• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > কমান্ড অ্যান্ড কনকোয়ার : কেইনস রেথ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
কমপিউটার গেম
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কমান্ড অ্যান্ড কনকোয়ার : কেইনস রেথ



স্ট্র্যাটেজি গেমগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই হচ্ছে ঐতিহাসিক বা ফ্যান্টাসিভিত্তিক৷ এইসব গেমের কাহিনী গড়ে উঠেছে মানব সভ্যতার বিভিন্ন যুগকে বিবেচনা করে৷ অনেকে পছন্দ করেন ঐতিহাসিক, আবার অনেকে চান সায়েন্স ফিকশনভিত্তিক গেম৷ এসব গেমের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় গেমটি হচ্ছে কমান্ড অ্যান্ড কনকোয়ার সিরিজের গেমগুলো৷ এই সিরিজের গেমগুলোর কোনো একটি খেলেননি এমন গেমার খুঁজে পাওয়াটা হবে অনেকটা খড়ের গাদায় সুচ খোঁজার মতো৷

গেমের প্রথম নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ছিলো ওয়েস্টউড স্টুডিও, কিন্তু তাদের কাছ থেকে এই গেম সিরিজের স্বত্ব কিনে নেয় বিখ্যাত গেম নির্মাতা কোম্পানি ইলেকট্রনিক আর্টস৷ এই সিরিজের সূত্রপাত ঘটে ১৯৯৫ সালে কমান্ড অ্যান্ড কনকোয়ার-টাইবেরিয়াম ডওন -এর মধ্য দিয়ে৷ কমান্ড অ্যান্ড কনকোয়ার সিরিজের গেমগুলো তিন ভাগে বিভক্ত৷ এগুলো হচ্ছে টাইবেরিয়াম, রেড এলার্ট ও জেনারেলস সিরিজ৷ টাইবেরিয়াম সিরিজের গেমে মূলত দুটি জাতি- গ্লোবাল ডিফেন্স ইনিসিয়েটিভস (জিডিআই) ও ব্রাদারহুড অব নড৷ তাদেরকে ভবিষ্যতের পৃথিবীতে ক্ষমতার আসন নিয়ে লড়াই করতে হবে৷ এতে ভিন্নগ্রহের একটি জাতিও রয়েছে, যার নাম স্ক্রিন৷ এই সিরিজের মুক্তি পাওয়া গেমগুলো হচ্ছে- টাইবেরিয়াম ডওন, টাইবেরিয়াম সান, রেনেগেড ও টাইবেরিয়াম ওয়ারস৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাহিনীর উপরে নির্মিত রেড এলার্ট সিরিজের গেমের মধ্যে রয়েছে কাউন্টার স্ট্রাইক, দ্য আফটারম্যাথ, রেটালিয়শন, ইয়ুরিস রেভেঞ্জ (রেড এলার্ট ২) এবং সামনেই মুক্তি পাচ্ছে বহুপ্রতীক্ষিত রেড এলার্ট ৩৷ জেনারেল সিরিজের গেমসে যুদ্ধে লিপ্ত হতে হবে ইউএসএ, চীন ও গ্লোবাল লিবারেশন আর্মি, এই তিন বাহিনী নিয়ে৷ এই সিরিজের মাত্র একটি এক্সপানশন রয়েছে জিরো আওয়ার নামে৷



কমান্ড অ্যান্ড কনকোয়ার : টাইবেরিয়াম ওয়ারসের প্রথম এক্সপানশন হচ্ছে কেইনস রেথ৷ এক্সপানশন হলেও এটি খেলার জন্য প্রথম গেমটি ইনস্টল করার প্রয়োজন পড়বে না৷ আগের গেমটির মেনুতে ছিলো সবুজের কারুকাজ কিন্তু পরেরটিতে রয়েছে লাল রঙের ছড়াছড়ি৷ নতুন এই গেমের কাহিনী গড়ে উঠেছে আগের টাইবেরিয়াম ওয়ারের ২০ বছর পরের কাহিনী নিয়ে৷ এতে ব্রাদারহুড নডের ক্যাম্পেইনে রয়েছে ১৩টি মিশন যা ৩টি খণ্ডে বিভক্ত করে টাইবেরিয়াম সান থেকে এখন পর্যন্ত গেমের অন্যতম চরিত্র কেইনের জীবন কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে৷ এতে মূল তিনটি জাতির প্রতিটিকে দুটি করে মোট ৬টি জাতিতে ভাগ করা হয়েছে৷ জিডিআই-এ যুক্ত হয়েছে টাইবেরিয়াম ওয়ারের ট্রেডিশনাল টিম স্টীল ট্যালন এবং ZOCOM (Zone Operation Command) নামের খুব শক্তিশালী হাইটেক ট্রুপার ব্যাটালিয়ন৷ নডকে ভাগ করা হয়েছে ব্ল্যাক হ্যান্ড ও মার্কড অব কেইন- এই দুটি ভাগে৷ ভিন্নগ্রহবাসী স্ক্রিনকেও দেয়া হয়েছে দুটি রূপ- র্যা পটর ১৭ ও ট্রাভেলার ৫৯৷



গেমে শুধু নতুন জাতিই যুক্ত হয়নি, সেই সাথে প্রতিটি জাতির সাথে দেয়া হয়েছে বেশ কিছু নতুন ও অত্যাধুনিক ইউনিট৷ নডের সাথে যুক্ত নতুন ইউনিটগুলো হচ্ছে The Awakened, Tiberium Trooper, Confessor Cabal নামের তিনটি নতুন পদাতিক সৈন্যবাহিনী৷ এর মধ্যে Awakened হচ্ছে মৃত সৈন্যদের থেকে উদ্ভাবিত কৃত্রিম সৈন্যদল, যারা শুধু কেইনের আদেশ মানার জন্য বিশেষভাবে তৈরি৷ অন্য ট্রুপগুলোও আরো উন্নত ও শক্তিশালী করে তৈরি করা হয়েছে৷ আগের Avatar-এর সাথে বাড়তি কিছু সুবিধাযোগে তাকে নাম দেয়া হয়েছে Purifier৷ কিছু শক্তিশালী ও দারুণ বিধ্বংসী ক্ষমতাযুক্ত ট্যাঙ্ক গেমে এনেছে নতুন মাত্রা, যা নড নিয়ে খেলার আনন্দ অনেকগুণে বাড়িয়ে দেবে৷ এগুলোর মধ্যে Mantis অন্যতম, যা আকাশ ও স্থলপথের শত্রু নির্মূলে ব্ল্যাক হ্যান্ডের পক্ষে এক দারুণ সংযোজন, এছাড়া আরো আছে Reckoner নামের অস্ত্রযুক্ত সৈন্য পরিবহনের যান যা চলমান বাঙ্কার হিসেবে বেশ কাজে দেয় এবং সবচেয়ে দূরপাল্লার যুদ্ধযান Specter যা শত্রু পক্ষের আওতার বাইরে থেকেই আক্রমণ করতে সক্ষম৷ আরো একটি নতুন সংযোজন হচ্ছে Enlightened, যা বেশ দ্রুতগতিসম্পন্ন ও শত্রু পক্ষের যুদ্ধযানকে নিষ্ক্রিয় করতে বেশ কাজে দেয়৷

জিডিআই টিমকে আকাশপথের আক্রমণ প্রতিরোধের সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এবং এটি সম্ভব হয়েছে নতুন সংযোজিত দুটি যান দিয়ে৷ এগুলো হলো Slingshot (যাগেমের সবচেয়ে শক্তিশালী এন্টি-এয়ারক্রাফট) এবং Hammerhead নামক সৈন্য পরিবহনকারী এন্টি-এয়ারক্রাফট৷ জিডিআইয়ের আরেকটি টিম স্টিল ট্যালনের দলে সংযোজন করা হয়েছে Heavy Harvester, Repair APC, GDI Steel Talons Titan এবং Wolverine৷ সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই টিমে যুক্ত করা কম্বব্যাট ইঞ্জিনিয়ার, যা কিনা জিডিআইয়ের ভুঁড়িওয়ালা শ্লথগতির ইঞ্জিনিয়ার থেকে অনেক দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং বিপরীত পক্ষের জিডিআইয়ের ইঞ্জিনিয়ার, নডের স্যাবোটেয়ার ও স্ক্রিনের অ্যানিমিলেটরকে মারার জন্য একে দেয়া হয়েছে একটি পিস্তল, কিন্তু এটি সৈন্যদের বিরুদ্ধে তেমন কার্যকর নয়৷ এছাড়া এতে পুরনো ইউনিট Juggernaut নামক রোবটকে আরেকটু উন্নত করে তৈরি করে নাম দেয়া হয়েছে Behemoth৷ জিডিআই ZOCOM টিমে দেয়া ইউনিটগুলো হচ্ছে Zone Raider নামের বিশেষ ট্রুপ, Shatterer নামের একের অধিক লক্ষ্যে আঘাত করার ক্ষমতাসম্পন্ন সনিক-ইমিটার ক্যাননযুক্ত ট্যাঙ্ক এবং Rocket Harvester৷

ভিনগ্রহ থেকে আগত স্ক্রিনের সাথে যুক্ত নতুন সদস্যগুলো হলো Reaper Tripod, Shard Walker, Prodigy, Cultist, Ravager এবং Mechapede৷ গেমে প্রতিটি জাতিতে সবচেয়ে আকর্ষণীয় নতুন সংযোজন হচ্ছে দানবাকার কিছু ইপিক ইউনিট৷ জিডিআই টিমের ইপিক ইউনিটের নাম দেয়া হয়েছে GDI MARV (Mammoth Armed Reclamation Vehicle), এটি তিন ব্যারেলবিশিষ্ট ও চারটি পদাতিক বাহিনী বহন ক্ষমতাসম্পন্ন বিশাল ট্যাঙ্ক৷ নডের পক্ষের এই বিশালাকার ইউনিটের নাম Nod Redeemer, এটি হচ্ছে অ্যাভাটার রোবটটির বৃহদাকার সংস্করণ এবং এটিতে তিন ব্যারেলের লেজারগান ও দুই ট্রুপ সৈন্য বহন করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে৷ সবশেষে আসা যাক স্ক্রিনের বিশাল ইউনিটের কথায়৷ এটি হচ্ছে ছয় পা যুক্ত মাকড়সা জাতীয় একটি বিশালাকার প্রাণী যা কি না শক্তিশালী প্লাজমা ডিস্ক ছুড়তে সক্ষম ও সেই সাথে তিন ট্রুপ সৈন্য বহনে বেশ কার্যকর৷

গেমের গ্রাফিক্স এককথায় অসাধারণ৷ ডিরেক্ট এক্স ১০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ডে ফুল ডিটেইলসে গেমটি খেললে গেমের গ্রাফিক্স প্রায় বাস্তব মনে হয়৷ গেমে সাউন্ড কোয়ালিটিও খুবই উন্নতমানের৷ তাই আর দেরি কেন, আজই গেমটি কিনে ভবিষ্যতের কাল্পনিক ও অত্যাধুনিক যুদ্ধে মত্ত হয়ে যান পিসির সামনে৷

যা যা প্রয়োজন

প্রসেসর : ২ গি.হা.
র্যা ম : ৫১২ মে.বা.
গ্রাফিক্স কার্ড : ১২৮ মে.বা. (জিফোর্স৬সিরিজ)
হার্ডডিস্ক : ৬ গি.বা.


ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - আগস্ট সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস