এক্সপেরিমেন্ট, মার্ডার ইন দ্য অ্যাবি, ব্ল্যাক মিরর, ক্লিওপেট্রা ইত্যাদি। অ্যাডভেঞ্চার গেমভক্তদের এসব গেমগুলো ভালো লাগবে আশা করি।
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com