• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > প্রো ইভুল্যুশন সকার ২০১০
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:৫৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেমস
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
প্রো ইভুল্যুশন সকার ২০১০


ফুটবল খেলার কথা আসলেই মাথায় আসে সুন্দর করে সাজানো বিশাল মাঠ, গ্যালারিভরা উৎসুক দর্শকের হাততালি ও শোরগোল, একটি বল নিয়ে বাইশজন খেলোয়াড়ের দৌড়াদৌড়ি ও স্পিকারের শ্বাসরুদ্ধকর কথামালা। ফুটবল খেলাটি সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয়। নববই মিনিটের এ খেলাটি সবার মন জয় করে নেয় খুব সহজেই, কারণ খেলার পুরো সময়ই থাকে দারুণ উত্তেজনা, এই বুঝি গোল হয়! খেলার নিয়মকানুন তেমন একটা কঠিন নয়, তাই এ খেলা সম্পর্কে অজ্ঞ লোককেও খেলা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিয়েই এ খেলার ভক্ত বানিয়ে ফেলা যায় নিমেষেই। ফুটবল খেলার জন্ম কবে হয়েছিল তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারে না। তবে জানা যায় যে, খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ১৮০০ বছর আগে প্রাচীন মিসরে ধর্মীয় উৎসবে আয়োজন করা হতো বল নিয়ে খেলাধুলার, কিন্তু তার পুরো নিয়মকানুন কেমন ছিল তা খুব একটা পরিষ্কার নয়। আবার অনেকে বলে থাকেন তারও আগে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০-এ চীন দেশে এ খেলার প্রচলন ছিল। কিন্তু তাদের এ খেলায় খেলোয়াড়ের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। প্রাচীনকালে রোমান ও গ্রিকদের মাঝেও এ খেলার ব্যাপক প্রসার ছিল বলে জানা যায়। তাদের সেই খেলার ধাঁচ থেকে নানা বিবর্তনের মাধ্যমে আজকের এ খেলার নিয়ম এসেছে। পুরো বিশ্ব এ খেলার চর্চা সঠিকভাবে পরিচালনার কাজে সহায়তা করার জন্য গড়ে উঠেছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল (International Federation of Association Football) নামের এক প্রতিষ্ঠান যাকে আমরা সংক্ষেপে ফিফা (FIFA) নামে জানি। ইংরেজি শব্দগুলোর আদ্যাক্ষর নিয়ে সাজালে প্রতিষ্ঠানটির নাম হওয়ার কথা ছিল আইএফএএফ, কিন্তু তা ফিফা হলো কেনো? এমন প্রশ্ন সবার মনে জাগাটাই স্বাভাবিক। আসলে ফিফা নামটি নেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ফ্রেঞ্চ নামকরণের আদ্যাক্ষর সাজিয়ে- ফেডারেশন ইন্টারন্যাশিওনাল ডে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (Fédération Internationalede Football Association)। আমরা এখন যে ধারায় ফুটবল খেলা দেখি বা খেলি, তার জন্ম হয়েছে ইউরোপে ১৮৪৩ সালে, তাই ইউরোপকেই বলা চলে নতুনধারার ফুটবলের জন্মস্থান। তবে এখন একেক দেশে একেক রকমের ফুটবল খেলা রয়েছে যার নিয়ম-নীতি ভিন্ন, যেমন- আমেরিকান ফুটবল, কানাডিয়ান ফুটবল, ইউরোপিয়ান ফুটবল ইত্যাদি। ফুটবল খেলাকে সকার বা ফুটি নামেও অবিহিত করা হয়ে থাকে।

চার বছর পর পর ফিফা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার আসর বসলেই ছেলেবুড়ো সবাই টিভির সামনে রাতদিন চোখ পাকিয়ে বসে থাকেন আর খেলা উপভোগ করেন। আবার অনেকে ঝগড়া বাধিয়ে দেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা কে জিতবে কে হারবে এ প্রসঙ্গ নিয়ে। একই ঘরের বাসিন্দাদের মাঝেই হয়ে যায় ভাগাভাগি, একেক সদস্য একেক দলের সমর্থক। ফিফার বাইরে এখন লীগ হিসেবে নানা ক্লাবের খেলোয়াড়দের মাঝে বল নিয়ে লড়াই করাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলছে সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে ক্লাবগুলোর টানাহেঁচড়া। সেরা ফুটবল লীগ বা ক্লাবগুলোর মাঝে চলছে দারুণ প্রতিযোগিতা। সামনের বছরেই সবাই মেতে উঠবে ফিফা বিশ্বকাপের আনন্দে। ভার্চুয়াল গেমসের তালিকাতেও ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তার কমতি নেই। অনেক গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বের করেছে অসংখ্য ফুটবল গেমস। এ বছরও বের হয়েছে অনেক গেম তার মধ্যে রয়েছে- ফিফা ২০১০, ফুটবল ম্যানেজার ও প্রো ইভুল্যুশন সকার ২০১০। আজকে আমাদের আলোচনায় স্থান পাবে প্রো ইভুল্যুশন সকার ২০১০ নামের গেমটি।



এ গেমটি এ সিরিজের অন্যতম গেম হিসেবে নির্মাতারা ঘোষণা দিয়েছেন এবং একে বলেছেন দিবতীয় প্রজন্মের গেম। এ সিরিজের আরো ৬টি গেম রয়েছে। জাপানের বিখ্যাত গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোনামি গেমটি পাবলিশ করেছে এবং ডেভেলপ করেছে তারই অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কোনামি কমপিউটার এন্টারটেইনমেন্ট টোকিও। গেমটি জাপানে ওয়ার্ল্ড সকার-উইনিং ইলেভেন ২০১০ নামে পরিচিত। গেমটির ডিজাইনে যাদের কৃতিত্ব রয়েছে তারা হচ্ছেন- সিঙ্গো সিবাস টাকাটসুকা, নাওইয়া হাটসুমি, টরু নাগাই, সাটোশি সুজিকি, জন মারফি। গেমটি একনাগাড়ে সব প­vটফর্মে মুক্তি দেয়া হয়েছে। গেমের কভার পেজে রাখা হয়েছে নামকরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির ছবি, তার সাথে রয়েছেন ফার্নান্ডো টরেস।

ফুটবল খেলার যে নিয়ম তা তো আর বদলানো যায় না, তাই গেমগুলোর গেমপ্লে একই ধরনের হয়ে থাকে কিন্তু পার্থক্য করা হয় গ্রাফিক্সের কারুকাজ কতটা প্রাণবন্ত করে তোলা যায় তার ওপরে ভিত্তি করে। তার সাথে নতুন কিছু ফিচার যুক্ত করেও আনা হয় বৈচিত্র্য। নতুন এ গেমের ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে- উন্নতমানের ভিজ্যুয়াল ও অ্যানিমেশন সিস্টেম, প্লেয়ারের নড়াচড়ার ও ক্রীড়াকৌশলের প্রাণবন্ততা, প্রত্যেক প্লেয়ারের আলাদাভাবে দক্ষতা পরিমাপের ব্যবস্থা, পেনাল্টির সময় বল সূক্ষ্মভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, অনলাইন গেমিং ও সেই সাথে ইন্টারনেট থেকে নানারকম আপডেট ও অন্যান্য কিছু জিনিস ডাউনলোড করার ব্যবস্থা, দারুণ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার, আবহাওয়ার বদল, নানারকম ক্যামেরা ভিউ, গেম রিপ্লে, অনেক খেলার মাঠ ও ফুটবল ইত্যাদি। গেমের UEFA Champions League-এর পাশাপাশি UEFA Europa League-এর স্কোয়াডসহ মোট ২৫৮টি স্কোয়াড রয়েছে।

গেমটিতে তেমন একটা নতুন মোড সংযোজন করা হয়নি। গেমে রয়েছে ম্যানেজার মোড, বিকাম এ লিজেন্ড মোড, চ্যাম্পিয়নশিপ মোড, লীগ মোড ইত্যাদি। ম্যানেজার মোডে কোনো ফুটবল ক্লাবের ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করে নিজের দলকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে প্লেয়ার বাছাই, প্লেয়ার ভাড়া করা বা বাদ দেয়া এবং কোনো টিমের সাথে কিভাবে খেলতে হবে তা মাথায় রাখা বেশ জরুরি। একটু ভুলের জন্য টিমের বিরাট ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, তাই ম্যানেজার মোডে খুব সাবধানে বুঝেশুনে এগোতে হবে।

চ্যাম্পিয়নশিপ মোডে যেকোনো একটি টিম বাছাই করে তাকে নিয়ে ইউরোপিয়ান ফুটবল কাপ জয় করার যুদ্ধে মেতে উঠতে হবে।

লীগ মোডে খেলার সময় নির্দিষ্ট একটি টিম বেছে নিতে হবে এবং সেই টিমকে নিয়ে অন্যন্যে টিমের সাথে খেলতে হবে। এ মোডে অন্যান্য টিমকে হারিয়ে নিজেদের সুনাম বজায় রাখতে হবে।

বিকাম এ লিজেন্ড মোডে গেমারকে দেয়া হবে মাত্র একটি প্লেয়ারকে কন্ট্রোল করার ক্ষমতা। তাই এ মোডে প্লেয়ারকে নিজের ইচ্ছেমতো সাজিয়ে নেয়া যাবে অর্থাৎ আকার-আকৃতি, চেহারা ও দক্ষতা দেয়া যাবে। প্লেয়ারের মাথার আকার, চুলের ধরন, চোখ, নাক, কান, গলা, গাল, চিবুক সবকিছু মডিফাই করা যাবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্লেয়ারকে দেখতে নিজের মতো করে। বানানোর সুবিধাও দেয়া হয়েছে। ওয়েবক্যাম দিয়ে ছবি তুলে বা তোলা ছবি স্ক্যান করে নিয়ে তা থেকে প্লেয়ারের চেহারাকে নিজের চেহারা দেয়ার ব্যবস্থা খুবই মজার। তবে এ জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করে চেহারা এডিট করে নিতে হবে। ইচ্ছেমতো নাম, পোশাক, সাজগোজ দেয়ার পর প্লেয়ারকে নিয়ে ছোট আকারের ক্লাবের দরজায় হানা দিতে হবে। ছোট ক্লাবে খেলে যখন নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারবেন তখন ডাক আসবে ভাল বা বড় ক্লাবের তরফ থেকে। তারপর ধীরে ধীরে একের পর এক ক্লাব বদল করে আপনাকে পৌঁছতে হবে নামকরা ক্লাবে এবং স্থান দখল করতে হবে শীর্ষস্থানীয় ক্লাবের সদস্য হিসেবে।

গেমটি খেলার জন্য লাগবে ইন্টেল পেন্টিয়াম ৪, ২.৫ গিগাহার্টজের প্রসেসর, পিক্সেল শ্রেডার ২.০ সমর্থিত ১২৮ মেগাবাইটের গ্রাফিক্স কার্ড (এনভিডিয়া এফএক্স সিরিজ বা এটিআই রাডেওন ৯৭০০ সিরিজ বা তদুর্ধ), ১ গিগাবাইট র্যািম ও ৮ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_15@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস