দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেলো ২০১০ সাল। আসছে নতুন সাল ২০১১। পুরনো বছর আমাদের উপহার দিয়ে গেছে অনেক রোমাঞ্চকর ও অসাধারণ গেম। পুরনো বছরে বেশিরভাগ সফল গেমগুলো ছিল মূল গেমের দ্বিতীয় পর্ব। এতে বোঝা যাচ্ছে গেমের মানোন্নয়নে গেম ডেভেলপাররা বেশ সতর্ক। নতুন বছরে তারা আরো ভালো গেম উপহার দেবেন বলে আশা করা যায়। বিভিন্ন গেমিং ওয়েবসাইট, গেম রেটিং সাইট ও গেম রিভিউ সাইটের চোখে উল্লেখযোগ্য ও প্রথম সারির দিকে থাকা গেমগুলো নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের গেমের জগতের প্রতিবেদন।
ডার্ক ভয়েড
ডেভেলপার :
এয়ারটাইট গেমস *
পাবলিশার :
ক্যাপকম *
ক্যাটেগরি :
সাই-ফাই অ্যাকশন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় উইলিয়াম অগাস্টাস গ্রে নামের কার্গো পাইলট রহস্যময় বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় পোর্টালের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে অন্য এক জগতে স্থানান্তরিত হয়ে যায়। সে জগতের নাম ভয়েড। সেখানে গ্রে রোবট জাতীয় ভিনগ্রহবাসী দল ওয়াচারস ও বিপন্ন মানব জাতি সারভাইভারদের সাথে মুখোমুখি হবে। সারভাইভারদের পক্ষে থেকে সে লড়াই করতে থাকে ওয়াচারদের বিরুদ্ধে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। গেমের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে- আকাশে ও মাটিতে আলাদাভাবে লড়াই করার ব্যবস্থা, উইলিয়ামের পিঠে থাকা জেটপ্যাকের সাহায্যে খুব দ্রুত স্থানান্তর, সিনেমেটিক হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট স্টাইল, এলিয়েন শিপ চালনা ও তার সাহায্যে আকাশে ভেসে যুদ্ধ করা, ইচ্ছেমতো যেখানে খুশি ওড়ার ক্ষমতা ও কঠিন শত্রু বা বস মোকাবেলা করা ইত্যাদি। সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে ব্যাপারটি রয়েছে তা হচ্ছে নতুন গেমিং স্টাইল ভার্টিক্যাল কমব্যাট। নতুন ধরনের গেমপ্লে ও কমব্যাট স্টাইল গেমটিকে বছরের সেরা গেমগুলোর তালিকায় আসন গেড়ে নিতে সহায়তা করেছে।
............................................................................................................
মাস ইফেক্ট ২
ডেভেলপার :
বায়োওয়্যার *
পাবলিশার :
ইলেকট্রনিক আর্টস *
ক্যাটেগরি :
সাই-ফাই অ্যাকশন
মাস ইফেক্ট ইউনিভার্সের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি সিটাডেল কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত জাতিগুলো হচ্ছে- আসারি, ড্রেল, ইলকোর, হানার, হিউম্যানস, কিপারস, স্যালারিয়ানস, টুরিয়ানস ও ভোলুস। সিটাডেলের বহির্ভূত কিছু জাতির মধ্যে রয়েছে- বাটারিয়ানস, কালেক্টরস, গেথ, ক্রোগান, রিপারস, কুয়ারিয়ানস ও ভর্চা। বিলুপ্তপ্রায় কিছু জাতির তালিকায় রয়েছে- আরথেন, প্রোথেয়ানস, রাচনি ও জেইওপ। গেমে সিটাডেলের অন্তর্ভুক্ত গোষ্ঠীগুলোর সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগে থাকে সিটাডেলের বহির্ভূত জাতিগুলোর। গেমের মূল চরিত্র সিটাডেলের পক্ষের কমান্ডার সেফার্ডকে মানবজাতির অস্তিত্ব মুছে দিতে চাওয়া কিছু শয়তানী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সেফার্ডের কাজে সাহায্যের জন্য তার দলে যুক্ত হবে কিছু বিশেষ ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তারা একেকজন একেক জাতির ও তাদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথমে তাদের খুঁজে বের করে সবাইকে একত্রিত করতে হবে। তারপর তাদের মিলিত যাত্রা শুরু হবে শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে। গেমের কাহিনী অন্যান্য গেমের কাহিনীর চেয়ে অনেক ভিন্ন ও নতুন মাত্রার। তাই গেমটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
............................................................................................................
বায়োশক ২
ডেভেলপার :
টুকে মারিন *
পাবলিশার :
টুকে গেমস *
ক্যাটেগরি :
ফার্স্ট পারসন অ্যাকশন
গেমের পটভূমি বানানো হয়েছে গভীর সাগতলের রহস্যময় এক রাজ্য রাপচারকে ঘিরে। প্লেন ক্র্যাশের কবল থেকে বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী জ্যাক গেমের মূল চরিত্র। গেমে জিনগতভাবে পরিবর্তিত ও বিকৃত কিছু মানুষ ও অদ্ভুত জীবের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে এবং নানারকম অস্ত্রের সাহায্য নিয়ে তাদের মোকাবেলা করতে হবে। জ্যাককে রাপচার দখল করে থাকা কুচক্রী মহিলা সোফিয়া ল্যাম্বের রাজত্বের অবসান ঘটাতে হবে। গেমে তাকে বেঁচে থাকার জন্য ও লড়াই করার উপকরণ হিসেবে সংগ্রহ করতে হবে প্লাসমিড, ইভ ও টোনিক নামের তরল পদার্থ। প্লাসমিডের সাহায্যে সে পাবে হাত থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে তা দিয়ে শত্রুকে শক দেয়ার ক্ষমতা, হাতের ইশারায় কোনো বস্তু উঠিয়ে তা ছুড়ে দেয়ার ক্ষমতাসহ আরো অনেক কিছু। ইভ সংগ্রহ করতে হবে প্লাসমিডের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য। টোনিকের সাহায্যে চলাফেরার গতি, আঘাত করার ক্ষমতা ও নিজের ক্ষত সারানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাবে। গেমের জগতে নতুন ধারা সৃষ্টি করার গেমটি বেশ আলোচিত হয়েছে।
............................................................................................................
স্প্লিলন্টার সেল- কনভিকশন
ডেভেলপার :
ইউবিসফট মনট্রেয়াল *
পাবলিশার :
ইউবিসফট *
ক্যাটেগরি :
স্টিলথ অ্যাকশন
স্প্লিলন্টার সেল সিরিজের মূল চরিত্র ঠান্ডা মাথার দক্ষ এজেন্ট স্যাম ফিশারকে কনভিকশনে দেখা যাবে রাগে উন্মত্ত ও প্রতিশোধের আগুনে দগ্ধ এক বাবার চরিত্রে। মেয়ে সারার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তাকে আন্দ্রে কোবিন নামের ড্রাগ ব্যবসায়ীর সুরক্ষিত প্রাসাদে হামলা করতে হবে। আগের গেমের মতো চোরের মতো শত্রুপক্ষের এলাকায় হানা দিয়ে নয়। এবারে তাকে শিকারির বেশে ক্ষিপ্রতা ও হাতাহাতি লড়াইয়ের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে শত্রুপক্ষের বাধা ডিঙ্গিয়ে পৌঁছতে হবে তার লক্ষ্যে। আগের স্টিলথ স্টাইলে খেলতে হবে ঠিকই, তবে এবার নিজে বাঁচার জন্য নয়, অন্যকে ধরাশায়ী করার লক্ষ্যে। তাই ধরা পড়ে যাবার ভয়ে বুকে ধুকপুকানি করার পরিবর্তে এবারের গেমের শত্রুকে দ্রুতগতিতে পরাজিত করার উত্তেজনা বেশি উপভোগ্য মনে হবে। গেমের গ্রাফিক্স ও শব্দশৈলী এতটাই প্রাণবন্ত ও মনোরম হয়েছে যে গেমারের পাশে দাঁড়িয়ে কেউ গেম খেলা দেখলে মনে করবে সে জেমস বন্ড বা বর্ন আইডেনটিটি ধাঁচের কোনো মুভি দেখছে। গেমের চমৎকার ধারাবাহিকতা, ডায়লগ, গেমপ্লে ও কমব্যাট স্টাইলের জন্য স্পিললন্টার সেল সিরিজের সেরা গেম হিসেবে স্থান দখল করে নিয়েছে।
............................................................................................................
মেট্রো ২০৩৩
ডেভেলপার :
ফোরএ গেমস *
পাবলিশার :
টিএইচকিউ *
ক্যাটেগরি :
ফার্স্ট পারসন শূটিং
গেমটি বানানো হয়েছে রাশিয়ান ঔপন্যাসিক দিমিত্রি গ্লুখোভস্কির লেখা উপন্যাস মেট্রো ২০৩৩-এর কাহিনীর প্রেক্ষাপটে। গেমটির নাম হবার কথা ছিল দ্য লাস্ট রিফুজি, কিন্তু তাতে কিছু বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হওয়ায় উপন্যাসের নামেই অবমুক্ত করা হয়। গেমের কাল্পনিক কাহিনী গড়ে উঠেছে ভবিষ্যতের এক ভয়ানক যুদ্ধে তছনছ হয়ে যাওয়া রাশিয়ার রাজধানী মস্কোকে ঘিরে। গেমের নায়কের নাম হচ্ছে আর্টয়োম। যার জন্ম হয়েছে যুদ্ধের আগেই, কিন্তু সে যুদ্ধের বিভীষিকার হাত থেকে রক্ষা পায় পাতাল রেলওয়ে টানেলে আশ্রয় নিয়ে। সেই পাতাল রেলের রাস্তা বা মেট্রোতেই সে বেড়ে ওঠে। একসময় সে অনুভব করে সেই অন্ধকার কুঠুরি থেকে বের হয়ে মুক্ত আকাশ দেখার সময় হয়ে এসেছে। ধ্বংসসত্মূপে পরিণত হওয়া শহরের বিপজ্জনক রাস্তায় সে বের হয়ে আসে। তাকে ঝুঝতে হয় প্যারানরমাল কিছু শত্রুপক্ষের সাথে, যারা দ্য ডার্ক ওয়ানস নামে পরিচিত। নানারকমের বিপজ্জনক প্রাণীর পাশাপাশি তাকে দুর্বল করে দিতে থাকবে বৈরী পরিবেশ। তার বেঁচে থাকার সংগ্রামই হচ্ছে গেমের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।
............................................................................................................
জাস্ট কজ ২
ডেভেলপার :
অ্যাভাল্যুনশ স্টুডিও *
পাবলিশার :
স্কয়ার ইনিক্স *
ক্যাটেগরি :
অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার
গেমের প্রধান চরিত্রের ভূমিকায় আগের মতোই রয়েছে সিআইএ ব্ল্যাক অপসের অ্যাজেন্ট রিকো রডরিগেজ। গেম ডেভেলপাররা তাদের বানানো এ চরিত্রকে জেমস বন্ড, ম্যাড ম্যাক্স, জ্যাসন বর্ন, উলভরাইন, পানিশার, র্যাাম্বো, টনি মন্টানা, হ্যান সালো ও চে গুয়েভারাসহ আরো কয়েকটি চরিত্রের মিলিত রূপ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। আগের গেমে রিকোকে বিচরণ করতে হয়েছিল ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের সান এসপেরিতো নামের স্থান এবং লড়াই করতে হয়েছে সেখানকার শাসক সালভাদর মেনডোজার বিরুদ্ধে। এবার তাকে মুখোমুখি হতে হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পানাউ নামের ট্রপিক্যাল বা ক্রান্তীয় দ্বীপের কুচক্রী শাসক পানডাক ব্যাবি পানায়ের বিরুদ্ধে। গেমে প্লেয়ারের ডুয়াল গ্রাপলিং হুক টম্ব রাইডার লিজেন্ডে ব্যবহার করা হুকের মতোই, তবে এ গেমে তা দিয়ে অনেকরকম কাজ করা যায়। গেমে যোগ করা হয়েছে বেশ কিছু নতুন অস্ত্র, যার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে- লেজার নিয়ন্ত্রিত রকেটবিশিষ্ট রকেট লঞ্চার, এক হাতে বহনযোগ্য গ্রেনেড লঞ্চার, রিমোট ট্রিগারবিশিষ্ট সি৪ নামের এক্সপ্লোসিভ, মাউন্টেড মিশিগান ইত্যাদি। জল-স্থল-আকাশপথ কোনো স্থানই বাদ দেয়া হয়নি এ গেমের বিচরণক্ষেত্র হিসেবে। গেমের একটি বিশেষ ফিচার হচ্ছে রিলোডেবল প্যারাসুট যা ইচ্ছেমতো খোলা বা বন্ধ করে গ্লাইডারের মতো ব্যবহার করা যায়।
............................................................................................................
স্টার ক্রাফট ২
ডেভেলপার :
ব্লিজার্ড এন্টারটেইনমেন্ট *
পাবলিশার :
ব্লিজার্ড এন্টারটেইনমেন্ট *
ক্যাটেগরি :
রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি
বিশ্বকাঁপানো স্টার ক্রাফট গেমটি বের হবার প্রায় ১২ বছর পর এ সিরিজের দ্বিতীয় পর্বটি বের হয়েছে। গেমের পটভূমি স্থাপন করা হয়েছে ২৫০০ সালের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির আশপাশের কিছু গ্রহ নিয়ে। গেমে তিন ধরনের জাতির প্রথমটি হচ্ছে মানবজাতি টেররান। তারা পৃথিবী বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় স্পেসশিপে বসবাস করে এবং অন্যান্য গ্রহ থেকে রিসোর্স সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ভয়ানক ও বিশাল আকৃতির পোকামাকড়সদৃশ জার্গ নামের জাতি। তৃতীয় জাতিটি হচ্ছে প্রোটোস, যারা সায়োনিক পাওয়ারের গুণে বেশ উন্নত ও শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হয়েছে। গেমের মূল নায়কের চরিত্রে রয়েছে কমান্ডার জিম রেয়নর। সে স্বৈরাচারী টেররান ডোমিনিয়নের বিরুদ্ধে তার মুক্তি সংগ্রামী বাহিনীর নেতৃত্ব দেবে। টেররানদের পাশাপাশি তাকে নিয়ে গেমারকে জার্গ ও প্রোটোসদের সাথেও মোকাবেলা করতে হবে। গেমের মূল আকর্ষণ হচ্ছে গেমের ইউনিটগুলো এবং তাদের নিয়ে লড়াই করার কৌশল। একপক্ষের ইউনিটের জন্য আরেকপক্ষের ইউনিট কোনোটি কতটা কার্যকর তা বিবেচনা করে খেলতে হবে। ফ্লাইং ইউনিটের সাথে লড়াই করার জন্য উপযুক্ত ইউনিট এবং বড় বা ছোট আকারের ইউনিটের সাথে কোন ইউনিট বেশি মানানসই হবে তা বেশ বিচক্ষণতার সাথে নির্বাচন করতে হবে।
............................................................................................................
ব্যাটলফিল্ড- ব্যাড কোম্পানি ২
ডেভেলপার :
ইএ ডিজিটাল ইলুশনস *
পাবলিশার :
ইলেকট্রনিক আর্ট *
ক্যাটেগরি :
ফার্স্ট পারসন শূটিং
১৯৪৪ সালের প্রেক্ষাপটে একদল কমান্ডো বাহিনী অনুপ্রবেশ করবে ইম্পেরিয়াল জাপানিজ নেভি কর্তৃক পরিচালিত জাপান সাগরের ছোট একটি দ্বীপে। সেই দ্বীপে একজন জাপানি বিজ্ঞানী গোপন এক শক্তিশালী অস্ত্রের ওপরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন, যার কোডনেম অরোরা। কমান্ডোরা সেখানে পৌঁছে বিজ্ঞানীকে বন্দী করার আগেই সে সাবমেরিনের সাহায্যে পালিয়ে যায় দ্বীপ থেকে। সেই মহাশক্তিশালী অস্ত্রের ব্যাপারে খোঁজ লাগানোর জন্য ইউএস আর্মি অভিযান চালাবে, যার নাম হবে অপারেশন অরোরা। গেমারকে অ্যাসল্ট, ইঞ্জিনিয়ার, রেকন ও মেডিক- এ চারটি ক্লাস থেকে প্লেয়ার নির্বাচন করে খেলতে হবে। ইঞ্জিনিয়ার ক্লাসে প্লেয়ার রিপেয়ার করতে পারবে ও টেকনিক্যাল বিষয়গুলো ভালো জানবে। মেডিক ক্লাস তার স্কোয়াডকে প্রাণশক্তি দিতে পারবে ও আহত সঙ্গীর ক্ষত সারাতে পারবে। মাল্টিপ্লেয়ার মোডে চারটি খেলার ধরন রয়েছে, এগুলো হচ্ছে- রাশ, কনকোয়েস্ট, স্কোয়াড ডেথম্যাচ ও স্কোয়াডরাশ। অস্ত্রের তালিকায় রয়েছে ৪০ মিমি গ্রেনেড লঞ্চার, স্মোক গ্রেনেড, ম্যাগনাম বুলেট, ১২ গজ স্লাগ, সিরামিক বডি আর্মোর ইত্যাদি। গেমের পরিবেশের বৈচিত্র্যতা ও প্রাণবন্ততা বেশ লক্ষণীয়। দক্ষিণ আমেরিকা ও রাশিয়ার সীমান্তবর্তী পাহাড়ী অঞ্চলের পটভূমিতে বানানো হয়েছে গেমের পরিবেশ। অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার মোড দারুণ প্রতিযোগিতামূলক ও রোমাঞ্চকর করে বানানো হয়েছে।
............................................................................................................
প্রিন্স অব পারসিয়া- দ্য ফরগটেন স্যান্ডস
ডেভেলপার :
ইউবিসফট মনট্রেয়াল *
পাবলিশার :
ইউবিসফট *
ক্যাটেগরি :
অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার
নতুন এ গেমের কাহিনী গড়ে উঠেছে স্যান্ডস অব টাইম ও ওয়ারিয়র উইদিন গেমের মাঝের সময়কে কেন্দ্র করে। যুদ্ধবিদ্যায় আরো পারদর্শী এবং নেতৃত্বদানের ক্ষমতা অর্জন করার জন্য বাবার আদেশে প্রিন্স তার ভাই মালেকের কাছে দীক্ষা নিতে যায়। কিন্তু তার ভাইয়ের রাজ্যে যুদ্ধ চলছিল। পরাজয় ঠেকাতে মালেক মুক্ত করে দেবে জাদুশক্তিতে শক্তিশালী ভয়ঙ্কর ঐতিহাসিক জিন বাহিনী- যার নাম সলোমন’স আর্মি। শত্রুপক্ষকে নির্মূল করার সাথে সাথে সেই বাহিনী মালেকের রাজ্যের সবাইকে পাথর বানিয়ে দিতে থাকে এবং সেই সাথে ভয়ঙ্কর এক ঝড়ের সৃষ্টি করতে থাকে যা তার রাজ্যকে তছনছ করে দেবার জন্য যথেষ্ট। প্রিন্স ও মালেক চেষ্টা করে ভয়ানক সেই বাহিনীর কর্ণধার রাতাশকে নিজের বশে আনতে, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। জিন গোত্রের রানী রাজিয়ার কাছ থেকে সে লাভ করবে জাদুশক্তি যাতে সে শুধু সময়কেই নয়- মাটি, আগুন, পানি ও বাতাসকে ব্যবহার করতে পারবে রাতাশের বাহিনীকে সমূলে উৎপাটন করার জন্য। গেমটি আনকোরা কমব্যাট স্টাইল, শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনী, প্রানবন্ত পরিবেশ, অবিকল পারস্যের পটভূমি, শ্রুতিমধুর শব্দশৈলী ও মনোহর গ্রাফিক্সের কারণে এ বছরের সেরা গেমগুলোর তালিকায় শীর্ষের দিকের স্থান দখল করতে পেরেছে।
............................................................................................................
মাফিয়া ২
ডেভেলপার :
টুকে চেক *
পাবলিশার :
টুকে গেমস *
ক্যাটেগরি :
অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার
মাফিয়া-২ গেমটি ২০০২ সালে বের হওয়া মাফিয়া দ্য সিটি অব লস্ট হ্যাভেন গেমটির সিকুয়্যাল। গেমের সময়কাল হচ্ছে ১৯৪৩ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত এবং গেমের পটভূমি হচ্ছে নিউইয়র্ক সিটির আদলে তৈরি এম্পায়ার বে বা দ্য এম্পায়ার স্টেটস। গেমে পুরো শহরে গেমার অবাধে বিচরণ করতে পারবে। কারণ গ্রাফিক্স করা পুরো শহরটির ক্ষেত্রফল হচ্ছে প্রায় ১০ বর্গ কিলোমিটার। আগের গেমের মতোই এই গেমেও গেমারকে শহরের রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করতে হবে, গাড়ি চালাতে হবে, শহরের বিভিন্ন লোকেশনে নানান মিশন খেলতে হবে, মাঝে মাঝে রাস্তায় রেস খেলতে হবে। এ ছাড়া মারামারি ও গোলাগুলি তো আছেই। নতুন এ গেমে ৪০টি গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে এবং গাড়ির ভেতরে থাকা অবস্থায় সেই সময়কার জনপ্রিয় অসংখ্য গান শোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গেমে সংযুক্ত নতুন বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গোলাগুলি করার সময় কভার নেয়ার ব্যাপারটি, যা আগের গেমে ছিল না। এ গেমেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- থমসন সাবমেশিন গান, কোল্ট ১৯১১ এবং পাম্প অ্যাকশন শটগান ইত্যাদি। এ ছাড়া যুক্ত হয়েছে আরো কিছু নতুন অস্ত্র। এগুলো হচ্ছে- এমপি ৪০, এম৩ সাবমেশিন গান, এমজি ৪২ ইত্যাদি।
............................................................................................................
ডেড রাইজিং ২
ডেভেলপার :
ব্লু-ক্যাসেল *
পাবলিশার :
ক্যাপকম *
ক্যাটেগরি :
সারভাইভাল হরর
মোটোক্রস চ্যাম্পিয়ন চাক গ্রিনি তার মেয়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করার জন্য ফরচুন সিটিতে আয়োজিত রিয়েলিটি টিভি শো টেরর ইজ রিয়ালিটি সিরিজে অংশগ্রহণ করবে। শোতে প্রতিযোগীদের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় জম্বিদের মারতে হবে এবং নিজেকে রক্ষা করতে হবে। যে যত জম্বি মারতে পারবে সে তত টাকা ও জনপ্রিয়তা পাবে। কিন্তু চাক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। তার ছদ্মবেশে আরেকজন আটক করা জম্বিদের মুক্ত করে দেয় এবং শহরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। গেমে চাকের কাজ হবে জম্বিদের হাত থেকে সাধারণ মানুষদের রক্ষা করার পাশাপাশি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার উপায় খুঁজে বের করা। গেমের মজার ব্যাপার হচ্ছে জম্বিদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা অস্ত্রগুলো। কেননা গেমে ভারি অস্ত্র ও বিস্ফোরকের পাশাপাশি প্রায় ২৫০ রকমের সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা যাবে জম্বিদের মারার জন্য। এর মধ্যে চেয়ার, টেবিল, পাইপ, ফুলদানি, মিনি ফ্রিজার এবং ঘরের আরো নানান আসবাবপত্র অন্যতম। সারভাইভাল হরর ও রোল প্লেয়িং অ্যাকশন গেমের মাঝে দারুণ এক যোগসাজশের কারণে গেমটি অন্য গেমগুলোর চেয়ে আলাদা হওয়ায় বেশ আলোচিত ও জনপ্রিয় হয়েছে।
............................................................................................................
মেডেল অব অনার
ডেভেলপার :
ডেঞ্জার ক্লোজ *
পাবলিশার :
ইলেকট্রনিক আর্টস *
ক্যাটেগরি :
ফার্স্ট পারসন শূটিং
যুদ্ধভিত্তিক ফার্স্ট পারসন শূটিং গেমগুলোর মাঝে সেরাদের তালিকায় অনেকদিন ধরেই স্থান দখল করে আছে মেডেল অব অনার সিরিজের গেমগুলো। ইলেকট্রনিক আর্টসের নামকরা এ গেম সিরিজের পটভূমি হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। বিশ্বযুদ্ধের ধারাবাহিকতা বাদ দিয়ে নতুন যুগের যুদ্ধ নিয়ে গেমটিতে নতুন এক পটভূমি সূচনা করায় গেমটির নাম এ সিরিজের প্রথম গেমের নামে মিল রেখে দেয়া হয়েছে। সিঙ্গেল ও মাল্টিপ্লেয়ার মোড দুটি আলাদা গেম ইঞ্জিন দিয়ে বানানো হয়েছে, তাই মোড দুটিতে পাওয়া যাবে ভিন্ন স্বাদ। গেমটি আফগানিস্তানের সাথে আমেরিকার চলা যুদ্ধের সত্যিকার কিছু ঘটনা নিয়ে বানানো হয়েছে। গেমারকে ইউএস আর্মির সদস্য হিসেবে তালেবান ও আল কায়েদা সদস্যদের সাথে লড়াই করতে হবে। গেমের লক্ষ্যগুলোর মাঝে প্রতিপক্ষের লুকানোর ঘাঁটিতে হামলা করা, বন্দীদের মুক্ত করা এবং আন্ডারকভার অপারেশনে অংশগ্রহণ করাই হবে মুখ্য। গেমে মাল্টিপ্লেয়ার মোডটিকে বেশ উন্নত করা হয়েছে এবং সিঙ্গেল প্লেয়ার মোডের চেয়ে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে বানানো হয়েছে। সিঙ্গেল প্লেয়ার মোডে গেমারকে র্যা বিট ডেলটা ফোর্সের স্নাইপার টিম ডিউস, আর্মি রেঞ্জার টিম ও এএইচ-৬৪ অ্যাপাচি গানার টিমের সদস্য হিসেবে এবং মাল্টিপ্লেয়ার মোডে তিনটি ক্লাস রাইফেলম্যান, স্পেশাল ওপস ও স্নাইপার হিসেবে খেলতে হবে।
............................................................................................................
হট পারসুইট
ডেভেলপার :
ক্রাইটেরিওন গেমস *
পাবলিশার :
ইলেকট্রনিক আর্টস *
ক্যাটেগরি :
মোটর রেসিং
সিক্রেস্ট সিটি নামের এ কাল্পনিক সমুদ্র তীরবর্তী শহরের ১০০ মাইল রাস্তা নিয়ে বানানো হয়েছে গেমের মুক্ত বিশ্ব, যা কি না বার্ন আউট প্যারাডাইস গেমের প্যারাডাইস সিটির চেয়ে চারগুণ বড়। ২০০২ সালের পরে দীর্ঘ আট বছর পরে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে পুলিশের গাড়ি নিয়ে রেসারদের তাড়া করার বিষয়টি। এ গেমে রয়েছে পুরনো হট পারসুইট ২-এর ধাঁচ, মোস্ট ওয়ান্টেডের মতো গেম কন্ট্রোলিং, বার্ন আউট সিরিজের মতো রোমাঞ্চ, গ্রান্ড টুরিজমো সিরিজের মতো উত্তেজনা, শিফটের চেয়ে উন্নত গ্রাফিক্স এবং আধুনিক গাড়ির বিশাল সমাহার। ক্যারিয়ার ক্যাম্পেইনে গেমারকে বাউন্টি পয়েন্ট অর্জন করে পুলিশের খাতায় নিজের নাম ওয়ান্টেড রেসার লিস্টের শীর্ষে ওঠাতে হবে। একই সাথে গেমারকে পুলিশ হিসেবে শহরের রেসারদের রেস খেলা প্রতিহত করার দক্ষতা দেখিয়ে পুলিশের উচ্চপদে আসীন হতে হবে। স্পাইক স্ট্রিপস, ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক পালস, টারবো বুস্ট, জ্যামার, রোড ব্লক ও হেলিকপ্টার কল নামের অপশনগুলোর ব্যবহার গেমের মজা অনেকগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। গেমপ্লে, গ্রাফিক্স কোয়ালিটি, সাউন্ড সিস্টেম এবং ভিন্নধর্মী আবহ তৈরি করার জন্য গেমটি গেমিং ওয়েবসাইট, গেম ম্যাগাজিন, সমালোচক ও গেম রিভিউ সাইটের চোখে ৯০-১০০% স্কোর অর্জন করার গৌরব লাভ করেছে।
............................................................................................................
কল অব ডিউটি- ব্ল্যাক অপস
ডেভেলপার :
ট্রেয়ার্চ *
পাবলিশার :
অ্যাক্টিভেশন *
ক্যাটেগরি :
ফার্স্ট পারসন শূটিং
ফার্স্ট পারসন শূটিং গেমগুলোর মধ্যে অন্যতম গেম হচ্ছে কল অব ডিউটি সিরিজ। অনেকে একে সংক্ষেপে কড (COD) বলে থাকেন। মাল্টিপ্লেয়ার মোডে বেশ ভালো পারফরমেন্সের জন্য গেমটি বিভিন্ন গেমিং কম্পিটিশনের তালিকায় থাকে। ব্ল্যাক অপস গেমটি ৭ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে তার আগের গেম মর্ডান ওয়ারফেয়ার ২-এর গড়া রেকর্ড (২.৫ মিলিয়ন কপি) ভেঙ্গে দিয়েছে। তাই গেমটি কেনো সেরা গেমগুলোর মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে তা আর না বলাই ভালো। মিলিটারি সদস্য হিসেবে খেলার সময় একজন সৈন্য কত কষ্ট করে যুদ্ধ করে তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাবে। প্রাণবন্ত পরিবেশ ও বাস্তবসম্মত গেমপ্লে গেমটির মূল আকর্ষণ। হালকা থেকে ভারি অস্ত্র চালনা, গ্রেনেড ও অন্যান্য এক্সপ্লোসিভ ব্যবহার করা এবং ক্রসবো ও ছুরি দিয়ে হামলা করার ব্যাপারগুলো বেশ বাস্তবিক করে তোলা হয়েছে। বেশ উত্তেজনাপূর্ণ এ গেম খেলে দেখলেই বুঝতে পারবেন মিলিটারি অ্যাকশন গেমের প্রকৃত স্বাদ। সরাসরি হামলার পাশাপাশি লুকিয়ে বা স্টিলথ মোডেও শত্রুকে ঘায়েল করার ব্যাপারটি গেমের স্বাদ আরো বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। ক্যাম্পেইন মোডে বিভিন্ন ক্যারেক্টার নিয়ে নানা রকম অবজেক্টিভ সম্পন্ন করে মিশন শেষ করতে হবে।
............................................................................................................