চীনের আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান ফাউন্ডার টেক লিমিটেডের তৈরি বিশ্বখ্যাত ফাউন্ডার ল্যাপটপ বাংলাদেশে বাজারজাত করছে মওলানা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পাওয়ার প্লাস প্রা. লিমিটেড। দেশে চীনের যে কয়টি ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ আসছে, তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো ফাউন্ডার। এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য পর্যবেক্ষণ করে উন্নত মান নিশ্চিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে পাওয়ার প্লাস এ প্রতিষ্ঠানের পণ্য আনতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সারাদেশে ফাউন্ডারের ল্যাপটপ বাজারজাত করছে প্লাওয়ার প্লাসের কর্মী ও ডিলাররা।
সম্প্রতি কমপিউটার জগৎ-কে এ কথাই জানান প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ সৈয়দ আবু রাসেল।
তিনি বলেন, মওলানা গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম একটি হলো পাওয়ার প্লাস। ফাউন্ডারের পণ্য আমদানি করে নির্দিষ্ট চ্যানেলে বিতরণ করে প্রতিষ্ঠানটি। আপাতত ল্যাপটপ আমদানি করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে তাদের ডেস্কটপ, মনিটর, প্রিন্টারও আমদানি করা হবে।
সৈয়দ রাসেল বলেন
সৈয়দ রাসেল বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান যখন কোনো দেশের পণ্য আমদানি করে, তখন সেই প্রতিষ্ঠান ও পণ্য নিয়ে পরীক্ষামূলক যাচাই করা হয়। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সত্যি ওই পণ্যের মান ভালো, শুধু তাহলেই সেটি আমদানি ও বিতরণ করার উদ্যোগ নেয় প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, ফাউন্ডার ল্যাপটপ ক্রেতারা যাতে যথাযথ বিক্রয়োত্তর সেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় তাদের সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগ দেয়া আছে। শিগগিরই চীন থেকে বিশেষজ্ঞরা আসবেন। তারা ওই কর্মীদের ফাউন্ডার ল্যাপটপ সার্ভিসিংয়ের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবেন। ডিলারদেরও সমবেত করে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সৈয়দ রাসেল বলেন, গত ৬ মাস ধরে ফাউন্ডারের ল্যাপটপ আমদানি ও বিতরণ করছে পাওয়ার প্লাস। এর আগে এই প্রতিষ্ঠান কখনো ল্যাপটপ আনেনি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অফিস ও সার্ভিস সেন্টার থাকায় ক্রেতারা সহজেই সেখান থেকে ল্যাপটপ সংগ্রহ করতে এবং প্রয়োজনীয় বিক্রয়োত্তর সেবা পাবেন। ফাইন্ডার পণ্যের মান ও দামের জন্যই আমাদের আশা, পণ্যটি দেশে ভালো বাজার পাবে। কারণ, গ্রাহক সব সময় চায় সাশ্রয়ী দামে উন্নতমানের পণ্য, যার সমন্বয় ঘটেছে ফাউন্ডার পণ্যে। তাছাড়া পণ্যে রয়েছে এক বছরের ওয়ারেন্টি। গ্রাহকের পণ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তিনি সোজা তা নিয়ে যাবেন সার্ভিস সেন্টারে, সেখানের কর্মীরা সমস্যা চিহ্নিত করবেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে তারা ওই সমস্যাসম্বলিত পণ্য পাল্টে নতুন পণ্য দেবেন। চীনের পণ্যে ওয়ারেন্টি পাওয়াটা কঠিন হলেও ফাউন্ডারের সাথে পাওয়ার প্লাসের চুক্তি থাকায় সে ব্যাপারে ঝামেলা নেই।
সৈয়দ রাসেল বলেন, পাওয়ার প্লাসের কার্যক্রম মূলত শুরু হয় রেডফক্স ব্র্যান্ড দিয়ে। রেডফক্সের ইউপিএস দিয়ে বিপণন শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির। ইউপিএস ছাড়া রেডফক্সের মাউস, কীবোর্ডও আমরা এনেছি এবং এখনো আনছি। এর পাশাপাশি ইন্টেলের পণ্যও আমরা আনছি। এর মধ্যে রয়েছে প্রসেসর মাদারবোর্ড ইত্যাদি।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বের মানুষ এখন ডেস্কটপ কমপিউটার থেকে চোখ সরিয়ে ল্যাপটপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষও এর ব্যতিক্রম নয়। তাছাড়া যেভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে, ইউপিএস দিয়ে তার ব্যাকআপটা ঠিকমতো হয় না। কিন্তু ল্যাপটপে দীর্ঘ সময় চার্জ থাকে এমন একটি ব্যাটারি থাকে। ফলে দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ পাওয়া যায় এবং এটি বহন করাও সহজ।
সৈয়দ রাসেল বলেন, আমরা ফাউন্ডার ল্যাপটপের ওপর প্রমোশনাল অফার করেছি। স্টক যতদিন থাকবে ঠিক ততদিনই চলবে ওই অফার। অফারের আওতায় বিশেষ সাশ্রয়ী দামে ক্রেতারা কিনতে পারবেন ১ বছরের ওয়ারেন্টি সম্বলিত ল্যাপটপ। পাশাপাশি থাকছে নানা উপহার, যার মধ্যে রয়েছে কুলিং প্যাড, কেরিং ব্যাগ, স্পিকার এবং টি-শার্ট। তিনি বলেন, যেহেতু এটা নতুন কোম্পানির পণ্য, তাই আমরা ক্রেতাদের উৎসাহিত করতেই নানা উপহার ও সাশ্রয়ী দাম অফার করেছি। আমরা সব সময় গুরুত্ব দিই কোয়ালিটি, সার্ভিস ও প্রাইসের বিষয়টিকে। এটাই আমাদের মূলমন্ত্র। তিনি বলেন, ব্র্যাক ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকে শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে অর্থাৎ কোনো সুদ ছাড়াই ক্রেতারা অর্থ নিয়ে ফাউন্ডার ল্যাপটপ কিনতে পারবেন। এ ব্যাপারে পাওয়ার প্লাসের সাথে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে। এজন্য ক্রেতাকে ব্যাংকে যেতে হবে না। পাওয়ার প্লাস থেকে ওই দুই ব্যাংকের যেকোনো একটির ক্রেডিটকার্ড পাঞ্চ করে পণ্যটি কিনলেই চলবে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেই নোটিস চলে যাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে, যাতে করে ওই টাকার জন্য ৬ মাস কোনো সুদ দিতে না হয়। সাধারণত ৪৫ দিন অতিক্রম করলেই সুদ এবং অন্যান্য চার্জ দেয়ার বিধান রয়েছে। পাওয়ার প্লাস থেকে মূলত তিনটি সুবিধা ক্রেতা পাচ্ছেন সরাসরি। একটি হলো সাশ্রয়ী দামে ল্যাপটপ, যার প্রমোশনাল অফার ২৫ হাজার ৪৯৯ টাকা, নানা উপহার এবং শূন্য শতাংশ সুদে পণ্য কেনার সুযোগ।
তবে শূন্য শতাংশ সুদে ল্যাপটপ কিনতে হলে সরাসরি ঢাকা ও চট্টগ্রাম পাওয়ার প্লাসের অফিস থেকে কিনতে হবে। ডিলাররা এ সুবিধা দিতে পারবে না। পাওয়ার প্লাস এখন ফাউন্ডারের ৮টি মডেলের ল্যাপটপ বাজারজাত করছে।
এগুলো হলো :
ই১০২ :
ইন্টেল অ্যাটম প্রসেসর, ১ গি.বা. ডিডিআর২ র্যা ম, ৬০ গি.বা. হার্ডডিস্ক, ১০ দশমিক ২ ইঞ্চি স্ক্রিন, ১-৩ মেগাপিক্সেল ওয়েবক্যাম, ব্লুটুথ ইত্যাদি। দাম সাড়ে ২৫ হাজার টাকা।
আর৪১০এসইউ-৩০০০ :
ইন্টেল সেলেরন ডুয়ো প্রসেসর, ১ গি.বা. ডিডিআর২ র্যা ম, ১৬০ গি.বা. সাটা হার্ডডিস্ক, ১৪.১ ইঞ্চি ইত্যাদি। দাম সাড়ে ৩১ হাজার টাকা।
আর৩১০এসইউ-৩০০০ :
ইন্টেল সেলেরন ডুয়ো প্রসেসর, ১ গি.বা. ডিডিআর২ র্যা ম, ২৫০ গি.বা. সাটা হার্ডডিস্ক, ১৩.৩ ইঞ্চি স্ক্রিন ইত্যাদি। দাম সাড়ে ৩৩ হাজার টাকা।
আর৪১০আইইউ :
ইন্টেল ডুয়াল কোর প্রসেসর, ১ গি.বা. র্যা ম, ১৬০ গি.বা. হার্ডডিস্ক, ১৪.১ ইঞ্চি স্ক্রিন ইত্যাদি। দাম সাড়ে ৩৬ হাজার টাকা।
আর৩১০এসইউ-৪৩০০ :
ইন্টেল ডুয়াল কোর প্রসেসর, ২ গি.বা. ডিডিআর-২ র্যা ম, ৬২০ গি.বা. সাটা হার্ডডিস্ক, ১৩.৩ ইঞ্চি স্ক্রিন ইত্যাদি। দাম ৪০ হাজার টাকা।
এস৩৩০-৪১০০ :
ইন্টেল কুলভি সিপিইউ, ২ গি.বা. ডিডিআর২ র্যা ম, ২৫০ গি.বা. হার্ডডিস্ক, ১৩.৩ ইঞ্চি স্ক্রিন ইত্যাদি। দাম ৩৮ হাজার টাকা।
টি৪০০০আইজি-৬৬০০ :
ইন্টেল কোর২ ডুয়ো প্রসেসর, ২ গি.বা. ডিডিআর-২ র্যা ম, ৩২০ গি.বা. সাটা হার্ডডিস্ক, ১৪.১ ইঞ্চি স্ক্রিন ইত্যাদি। দাম সাড়ে ৪৬ হাজার টাকা।
টি৪০০০আইজি-৮৭০০ :
ইন্টেল কোর২ ডুয়ো প্রসেসর, ২ গি.বা. ডিডিআর-২ র্যা ম, ৩২০ গি.বা. সাটা হার্ডডিস্ক, ১৪.১ ইঞ্চি স্ক্রিন ইত্যাদি। দাম সাড়ে ৫৭ হাজার টাকা।
যোগাযোগ : ০১৯১৯১৬০১৪০, ০১৮১৭৭১৭৪৭৯
কজ ওয়েব