স্পাইহান্টার গেমটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৩ সালে, তখন এটি ছিলো একটি দিবমাত্রিক গেম, যা খেলতে এখন আর পিসির দরকার হয় না, কেননা এখন জাভা সাপোর্টেড যেকোনো মুঠোফোনে গেমটি খেলা যায়। ২০০১ সালে বিখ্যাত গেম কোম্পানি মিডওয়ে গেমস বাজারে ছাড়ে ত্রিমাত্রিক স্পাইহান্টার যা প্লেস্টেশন, এক্সবক্স, নিনটেন্ডো, উইন্ডোজ, ম্যাকসহ সব প্লাটফর্মেই মুক্তি পায়। মূলত এটি একটি রেসিং অ্যাকশন ধাঁচের গেম। গেমে গাড়ি নিয়েই সব মিশন খেলতে হবে, যদিও গেমে গাড়ির চালক চরিত্রে সিক্রেট অ্যাজেন্ট অ্যালিস সেক্টস দেখানো হয়েছে, কিন্তু গেমে এই নায়ককে নিয়ে হাতাহাতি লড়াই বা গোলাগুলি করার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। গেমে গাড়িটির নাম হচ্ছে ইন্টারসেপ্টর এবং এটি সড়কপথে চলার পাশাপাশি, স্পিডবোটে রূপান্তর হয়ে পানি দিয়েও যাতায়াত করতে পারে, দরকার হলে মোটরসাইকেলেও রূপান্তরিত হতে পারে। এছাড়া এটিতে মেশিনগান বিদ্যমান, যা দিয়ে বিপরীত পক্ষকে গুলি করা যায়। এছাড়া ইন্টারসেপ্টরের বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে- সাধারণ মিসাইল ও রাডার গাইডেড মিসাইল ছোড়ার ক্ষমতা, আগুন ও রাস্তা পিচ্ছিলকারক তেল ছোড়ার ক্ষমতা এবং ট্র্যাকিং ডিভাইস শত্রুপক্ষের গাড়িতে লাগিয়ে দিয়ে তার পিছু নেয়ার ক্ষমতা।
গেমটিতে নস্ট্রা (NOSTRA) করপোরেশন নামের এক উগ্রবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে গেমারকে বিভিন্ন মিশন খেলতে হবে। গেমে টিউটরিয়ালসহ মোট ষোলোটি মিশন রয়েছে। প্রতিটি মিশনে আলাদা আলাদা কাজ করতে হবে, কোনো মিশনে শত্রুপক্ষের গাড়ি ভাঙতে হবে, কিছু মিশনে বিভিন্ন চেকপয়েন্ট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিভ্রমণ করতে হবে, আবার কিছু মিশনে সাধারণ মানুষের ক্ষতি না করে শুধু শত্রুপক্ষকে বিনাশ করতে হবে। গেমের মিশনগুলোয় প্রয়োজন অনুযায়ী গেমার গাড়িকে স্পিডবোট বা মোটরসাইকেলে রূপান্তর করতে পারবেন।
গেমটির ব্যাপক সাফল্যের পর ২০০৩ সালে গেমটির সিক্যুয়াল স্পাইহান্টার টু বাজারে আসে এবং গেমে পূর্বের কাহিনীর রেশ ধরেই আবার নতুন কাহিনীর অবতারণা হয়। এই গেমে দেখানো হয়েছে নস্ট্রা করপোরেশন পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যায়নি এবং বেঁচে যাওয়া অপরাধীরা আবার আলাদা সংগঠন তৈরি করে নিয়েছে। গেমটিতে প্রতিটি আলাদা সংগঠন খুঁজে বের করে তাদের ধ্বংস করাই হচ্ছে গেমের মূল লক্ষ্য। তবে গেমটি তেমন জনপ্রিয়তা না পাওয়ায় অনেকদিন এই সিরিজের কোনো গেম বাজারে আসেনি, কিন্তু গত বছর এই গেমের নতুন সিক্যুয়াল স্পাইহান্টার- নো হয়ার টু রান গেমটি অবমুক্ত করা হয়েছে। নতুন এই গেমে পুরনো গেমগুলোর মূল চরিত্র অ্যালিস সেক্টসকে সরিয়ে তার জায়গায় নতুন অ্যাজেন্ট অ্যালেক্স ডেকারকে আনা হয়েছে এবং অ্যালেক্স ডেকারের গ্রাফিক্স করা হয়েছে রেসলিং তারকা দ্য রক নামেখ্যাত ডুয়েন জনসনের আদলে। গেমে দেখানো হয়েছে অ্যালেক্স একজন অবসরগ্রহণ করা ফাইটার প্লে¬নচালক। পরবর্তীতে সরকার তাকে সিক্রেট সার্ভিসের একজন এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে।
আগের গেমগুলোয় থাকা সেই পুরনো নস্ট্রা করপোরেশন সরকারের সিক্রেট সার্ভিসের কিছু গোপন প্রযুক্তি ও সবচেয়ে মারাত্মক স্পাই ভেহিকেল ইন্টারসেপ্টরের মডেল চুরি করার প্ল্যান বানায়, গেমারকে অ্যালেক্সের চরিত্রে খেলে তাদের এই প্লানকে বানচাল করতে হবে। এই সিরিজেই প্রথমবারের মতো গাড়ির পাশাপাশি নায়ককে নিয়েও খেলা যাবে। এই গেমেও গাড়ির বা ইন্টারসেপ্টরের স্পিডবোট বা মোটরসাইকেলে রূপান্তর হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এবং তাতে বিধ্বংসী ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া গাড়ির ডিজাইনেও আনা হয়েছে নতুনত্ব। গেমের মূল আকর্ষণ হচ্ছে থার্ড পারসন ভিউতে অ্যালেক্সকে নিয়ে মারামারি করা, অ্যালেক্সকে নিয়ে হাতাহাতি লড়াই করার পাশাপাশি এগারোটি অস্ত্র ও তিন ধরনের গ্রেনেড নিয়ে খেলার সুবিধা দেয়া হয়েছে।
কজ ওয়েব