লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - সেপ্টেম্বর
৩য় মত
ডিজিটাল বাংলাদেশ মুখের বুলি হিসেবে দেখতে চাই না
এ কথা সত্য ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পদবাচ্যটি এদেশের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বুঝে হোক বা না বুঝে হোক বর্তমানে এ শব্দ দু’টি সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। আমাদের দেশে ক্ষমতাসীন নেতারা তাদের বক্তব্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা ব্যক্ত করছেন অহরহ। এটা অবশ্যই শুভ লক্ষণই বলা যায়।
এই তো সেদিন অর্থাৎ ১২ আগস্ট ২০০৯-এ বাংলাদেশ অবজারভারের উদ্যোগে আয়োজিত হলো ‘রোডম্যাপ ফর ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও বিশেষ অতিথি ছিলেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। মাঝেমধ্যে কমপিউটার জগৎ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর ওপর ভিত্তি করে বেশ কিছু গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করেছে। এখন দৈনিক পত্রিকাগুলো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর ওপর বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট বিষয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করছে, যা ইতোপূর্বে কখনোই দেখা যেত না। নিঃসন্দেহে এটা ইতিবাচক দিক। বাংলাদেশ অবজারভারের উদ্যোগে আয়োজিত এই গোলটেবিল বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কি কি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো আর কি কি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো না সেই বিষয়কে আমি বিবেচ্য হিসেবে নিচ্ছি না। আমি দেখছি এটিকে এক ইতিবাচক দিক হিসেবে। এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বা মনোভাবকে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সুতরাং আমাদের লক্ষ রাখতে হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ পদবাচ্যটি যেন গোলটেবিল বৈঠক, সভা-সেমিনারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে বা রাজনীতিবিদদের মুখের বুলি না হয়ে যায়। আমাদের সবাইকে নজর দিতে হবে কথার চেয়ে বেশি কাজে। সুতরাং সে লক্ষ্যে অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যেমনি চাই সঠিক নীতিমালা ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ তেমনি চাই বেসরকারি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে অর্থাৎ বেসিস, বিসিএস এবং আইএসপিবির সঠিক পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা ও কার্যকর পদক্ষেপ। এসব সংগঠনের পরামর্শ বা দিকনির্দেশনাগুলো যেন গঠনমূলক ও অর্থনীতির উন্নয়নসংশ্লিষ্ট হয় সে ব্যাপারে অবশ্যই আমাদেরকে নজর দিতে হবে।
পারভেজ
খাকডহর, ময়মনসিংহ
গণিত অলিম্পিয়াডকে উৎসাহিত করা হোক
আমরা প্রায় ১৫ কোটি জনগণের দেশের। এদেশের জনগণের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন আছেন, যাদের ব্যক্তিগত প্রতিভা বা সাফল্যে আমরা গর্ববোধ করতে পারি। ব্যক্তিগত প্রতিভা বা সাফল্যের জন্য যেমনি দরকার কঠোর সাধনা, প্রচেষ্টা, অধ্যবসায়, তেমনি এর পাশাপাশি দরকার সরকারি, বেসরকারি বা সাংগঠনিক পৃষ্ঠপোষকতা যা এ প্রতিভা বিকাশে অনুপ্রাণিত এবং উৎসাহিত করবে। আমাদের দেশে ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিভা বিকাশে বা উৎসাহ প্রদানে কিছু কিছু কার্যক্রম ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে ক্রীড়া ক্ষেত্রে, সঙ্গীত ক্ষেত্রে, চলচ্চিত্রে। দুঃখজনক হলেও সত্য এসব ক্ষেত্রে জাতি প্রচুর টাকা খরচ করেও দুর্নাম ছাড়া কাঙ্ক্ষিত সম্মান অর্জন করতে পেরেছে খুব কমই। এজন্য এসব ক্ষেত্রের পৃষ্ঠপোষকতার বিরোধিতা করছি না। আমি মনে করি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে চাইলে দরকার সঠিক পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষকতা।
আমাদের দেশের প্রতিভাবান তরুণ গণিতবিদরা সবরকম পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই যে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে তার জন্য আমরা গর্ববোধ করি। আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ও গণিত অলিম্পিয়াডে যে সাফল্যের তিলক এঁকেছে তাকে যদি আমরা যথাযথভাবে পরিচর্যা ও উৎসাহ দিতে পারি, তাহলে নিঃসন্দেহে এক্ষেত্রটি হতে পারে গর্ব করার মতো ক্ষেত্র। কেননা আমাদের দেশের সন্তানেরা প্রাকৃতিকভাবে মেধাবী। এখন দরকার যথাযথ শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পাশাপাশি সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা। প্রয়োজনে যেসব ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পাল্লা ভারি, সেসব ক্ষেত্রের সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা অর্থাৎ আর্থিক সহযোগিতা কমিয়ে সম্ভাবনাময় খাতে যেমন গণিত ও কমপিউটার প্রোগ্রামারদের আর্থিক সহযোগিতা বাড়াতে পারে। এতে দেশের প্রতিভাধর মেধাবীদের বিকাশে যথেষ্ট সহায়ক হবে।
আলমগীর
চুয়াডাঙ্গা
বিতর্কিত লোকদের এড়িয়ে যান
আমি কমপিউটার জগৎ পত্রিকার অনেক পুরনো পাঠক। আমি মনে করি মাসিক কমপিউটার জগৎ দেশে সেরা আইটিবিষয়ক পত্রিকা। এ পত্রিকার ভালোমন্দ আমাকে ব্যথিত করে প্রচন্ডভাবে। তাই কোনোভাবে কোনো সমালোচনাও শুনতে চাই না, এই পত্রিকার বিরুদ্ধে। অবশ্য গঠনমূলক সমালোচনা হলে তার বিরোধিতা করি না কখনোই। কমপিউটার জগৎ-এর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয় না। এমন কথার অবতারণার পেছনে যৌক্তিকতা হলো :
যেহেতু আমি এ পত্রিকার একজন পাঠক তাই এ পত্রিকার প্রতিটি বিভাগ পড়ি, তবে আলোচনাধর্মী লেখাগুলো বেশি পড়ি। আমি একটা ব্যাপারে লক্ষ করেছি ইদানীং কমপিউটার জগৎ-এ এমনসব ব্যক্তির লেখা ছাপানো হচ্ছে যারা এক সময় বেশ প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। এরা তাদের কৃতকর্মের জন্য এদেশে বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত। এসব ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বা ধান্ধার জন্য সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে নিজের রূপও পাল্টাতে পারে। এরা সবসময় সুযোগ খুঁজতে থাকে, কখন কোন রূপ ধারণ করলে নিজের স্বার্থ হাসিল হবে। এরা সাধারণত নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য জনপ্রিয় পত্রিকাগুলো বেছে নিয়ে তাদের লেখা প্রকাশ করেন যেখানে নিজেদের অতীতের কৃতকর্মের গুণকীর্তন গান নির্লজ্জভাবে। যদিও তাদের সেই কৃতকর্মে তেমন সাফল্যের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। সুতরাং কমপিউটার জগৎ কর্তৃপক্ষের কাছে আমার অনুরোধ, এসব সুবিধাবাদী লোকদের যেন কমপিউটার জগৎ-এর কোনো পাতায় ঠাঁই না হয়। কেননা, আমি কোনোভাবেই চাই না, আমার প্রিয় পত্রিকা মাসিক কমপিউটার জগৎকে এসব বিষয় নিয়ে কেউ কটাক্ষ করুক। সেই সাথে এও চাই না যে, অজান্তে এ পত্রিকার সুনামকে পুঁজি করে সুবিধাবাদী কেউ তার স্বার্থ হাসিলে সক্ষম হউক বা কমপিউটার জগৎ তাদের স্বার্থ হাসিলের মাধ্যম হোক।
সঞ্চয় মৃধা (সবুজ)
আজিমপুর, ঢাকা
কমপিউটার বিজ্ঞানীদের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ চাই
বিজ্ঞান নিয়ে ভাবতে গেলে মনে হয়, আসলে কি আমরা বিজ্ঞানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি নাকি পিছিয়ে যাচ্ছি? আমরা যদি এগিয়ে যাই তবে কাকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, কে আমাদের পথ দেখাবে। আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা আজ কোথায়? বিজ্ঞানী বলতে চিনি শুধু স্যার জগদীশচন্দ্র বসু এবং কুদরত-এ-খুদা এই দু’জনকে। ২০০২ সাল পর্যন্ত এই দু’জনকে চিনতাম। ২০০৩ সালে একটি ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে আরো বেশ কিছু বিজ্ঞানীর নাম জানলাম কিন্তু এখনো তাদের কাজ সম্পর্কে জানি না। এদের কয়েকজন হলেন-মেঘনাদ সাহা, সূর্যকুমার গুডিভ চক্রবর্তী, যাদবচন্দ্র চক্রবর্তী, সত্যেন্দ্রনাথ বসুসহ আরো অনেকে। আমাদের দেশে অনেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আছে কিন্তু এই সব বিজ্ঞানীর নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়নি কেন? কমপিউটার জগৎ-এর কাছে আমার আবেদন- আমাদের বিজ্ঞানীদের স্মরণে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চালু করা হোক, যেখান থেকে নাম না জানা অনেক বিজ্ঞানী সম্পর্কে জেনে আমরা যেন বিজ্ঞানমুখী হতে পারি।
ইরম্মদ রহমান