• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সিঙ্কিং আইল্যান্ড
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:৫৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেমকমপিউটার গেম, 
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সিঙ্কিং আইল্যান্ড


অ্যাডভেঞ্চার ধাঁচের গেম সাইবেরিয়া সবাই না খেলে থাকলেও অন্তত নাম সবারই জানা৷ সাইবেরিয়া গেমটির পাবলিশার ছিলো Microids, গেমটি তৈরি করা হয়েছিলো বিখ্যাত কমিকস আর্টিস্ট ও অ্যাডভেঞ্চার গেম ডেভেলপার Benoit Sokal-এর নির্মিত কাহিনী অবম্বলনে এবং গেমটি সেই সময় খুবই জনপ্রিয় হয়েছিলো৷ অনেকদিন পর Microids কোম্পানির ব্যানারে Benoit Sokal-এর প্রতিষ্ঠিত হোয়াইট বার্ড প্রোডাকশন থেকে Sinking Island নামের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার ধাঁচের এই গেমটি রিলিজ পেয়েছে৷ গেমটি অনেকটা সাইবেরিয়া গেমটির মতো থার্ড পার্সন অ্যাডভেঞ্চার গেম যেখানে শুধু মাউস পয়েন্টার ব্যবহার করেই পুরো গেমটি খেলা যাবে, কী-বোর্ড ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না৷



গেমটির কাহিনী গড়ে উঠেছে ওয়াল্টার জোনস নামের এক বিপত্নীক ধনকুবেরের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনকে কেন্দ্র করে৷ ওয়াল্টার জোনস মৃত্যুর আগে সাগোরা নামের একটি ট্রপিক্যাল আইল্যান্ডে বিশালাকার হলিডে রিসোর্ট তৈরি করার পরিকল্পনা করেন৷ তিনি লরেঞ্জো নামের এক প্রখ্যাত আর্কিটেকচারের সহায়তায় সেই দ্বীপে আর্ট ডেকো টাওয়ার নামের বিশাল আন্তর্জাতিক হলিডে রিসোর্টটি তৈরির কাজ হাতে নেন, যার উপরে হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার সুব্যবস্থাও রয়েছে৷ কিন্তু রিসোর্টটির কাজ পুরোপুরি শেষ হবার আগেই তিনি রিসোর্টটির সামনে এক ঝড়ের রাতে সমুদ্রসংলগ্ন উঁচু চূড়া হতে হুইল চেয়ার থেকে নিচে পড়ে মারা যায়৷ সে মারা যাওয়ার পর তার ব্যক্তিগত উকিল হিউবার্ট ডি নোলেন পুলিশে খবর দেয় এবং পুলিশের তরফ থেকে তদন্ত করার জন্য একজন ইন্সপেক্টরকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়৷ গেমের রহস্য ভেদ করার জন্য ইন্সপেক্টর জ্যাক নর্ম-এর ভূমিকায় খেলতে হবে গেমারকে৷ গেমের প্রথম কাজ হবে যে ওয়াল্টার জোনসের মৃত্যু কি কোনো দুর্ঘটনা নাকি খুন তা বের করা৷

যখন জ্যাক নর্ম ঘটনাস্থলে মৃত ওয়াল্টার জোনসের মুখে ‍আঁচড়ের দাগ ও একটি ভাঙ্গা নখের টুকরো দেখতে পায় তখন সে বুঝতে পারে ওয়াল্টারের মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং কেউ তার মৃত্যুর ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু সময়ের অভাবে ঠিকমতো ঘটনাটা সাজাতে পারেনি৷ ওয়াল্টার মারা যাওয়ার সময় দ্বীপে প্রায় ১০ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলো৷ এছাড়াও যেখান থেকে ওয়াল্টার নিচে পড়ার আগে কারো সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে হুইল চেয়ারসহ পাথরে বাড়ি খেয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছে সেটাও বুঝা যায় পাথরে রক্তের দাগ ও বালিতে হুইল চেয়ারের এলোমেলো দাগের সঙ্গে অন্য কারো পায়ের দাগ দেখে৷ নোলেন জানায় যে, ঘটনার রাতে সে লরেঞ্জো ও বায়িনাকে সমুদ্রের কাছে দেখেছে৷ এখানে বলে রাখা ভালো, বায়িনা হচ্ছে সেই দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা কোলিও নামের এক মাঝির সুন্দরী মেয়ে৷ বুড়ো ওয়াল্টার তার থেকে বয়সে অনেক ছোট বায়িনার প্রেমে পড়ে যায়, ওয়াল্টার দ্বীপে পুরনো উঁচু পিরামিডের মতো স্থানে (দ্বীপের বাসিন্দারা একে হাউইতা নামে চেনে) বায়িনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, কিন্তু বায়িনা তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, এতে বুড়ো প্রস্তাব স্বীকার করে নেয়ার জন্য তাকে জোরাজুরি করার এক পর্যায়ে ওয়াল্টার ও বায়িনা উভয়েই পা পিছলে ওপর থেকে পড়ে যায়, এই দুর্ঘটনায় ওয়াল্টার তার পায়ে আঘাত পায় এবং বায়িনা তার কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে৷ তার পর থেকে বায়িনা ওয়াল্টারকে ঘৃণা করতে শুরু করে৷

ওয়াল্টারের মৃত্যুর ঘটনাস্থলে পায়ের ছাপের সঙ্গে বায়িনার পায়ের ছাপ মিলে যায় এবং তার মুক্তোর মালার ছেঁড়া অংশও পাওয়া যায়৷ এছাড়া একটি কোটের ছেঁড়া অংশও সেখানে পাওয়া যায়৷ বায়িনাকে নর্ম তার পায়ের ছাপ ও মালার ব্যাপারে বললে সে কোনো উত্তর দেয় না, কিন্তু তার বাবা কোলিও বলে যে বায়িনা প্রতিদিন সৈকতে বেড়াতে যায়, তার পায়ের ছাপ সেখানে থাকতেই পারে এবং মালা থেকেও কিছু মুক্তো খুলে পড়া বিচিত্র কিছু নয়৷ কোলিও আরো জানায়, ঘটনার রাতে বায়িনা ঘরেই ছিল৷ কিন্তু নর্ম আরো লক্ষ করে যে বায়িনার এক আঙ্গুলের নখ ভাঙ্গা৷ এছাড়া কোলিও ও তার মেয়ের ঝুপড়ি থেকে নর্ম একটি বড় হীরা পায় যা ওয়াল্টার বায়িনার অভিমান ভাঙ্গানোর জন্য দিয়েছিলো৷



গেমের অন্যান্য চরিত্রের মধ্যে রয়েছে ওয়াল্টারের নাতনি সোনিয়া জোন্স ও তার স্বামী মার্টিন, ওয়াল্টারের বড় নাতি মার্কো জোনস ও তার স্ত্রী ক্রিসটিনা এবং ছোট নাতি বিলি জোনস ও তার স্ত্রী ক্লারা৷ মার্কো জোনস একজন রাজনীতিবিদ এবং বুড়ো ওয়াল্টার তাকে খুব পছন্দ করতো৷ কিন্তু সোনিয়া ও বিলির সঙ্গে তার সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না৷ ওয়াল্টার বিলিকে পছন্দ করতো না তার উগ্র স্বভাব ও জুয়া খেলার জন্য৷ এদিকে বিলিও ওয়াল্টারকে ঘৃণা করত তার জুয়া খেলার টাকা না দেয়ার জন্য এবং বায়িনার সঙ্গে বুড়োর সম্পর্কের কারণে৷ বুড়ো সব নাতি-নাতনিকে তার রিসোর্টে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসেছিলো তার সব সম্পত্তি তাদের মধ্যে ভাগ করে দেয়ার জন্য৷ কিন্তু ভাগবাটোয়ারা করার আগেই তার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে৷

গেমে নর্মকে নিয়ে সবার জুতোর ছাপ, হাতের নখের ছবি তুলে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া পায়ের ছাপ ও অন্য সূত্রগুলো মিলিয়ে দেখতে হবে৷ এছাড়া সবাইকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে৷ তাদের সবার বক্তব্য নিয়ে সেগুলো মিলিয়ে দেখতে হবে যে কোথাও কোনো ফাঁক আছে কি-না৷ গেমে নর্মকে নিয়ে রিসোর্টটির বিভিন্ন ফ্লোরে ও দ্বীপের নানা স্থানে ঘুরে বেড়াতে হবে গেমারকে এবং সেই সঙ্গে সন্দেহজনক সব জিনিস সংগ্রহ করতে হবে- যা কেসটি সমাধান করতে সহায়তা করবে৷ গেমে বিভিন্ন বক্তব্য, ডকুমেন্ট, খুঁজে পাওয়া বস্তু, পায়ের ছাপ ও অন্য তথ্যগুলোকে কষ্ট করে গেমারকে মেলাতে হবে না এবং সবগুলো চরিত্রের নাম মনে রাখার দরকার নেই৷ গেমে Personal Police Assistant (PPA) নামের একটি মেনু থাকবে৷ এটি তিনটি অংশে বিভক্ত, যার প্রথম অংশের নাম ক্যারেক্টার ডাটাবেজ৷ এখানে গেমের সব চরিত্রের নাম, পেশা, বাসস্থান এবং যেকোনো সময় তারা দ্বীপের কোথায় আছে তার অবস্থান জানা যাবে৷ দ্বিতীয় ‍অংশের নাম ক্লু ডাটাবেজ৷ এখানে নর্মকে নিয়ে সংগৃহীত সব তথ্য জমা হবে এবং সবার বক্তব্য রেকর্ড করা থাকবে, কোনো কথা পরে আবার শুনতে চাইলে সেই মেনুতে গিয়ে তা আবার দেখা যাবে৷ দুটি বস্তুর মধ্যে মিল খুঁজতে চাইলেও মেনুর কম্পেয়ার অপশনে গিয়ে তাদের মধ্যে মিল খোঁজা যাবে৷ আর তৃতীয় অংশে গেমের অগ্রগতি দেখা যাবে৷ সাধারণত গেমে মাউস পয়েন্টার সোনালি রিঙের মতো থাকে কিন্তু কোনায় যেতে চাইলে তার আকার তীরচিহ্নের মতো হয়ে যায়, কোনো জায়গা বড় করে দেখার দরকার হলে ম্যাগনিফাইং গ­াসের মতো আকার হয়, কোনো কিছু নেয়ার মতো থাকলে হাতের আকার এবং কোনো কিছু করার থাকলেও পয়েন্টারের আকার পরিবর্তন হয়ে যায়- যার ফলে গেমার খুব সহজেই কি করতে হবে তা বুঝতে পারে৷

গেমের গ্রাফিক্স কোয়ালিটি বেশ ভালো কিন্তু এই ধরনের গ্রাফিক্সকে থ্রিডি গ্রাফিক্স বলা ঠিক হবে না, আবার টুডি গ্রাফিক্সও বলা যায় না৷ সব চরিত্র, দ্বীপের কিছু নারিকেল গাছ ও অন্যান্য কিছু বস্তু থ্রিডি হলেও বেশিরভাগ স্থির এলাকাগুলো টুডি গ্রাফিক্সের অন্তর্ভুক্ত, তাই একে 2.5D গেম বলাই যুক্তিযুক্ত৷ গেমের সাউন্ড কোয়ালিটিও চমত্কার, কেননা প্রতিটি চরিত্রের বাচনভঙ্গি ও গলার স্বর আলাদা আলাদা ব্যক্তির দেয়া৷ গেমটি সংলাপনির্ভর হওয়ায় ও কোনো অ্যাকশন না থাকায় অ্যাকশনপ্রিয় গেমারদের হয়ত ভালো নাও লাগতে পারে, কিন্তু বুদ্ধি খাটাতে চাইলে গেমটি কিনে ওয়াল্টার জোনসের মৃত্যুর রহস্য সমাধানে জ্যাক নর্ম হয়ে তদন্তে নেমে যেতে পারেন৷


যা যা প্রয়োজন

প্রসেসর : ১.৫ গি.হা.
র্যা ম : ৫১২ মে.বা.
এজিপি : ৬৪ মে.বা.
হার্ডডিস্ক স্পেস : ৩ গি.বা.

ফিডব্যাক : shmt_15@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস