লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ তুষার
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - ফেব্রুয়ারী
এএমডি আর সিরিজের নতুন গ্রাফিক্স কার্ড
এটিআই (ATi) তথা অ্যারো টেকনোলজিস ইনকর্পোরেট (Aero Technologies incorporate) হচ্ছে গ্রাফিক্স জগতের এক নতুন জাদুকর। কানাডিয়ান এই প্রতিষ্ঠানটি লি কা লউ, বেনি লউ, কেওয়াইহর হাত ধরে ১৯৮৫ সালে যাত্রা শুরম্ন করে। প্রাথমিকভাবে এরা কমপিউটারের জন্য চিপ তৈরি করলেও পরে এরা গ্রাফিক্সের চিপ তৈরি করা শুরম্ন করে। ২০০০ সালের দিকে বেশকিছু গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে ছাড়লেও এনভিডিয়ার কাছে চরমভাবে পরাসত্ম হয়। তারপর ভাঙা-গড়ার খেলায় ২০০৬ সালে এএমডি কিনে নেয় এই জিপিউ ও মাদারবোর্ডের চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে। তখন নাম পাল্টে রাখা হয় ‘এএমডি গ্রাফিক্স প্রোডাক্ট গ্রুপ’। কিন্তু এরা এটিআইকে তাদের প্রোডাক্ট নাম হিসেবে এতদিন ব্যবহার করে আসলেও বর্তমানে ৬০০০ সিরিজ থেকে এদের নাম পরিবর্তন করে এএমডি রেডন (AMD Radeon) নামে বাজারজাত করা শুরু করে।
২০০৭ সালের দিকে সম্পূর্ণ পাল্টে যেতে থাকে এই কোম্পানিটি। এএমডির অধীনে প্রাণ ফিরে পায় কোম্পানিটি। এরই ধারাবাহিকতায় একে একে ৩০০০ ও ৪০০০ সিরিজ বাজারে এনে শক্তির আভাস দিতে শুরু করে এটিআই। এরপর ২০০৯ সালে ৫০০০ সিরিজ বাজারে আনে এটিআই, যা গ্রাফিক্স জগতে এক নতুন সম্রাটের আগমনী বার্তা জানান দেয়। খুবই কম বিদ্যুৎ খরচ করে, কম দাম এবং এনভিডিয়ার জিটিএক্স ২০০ সিরিজ থেকে ভালো পারফরম্যান্সের কারণে বাজারের সেরা এবং প্রথম পছন্দের কার্ড হয়ে উঠে এটি, যা এনভিডিয়াকে মোটামুটি ভালোই ধাক্কা দেয়। আর এই সিরিজে চমকপ্রদ সব ফিচার একে আরও উচ্চতায় নিয়ে যায়। ওই বছরের সেরা গ্রাফিক্স সিরিজ হিসেবে ৫০০০ সিরিজ নির্বাচিত হয়। এরপর থেকেই একের পর এক ধাক্কা দিতে থাকে এই কোম্পানিটি।
মূলত কম দামে ভালোমানের পণ্য সরবরাহ করায় এটিআইয়ের কাছে এনভিডিয়ার জনপ্রিয়তা দিন দিন কমতে থাকে। আর নতুন নতুন সব গ্রাফিক্স কার্ড ও বিশ্বসেরা সব প্রযুক্তি, কম বিদ্যুতে ভালো পারফরম্যান্স ও কম দামের হওয়াতে ২০১০-১১ সালের পুরোটাই এটিআইয়ের দখলে থাকে। ২০১০-১১ সালে এটিআইয়ের কাছে এনভিডিয়া ৮ শতাংশ বাজার হারায়। এবার দেখা যাক এটিআইয়ের কিছু চমকপ্রদ ফিচার, যা একে অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে তুলেছে।
২০১৩-১৪ সালে এএমডি রেডন বাজারে ছেড়েছে তাদের নতুন গ্রাফিক্স প্রসেসর আরনাইন-২৯০এক্স। এর কোড নেম হুয়াওয়ে । এবার এএমডির বের করার কথা ছিল এইচডি৮৯৭০, কিন্তু এরা নতুন একটি সিরিজ বের করে। এর ফলে ক্রেতারা সহজেই মডেলগুলোর নাম মনে রাখতে পারবেন। আসল সিরিজের নাম আরনাইন ।
আরনাইন-২৯০এক্সে আছে ৬.২ বিলিয়ন ট্রানসিস্টর, ২৮১৬টি স্টিম প্রসেসর (একে কোর বলা হয়), ৪ জিবি ডিডিআর ৫ মেমরি, ১ গিগাহার্টজ ইঞ্জিন ক্লকস্পিড, ৫.০ গিগাবাইট পার সেকেন্ড মেমরি ক্লকস্পিড, ৩২০ গিগাবাইট পার সেকেন্ড ডাটা ব্যান্ডউইডথ, ৪৪ কমপিউটার ইউনিউনিত৫১২ বিট মেমরি ইন্টারফেস। এটি ডিরেক্ট-এক্স ১১.২, ওপেন জি-এল ৪.৩ সাপোর্ট করে। এ ছাড়া এএমডির নতুন ফিউচারে মান্টেল (গধহঃষব) আছে। এই গ্রাফিক্স প্রসেসরে ট্রু অডিও, জিসিএন গ্রাফিক্স কোর নেক্সট প্রযুক্তি আছে। এটি আগের মতোই ২৮ ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি। আরনাইন-২৯০এক্সে যুক্ত হয়েছে নতুন ক্রসফায়ারএক্স প্রযুক্তি। এর ফলে এখন ক্রসফায়ারএক্স সমর্থিত মাদারবোর্ডে দুই থেকে চারটি আরনাইন-২৯০এক্স লাগিয়ে দিলেই ক্রসফায়ারএক্স চালু হবে। কোনো ক্রসফায়ারএক্স ক্যাবল লাগবে না।
আরনাইন-২৯০এক্সে দুটি ডিবিআই পোর্ট, তিনটি এইচডিএমআই পোর্ট আছে। এটিতে সর্বোচ্চ ছয়টি মনিটরে সংযোগ দেয়া যাবে। এটি ৪কে (৪শ) রেজ্যুলেশন সাপোর্ট করবে।
গেমের ক্ষেত্রে আরনাইন-২৯০এক্স ৯৫৯৯ থ্রিডি মার্ক স্কোর।
ক্রাইসিস ৩-এ সর্বোচ্চ সেটিংয়ে এইটএক্স এমএসএএ (৮ঢ গঝঅঅ)সহ ১০৪ ফ্রেম পার সেকেন্ডে খেলা যাবে। বায়োশক ইনফিনিটি সর্বোচ্চ সেটিংয়ে ৯৫ ফ্রেম পার সেকেন্ডে খেলা যাবে।
আপাতত আরনাইন-২৯০এক্সের দাম ধরা হয়েছে ৫৫৯ মার্কিন ডলার। নিচে এটির সহজ একটি কনফিগারেশন দেয়া হলো যেনো বুঝতে সহজ হয়।
এএমডির এই আরনাইন সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ডের সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য ফিচার হলো : জিসিএন আর্কিটেকচার, আল্ট্রা রেজ্যুলেশন গেমিং, মান্টেল, এএমডি আইফাইনিটি প্রযুক্তি, এএমডি ক্রসফায়ারএক্স প্রযুক্তি, এএমডি পাওয়ার প্রযুক্তি, এএমডি এইচডি থ্রিডি প্রযুক্তি ও এএমডি সবসময় কম দামে ভালো জিনিস দেয়। এর ফলে এটি রিলিজ হওয়ার সাথে সাথে প্রায় ১ লাখ পার্টস বিক্রি হয়েছে
ফিডব্যাক : www.facebook.com/tusher16