লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - সেপ্টেম্বর
৩য় মত
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সফল হোক
ভারতসহ উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের তরুণ মেধাবীদের ফ্রিল্যান্সিংয়ের জগতে প্রবেশ ঘটেছে বেশ দেরিতেই বলা যায়। তবে এ কথা সত্য, ফ্রিল্যান্সিংয়ের জগতে বাংলাদেশীরা একটু দেরিতে বিচরণ করতে শুরু করলেও ইতোমধ্যে বেশ সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। শুধু তাই নয়, এ দেশের তরুণেরা ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্রিল্যান্সারদের হটিয়ে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে এবং শীর্ষস্থানীয়দের তালিকায় নিজেদের নাম লিপিবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। সাবাশ বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের যেসব তরুণ ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে, তাদের বেশিরভাগই দারুণভাবে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। এসব তরুণ একদিকে যেমন দুর্বিষহ বেকারত্বের অভিশাপ থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছে, অপরদিকে স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে, যা প্রকারামেত্ম দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বলিষ্ট অবদান রাখে।
একটু দেরিতে হলেও সরকার যথার্থ উপলব্ধি করে যে আউটসোর্সিং এক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে স্বাধীন ও মুক্ত পেশাজীবীদের জন্য। তাই সরকার দেশে অনলাইনে কর্মসংস্থান ও আউটসোর্সিংয়ে দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষে ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার এক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বস্ত্তত তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে আগামী দিনের জন্য অভিজ্ঞ ও দক্ষ জনবলের সঙ্কট মেটানোর লক্ষে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। এর পাশাপাশি দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের লক্ষে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতেও গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় ২০ হাজার আইসিটি গ্র্যাজুয়েট এবং ২০ হাজার সায়েন্স গ্র্যাজুয়েটকে প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। দেশে ও বিশ্ববাজারে যোগ্য ও উপযুক্ত কর্মসংস্থানের লক্ষে তৃণমূলের গ্র্যাজুয়েটদের অবহিত করতে জেলা প্রশাসকদেরও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান এবং ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের বিষয় ছাড়া দেশের বাইরে কর্মসংস্থানক্ষে লক্ষে বৃহৎ পরিসরে এটিই প্রথম উদ্যোগ।
অনলাইনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সারাদেশের ৬ জেলায় স্বনির্ভর বাংলাদেশের সহায়তায় বেসিক ও অ্যাডভান্স পর্যায়ে ফ্রিল্যান্সার তৈরির লক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার, যা অনেকেরই অজানা ছিল এ কর্মসূচির আওতায় ১৮০টি ব্যাচে ১১ হাজার ৩৬০ জনকে প্রশিক্ষণ দেবে সরকার। শোনা যাচ্ছে, ইতোমধ্যে ৮৩টি ব্যাচে ৬ হাজার ১৮০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, যা অনেকেরই অজানা।
আমরা সরকারের এ ধরনের গৃহীত কর্মসূচিকে স্বাগত জানাই এবং ভবিষ্যতে সরকার এ ধরনের আরও কর্মসূচি গ্রহণ করবে, যাতে দেশের বেকারত্ব দূর হয়। এ ধরনের কর্মসূচির জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও থাকা দরকার, যাতে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। আরেকটি বিষয়, ইতোমধ্যে যে ৮৩টি ব্যাচে ৬ হাজার ১৮০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে তাদের বর্তমান অবস্থা কেমন তার প্রতি নম্বর রাখা দরকার। অন্যথায় সরকারের গৃহীত এই ভালো কাজটি ব্যর্থ হতে বাধ্য। তাছাড়া আমাদের মনে রাখা দরকার, এ প্রকল্পে সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ইতোপূর্বে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় পদ্মা সেতুতে আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তার পরবর্তী কোনো প্রকল্পে এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপিত হোক তা আমাদের কারও কাম্য নয়। তাই বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় চলমান এ প্রকল্প সফলতার মুখ দেখুক, তা আমরা সবাই চাই।
সাদিয়া রহমান
দুমকি, পটুয়াখালী।
বাংলাদেশে বিপিও স্থাপনে
পরিবেশ তৈরি করা হোক
বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং তথা বিপিওর কার্যক্রমে ইতোমধ্যে ভারত, ভিয়েতনামসহ এশিয়ার অনেক দেশ এগিয়ে গেলেও এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। সম্প্রতি জাপানের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এনটিটি ডাটা বাংলাদেশে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) কেন্দ্র স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে। এরা বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী। জাপানি এ সংগঠনটি বাংলাদেশের সফটওয়্যার ডেভেলপারের দক্ষতা বাড়াতে কার্যক্রম উদ্যোগ গ্রহণের আগ্রহ দেখিয়েছে। এনটিটি ডাটা গ্রম্নপের ৩৪টি দেশের ১৩৬টি শহরে কার্যক্রম রয়েছে। এদের মোট কর্মীসংখ্যা ২ লাখ ২৫ হাজার। এশিয়ায় তাদের বৃহত্তম অপারেশন ভারতে। ভিয়েতনামে তাদের নিজস্ব আইসিটি কেন্দ্র রয়েছে।
আমরা প্রত্যাশা করছি, এনটিটির আগ্রহ যাতে বাসত্মবায়িত হয় সেজন্য বিসিএস কার্যকর সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর ফলে দেশে সফটওয়্যার ডেভেলপারদের মানোন্নয়ন যেমন হবে, তেমনি আন্তর্জাতিক মানের কাজ করার অভিজ্ঞতা বাড়বে। বিপিও কেন্দ্র স্থাপনে জাপানের আগ্রহ বাসত্মবায়িত হোক- এ প্রত্যাশায় রইলাম।
হাফেজ মোহাম্মদ রোকন
কোটালিপাড়া, গোপালগঞ্জ।