ওয়ারহ্যামার ৪০,০০০ সিরিজের ডন অব ওয়ার- ডার্ক ক্রুসেড গেমটির প্রকাশকাল হচ্ছে ২০০৬। এটি এ সিরিজের মূল গেমের দিবতীয় এক্সপানশন। প্রথম এক্সপানশন প্যাকটি হচ্ছে উইন্টার অ্যাসল্ট। এক্সপানশন প্যাক হলেও গেমটি খেলার জন্য মূল গেমটি পিসিতে ইনস্টল করা না থাকলেও হবে। গেমটি টার্নভিত্তিক রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি গেম। প্রত্যেক মিশন শেষে গেমারকে চাল সমাপ্ত করার নির্দেশ দিতে হবে। এটি অনেকটা দাবা খেলার মতো। অনেক ভেবেচিন্তে খেলতে হবে। গেমটি পাবলিশ করেছে THQ ও ডেভেলপ করেছে Iron Lore Entertainment ও Relic Entertainment। 
 
এতে আগের পর্বগুলোর চেয়ে কিছু নতুনত্ব আনা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- প্রতিটি জাতির সাথে যুক্ত হয়েছে এরিয়াল ইউনিট বা আকাশ থেকে আক্রমণ করতে সক্ষম ইউনিট এবং দেয়া হয়েছে নতুন কিছু ক্যাম্পেইন গেমপ্লে ফিচার। গেমটিতে আগের এক্সপানশন প্যাকে মোট পাঁচটি জাতি ছিলো, কিন্তু এ গেমে টাউ এম্পায়ার ও ন্যাক্রন নামের আরো দুটি নতুন জাতি সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আগের জাতিগুলোর নাম হচ্ছে- ক্যাওস, এল্ডার, ইম্পেরিয়াল গার্ড, ওর্ক এবং স্পেস মেরিন। প্রতিটি জাতির রয়েছে আলাদা ক্ষমতা, ভিন্নধর্মী ইউনিট এবং সুযোগসুবিধা। প্রতিটি জাতি নিয়ে খেলার মধ্যে রয়েছে পুরোপুরি আলাদা স্বাদ। যেকোনো জাতি নিয়ে গেম শুরু করলে অনেক ভাগে বিভক্ত গ্রহের একটি অংশ থেকে অন্য জাতিগুলোর সাথে যুদ্ধ করে তাদের হটিয়ে দিয়ে দখল করতে হবে গ্রহের পুরোটা। 
গেমারের দখল করা অংশে অন্য জাতি হামলা চালাবে, তাদেরকে শক্ত হাতে পরাস্ত করতে হবে এবং প্রতিটি এলাকা দখলের পর সে স্থানে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে সহজে অন্য কেউ তা দখল করতে না পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিজে মিশন না খেলে অটো-রিসলভ করার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি মিশনে ভালো খেলতে পারলে বোনাস দেয়া হবে কিছু স্পেশাল ইউনিট এবং হিরোর জন্য কিছু স্পেশাল এবিলিটি ও আপগ্রেড। নানারকম আপগ্রেডের মাধ্যমে হিরোর ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি করা যায় এবং শুধু হিরোকে দিয়েই অনেক ইউনিটের সাথে মোকাবেলা করা যায়। গেমে কোনো রিসোর্স পয়েন্ট দখল করার পর তা আপগ্রেড করে তাতে সুরক্ষা ব্যবস্থা দেয়া যায়। রিসোর্স পয়েন্ট থেকে শত্রুকে দূরে রাখার জন্য সেই পয়েন্টে স্থাপন করা যায় উচ্চক্ষমতার অস্ত্র। প্রতিটি জাতির বিল্ডিংয়ের আকারআকৃতি ও বানানোর কৌশল আলাদা রকমের। কোনো জাতির রিসোর্স সংগ্রহ করার ক্ষমতা বেশি, আবার কারো কম, কারো ইউনিটের শক্তি অন্যদের চেয়ে বেশি, কারো চলাচলের গতি অনেক বেশি, কারো আছে স্টিলথ টেকনোলজি তো কারো আছে শক্তিশালী ট্যাঙ্ক। মোট কথা কোনো গেমেই জাতিগুলোর ইউনিটের মাঝে এতটা বৈচিত্র্যতা দেখা যায় না, যতটা এই গেমে আছে। 
গেমের সাউন্ড কোয়ালিটি, মিউজিক, ক্যারেক্টারের কণ্ঠস্বর ও গোলাগুলির শব্দ বেশ নিখুঁত করে তোলা হয়েছে। গেমের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অন্যান্য গেমের তুলনায় অসাধারণ। শত্রুপক্ষের বুদ্ধিমত্তা এতটাই মজবুত যে সবচেয়ে সহজ মোডে খেলার সময়ও আপনার ঘাম বের হয়ে যাবে শত্রুপক্ষকে হারাতে। আর কঠিন মোডে খেলার সময় আপনার কি হাল হবে তা আর না-ই বললাম। গেমে প্রতিটি চাল খুবই বিচক্ষণতার সাথে দিতে হবে। ঘাঁটির সুরক্ষা ঠিকমতো না দিতে পারলে খেলা শুরু করার কিছুক্ষণের মাঝেই পরাজিত হতে হবে। গেমটির কোনো কনসোল ভার্সন নেই, এটি শুধু পিসির  জন্য বের করা হয়েছে। গেমটি খেলার জন্য পেন্টিয়াম ৪, ২.০ গিগাহার্টজের প্রসেসরই যথেষ্ট। সেই সাথে লাগবে ২৫৬ মেগাবাইট র্যাটম (৫১২ হলে ভালো হয়), ডিরেক্ট এক্স ৯.০সি সমর্থিত ৬৪ মেগাবাইটের গ্রাফিক্স কার্ড ও হার্ডডিস্কে ৩.৫ গিগাবাইট ফাঁকা স্থান। নতুন বের হওয়া গেমগুলোর তুলনায় এই গেমের পিসি কনফিগারেশনের চাহিদা বেশ কমই বলা চলে। তাই মোটামুটি মানের যেকোনো পিসিতে খুব সহজেই এই গেম খেলা যাবে 
কজ ওয়েব